somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গন্তব্যহীন গন্তব্যে

১৭ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক সময় অনেক কিছু ভাবতে ভালো লাগে, আর হঠাৎ করে যখন সেই চিন্তা বাস্তবে রুপ নেয় তখন আনন্দের আর সীমা থাকে না ৷ বাস্তবিক চিন্তা ভাবনা করতে কার ভালো লাগে ৷ বড় হতে সবাই চায়, কিন্তু সেই বড় হওয়ার পিছনে সাধনা বা কষ্ট আমাদের চিন্তার সীমারেখাই কখনও আবর্তিত হয় না, আর হলেও চিন্তার জগত সেটা নিয়ে চিন্তা করতে চায় না ৷ যাই হোক চিন্তা নিয়ে এত চিন্তিত হতে এখন ইচ্ছে করছে না, কিছুটা হতাশা আর শূন্যতা নিয়ে আমি এখন বসে আছি রেল লাইন এ ৷ হতাশা আর শূন্যতা কেন বা কি কারণে আমাকে ঘিরে রেখেছে তার কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছি না যুক্তি দিয়েও মেলাতে পারছি না বলে অসহ্য লাগছে ৷ বিষয়টা এমন যে দুই এ দুই এ যোগ করলে চার হয় আমি জানি, কিন্তু অঙ্ক মেলাতে পারছি না ৷ প্রতিদিন বিকাল এ আমি এখানে আসি ৷ভালো লাগলে রেল এর লাইন ধরে কিছুক্ষণ হাঁটি,
ভালো না লাগলে আকাশ এর দিক এ তাকিয়ে বসে থাকি ৷ সামনে স্কুল এর মাঠ এ ছেলেরা ক্রিকেট খেলে ওদেরকেও মাঝে মাঝে দেখি ৷ আজ অবশ্য ওরা আসেনি ৷ আকাশ এ অনেক মেঘ ৷ দুপরে এক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে ৷ আমি বসে আছি আকাশের দিক এ তাকিয়ে, মেঘলা আকাশ দেখতে ভালো লাগে না উদাস মন আরও উদাস হয়ে যায় ৷ কিছু ভালো লাগছে না, পকেট এ একটাই সিগারেট ওটাকে ধরাবার জন্য পকেট এ হাত দিয়ে দেখি ম্যাচ নাই! কি আর করা একটা দোকানের সন্ধানে বের হলাম ৷ কিছুটা হাঁটতেই একটা দোকান পেয়ে গেলাম ৷ দোকান থেকে সিগারেট টা ধরিয়ে আমি টানছি ৷ রেল লাইন এর পাশেই এই দোকানটা ৷ আশে পাশে অনেক বস্তি ৷ বস্তির ভিতর থেকে পুরানো দিনের হিন্দি গান শোনা যাচ্ছে, পাশেই এক শিশু যার নাক দিয়ে অবিরাম পানি ঝরছে , কিছক্ষণ এর ভিতর কোথা থেকে একটা আওয়াজ কান এ আসতে লাগলো ৷ আওয়াজ টা ক্রমেই নিকটবর্তী হতে লাগলো ৷ কিছুক্ষণ পর দেখি একটা উলঙ্গ পাগল দোকানে প্রবেশ করলো, তার পিছনে অনেক পিচ্চি পোলাপান দোকানদার পিচ্চিদেরকে এক ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিলো ৷
পাগলঃ ওই একটা বিস্কুট দে ( দোকানদারকে ধমকের সুরে)৷
দোকানদার কোন বাক্য বিনিময় না করেই তাকে বিস্কুট দিয়ে দিলো ৷ তার ভাব দেখে মনে হল সে এই পাগলকে চেনে ৷
আমি আমার মত সিগারেট টানছি,
পাগল তার নিজের লিঙ্গ ধরে টানছে আর বলছে, রসের খনি কিসের জন্য তোমার এত রস? অকারণেই কর ফস ফস!!
দোকানদার মুখ লুকিয়ে হাসছে,
পাগল এবার আমার দিকে তাকাল
আমি খানিকটা ঘাবড়ে গেলাম।
আমার থেকে দুই হাত দূরে দাঁড়িয়ে পাগল বলে,ওই বিটা নাক দিয়ে বিড়ি টানতে পারো?
আমি না সূচক মাথা নাড়লাম ৷
পাগলঃ বিড়িটা দাও দেখাই, মখলেসের মা তো চুল দিয়ে বিড়ি খাইতো পানিতে ডুবে হিজড়া টা মরে গেলো ৷
কোথাকার পানি কোথায় যাচ্ছে আমি কিছুই বুঝলাম না ,
পাগল কে সিগারেট টা দিলাম
পাগল সিগারেট নিয়েই আমাকে বলে,গাধা তুই ত বড় পাগল, কাশেম এর মত,
বলেই সিগারেট টা নিয়ে পাগল দিলো দৌড় ৷
আমি কিছুই বললাম না ,
কিছুক্ষণ পর আবার চিৎকার এবার চিৎকার টা আগের থেকে জোরালো এবং পরিণত অনেক গলার আওয়াজ ৷
আমি দোকান থেকে বের হয়েই একটা ট্রেন কে যেতে দেখলাম ৷ কিছুটা দূরে অনেক লোকের জটলা তাদের ভিতর কেউ বলছে,আহা কত ভালো লোক ছিল! কাওরে কিছু বলত না, নিজের মতই থাকত ৷
বুঝতে আর বাকি রইল না কিছু, আমি আর ভিড় ঠেলে সামনে এগুলাম না ৷
জটলার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ এক শিশুর চিৎকার, আম্মু আমার পা পুড়ে গেছে!
শিশুটির মা দৌড়ে এসে শিশুটিকে কোল এ তুলে নিয়ে বলল, কোন বেআক্কেল লোক যে সিগারেট খেয়ে না নিভিয়ে চলে গেছে ৷
আমি হাটার গতি দ্রুত করে সেখান থেকে চলে আসলাম ৷
আসার সময় ভাবছি কি কারণে লোকটা এই কাজ করলো? তার মনে কি অনেক কষ্ট? আমার মনেও ত অনেক কষ্ট আমি কেন পারলাম না তার মত এই কাজ করতে? গোধূলির আলো মেঘের কারণে বের হতে পারছে না, তবে আমি জানি কাল ঠিকই গোধূলির আলো মেঘ ভেদ করে বের হয়ে আসবে, না হলে হইত পরশুদিন আসবেই, তবে আসবেই; আমি হেঁটে যাচ্ছি আর আমার কান এ বাজছে, “রসের খনি কিসের জন্য তোমার এত রস? অকারণেই কর ফস ফস ৷”

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×