somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

=p~ =p~ =p~ কনফারেন্সে ঈদুল মিয়া =p~ =p~ =p~

০৫ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব ঈদুল মিয়ার টয়লেটকর্ম

ঈদুল মিয়া যখন কনফারেন্স হলে পৌঁছলো, সে দেখতে পেলো, হলের সবাই কেমন করে যেন তার দিকে তাকাচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েগুলো। এই মুহূর্তে ভাব দেখাতে হবে। ভাব না দেখালে মেয়েগুলোর শিক্ষা হবে না। সে সোজা তাকিয়ে হলের মাঝখানের একটা খালি সিটের সিটের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলো।
উফ, আপনি কোন দিকে তাকিয়ে হাঁটছেন? এভাবে হাতের কনুই দুদিকে ছড়িয়ে গেলে চলবে?
ঈদুল মিয়া কিছু না বলে মুচকি হাসতে হাসতে তার সিটে গিয়ে বসলো। মনে মনে বললো, আমার সাথে ভাব দেখাবা আবার এসে গায়ে পড়ে বলবা, কোন দিকে তাকাইয়া হাঁটি?
কনফারেন্স শুরু হতে হতে প্রত্যেককে একটা করে প্যাড আর একটা করে কলম দেয়া হলো। কাগজ-কলম দেখে তার মনে মধ্যে সন্দেহের উদ্রেক হলো, এখানে আবার অঙ্ক করাবে না তো? যেহেতু আজ অতি অল্প সময়ে অর্থ উপার্জন নিয়ে বক্তৃতা হবে, সেহেতু অঙ্ক করাতেও পারে। টাকাপয়সার সাথে হিসাবের ব্যাপার আছে। হিসাব মানেই অঙ্ক। অঙ্ককে সে বরাবরই ভয় পেয়ে এসেছে। তার শুধু একটা জিনিসই ভালো লাগে—হাতে টাকা গোনা।
না, অঙ্ক করতে হলো না। স্টেজে বিদেশী লোকটা বকবক করে গেলো, ঈদুল মিয়াও জোশ একটা ঘুম দিলো। বক্তৃতা শুনতে শুনতে যে মজার ঘুম হয়, এমন মজা অন্য কোনো ঘুমে পাওয়া যায় না। সপ্তাহে একদিন এই মজাটা পাওয়া যায়। সেটা হলো জুমার দিনের খুতবার সময়।
ঘুম থেকে জেগে সে শুনতে পেলো, এখন নামাজ এবং খাওয়ার বিরতি। খাবার গ্রহণের সময় সবাইকে লাইনে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ করা হচ্ছে।
বেশ লম্বা লাইন। ফাজিল মেয়েগুলো আগেই লাইনে দাঁড়িয়েছে। চল্লিশ পঞ্চাশ জনের পরে লাইনের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ঈদুল মিয়া যখন খাবার গ্রহণের জন্য হাত বাড়ালো, তাকে বলা হলো, আপনার পাশটা প্লিজ?
কীয়ের পাশ?
ছোট্ট একটা টোকেন দেয়া হয়েছিলো, যাতে লেখা আছে খাইবার পাস।
ও, খাইবার পাস? আমি তো ভাবছিলাম এইডা এই জাগায় ঢুকনের কারণে লটারিতে খাইবার পাস ভ্রমণ করার টিকিট জিতছি।
ওটা আনতে হবে যে!
ধুর মিয়া, ওইডা তো সিটের নিচে ব্যাগের মধ্যে যতœ কইরা রাইখ্যা দিছি।
যাই হোক, ঈদুল মিয়া খাইবার পাস নিয়ে আবার যখন লাইনে সবার শেষে এসে দাঁড়ালো, তাকে বলা হলো, খাবার তো শেষ হয়ে গেছে; আমরা দেখি কোনো ব্যবস্থা করতে পারি কি না। আপনি একটু অপেক্ষা করুন।
কিন্তু যে লোকগুলো এ কথা বলেছিলো, সেগুলোর আর দেখা পাওয়া গেলো না। এর মধ্যে আবার কনফারেন্সের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়ে গেলো। এবার প্রশ্নোত্তরের পালা। কার কার প্রশ্ন আছে, জানতে চাওয়াতে ঈদুল মিয়াও হাত তুললো। তার কাছে যখন মাইক এলো, সে জানতে চাইলো, পাঁচশো ট্যাকা নিয়া আবার আমার খাওন মাইরা খাইছেন? আমার ট্যাকা ফেরত দ্যান।
স্টেজ থেকে কী যেন বলা হলো, ঈদুল মিয়াকে যে এই কনফারেন্সে আসার দাওয়াত দিয়েছিলো, সেই লোক এসে তাকে উঠিয়ে নিয়ে হলের বাইরের দিকে চললো।
গেটের কাছে এসে সে বললো, ঈদুল ভাই, আপনি দাঁড়ান। আমি একটু ভেতর থেকে আসি। আমিও খুব ভালোভাবে খেতে পারিনি। আপনার সাথেই খাবো।
দশ মিনিট হয়ে গেলেও তার ফেরার নাম নেই। ঈদুল মিয়া যা বোঝার বুঝে ফেললো। সে ভেতরে গিয়ে তার সাইড ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে নিলো। আবারো ঢোকার সময়ের মতো দৃশ্য। ফাজিল মেয়েগুলো তার দিকে তাকিয়ে রইলো। সে তার ক্ষুধা তাদের জন্য উৎসর্গ করে দিয়ে এগুতে থাকলো। গেটের কাছে এসে দারোয়ানকে বললো, মামা, গেট আটকান তাড়াতাড়ি। ভিতরে গ্যাঞ্জাম, স্যারে কইছে কাউরে বাইর ওইতে দ্যাওন যাইবো না।
দারোয়ান ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে রইলো।
ঈদুল মিয়া দারোয়ানকে গেটের বাইরে টেনে এনে বললো, তাড়াতাড়ি আটকান। দারোয়ান তালা দেয়ার সাথে সাথে সে তার নিজের ব্যাগের চেইন আটকানোর তালাটাও গেটে লাগিয়ে দিয়ে বললো, আমি যাইতাছি পুলিশ আনতে। আপনে কিন্তু গেট খুলবেন না। আপনের উপরে যাতে কেউ কিছু করতে না পারে, এল্লাইগা এই তালাডাও মারলাম।
মনের সুখে সে রাস্তায় এসে সদরঘাটের বাসের অপেক্ষা করতে থাকলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:১৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×