somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"লাঠিয়াল" সংস্কৃতি থেকে বেরুতেই পারলো না বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা ...

০৩ রা মার্চ, ২০১২ ভোর ৪:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাচীন আমল থেকেই শক্তি দিয়ে ক্ষমতা দখল এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার একটা রেওয়াজ চালু হয়ে আছে পৃথিবীতে। কালের প্রবাহে এখন বিশ্ব এগিয়ে গেছে অনেক - এখন লাঠিয়াল বাহিনী কেউ ব্যবহার করে না ক্ষমতাকে প্রদর্শনের জন্যে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে লাঠিয়াল সংস্কৃতির একটা নতুন রূপ দেখা যাচ্ছে।

৯০ এর পর যদিও দেশে একটা গনতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়েছে - কিন্তু দেশের রাজনীতি দুই মেরুতে ভাগ হয়ে গেছে। একদলে আছে বাংলাদেশের জন্ম বিরোধী জামায়াত, মুসলীম লীগের আধুনিক সংস্করন বিএনপি আর জঙ্গী মৌলবাদীরা আর একদলে আছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি মুক্তিযুদ্ধে নেতুত্বদানকারী দল আওয়ামীলীগ আর স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। যেমন তেল আর জল এক সাথে মিশে না - তেমনি এই দুই গোষ্ঠী কখনই এক হয়ে দেশের মুল সমস্যা নিয়ে কো কাজ করতে পারেনি। দেশের অগ্রগতি ব্যহত করা সর্বগ্রাসী দূর্নীতি নিয়ে কোন কথাই বলে না এরা। কোটি টাকার সংসদ ভবনের খরচ হলেও এরা সেখানে যায় না - কিন্তু সদস্যপদ ছাড়ে না - কারন লাল পাসপোর্ট বহন করে প্রচুর সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।

আর এই গোষ্ঠী দুইটি সভ্যতার নিদর্শন - আলোচনাকে কোন পথই বিবেচনা করে না। কারনে অকারনে আন্দোলনের নামে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম তৈরী করে মানুষের চলাচল ব্যবহত করে শক্তিপ্রদর্শনকেই মনে করে রাজনীতির একমাত্র ভাষা।

সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে দুই গোষ্ঠিই তৈরী হচ্ছে রাস্তায় লাঠিবাজি করতে। অনেকটা জমিদারী ব্যবস্থায় যেমন প্রচার প্রপাগান্ডা করে লাঠিয়াল দিয়ে চর দখলের আদলে এরা ক্ষমতা দখল করতে বা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সচেষ্টা। এদের নেতারা একই টেবিলে বসে মদ্য পানকরে - সামাজিক ভাবে আত্নীয়তা করে - কিন্তু রাস্তায় লাঠিয়াল নামানোর জন্যে যখন বত্তৃতা দেয় তখন মনে হবে এরা পরষ্পরের জন্মের শত্রু। আর মিডিয়াগুলো তামাশা প্রচারে মতো করে প্রচার অব্যহত রেখেছে। হয়তো সেইদিন কিছু নির্বোধ তাদের প্রানবলি দেবে নেত্রী পদসেবায় - কিন্তু এতে কি দেশে সুশাসন চালু হবে?

কোন সভ্যদেশে আয়োজন করে এতো শ্রম আর সময়ের অপচয় ভাবাই যায় না। যে সমস্যা অতি সহজেই সংসদের বসে সমাধান করা যায় - তা সমাধান করার চেয়ে সমস্যাকে বাঁচিয়ে রেখে লাঠিয়াল সমাবেশ করে শক্তি প্রদর্শন করার পথই এরা বেছে নিয়েছে। একদণ মহাসামবেশ করবে - কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে কিছু লোক - যা ভবিষ্যতে নির্বাচিত হলে সুদাসলে আদায় করবে দূর্নীতির মাধ্যমে আরেক দল নানান কর্মসূচীর মাধ্যমে কোটি টাকার খেলা দেখাবে - তাদের সুবিধা হলো ক্ষমতা ব্যবহার করে এখনই চাঁদাবাজী করে নগদ আদায় করতে পারবে।

অসুস্থ এই লাঠিয়াল সংস্কৃতি থেকে দেশকে বের করতে না পারলে এরা বারবার একই খেলায় মত্ত হবে। এরা ক্ষমতায় গিয়ে লটপাট করে বিদেশী ব্যাংকে বিপুল অর্থ জমাবে যাতে ক্ষমতা না থাকলে চিকিৎসার নামে তা ভোগ করা যায় আর নির্বোধদের উসকানী দিয়ে লাঠিয়াল বানানো যায়।

গনতন্ত্রের মুল ভিত্তি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান - তাকে পাশ কাটিয়ে লাঠিয়াল কালচার দিয়ে সাময়িক বিজয় হয়তো হয় - কিন্তু তা ধরে রাখা যায় না।

সমস্যা হলো বিএনপি জামায়াত জোট যদিও তত্ত্বাবধায় সরকারের দাবীতে আন্দোলন করছে বলে প্রচার করছে - কিন্তু এরা কোন ধরনের সরকার চায় সেই বিষয়ে কোন কথা বলছে না। কারন এইটা ওদের আসল এজেন্ডা না - তাদের আসল এজেন্ডা হলো সরকারকে মনোযোগ সরিয়ে রাখা ( যা খালেদা জিয়া চাঁদপুরে জনসভায় বলেছেন - সরকারকে ল্যাংড়া লুলা বানিয়ে দেবেন) যাতে তারেক-কোকো-গ্রেনেড হামলার বিচার সহ তাদের মিত্র নিজামী মুজাহিদকে বিচার থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায় - যাতে ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমানের মতো একটা আদেশে সব আদালত বাতিল করে এদের পূনর্বাসন করা সহজ হয়।

এই ধরনের অন্ধকারের রাজনীতির কারনে বাংলাদেশ এখনও লাঠিয়াল সঙস্কৃতি থেকে বের হতো পারলো না। আরও কিছুকাল হয়তো বাংলাদেশের মানুষকে এই লাঠিয়াল সংস্কৃতির ধারক সামন্ত নেতাদের হাতে জিম্মি থাকতে হবে।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×