somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার আমি- "এখনকার আমি"

০৬ ই মার্চ, ২০১২ ভোর ৪:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি তোমাদের কোনদিন দোষ দেবোনা। হয়তো আমার সিদ্ধান্তে, তোমাদের প্রভাব ছিল, ছিল প্রত্যক্ষ আদেশ। কিন্তু ভেবোনা, তোমাদের আলোচনা, প্রভাবিত করা কথাগুলোকে কোনদিন এতটুকু দোষারোপ করার মতো। স্বীকার করবো তোমারা - তোমাদের কথাগুলো, আমার উপর প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে, তবু আমার সিদ্ধান্ত, কেবল আমার। আমি আমার জীবনে যত সিদ্ধান্তই নিয়েছি- হোক সেগুলো ভুল, হোক সঠিক, হোকনা কল্পনাভিত্তিক- আমার সিদ্ধান্ত কেবল আমার। আমি কোনদিন কারো সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নেইনা। নিতে চাইনা।

ভেবোনা- আমি একরোখা। বলোনা- আমি নিজের মত মতো চলি।

আমার জীবনে প্রতিটা মুহূর্তে আমি বিশ্বাস করি -মানুষ নিজে জানে সে কোথায় দাড়িয়ে আছে, কোথায় তার গন্তব্য। অন্য একজন মানুষ যত আপনই হোক কোনদিন তার জায়গা থেকে তাকে অনুভব করতে পারবেনা, পারবেনা তার মতো করে ভাবতে। আমি তাই হ্য়তো চাইনা অন্য কোন মানুষকে প্রভাবিত করতে। আজ আমার প্ররোচনায় তুমি একটা সিদ্ধান্ত নেবে, কাল তুমি অবশ্যই মুখোমুখি হবে কোন অজানা বাস্তবতার। তুমি কি পারবে সেসময় মোকাবেলা করতে? পারবেনা। কিন্তু সিদ্ধান্তটা যদি তোমার হয়, তুমি জানবে তোমার করনীয় কি? হতে পারে - তোমার কোন অভিজ্ঞতা নেই, নেই কোন পূর্ব পরিকল্পনা, তবু তুমি পারবে। কেননা তুমি জানো তোমার মন কি চায়। কিন্তু তোমার সিদ্ধান্তটা যদি অন্যের হ্য়, হয় অন্যের মন মতো- কোন অস্বাভাবিক মুহূর্তে তোমার পরামর্শদাতার অনুপস্থি তোমাকে করে দেবে অসহায়। কেননা তুমি কেবল জানো এই সিদ্ধান্তের পরিনতিতে "তুমি কি চাও", জানবেনা কি হতে পারে তোমার বাধা। না আমি বলতে চাইছিনা সিদ্ধান্তটা তোমার মানেই তুমি জানো তার আদ্যপান্ত, তুমি পার হতে পারবে সকল বাঁধা। এমনকি কোন বাঁধা ছাড়া সফল ভাবে তোমার প্রত্যাশা পূরন হওয়া মানেই তোমার সিদ্ধান্তটা সঠিক- সেটাও বলা যায়না। তবু আমি কেবল একটা বাক্য বিশ্বাস করি - আমার বিচার যদি ভুল হয়, আমি তা শোধরাবার পথ জানবো, পরিবর্তন করার জন্য যা করা দরকার তা করার ক্ষমতা আমার আছে। যদি শোধরাতে না পারি তবু আমার মনে কোন আক্ষেপ থাকবেনা। আমি কোনদিন অন্যকেওকে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনার অংশীদার মনে করবোনা, রাখবোনা অভিমান। আমি আমার সিদ্ধান্ত নেব কেবল আমার নিজের কথা বিবেচলা করে কারন আমার এই জীবন একটাই।

আমি জানি - তোমরা আমাকে একরোখা ভাবো, ভাবো নির্বোধ। হয়তো আমি তাই । তবু আমি জানি- আমার বিচারের বিষয় কি ছিল, জানি- আমি কি চাই, আমার যোগ্যতা কতটুকু। না পাওায়ার মাঝে কি সুখ আছে। কেননা না পাওয়ার মাঝেও যতটুকু পাওয়া সেওতো কেবল আমারই অর্জন। আমার ব্যর্থতায়, আমি বিমর্ষ হই না কারন আমার বিচারকে আমার সঠিক প্রমান করতে হবে, তাই হতাশাকে প্রশ্রয় দিলে আমার ক্ষতি।

