somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিরাজ ও বিজ্ঞান

০৭ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিখেছেনঃড. মোঃ আতাউর রহমান মিয়াজী

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সর্বশ্রেষ্ঠ মোজেজা হচ্ছে মিরাজ। এটা প্রিয় নবীর (সা.) জীবনে এবং ইসলামের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তিনি ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো মানুষ, এমনকি অন্য কোনো নবী-রাসুলের জীবনে এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হয়নি এবং কিয়ামত পর্যন্ত হবেও না।

স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবিব, রাহমাতুল্লিল আলামীন হজরত মুহাম্মদকে (সা.) দাওয়াত করে হজরত জিব্রাইলের (আ.) প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ‘বুরাক’ ও ‘রফরফে’ আরোহণ করিয়ে ‘আরশে আজিম’-এ নিয়ে আসেন। আর ইসলামের ইতিহাসে এটাই হচ্ছে মিরাজ।

মহানবীর (সা. এ পরিপূর্ণ ভ্রমণ দুটি পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্ব ইসরা, যা মহাগ্রন্থ আল কুরআনের আলোকে সত্য প্রমাণিত এবং দ্বিতীয় পর্ব মিরাজ বা ঊর্ধ্বগমন, যা অসংখ্য সহি ও মুতাওয়াতির হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের সুরা বনি ইসরাইলের প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে, ‘পবিত্রতম সেই মহান সত্তা, যিনি তাঁর প্রিয়তম বান্দাকে {প্রিয়তম রসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)} রাতের কিয়দংশে (অতি সামান্য সময়ে) মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত পরিভ্রমণ করিয়েছেন, যার চতুষ্পার্শস্থ এলাকাকে তিনি মহা বরকতময় করেছেন ও অসংখ্য নিদর্শন দ্বারা ভরপুর রেখেছেন। আর নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা, অর্থাৎ তিনি সব কিছু শোনেন ও দেখেন। এ পর্বই হচ্ছে ইসরা।

হিজরতের প্রায় এক কিংবা দেড় বছর পূর্বে ২৬ রজব দিবাগত রাতে এ ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়। রাতটি ছিল অমাবস্যার ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এ রাতেরই কিয়দংশে হজরত জিব্রাইল (আ.) আল্লাহ তাআলার নির্দেশে ‘বুরাক’ নামক স্বর্গীয় বাহনের সাহায্য মহানবীকে (সা.) কাবা প্রাঙ্গণ থেকে ‘বায়তুল মুকাদ্দাস’-এর মসজিদে আকসাতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ইমামতিতে লক্ষাধিক পয়গম্বর আল্লাহ তাআলার নির্দেশে দুই রাকাত সালাত আদায় করেন। আর তিনি ‘ইমামুল মুরসালিন’ হিসেবে বিবেচিত হন। অতঃপর সেখান থেকে তিনি ঊর্ধ্বলোক পরিভ্রমণ করেন। আর এটাই হচ্ছে দ্বিতীয় পর্ব- ‘মিরাজ’। এ পরিভ্রমণে তিনি অতীত, বর্তমানে ও ভবিষ্যতের ঘটনাবলি পরিদর্শন করেন এবং সৃষ্টি ও সৃষ্টিজগতের সব রহস্য সম্পর্কে অবহিত হন। এর সঙ্গে বেহেশত-দোজখ, আরশ-কুরসি, লওহ-ক্বলম প্রভৃতি সবকিছুই তিনি পরিদর্শন করেন।

তিনি সপ্ত-আকাশ অতিক্রম করে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ পৌঁছেন এবং সেখান থেকে ‘রফরফ’-এ আরোহণ করে সর্বলোকের অতীত ‘কাবা কাওসায়েন আও আদনা’-এর মাকানে মহান আল্লাহর খাস কক্ষে প্রবেশ করেন এবং আল্লাহপাকের দিদার লাভে ধন্য হন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে তার বিভিন্নমুখী প্রয়োজনীয় কথাবার্তা হয় এবং তাঁর কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, মদিনায় হিজরত পরবর্তী ইসলামী রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় প্রত্যক্ষ প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য নির্দেশাদি ও পরামর্শসহ মহানবী (সা.) আবার এ মাটির পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন করেন।

সমগ্র পরিভ্রমণ ও তৎসংশ্লিষ্ট যাবতীয় কর্তব্যকর্ম সমাপনান্তে তিনি যখন ফিরে এলেন, তখন তিনি দেখলেন যে পৃথিবীতে তখন অতি সামান্য সময় অতিবাহিত হয়েছে। ওজুতে ব্যবহৃত পানি তিনি যেমন গড়াতে দেখে গিয়েছিলেন, ফিরে এসেও দেখলেন ঠিক তেমনি গড়াচ্ছে এবং শিকলও আগের মতো নড়ছে। তাঁর সমগ্র ভ্রমণে আরো বহু ঘটনা ঘটেছিল, অসংখ্য ফেরেশতা এবং পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও কথাবার্তা হয়েছিল।

বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ‘আপেক্ষিক তত্ত্ব’ প্রকাশিত হওয়ার পর মিরাজসংক্রান্ত এ বিবরণ নিয়ে এখন আর কোনো প্রশ্ন সাধারণত উত্থাপিত হয় না। বিজ্ঞান দ্বারা এটি প্রমাণিত। একবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নে বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতি ও অগ্রগতির এ যুগে মিরাজ ও ইসলামের অন্যান্য বহু দিক ও বিভাগ সম্পর্কে মুসলিম-অসুমলিম নির্বিশেষে সবাই ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। অন্যদিকে আমরা লক্ষ করি, ‘ইলমে মাআরিফাত’ বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানের যে সূত্র দ্বারা মিরাজকে সহজে উপস্থাপন করা যায়, তার সঙ্গেও বিজ্ঞানের সূত্রের কোনো গরমিল নেই। ইলমে মাআরিফাত সমগ্র সৃষ্টিকে তিনটি ‘আলম’ বা জগতে বিভক্ত করে। এ তিনটি স্তরের প্রথমটি হচ্ছে ‘আলমে শাহাদাত বা আলমে খালক’ অর্থাৎ ব্যক্তিজগৎ বা সৃষ্টজগৎ। দ্বিতীয় স্তরটি হচ্ছে ‘আলমে গায়েব’ বা অদৃশ্য জগৎ। এটি আমাদের স্থূল ইন্দ্রিয় জ্ঞানের অতীত এক সূক্ষ্ম জগৎ। সৃষ্টির তৃতীয় স্তরটি হচ্ছে ‘আলমে মেসাল’ বা প্রতিরূপ জগৎ। এটিই হচ্ছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি হচ্ছে পূর্ববর্তী জগৎ দুটোরই অবিকল প্রতিরূপ- ঠিক যেন দর্পণে প্রতিফলিত প্রতিবিম্ব। জড় জগৎ ও রূহানী জগতের জড় ও অজড় সবকিছুই এখানে প্রতিবিম্বিত রূপে বর্তমানে। এ জগতের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, এখানে স্থান, কাল ও গতি বলে কিছু নেই, এখানে সবই বর্তমান, সর্বলোকের। স্থান, কাল ও গতি এখানে পরস্পরের সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে আছে। বিজ্ঞান বর্ণিত বিশ্বও ইলমে মারিফাত বর্ণিত বিশ্বের মতোই তিনটি স্তরে বিভক্ত। যথা জড় জগৎ, অতীন্দ্রিয় জগৎ ও ঋণাত্মক পদার্থ জগৎ বা প্রতিরূপ জগৎ। কাজেই ইলমে মারিফাত ও বিজ্ঞানের ধারণা এ ক্ষেত্রে অভিন্ন।

এখন দেখা যাক এ অভিন্ন ধারণার ভিত্তিতে মিরাজের স্বরূপ ও প্রকৃতি কেমন। এ তত্ত্বের ভিত্তিতে মিরাজকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, মাসজিদে হারাম থেকে মাসজিদে আকসা পর্যন্ত অর্থাৎ কাবা শরিফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.) যে পরিভ্রমণ করেন, তা হচ্ছে জড় জগতে ভ্রমণ। অতঃপর সেখান থেকে তিনি ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ পর্যন্ত যে ভ্রমণ করেন তা হচ্ছে আলমে গায়েব বা সূক্ষ্মজগৎ পরিভ্রমণ এবং সর্বশেষে আরশে আজিম পর্যন্ত যে আলাদা জগৎ তিনি পরিভ্রমণ করেন, তা হচ্ছে আলমে মেসাল বা প্রতিরূপ জগৎ। তিনি এ জগতে প্রবেশ করেই স্থান-কালের অতীত অবস্থায় সৃষ্টির সব রহস্য অবগত হন এবং ভূত-বর্তমান ও ভবিষ্যতের সবকিছু চাক্ষুষ দর্শন করেন এবং আল্লাহর দিদার লাভ ও তাঁর সঙ্গে কথোপকথন সম্পন্ন করে পুনরায় জড় জগতে ফিরে আসেন। ফিরে এসে তাই দেখেন যে, পৃথিবীর সময়ের হিসাব মোতাবেক অতি সামান্য সময়ই এতে অতিবাহিত হয়েছে। সুতরাং বিজ্ঞান মিরাজকে আরো সহজে বোঝার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

মিরাজের সময় মহানবীর (সা.) ব্যবহৃত বাহনের নামটিও এক্ষেত্রে বিশেষ প্রণিধানযোগ্য। এর নাম হচ্ছে ‘বুরাক’ অর্থাৎ

