somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ কেমন ছেলে খেলা

০৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ কে বিশ্ববিদ্যালয় বানাতে চাইছে। আর এর পক্ষে বিপক্ষে চলছে নানা যুক্তি তর্ক। বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সংবাদ এ আমরা বিভ্রান্ত। আসুন দেখি কি হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কে বিশ্ববিদ্যালয় বানাতে গিয়েঃ
"চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ব্যাপক বিচরণের এক অবাধ ক্ষেত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর অনেক দেশেই আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছায়ায় হয়ে থাকে, যেমন সুইজারল্যান্ডের লিউস্যান ইউনিভার্সিটি, সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,"-প্রথম আলো (৩/৩/১২)
মন্তব্যঃ Mohammed Tanvir Jalal
২০১২.০৩.০৩ ১১:৫২
যেসকল ইউনিভার্সিটি এর নাম দিলেন সেগুলো কি মেডিকেল ইউনিভার্সিটি না পাবলিক ইউনিভার্সিটি? আমাদের মেডিকেল কলেজ গুলো যে ইউনিভার্সিটি এর অংশ সেটা জানেন? তেমনি এইসব ইউনিভার্সিটি এর আন্ডার এ মেডিকেল ফ্যাকাল্টি আছে। এইগুলো স্বতন্ত্র কোন মেডিকেল ইউনিভার্সিটি নয়। ঠিক আমাদের দেশেও একই অবস্থা।

"আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এমবিবিএস প্রোগ্রামের পরে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম যেমন এমএস, এমফিল, এমডি ইত্যাদিও নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই করতে পারবে। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুবিধাগুলো আছে, যেমন গবেষণা কর্মসূচি, পৃথিবীর অন্য দেশের সমমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময়ের সুবিধাগুলোর সঙ্গে এমবিবিএসের ছাত্ররা যুক্ত হতে পারবে। এতে তাদের জ্ঞান বাড়বে বৈ কমবে না। একই প্রতিষ্ঠানে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামগুলো থাকার ফলে এমবিবিএসের ছাত্ররা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়াশোনার সময়ই তাদের ক্যারিয়ার প্লানিং করতে পারবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এফসিপিএস, এমফিল, এমএস ইত্যাদি উচ্চতর ডিগ্রিতে ভর্তির জন্য মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করাও সহজ হবে"-প্রথম আলো (৩/৩/১২)
মন্তব্যঃ আসলে লেখক জানেন না যে এইসব মেডিকেল কলেজ এ এমএস,এমডি, এমফিল ইত্যাদি কোর্স বর্তমানে চালু আছে। ঢাকা মেডিকেল এ এই ধরনের ৩৯ টি কোর্স চালু আছে।

"বিশ্বের খ্যাতনামা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সদের জন্য উচ্চতর ডিগ্রি, যেমন এমফিল, পিএইচডি ইত্যাদির ব্যবস্থা রয়েছে। এসব উচ্চতর ডিগ্রি চালু করার মাধ্যমে তাঁদের চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। এতে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রিধারী নার্সরা বিভিন্ন গবেষণা কর্মসূচি, হাসপাতালের প্রশাসনসহ আরও অনেক জায়গায় কর্মরত থাকবেন। নার্সদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার প্লানিংয়ের সর্বোৎকৃষ্ট জায়গা।"-(প্রথম আলো ৩/৩/১২)
মন্তব্যঃ বিএসএমএমইউ থেকে কোন ডাক্তার পিএইচডি করেছে শুনিনি। প্রায় ১৫ বৎসর হয়ে গেল এই ইউনিভার্সিটি এর বয়স। আর লেখক এখানে নার্সদের পিএইচডি দিয়ে দিচ্ছেন। না হেসে হারলাম না।

