কোন সন্দেহ নাই মানুষই এই গ্রহের একমাত্র বোধসম্পন্ন প্রানী। আবার কোথায় যেন এই মানুষি খুব অসহায়, তার কিছুই নেই। ছিন্নবস্ত্র দিয়ে সে আগলে রাখে তার লজ্জা মাখা শরীর, ইজ্জত, মানুষের চোখ যায় এমন সব অংগ প্রতংগ। ধ্যানরত বাউল সাধু,সুফি,মুটে,মজুর, প্রান্তিক চাষা তাদের দগে দগে ঘা শুকিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার নুতন কালিমায় লেপ্টে গিয়েও,গতি হারায় না।থামার নিয়ম যে এখানে নেই।কেউ তাই থামতে পারেনা,গতি আর গতি। তরুনদের এই গতি আরো বেশি।রক্তজাত বিপ্লবের স্রোতে কাপে তার শিরা উপশিরা।চে,মার্কস,মাওসেতুং হতে ইচ্ছে করে।সমাজের বুকে লেপ্টে থাকা সব ভন্ডামি,নষ্টামি গুলি বিপ্লবের হাতুরি দিয়ে আঘাত করে ভেঙ্গে দুম্রে মুচড়ে দিতে ইচ্ছে করে। নিজের ভিতরে যেন নুতন এক শক্তির ভান্ডারের সন্ধান পায়। “কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবেনা তা হবেনা। “ মিছিলের সাথে সমাজতন্ত্রীয় এই নীতির কোরাছে কেপে ওঠে রাজপথ ।
আবার কি যেন হয় তার । ১০ তলা, ২০ তলা ভবনের বাসিন্দাদের লাইফ প্যাটার্ন দেখে সে দাড়িয়ে দাড়িয়ে। সামন্ত স্বামীদের তৈরি বড় বড় শপিং মল, মাল্টিকালার বাড়ির ডিজাইন,গাড়ি, আলো আধারির ভিতরে সুরার উৎসব, নিজের গাড়ি হাকিয়ে চলা সানগ্লাস পরা সুন্দরী উদ্ধতবুক যুবতীর চলে যাবার পথের দিকে তাকিয়ে থাকে সে। আর কিছু ভাল লাগেনা তার। দিন সাতেক আগে হাইকোর্টের মাজাড়ে সে দেখেচিল কাপড়ের অভাবে এক গরীব যুবতী ডিজিটাল ব্যানারে উদ্ধত যৌবন ঢেকে রেখেছে এবং এই দ্যৃশ্য দেখে সে নিজেও দুখ পেয়েছিল। সানগ্লাস পরা সুন্দরীর দর্শনে ডিজিটাল ব্যানার এর ব্যাপারটা সে আর মনে রাখতে পারেনা।
চে,মার্কস,মাওসেতুং এর ছবি যেন তার কাছে কেমন ফিকে হয়ে যায়।সমাজতন্ত্র ফ্রন্টের মিছিলে আর আগের মত যায় না সে। সেই গতিতে কে যেন লাগাম পড়িয়েছে। সে একটু যেন বুজতে পারে। একদিন গুলিস্থান বা পল্টনের রাস্তায় দাড়িয়ে পড়ে। দেখে তার মত অনেকেই নেতার কাছে যাছে আর এক বান্ডিল টাকা নিয়ে গলির মুখে ফিরে আসছে । কেও খালি হাতে ফেরে না, নেতাও কাউকে ফেরায় না। সে এসব দেখে দ্রুত সামনে এগুবার চেষ্টা করে। সব শক্তি এক করেও পা দুটিকে সে আর সামনে নিতে পারে না। মস্তিস্কের কোষ থেকে পাঠানো তার বার্তায় সে শুনতে পায় কে যেন বলছে – যাও তুমিও যাও ওদের সাথে।
-------রিপন আশরাফ। ৩০/৬/১৩