মহাবিদ্যুৎচালিত বাহন, যার গতিবেগ বিদ্যুৎ বা আলোর গতিবেগের চাইতেও বেশি ছিল। কিন্তু লক্ষণীয় যে, তা ছিল ‘মহানবী (সা.)-এর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন’। বর্তমান বিশ্বে নিয়ন্ত্রিত মহাশূন্যযানের কথা সবাই অবগত আছেন এবং ভবিষ্যতে ‘ফোটনরকেট’ বা আলোর গতিবেগসম্পন্ন যানের কথাও মানুষ চিন্তা করছেন। যা হোক, বুরাকের গতিবেগ রাসুলুল্লাহর (সা.) সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল বলে তা কখনো আলোর গতিবেগের সমান এবং কখনো বা প্রয়োজনের তাগিদে কমবেশি করা হয়েছিল। কাজেই কাবা শরিফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত তাঁর যে পরিভ্রমণ ছিল, তাতে সম্ভবত আলোর চাইতে কম গতিবেগে ‘বুরাক’ পরিচালিত হয়েছিল বিধায় তাতে ‘রাতের কিয়দংশ’ বা সামান্য সময় লেগেছিল, কিন্তু সেখান থেকে ঊর্ধ্বলোকে তাঁর যে ভ্রমণ, তা আলোর গতিবেগের সমান বা এর চাইতেও বেশি ছিল। ফলে এ অংশের ভ্রমণে কাল ছিল স্থবির এবং পরে পশ্চাৎগামী। বিশেষ করে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ হতে ‘আলমে মেসাল’ বা প্রতিরূপ জগতে পরিভ্রমণের সময় ‘বুরাক’ থেকে বেশি গতিবেগসম্পন্ন ‘রফরফ’ ব্যবহৃত হয়েছিল বলে সেখানে কাল ছিল পশ্চাৎগামী। ফলে তিনি সেখানে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সম্যক অবহিত হয়েছিলেন ও চাক্ষুষ পরিদর্শন করেছিলেন। সব মিলিয়ে তাঁর পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত সময় লেগেছিল অতি সামান্য।
মিরাজ বা ঊর্ধ্বলোক পরিভ্রমণের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে রাসুলুল্লাহর (সা.) বক্ষ বিদারণের বিষয়টিও এখানে লক্ষণীয়। আমরা জানি, সার্জিক্যাল অপারেশনের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডকে বক্ষবিদারণের মাধ্যমে দেহের বাইরে এনে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে আবার যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করা বর্তমান যুগে কঠিন কিছু নয়। তা ছাড়া আজকাল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র কয়েক শ মাইল দূরত্বের মধ্যে এবং প্রতি সেকেন্ডে মাত্র সাত মাইলের মতো গতিবেগে পরিভ্রমণের জন্য যেসব মহাশূন্যচারীকে কক্ষপথে পাঠানো হচ্ছে, তাদেরও বহু সময়ব্যাপী বহুবিধ দৈহিক ও মানসিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এমনভাবে প্রস্তুত করে নেওয়া হয়, যাতে তারা অপার্থিব পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে। জড় জগতের এ সীমিত পরিসর ও সামান্য গতিবেগে পরিভ্রমণকারীকেই যদি এভাবে প্রস্তুত করে নিতে হয়, তাহলে স্থান-কালের অতীত ঊর্ধ্বলোকে প্রতি সেকেন্ডে এক লাখ ছিয়াশি হাজার মাইল বা এর চেয়েও অধিক গতিবেগে পরিভ্রমণকারীর জন্য সেরূপ পূর্বপ্রস্তুতির প্রয়োজন অবশ্যই আছে এবং ওই ভ্রমণে যেসব অভিজ্ঞতা তিনি লাভ করবেন সেগুলো পরিপূর্ণভাবে আত্মস্থ করার লক্ষ্যে বক্ষবিদারণের মাধ্যমে তাঁর কালব ও ‘বিশ্বাস ও হিকমত’ অনুপ্রবিষ্ট করার মাধ্যমে শক্তিশালী করা নিশ্চয়ই জরুরি ছিল।