"সরকারের অনুদান, খরচ, বাজেট ইত্যাদির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় একটি উচ্চাভিলাষী অবদান রাখতে পারে। উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজকে একটি বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ দিতে হয় সরকারকে, যা এই মুহূর্তে সরকারের জন্য একটি অর্থনৈতিক চাপ। কর্তাব্যক্তিদের যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে রোগীদের থেকে স্বল্প আয়, সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তির অনুদান, বিভিন্ন গবেষণা কর্মসূচি থেকে আয় ইত্যাদি দিয়ে পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে আয়-ব্যয়ে সামঞ্জস্য আনাও সম্ভব। এতে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজের আয়ে হাসপাতালটি চালাতে পারলে নিজেদের ওপর দৃঢ়তা, স্বনির্ভরতা ও একাগ্রতা বেড়ে যাবে।"-(প্রথম আলো ৩/৩/১২)
মন্তব্যঃ এইটা ভালো বলছেন অর্থনৈতিক চাপ। হা হাসপাতাল গুলোর চাপে সরকার চিরা চ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছে তাই না!!!মনে রাখতে হবে এইসব হাসপাতাল গনমানুষের শেষ আশ্রয়। নিঃস্ব জনগন এই স্বাস্থ্য সেবা পায় বলেই এইসব হাসপাতাল সারা বিশ্বে প্রশংসিত। যারা টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে না এরকম জনগনই দেশে বেশী। আর এঁদের সেই সেবা টুকুও আপনারা বন্ধ করতে চাইছেন! বাহ বাহ কি অপূর্ব সুবিচার! এইসব প্রতিষ্ঠান শুধু জনগণের স্বাস্থ্য সেবাই দিচ্ছে না তৈরি করছে মান সম্মত ডাক্তার। বিশ্ববিদ্যালয় হলে পুরো প্রক্রিয়াটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
সরকার বিশ্ববিদ্যালয় নাম দিয়ে এইসব প্রতিষ্ঠানকে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাচ্ছে। এটা নাকি সরকারী ব্যয় কমানোর একটা পদক্ষেপ। আসলে এইসব প্রতিষ্ঠানে সরকার যা ব্যয় করছে তা খুবই নগণ্য। যা ব্যয় করছে তার শত গুন বেশী প্রতিদান সরকার পাচ্ছে। যদি ঢাকা মেডিকেল কে সরকার বৎসরে ১০০ কোটি টাকা দেয় তার বিনিময়ে প্রতি বৎসর ওখানে যেসব অপারেশন হয় তার বাজার মূল্যই ১০০ কোটি টাকার উপরে অন্যান্য সেবার কথা বাদই দিলাম। আর এই ১০০ কোটি টাকার বেশীর ভাগ টাকা কিন্তু ব্যয় হচ্ছে রোগীর খাওয়া, ঔষধ , থাকা ইত্তাদির ব্যয় বহন করতেই। আমাদের দেশে মান সম্মত ডাক্তার তৈরির অন্যতম এইসব প্রতিষ্ঠান গুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় নাম দিয়ে বেসরকারি করন করে এই প্রক্রিয়াটাকে নষ্ট করলে দেশের বিশাল একটা ক্ষতি হয়ে যাবে। যে বেবস্থাপনায় বর্তমানে এইসব সরকারী প্রতিষ্ঠান ডাক্তার তৈরি করছে তার ব্যত্তয় ঘটলে ভালো ডাক্তার তৈরি কঠিন হয়ে যাবে।


"স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এখানে স্নাতকোত্তর ও উচ্চশিক্ষার কোনো ব্যবস্থা থাকছে না। সারা দেশের এমবিবিএস কোর্স সমন্বয়ের দায়িত্ব থাকবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর।""-- প্রথম আলো(১/৩/২০১২)একই কথা স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তারাও বলছেন।
মন্তব্যঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা তাঁরা বলছেন সব আন্ডার গ্রাদুয়াট নিয়ে হবে এই বিশ্ববিদ্যালয় আর সব পোস্ট গ্রাদুয়াট কোর্স থাকবে বিএসএমএমইউ তে। এটা কি করে সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটা বিষয় নিয়ে ও শুধু এমবিবিএস ডিগ্রী নিয়ে!! এমন অপরিপক্ক চিন্তা কেন? কেন বিশ্ববিদ্যালয় বানাতেই হবে? দুনিয়ার কোথাও এই জাতীয় কোন বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে নাই সেখানে আমনটি কেন করতে হবে? আসলে কিছু স্বার্থপর লোক এটাকে ব্যক্তি স্বার্থে কাজে লাগাতে চাচ্ছে আর তাই যা ইচ্চা একটা কিছু করে জগাখিচুরি পাকাতে চাচ্ছে। আমার বিশেষ অনুরোধ ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের উন্ধে উঠে একটু চিন্তা করুন তাহলেই এই দাবিটি ও যুক্তিগুলি অসার মনে হবে এবং আপনিও তখন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর বিপক্ষে মত দিবেন।



