রাতের শেষ প্রহরে মুর্শিদাবাদের মাটিতে পা রাখতেই
কুয়াশাব্যূহে বন্দী করে শৈত্যপ্রবাহের সুচারু আঘাত।
উপর্যুপরি গরম কাপড়ের বর্ম পরেও নাকাল
ইংরেজের তোপের মুখের হীরাঝিলের মতো।
সকালের আলোয় ভাগীরথীর চোখে চোখ রাখতেই
অপরাধীর মতো বিষন্ন চোখ নামিয়ে নিল
আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে শরীরের ভাঁজে হাত রাখতেই
শুনতে পাই সিরাজের জন্য অকপট হাহাকার।
মননের বাতাসে ইতিহাসের পাতা উড়তে থাকে
ঐ তো হীরাঝিলের অন্দরে নাতির কৌশলে পরাজিত
নবাব আলিবর্দ্দী খাঁ কৌতুক বোধ করছেন! ঐ যে
পুরনারীর ঋতুর উজানে ছুটছে 'সিরাজ প্রমোদতরী'।
শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে সন্ধ্যার আগেই অন্ধকারের চাদরে ঢেকে যায়
বিষন্ন ভাগীরথী, হাজারদুয়ারী, ছড়ানো ছিটানো ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন,
যেমনি সময়ের আগেই অন্ধকার নেমে এসেছিল সিরাজের জীবনে।
বাংলার ঘরে ঘরে, মুষ্টি চালের হাড়িতে।
আজও ভাগীরথীর উদরে জমে আছে রক্তের পলি
মুর্শিদাবাদের মাটির জঠরে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ
নবাবসেনার রক্ত, ইংরেজ সেনার রক্ত, সিরাজদ্দৌলার রক্ত
কালো মানুষের রক্ত, সাদা মানুষের রক্ত, লাল রক্ত।