অতঃপর মিরাজ সম্পর্কিত যে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি সম্পর্কে খানিকটা আলোচনা করতে চাই তা হচ্ছে প্রত্যাবর্তনের পর কাবা প্রাঙ্গণে অবস্থান করে রাসুলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক বায়তুল মোকাদ্দাস দর্শন ও লোকজনের সামনে এর বিবরণ প্রদান। মহানবী (সা.) যখন মিরাজের বিবরণ লোকজনের সামনে প্রদান করছিলেন তখন মক্কার অবিশ্বাসী কুরাইশ নেতৃবৃন্দ, বিশেষ করে আবু জাহল রাসুলুল্লাহকে (সা.) মিথ্যাবাদী ও পাগল প্রতিপন্ন করার জন্য তাঁর কাছে চূড়ান্তভাবে বায়তুল মোকাদ্দাসের যথাযথ বর্ণনা দাবি করে। এতে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম পর্যায়ে কিছুটা বিব্রতবোধ করেন এবং চিন্তিত হয়ে পড়েন কারণ সেখানে তিনি গিয়েছিলেন অতি অল্প সময়ের জন্য, তা আবার অমানিশার ঘোর অন্ধকারে। তা ছাড়া এটাও তিনি জানতেন না যে, পরে তাঁকে মক্কাবাসীর সামনে এর বর্ণনা দিতে হবে। সুতরাং এ অবস্থায় বিব্রতবোধ করাটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু ঠিক তখনই আল্লাহতায়ালার নির্দেশে হজরত জিব্রাইল (আ.) স্বীয় পাখার ওপর বায়তুল মোকাদ্দাসসহ রাসুলুল্লাহর (সা.) সামনে উপস্থিত হন। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তা দেখে দেখে সবার সামনে তা উপস্থাপন করেন। এখানে প্রশ্ন জাগে, বায়তুল মোকাদ্দাস কি বাস্তবেই তাঁর সামনে উপস্থাপিত হয়, না এর প্রতিচ্ছবি? জবাবে বলা যায় উভয়টিই মহান আল্লাহপাকের পক্ষে অবশ্যই সম্ভব। অন্য কথায় বলা যায় আজকাল টেলিভিশনের পর্দায় যে কোনো দূরের বস্তুকে চাক্ষুষ দর্শনীয় করে তোলা বিজ্ঞানের কল্যাণে খুব সহজ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। কাজেই মহাবিজ্ঞানী মহান আল্লাহও যদি এ ধরনের কোনো পদ্ধতিতে দূরবর্তী বায়তুল মোকাদ্দাসের প্রতিচ্ছবি হজরত জিব্রাইলের (আ.) মাধ্যমে মহানবীর (সা.) সামনে উপস্থাপন করেন, তাতে আশ্চর্যের কী আছে? বরং আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়টিকে সহজে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে।

সর্বশেষ একটি কথা বলা জরুরি মনে করছি এবং তা হচ্ছে এই যে, মহান আল্লাহতাআলার নূরকে সচক্ষে তথা চর্মচক্ষে দেখা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। হজরত মুসা (আ.)-এর মতো একজন বিশিষ্ট পয়গম্বরও তা পারেননি, বরং আল্লাহর নূর দর্শনে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। অথচ কী আশ্চর্য, মহানবীকে (সা.) স্বয়ং প্রভু তাঁর সান্নিধ্যে ডেকে পাঠালেন, আমন্ত্রণ পেয়ে তিনি তাঁর সামনে উপস্থিত হলেন এবং তাঁর দিদার লাভে ধন্য হলেন। আল্লাহকে চাক্ষুষ দর্শনের পরও তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। আর এ ক্ষমতা স্বয়ং আল্লাহপাকই তাঁকে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনিই সম্পূর্ণ সফল এবং এটাই তাঁর শ্রেষ্ঠত্বর বড় প্রমাণ।
লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক
উৎস : ধর্মীয় ওয়েবসাইট
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রম্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪১


জাতীয় পরিচয় পত্রে ভূল সংশোধন কক্ষে মহিলা অফিসার বললেন - কি করতে পারি?

- সুতির নাইটি টা ঠিক করতে হবে।

এই শুনে মহিলা তো রেগে আগুন। খেঁকিয়ে উঠলেন রীতিমতো।
- অসভ্যতা করছেন?... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওহাবী বাতিল মতবাদের স্বরূপ উন্মোচন

লিখেছেন মীর সাখওয়াত হোসেন, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭

নজদী ওহাবীদের সম্পর্কে আলােচনা করার পূর্বে নজদ দেশ সম্পর্কে আলােকপাত করতে চাই। আরবের মক্কা নগরীর সােজা পূর্ব দিকের একটি প্রদেশের নাম নজদ । এখন উক্ত নজদ দেশটি সৌদি আরবের রাজধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সর্তকতা।

লিখেছেন কাল্পনিক_ভালোবাসা, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর ব্লগারদের কাছে যদি স্থানীয় ঝড়ের অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফ্রিল্যান্সার ডট কম

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৬ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৭

কাজের বুয়া ফ্রিল্যান্সার মাসে কামায় লাখ
হুমড়ি খেয়ে ডিগবাজি তায় পঙ্গপালের ঝাঁক
টিপলে বাটন মোবাইলটাতে ডলার আসবে রোজ
ডট কম কোচিং সেন্টার আমরাই দেব খোঁজ।

অমুকের বউ তমুকের ঝি হাতিয়ে নিচ্ছে সব
তোমরা মিছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×