somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্যাম্পাসের এক কোনায় (মুগ্ধতা!)

১৫ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখন বিকেল ৫.৩৮। এই মুহূর্তে যে যায়গায় বসে আছি তা আমার কাছে স্বর্গের একটুকরো মনে হচ্ছে। জানিনা আমি স্বর্গ এর থেকে কতটুকু সুন্দর। তবে এইরকম একটি পরিবেশ পেলে তাতেই আমি খুশি।


আমি বসে আছি একটি বড় পুকুরের ঘাটে। পুকুরের পানি অনেক স্বচ্ছ এবং নীলচে সবুজ। সমুদ্রের মত মনে হচ্ছে। আছে হালকা ঢেউ এর খেলা। পুকুরে অনেক মাছ দেখা যাচ্ছে, অনেকটা একুরিয়ামের মত। ছোট বড় অনেক রকমের মাছ। আমার ডানপাশে কিছুটা জমি। তার ওপারটা দিগন্তে মিশে আছে মনে হচ্ছে।

---শুধু এইটুকু দেখেই মুগ্ধ হয়ে থাকা যায়। এইটুকুই হতে পারে অনেক কিছু। কিন্তু এ যে স্বর্গের টুকরো। তাই এখানেই শেষ নয়।

মাত্র সামনে দিয়ে উড়ে গের এক ঝাঁক সাদা বক। গিয়ে বসলো কতগুলো আকাশী গাছের মাথায়। আকাশী গাছ নাকি আকাশ ছুঁতে চায়। বকগুলোকেও তাই মনে হচ্ছে। বকগুলো বসার সাথে সাথে বাতাসের ঢেউয়ের মত নেমে এলো এক ঝাঁক ছোট পাখি।

ও হ্যাঁ, বলতে ভুলে গেছি। আমার বামপাশে ছোট্ট একটি বনের মত আছে। বনের বেশিরভাগ গাছই আকাশী গাছ। তবে কিছু নারিকেল এবং নাম না জানা আরও অনেক গাছ আছে। কিছু কাশফুলের গাছও আছে যদিও তা শুকিয়ে গেছে।


আমার ক্যাম্পাসের ক্ষুদ্র স্বর্গের প্রধান অংশই হলো এই গাছগুলো। কারণ এইগাছগুলোতে আছে হাজার হাজার পাখি। কিছুদিন আগেও এখানে ছিল নানান অতিথি পাখি। চারদিকে শুনতে পাচ্ছি পাখিদের কিচিরমিচিরের শব্দ। এই সংগীতের কি কোন তুলনা হয়?

আকাশটা ছেয়ে গেছে পাখি দিয়ে। ঝাঁক বেঁধে পাখিরা আকাশে আকাশে উড়তেছে। বিশেষ করে পুকুরের উপরে। সারাদিন নানান জায়গায় ছুটাছুটি করে এই সময়ে সবাই নীড়ে ফিরছে। ঝাঁকে ঝাঁকে আসতেছে নানান দিক থেকে। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি।



মাত্র একটি পানকৌড়ি পুকুরে ডুব মারলো। নির্গাত কিছু না কিছু ধরে নিয়ে আসবে। চারদিকে প্রাণবৈচিত্রের অপূর্ব এক সমারোহ এখানে।

ঝাঁক বাঁধা পাখির গতিপথ পরিবর্তন! আর উপর থেকে নিচে নামা পাখিদের ঝাঁক!

---দেখলে মনে হয় গাছের পাতা হঠাৎ বাতাসে একদিকে উড়ে যাচ্ছে কিংবা নিচে ঝরে পড়তেছে।

আমাদের ক্যাম্পাসটি চরের মাঝে। তাই বলা যায় সমতল একটি ভূমি। কিন্তু এখানে প্রকৃতি এত সুন্দর, এত মনোরম তা লিখে বোঝানো সম্ভব নয়।

পুকুরের পাড়ের চারদিকে কিছু গাছ আছে। আমরা এগুলোকে ধইঞ্চা বলে ডাকি। বই-পুস্তকে কি নাম আমার টা জানা নেই। তবে অনেকটা পাট গাছের মত। আবার কিছু গাছ আছে পাতা ঝরে গেছে শীতকালে। এখন পাতা বলে আর কিছু নাই।


পুকুর পাড়ে আমি যেদিন প্রথম আসি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। দূর থেকে মনে হচ্ছির গাছগুলোতে অনেক পাতা। কিন্তু কাছে এসে দেখি পাতা কোথায়, গাছে ভর্তি অনেক অনেক ছোট ছোট পাখি। :-O

প্রকৃতির কিছু ছবি তোলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু আমার নোকিয়া এন৭০ ব্যর্থ হলো এই প্রকৃতির রূপ ধারণে। পুকুরের ওই পাড়ে দুইজন লোক দেখতেছি ভালো ফটোগ্রাফিক ক্যামেরা হাতে। মনে হচ্ছে আমার সিনিয়র। যদি ওনাদের কাছে কোন ভালো ছবি পাই তাহলে ভালো হতো। দেখতে হবে পাই কিনা।

যাই সন্ধ্যা নেমে গেছে। পাখিরা সব নীড়ে ঢুকে গেছে। আমিও আপন নীড়ে ফিরে যাই।

-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

উপরের লিখাটুকু আজ সন্ধ্যায় আমি লিখেছিলাম আমাদের ক্যাম্পাসের একটি কোণায় বসে ওইসব দেখতে দেখতে। পরে শেয়ার করতে ইচ্ছে করলো। ভাইয়াদের কাছে ছবি পেয়েছি। ছবিগুলো তাই মাঝে মাঝে দিলাম। আসলে ছবি দিয়ে এই প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা যায় না। তথাপি দিলাম। যদি পারেন তো ঘুরে যাবেন আমার ক্যাম্পাসে, ক্যাম্পাসের এক কোণায়, ক্ষুদ্র প্রকৃতির এক টুকরো স্বর্গে ।

-- মোঃ ইয়াসিন কবির।

-- নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

লিখাটি আমার ওয়েবসাইট বিজ্ঞান বাংলাতেও প্রকাশিত।

২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×