তোমরা ভেবে দেখছো কি? তোমরা খাবার টেবিলে হাজারো বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত দাও, পরে যখন সেই মতামত অনুসারে কাজ হয় না, তখন তোমরা কি করো? তোমরা তা মনেও রাখনা। এখন বোলোনা আমি "পুরোনো কাসুন্দি ঘাটি" । আসলে আমার স্বভাবটাই এমন। ভুলতে পারিনা সাধারন, ছোটখাটো অবিবেচ্য বিষয় গুলো।

মনে পরে আমি যখন অনার্স শেষ করে বাসায় ফিরলাম, তখনকার কথা? সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হলো, চার বছর অনার্স ডিগ্রীধারীরা, মাস্টার্স ডিগ্রীধারী সমান মূল্যায়ন পাবে। আমি অতি সাধারন জনগন। সুদুর প্রসারি আলোচনা আমার বোধগম্য কম হয়। তবে কেবল এতটুকু বুঝি- আজ আর আগামীর মাঝে বিস্তর ব্যবধান।

তোমাদের আদেশ - "মাস্টার্স করার দরকার নেই, চাকুরীর চেষ্টা করো"। চাকুরী করে, টাকা কামাই করা মূল উদ্দেশ্য না। উদ্দেশ্য কেবল অপ্রয়োজনে সময় নষ্ট করে একটা ডিগ্রী নেবার কি দরকার। আমি খুব ভালো ছাত্র কোনদিনই ছিলাম না যে, আরো একটা বছর পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকবে। তবে আমি মানি এতদুর পথ পার হবার পর, কেন আরো একটু কষ্ট করে আরেকটা ডিগ্রী নেবনা। হোকনা আমার অজর্ন এখনই সবার সমান, তাতে কি? আমার আরেকটা অর্জন তবে আমাকে আরো একধাপ এগিয়ে দেবে, অন্যদের সাথে প্রতিযোগীতায়।

সেদিনও তোমরা, আমাকে ভুল বুঝলে। আমি নাকি বেশি বুঝি। ইত্যাদি। সব কথার মাঝে - যে কথাটা আমাকে আঘাত করে ছিল- আমি নাকি আমার পরিবার পরিজন থেকে দুরে থাকতে ভালোবাসি/ কি আছে আমার ঐ ক্যাম্পাসে/ আম্মু থাক - ও আসলে দুরে থাকতে চায় ইত্যাদি। একবারও ভেবেছিলে এই কথাগুলোর অর্থ কি দাড়ায়? আমি যাইনি আমার ক্যাম্পাসে ফিরে, আমি করিনি মাস্টার্স। তবে ভেবোনা তোমাদের বাকপটুতা আমাকে এতটা প্রভাবিত করতে পেরেছে। আমি যাইনি একদিন সকালের, আমার এক অনুভূতির প্ররোচনায়। আসলে জানো কি, আমিই আমার সবচেয়ে বড় শত্রু, আবার আমিই আমার আস্থা।

হঠাৎ কেন জানি সেদিন সকালে মনে হলো, জীবনটা কয়দিনের? আজ অন্তত বাবা-মায়ের যত্ন নেয়া দরকার, যতটুকু পারি কাছাকাছি থাকা দরকার। বাবা-মাকে ঘিরে আমার ভালোলাগার সময়গুলো আমার জন্য দরকার। জানি না তো, আর পাবো কিনা এভাবে? হয়তো চাকুরী, ব্যস্ততা, বাস্তবতা আমাকে এই সুযোগ আর দেবেনা কোনদিন। আমার এই সিদ্ধান্ত আমার হয়েই থাকলো পরবর্তি কয়েক মাস, তোমরা জানতেও চাইলেনা। কিন্তু জানো কি, তোমাদের বড় বড় কথা কিন্তু আব্বু- আম্মুকে প্রভাবিত করেনি এতটুকু। আমি যখন জানালাম - আমি মাস্টার্স করবোনা, আব্বু-আম্মু দুজনই আলাদা আলাদা ভাবে আমাকে সিদ্ধান্তের কারন জানতে চেয়েছিলেন। আমি মিথ্যা বলিনি। সেদিন দুজনই আমাকে আবেগের বশে সিদ্ধান্ত নিতে মানা করেছিল। কিন্তু জানো তো, আমি যা করবো বলে ঠিক করে ফেলি তা আর সচরাচর পরিবর্তন করিনা। এবারও অটল রইলাম। যদিও আমার নেয়া সিদ্ধান্ত কতটুকু সঠিক, আর কতটুকু ভুল ছিল তার হিসাব করতে বসলে, আমি নিজেই বুঝি এলোমেলো করে ফেলবো হিসাবের খাতার, পাতাশেষের গণনা।

