১২ মার্চ বিএনপি সমর্থিত জোটের সদস্য শফিউল আলম প্রধান বললেন তিনি নাকি খালেদা জিয়াকে আর ক্ষমতায় দেখতে চান না। ঘটনাটা ভুল, তাই বলে এতবড় ভুল? জামাতের প্রতিনিধি বললেন তারা যুদ্ধঅপরাধীদের (এটা নাকি মিথ্যা মামলা) মুক্তি চান। পুরো সমাবেশ এ জামাতের আধিক্যই দেখা গেল। প্রধান সাহেবদের দল মুলত ওয়ান ম্যান দল। এছাড়া বিকল্প ধারার প্রধান বি চৌধুরি সমাবেশে গেলেন না ( কি জানি বসার জায়গা পান কি না পান এ নিয়ে হয়তো তার সন্দেহ ছিল)। অলি আহমেদের কথা ছিল সরকারকে অচল করে দেওয়ার। কিন্তু আসল কথাটি বললেন ম্যাডাম খালেদা জিয়া। নির্দলীয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারটি তার ইস্যু। ৯০ দিন সময় বেধে দিলেন এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে আহবান জানালেন।
এই সমাবেশের প্রধান উদ্দেশ্য হলো: নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এবং তার অধীনে নির্বাচন। খুবই সঙ্গত এবং ন্যায্য দাবী এতে কোনো সন্দেহ নাই।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত জোটের মধ্যেও এই নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। অন্যান্য দল (সরকারের শরীক দল) নির্দর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষপাতি। জোটের মধ্যে যদি এত মতপার্থক্য থাকে তবে জোট রাখার দরকার কি এটি আমার বোধগম্য নয়।
বিএনপির একটি নির্বাচনমুখী দল এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তার পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও তাই। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাটাই উভয় দলের প্রধ্ান বিবেচ্য হওয়া উচিত। আজকে যদি কোনো একদল নিজেদের অবস্থানে অটল থাকেন তাহলে পরেরবার এই অবস্থান বুমেরাং হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এরকম প্রমাণ সকলের কাছেই আছে।
গত তিনটি/চারটি নির্বাচনে এটি প্রমাণিত হয়েছে।
আকাশে ধ্রুবতারা একটিই। সংখ্যা দিয়ে ধ্রুবাতারকে হটানো যায় না। তেমনি যুক্তিসঙ্গত দাবী যদি একটি থাকে তাহলে তার জন্য আউল ফাউল দল নিয়ে জোট করার প্রয়োজন নেই। প্রধান সাহেবদের মত দল নিয়ে রাজণীতি করে নিজেদের মর্যাদা নষ্ট হয়। জামাতের মতো দল নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে আসল দাবী ম্লান হয়ে যেতে পারে। তখন সমালোচকরা নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিকে যুদ্ধ অপরাধীদের বাচানোর আন্দোলন হিসেবে গণ্য করবে এবং এতে মূল দাবী প্রতি মানুষের সমর্থন থাকবে না।
এ ধরনের জোটের জন্য অন্তত সুনির্দিষ্ট নীতি মালা থাকা উচিত। ব্যানার কি হবে, শ্লোগান কি হবে, দলীয় দাবী তোলা যাবে কি যাবে না এটি নিয়ে নীতি নির্ধারণ করা উচিত। তা না হলে জামাতের কর্মীরা সাইদী নিজামীর জন্য বেলুন ওড়াবে, প্রধানরা ফাউল বক্তৃতা দিয়ে নিজেদের সম্মান ভুলুণ্ঠিত করবে এবং মূলদাবী হারিয়ে যাবে।
জোটের নেতারা বিষয়টি ভেবে দেখবেন কি??