somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাহনেওয়াজ লতিফ
মির্জা শাহনেওয়াজ লতিফ (লিও)

পেশোয়ার থেকে পঞ্চগড় .।.।.।.।.।।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তখন আমি কৈশোর পেড়িয়ে সদ্য তরুন । উচ্চমাধ্যমিক পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এর ভরতি যুদ্ধে উতরে যাওয়া হলেও পছন্দের বিষয়ে পড়তে না পারার কষ্ট নিয়ে ঘরে । হঠাত জাপানের মনবুশো স্কলারশীপ আর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ডিরেক্টটিভ স্কলারশীপে এপ্লাই করে ফেললাম । পেয়ে গেলাম পাকিস্তানের টা । বাসায় সবাই প্রথমে মেনে নিতে না চাই লেও কেমন করে যেন আমার পায়ের বাধন একটু হালকা হলো । শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে যখন ফোন এলো তখন আমি রোমাঞ্চিত নতুন কিছু দেখব বলে আবার শত্রু দেশ পাকিস্তানে যাব বলে মন ছোট লাগছিল ।কারন আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯৭১ সনে ছাত্রলীগের নেতও ছিলেন । তবে আমার ছিল আরও একটি কারন .।.।.। এই উপমহাদেশ কে জানার । আর আমি "আমার এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ" এর উপর রচনা প্রতিযোগিতায় জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলাম । তখন আমি হাসান আজিজুল হক সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে আমার পাকি দের উপরে ঘৃনা আর ওদের মুল্যবোধের অবক্ষয় জানার আগ্রহও ছিল ।

আমি প্রথম বার যাওয়ার সময় বিমানে ঢাকা টু করাচি, করাচি টু পেশোয়ার গিয়ে ছিলাম । কিন্তু এরপর আমি অনেকাবার পেশোয়ার টু পঞ্চগড় ভ্রমন করেছি আমি সড়ক , রেল পথে । এই পথে আমি নিম্নোক্ত পথ টি অনুস্বরন করেছি ।

পেশোয়ার টু লাহোর (ভায়া রাওয়াল পিন্ডি-ইসলামাবাদ) - বাই বাস


লাহোর টু অমৃতসর (ভায়া উয়াগা বর্ডার) - বাই ট্রেন / বাস



অমৃতসর টু দিল্লী - বাই বাস ।



দিল্লী টু কোলাকাতা - বাই ট্রেন ।



কোলকাতা টু ঢাকা বাই বাস

তারপর ঢাকা টু পঞ্চগড় বাই বাস .।.।।


ভাইরে তা আবার ৪দিনে । এখন অবাক লাগে বৈকি ।


এই স্মৃতি গুলো একজন তরুনের উন্মুক্ত পাখির মত , রঙ্গিন দুরবীন দিয়ে তাকানোর মতই সুন্দর আর রোমাঞ্চকর । মোট ৫ বার আমি এই পথে হেঁটেছি । ইতিহাসের পাতা একটার পর একটা খুলে গেল আমার যৌবনের উম্মাদনায় ।

সামাজিক বিজ্ঞানের বইয়ের পাতায় ছাড়া তখন তেমন পড়াশুনাই বা কি ছিল আমার । তক্ষশীলা , হরপ্পা সভ্যতা , পাল, সেন শাসন
, মোঘল শাসন , নবাব রা , ইংরেজ রা , ইন্দোপাক আমল এবং এরপর আমাদের হাজার বছরের অর্জন স্বাধীনতার ইতিহাস আমার কাছে ধরা দিয়েছে ।

আমি যেমনি পঞ্চগড়ে কাঁঠাল গাছ থেকে কাঁঠাল পেড়ে খেয়েছি তেমনি তেমনি চীন- ইন্দো- পাক সীমান্তের অভীন্ন কারাকোরাম পর্বতমালার কে-২ পাদদেশের আপেল গাছে চড়ে আপেল পেড়ে খেয়েছি ।সে এক চমতকার অভিজ্ঞতা ।
পেশোয়ার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরিত প্রকৌশল বিষয়ে পড়ছিলাম । প্রথম সামার ভেকেশনের ২মাস ছুটি । আমার সাথে ছিল খুলনার বন্ধু কুয়েট সিভিলের সুজন । প্রথম সেমিস্টারে আমরা লেট থাকার কারনে একটু পিছিয়েছিলাম বটে কিন্তু পাকি দের বাঙ্গালির মেধা দেখাতে ভুল করিনি । ফাইনাল ইয়ারে মরন কামড় দিলাম রিসার্চ এ । হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে কনফারেন্স স্পীকার হিসেবে সু্যোগ পেয়েছিলাম ।

চলুন যাত্রা শুরু করা যাক । আমরা ঠিক করলাম আমরা বাই রোড যাব । এর আগেই আমরা একজন যিনি আগে এই পথে গেছেন তার কাছে ব্যাপার গুলো(ট্রান্সসিট ভিসা পাওয়ার উপায়, খরচ, পথের বর্ননা ) জেনেনিলাম ।
আর এক শুভ দিনে বেড়িয়ে পড়লাম আমি আর সুজন পেশোয়ার থেকে পঞ্চগড়েরপথে , আমার পিঠে ট্রেভেলিং ব্যাগ আর বুকের মাঝে অপাড় রোমাঞ্চ ।

প্রথমে আসাযাক আমরা যেই পেশোয়ার থেকে ভ্রমন শুরু করছি সেই শহরের কথায় । সংস্কৃত ভাষায় যার নাম পুরুষ্পুড়া যার মানে দ্যা সিটি অফ মেন ।

২০০০ বছর পুরনো ইন্দো-ইরানী গান্ধারা সভ্যতা এখানেই ছিল খাইবার গিড়িপথ এখান থেকে আফগানস্থান যাওয়ার এবং স্থল পথে উপমহাদেশে আসার তখনকার সময়ে একমাত্র পথ । আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট এই পথেই এসেছিলেন । আমিও আসেছি । আমরা যারা নব্য মুসলিম (৬০০বছর ) তাদের পুর্বপুরুষ এই পথে এসেছেন ।

আমি পেশোয়ার থেকে বাই বাস ডাইয়্যু এক্সপ্রেস করে ভ্রমন শুরু করলাম । আমরা লাহোর যাব পথিমধ্যে রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদ হয়ে যাবে গাড়ি । রাওয়ালপিন্ডির অদুরে হলো তক্ষশীলা । তক্ষশীলাকে উর্দুতে বলে টেক্সিলা ।

আজ এখানেই থাক । অন্য একদিন সামমের রাস্তার কথা বলা যাবে । আপনারা শুনতে চাইলে ।



সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১৬
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×