আজ ৫বছর পর- আমি কেবল বলবো, তোমাদের আদেশ, সুদূর প্রসারি চিন্তার বাস্তব রুপটা যখন দেখলে এই পাঁচ বছরে, কই কোনদিন তো বলনি নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তের কথা। স্বীকার তো করলেনা, তোমাদের ভুল দুরদর্শীতার কথা । যখন তোমরাই চার বছরের অনার্স পাশ করার পর মাস্টার্সে ভর্তি হলে, কোথায় ছিল সরকারি প্রজ্ঞপনের উপর আস্থা ? হতে পারে তোমরা ভালো ছাত্র ছিলে, পড়ালেখা করেছো নিজের শহরের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেতে হয়নি আমার মতো দুরের কোন ক্যাম্পাসে, অনেক টাকা খরচ করতে হয়নি হোস্টেলে থাকার কারনে। তাতে কি? হ্যা, আমি চার বছরের কোর্স শেষ করেছি সাড়ে পাঁচ বছরে। আমার ক্যাম্পাসে অনেক গোলমাল। তোমরা সারাক্ষন আমার জন্য দুঃচিন্তা করো। তাতে কি? আর না হয় দেড়টা বছর কষ্ট সইতে? হয়তো আমার জীবনটা অন্যরকম হতো।

না, আমি তোমাদের এসব কথা, কোনদিন বলবোনা। কেননা, সেদিনের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে -"মাস্টার্স না করা" ছিল একান্ত আমার বোঝাপরা, নিজের সাথে। মাস্টার্স না থাকাটা কে আমি বানিয়েছি আমার হাতিয়ার। ভুল সিদ্ধান্তটাকে করেছি- উদাহারন । হ্যা, আর আজ তোমাদের সামনে আমি প্রমান করেছি, বিধাতা আমাকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করেন। হয়তো এই পথই ছিল আমার ভাগ্যে, কিন্তু নিজের খারাপ ফলাফল, আলসেমীর কারনে পথ খুজে পেতে কষ্ট পোহাতে হলো, পার হয়ে গেল অনেকগুলো সময়, অতিক্রম করলাম তোমাদের কঠাক্ষ্যের পথ বহু কষ্টে। তবুও কি আজ তোমরা এই অর্জনের কৃতীত্ত নেবে?

বলতে এতটুকু লজ্জা করেনা। তবুও কি তোমরা আবার আমার উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবার ধৃষ্টতা দেখাবে? ভয় হয়না, তোমাদের?

আমি জানিনা, এবার আমি কি করবো। তবে তোমাদের প্রভাব আমার উপর আর পরেনা। কেবল আব্বু-আম্মুর কথা ভাবি, সমঝোতা যদি করি তা কেবল এই মানুষ দুটোর জন্য করবো। আর হ্যা, নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় কৃচ্ছতা যদি সাধন করতেই হয়, তবে এবারও প্রমান করে দেব "তোমরা ভুল ছিলে"। তোমাদের চিন্তা, চেতনা আমার জীবনটাকে হয়তো ওলোট-পালোট করে দেবে, আমি হয়তো আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ দিয়ে তোমাদের ব্যর্থতা প্রমান করবো। তবে এবারও আশা করি, তোমাদের সমালোচনা করার সময় আমি, আমার কৃতীত্ত, আমার অর্জন সব কিছুকে ছাপিয়ে দেবে- এখনকার মতোই।


তবে জানো কি? আজও আমি বিশ্বাস করি, আমার বিধাতা আমাকে ঠিকই সঠিক পথ ধরে চলতে দেবেন, আমার মনের মাঝে যে পথ আঁকা আছে, আমি তার দেখা পাবোই। হয়তো আবারও তোমাদের অসহযোগীতা আমাকে কষ্ট দেবে, তবে এই একলা পথ চলার অভিজ্ঞতা ? তা কিন্তু আবারো আমার অর্জন।

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১২ ভোর ৫:২৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×