আতংকে অসহায় রোগী, আন্দোলনে কর্মচারী

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলেজ ও হাসপাতালের নার্স, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন। এতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিত্সা সেবা। এ সত্যতা একজন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা চিকিত্সা সেবার জন্য আর কোথাও ঠাঁই না পেলেও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। এ হাসপাতালে চিকিত্সা সেবার জন্য কোন ‘না’ শব্দ নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যখন আসবে তখনই রোগীরা ভর্তির সুযোগ পায়। এ হাসপাতালে আগত রোগীদের মধ্যে ৮৫ ভাগই দরিদ্র বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার ও নার্সরা জানান। এ অবস্থার মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ সুষ্ঠু পরিবেশে মোটামুটি ভালভাবে চলছে এবং রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তার কার্যক্রমও চলছে ব্যাপকভাবে, যা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাছাকাছি। মাঝখানে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার বিষয়টি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে অনেকে দাবি করেন। কোন কোন কর্মকর্তা, ডাক্তার ও বিএমএ’র কতিপয় নেতা দাবি করেন, বিরোধী দলের একটি আন্দোলনের ইস্যু তৈরি করে দেয়ার ষড়যন্ত্র এটি। যার নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রস্তাব দিয়েছেন, তার অতীত রাজনীতি বিশ্লেষণ করলে তা বুঝতে অসুবিধা হবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা বলেন, এ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত নয়। এতে দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা সুচিকিত্সা থেকে বঞ্চিত হবে। গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুল বুঝিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করছে একজন বিশেষ ব্যক্তি। তাদের আশংকা-এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য বিভাগে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এই উদ্দেশ্যে একটি চক্র বর্তমান সময়টি বেছে নেয়। প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অদিধফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিএমএ, নার্স, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, ঢাকা মেডিক্যালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হলে দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের চিকিত্সা বন্ধ হবে না। নিয়োজিত নার্স, কর্মচারীদের কোন ক্ষতি হবে না। দরিদ্ররা বর্তমান যে অবস্থায় চিকিত্সা সেবাপাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ব্যবস্থায় বিনামূল্যে চিকিত্সা সেবা পাবে। নার্স, তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা বিষয়টি না বুঝেই আন্দোলন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় হলে গরীব রোগীদের চিকিত্সা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুধু অপপ্রচার বলে মন্ত্রী জানান।

