সেলিম সাহেব বিবাহ করতে দেরি করে ফেলেছেন। কোন এক ঝন্ঝাটে তার স্ত্রীর বাচ্চা হতেও দেরি হচ্ছে। পাড়ার সবাই বলাবলি করছে সেলিম সাহেব কেন এখনও বাচ্চা নিচ্ছে না। আমাদের বন্ধু গ্রুপের অপু মাঝেই মাঝেই সেলিম সাহেব কে নিয়ে ফান করে। ও ফান করে মাঝেই মাঝেই একটি কথা বলে। আর তা হলো সেলিম সাহেব বিয়ে করতে দেরি করেছে তো, তাই তাদের বাচ্চা হতেও দেরি হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই সেলিম সাহেবের চুলও প্রায় ৮৫ ভাগ পেকে গেছে। আমাদের জানা মতে সেলিম সাহেব যখন বিয়ে করে তখন তার পাকা চুলের পরিমাণ ছিল ৫ ভাগের কাছাকাছি। এখন সেলিম সাহেবের অতীত বংশধরদের একটু পরিচয় করিয়ে দেই আপনাদের সাথে। সেলিম সাহেবের এক বাবা আর এক মা ছিলেন। তিনাদের এক কন্যা সন্তান ছিলেন কিন্তু কোন জটিল রোগে সে কন্যা সন্তানটি অনেক আগেই পৃথীবি থেকে গত হয়েছেন। সেলিম সাহেবের বোন গত হওয়ার আর একটি যথার্ত কারন হলো সেলিম সাহেবের বাবার এত টাকা ছিলেন না যে তারা তাদের মেয়েটিকে উচ্চতর চিগিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যেতে পারেন। সঙ্গত কারনেই তাদের প্রাণপ্রিয় মেয়ে যৌবন প্রাপ্ত হওয়ার আগেই মৃত্যু বরন করেছে। এত কষ্টের মধ্যেও সেলিম সাহেবের বাবা সেলিম সাহেব লেখাপড়া করিয়েছেন। এস এস সি এবং এইস এস সি তে এক বার করে মোট দুইবার এবং বি এ তে একবার ফেল করার পর সেলিম সাহেব অবশেষে পাস করেছে। গ্রামে স্কুলগুলোতে অনেক ধর্না দিয়েও কোন স্কুলেই সেলিম সাহেব তার চাকরীর ব্যবস্থা করতে পারে নাই। কারন স্কুল গুলোতে চাকরী পেতে হলে স্কুল কমেটিসহ গ্রামের নেতাগুলোকেও যথেস্ট পরিমান ঘুষ দিতে হয়। সেলিম সাহেবের ঘুষ দেওয়ার উপায়টি বের করতেও প্রায় দুই তিন বছর লেগে যায়। অবশেষে সেলিম সাহেব একটা উপায় খুজে পায়। সেটি হলো বিবাহ করিয়া যৌতুক নিয়া সেই যৌতুক দিয়া একটা স্কুলের চাকরী সে জোগার করিবে।
(চলবে......)