দেশে দুর্ঘটনায় আহতদের ৯০ ভাগকে চিকিত্সার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে থাকে। সব ধরনের চিকিত্সা সেবার একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র এ হাসপাতালটি। পাশাপাশি পোড়া রোগীদের আধুনিক ব্যবস্থায় একমাত্র পূর্ণাঙ্গ চিকিত্সা সেবা কেন্দ্র রয়েছে ঢাকা মেডিক্যালে। সেখান রয়েছে একশত শয্যার আলাদা বার্ন ইউনিট। ১৭০০ শয্যার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিত্সাধীন রোগী থাকে ২৮০০ থেকে ৩০০০ জন। ওয়ার্ডে, বারান্দায়, করিডোরে ও সিঁড়ির নিচে বিছানায় অবস্থান নিয়ে দরিদ্র রোগীরা সুচিকিত্সা পাচ্ছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন, এ হাসপাতালে আগত রোগীদের মধ্যে ৮৫ ভাগেরই বাইরে থেকে সুঁই সুতা কেনার ক্ষমতা নেই। ৯৬ থেকে ৯৮ ভাগ ওষুধ সামগ্রী এ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হয়। একশত ভাগ রোগী সুচিকিত্সা পাচ্ছেন বিনামূল্যে। তাদের বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে চিকিত্সা সেবা নেয়ার সামর্থ্য নেই। চিকিত্সকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. শরিফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গরীবের চিকিত্সা সেবা ব্যাহত হলে সেই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রয়োজন নেই। তবে জনগণের চিকিত্সা সেবা ব্যবস্থা বহাল রেখে স্বাস্থ্য সেবার যে কোন উন্নয়ন করতে তিনি একমত বলে জানান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, সিন্ডিকেট সদস্য ও সিনিয়র অধ্যাপকসহ ১০ জন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে একজন ছাড়া বাকি নয়জন বলেন, এ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমান ভিসিসহ অন্য কর্মকর্তাদের অনেক চেষ্টা ও নিষ্ঠার কারণে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে সরকারি অবকাঠামো পরিবর্তন ও জনবল নিয়োগে দরিদ্র রোগীর চিকিত্সা সেবা ব্যাহত হবে। কারণ বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ৬০ ভাগ বেড ফ্রি থাকলেও গরীবের তা পেতে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মোট কথা ঢাকা মেডিক্যাল আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হলে দরিদ্র রোগীদের চিকিত্সা সেবা ব্যাহত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝানো হয়েছে বলেও কর্মকর্তারা দাবি করেন। একই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসিক চিকিত্সা অনুষদের ডিন ও বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান (স্বাচিপ মহাসচিব) অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, সকল সরকারি চিকিত্সা সেবা প্রতিষ্ঠানকে স্বায়ত্তশাসনে আনা উচিত। মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের চেয়ে দরিদ্র রোগী বেশি চিকিত্সা সেবা পাচ্ছেন। ঢাকা মেডিক্যালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার বিষয়টি বাস্তবায়ন তার নৈতিক দায়িত্ব বলে তিনি দাবি করেন।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নার্স, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা দিনের বেশির ভাগ সময় আন্দোলন কর্মসূচিতে থাকায় চিকিত্সা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে জরুরি চিকিত্সা ও অপারেশনে কোন সমস্যা হয় না। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন বহির্বিভাগে তিন সহস্রাধিক রোগী আসে চিকিত্সার জন্য। জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় এক হাজার রোগীকে চিকিত্সা সেবা দেয়া হয়ে থাকে। নার্স ও কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি চিঠিতে জানিয়ে দিয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় হলে নার্স, তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকরির কোন ক্ষতি হবে না। তাদের বর্তমান সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকবে। দরিদ্র রোগীদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা হবে না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, নার্স, তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব আব্দুল খালেক বলেন, আইপিজিএমআরকে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করায় কর্মকর্তা, নার্স, তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের চরম দুর্দশা হয়েছে। তা সকলের জানান। গত শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার বিষয়টি তারা মেনে নেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।

গত ২৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি চিঠিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ঢাকা মেডিক্যালকে বিশ্ববিদ্যালয় করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি জানানো হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১১ জানুয়ারি থেকে নার্স, তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার মোঃ সিফায়েত উল্লাহ বলেন, ঢাকা মেডিক্যালকে বিশ্ববিদ্যালয় করার সিদ্ধান্ত শীর্ষ পর্যায়ের। সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করার সময় খুঁটিনাটি বিষয়গুলো যাচাই করে দেখা হবে। এতে কারো সুযোগ-সুবিধা কর্তন করা হবে না বলে জানান তিনি।- ইত্তেফক(১/৩/১২)

উপসংহারঃ

আমাদের দেশে সব মেডিকেল কলেজ গুলই বিশ্ববিদ্যালয় এর মেডিকেল ফ্যাকাল্টি এর অংশ। সারা বিশ্বে তাই। দুনিয়ার সেরা মেডিকেল প্রতিষ্ঠান হাভারড মেডিকেল স্কুল হাভারড বিশ্ববিদ্যালয় এর অংশ। তাই শুধু মেডিকেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার। এইখানে অনেক তথ্য ভুল দেয়া হয়েছে। বর্তমানে আমাদের মেডিকেল কলেজ গুলতে আন্ডার ও পোস্ট গ্রাদুয়াট একসাথেই হচ্ছে তাই বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেই সুযোগ হবে কথাটা ভুল। গভীর ভাবে চিন্তা করলে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কারো জন্যই সুফল বয়ে আনবে না। স্বল্প সংখ্যক স্বার্থপর লোক এটা করতে চাচ্ছেন। ঢাকা মেডিকেল এর বর্তমান প্রিন্সিপাল নিজের মুখে বলেছেন যে উনাকে বিএসএমএমইউ এর সিন্ডিকেট থেকে বাদ দেয়ায় উনি চেলেঞ্জ করেছেন যে উনি ঢাকা মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় বানাবেন। উনি খুবই ক্ষমতাবান লোক। কৌশলে স্বার্থপর একটা খুবই ক্ষমতাশালী দলকে এই কাজে নামিয়ে দিয়েছেন। এখানে যারাই বিশ্ববিদ্যালয় এর পক্ষে কথা বলছেন তাদেরই ব্যক্তি স্বার্থ জড়িত। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে রোগী, বেশীরভাগ ডাক্তার, কর্মচারী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক ডাক্তার বিশ্ববিদ্যালয় হলে ওখানে যব পাবেন মোটামোটি নিশ্চিত তারাও ব্যাপারটা চাচ্ছেন না বিবেকের তাড়নায়। কারন তাঁরা বুঝতেছেন আসলে ব্যাপারটা কোন ভাবেই কল্যাণকর হবে না। কিছু শিক্ষক যাদের অবসরে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, যারা সম্প্রতি অবসরে গেছেন, দলীয় নেতা কর্মী তাঁরা উঠে পড়ে লেগেছেন বিশ্ববিদ্যালয় নাম দিয়ে ব্যক্তি ফায়দা হাছিলের জন্য। সরকার যেহেতু দলীয় তাই সরকার ও এতে সায় দিয়েছে। কিন্তু সরকারের উচিৎ এহেন জনবিরোধী কাজ হতে বিরত হওয়া। বিএসএমএমইউ দিয়ে জনগণের কোন উপকার হয়নি। ওখানে সাধারন লোকের চিকিথসার ব্যয় অনেক বেড়েছে, সরকারী ডাক্তারদের ট্রেনিং এর রাস্তা বন্ধ হয়েছে, দলাদলি ছাড়া ওখানে কারো কোন সুযোগ নাই, মনে হয় এটা শুধুই একটা দলীয় সংঘটন। বিশ্ববিদ্যালয় হলে ল্যাব এইড এর মতো প্রতিষ্ঠানের লাভ ওনাদের কনসালটেন্ট রা অনেকেই ঢাকা মেডিকেল এর প্রফেসর তাই যেহেতু তাঁদের বদলী হওয়ার সুযোগ নাই তাই ওনাদের ওখানে নিরবিচ্ছিন্ন প্র্যাকটিস করতে পারবে, চাকুরীর মেয়াদ বাড়লে প্র্যাকটিস ও ভালো জমবে, বিশ্ববিদ্যালয় হলে ঢাকা মেডিকেল এ রোগী ভর্তি কমে যাওয়ার আশংকা থাকবে আর এতে ওদের রোগী বেড়ে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলে লেখক জানেন না যে এইসব মেডিকেল কলেজ এ এমএস,এমডি, এমফিল ইত্যাদি কোর্স বর্তমানে চালু আছে। ঢাকা মেডিকেল এ এই ধরনের ৩৯ টি কোর্স চালু আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা তাঁরা বলছেন সব আন্ডার গ্রাদুয়াট নিয়ে হবে এই বিশ্ববিদ্যালয় আর সব পোস্ট গ্রাদুয়াট কোর্স থাকবে বিএসএমএমইউ তে। এটা কি করে সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটা বিষয় নিয়ে ও শুধু এমবিবিএস ডিগ্রী নিয়ে!! এমন অপরিপক্ক চিন্তা কেন? কেন বিশ্ববিদ্যালয় বানাতেই হবে? দুনিয়ার কোথাও এই জাতীয় কোন বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে নাই সেখানে আমনটি কেন করতে হবে? আসলে কিছু স্বার্থপর লোক এটাকে ব্যক্তি স্বার্থে কাজে লাগাতে চাচ্ছে আর তাই যা ইচ্চা একটা কিছু করে জগাখিচুরি পাকাতে চাচ্ছে। আমার বিশেষ অনুরোধ ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের উন্ধে উঠে একটু চিন্তা করুন তাহলেই এই দাবিটি ও যুক্তিগুলি অসার মনে হবে এবং আপনিও তখন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর বিপক্ষে মত দিবেন।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×