somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেখা প্রথম বইমেলা (সচিত্র)

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১.

একাডেমী চত্বরে মাস ব্যাপী কবি/লেখকদের মিলন মেলা আর এই মিলন মেলা দেখতেই আমার প্রথম মেলা দর্শন। এই প্রথম আমি মেলা প্রাঙ্গনে পা রাখলাম।
প্রধান ফটক পেরিয়ে পা রাখলাম মেলা প্রাঙ্গনে পা রাখার আগেই প্রথমেই নজরে এলো রমনা কালী মন্দিরের ফটকটি চলে গেলাম সেখানে।


পাশেই পানা ঢাকা পুকুর। আশ-পাশের চত্বর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে লালরঙা চেয়ার। মনে হচ্ছিল বইয়ের সাথে সাথে যেন লালের মেলা বসেছে।
গেট পেরিয়ে চলে গেলাম লিটলম্যাগ প্রাঙ্গনে।
আমি একুশে বই মেলা নিয়ে যা ভাবতাম আসলে সেরকম কিছুই না। এর চে, আমাদের মফস্বল শহরের বৈশাখী মেলা গুলো অনেক বড় রকমের পরিধি নিয়ে হয়ে থাকে। মেলায় যে উপচে পড়া ভীড় তাতে বই প্রেমী জাতীয় মানব/মানবী খুব কমই নজরে এলো। বেশ ভালো নজরে এলো ফুচকা, চটপটি খাদকদের।

মেলায় কোন কবি বা লেখকের সাথে আমার দেখা হয়নি; তবে এমনও হতে পারে হয়তো আমি চিনতে পারিনি কোন না কোন লেখক কবি সেখানে হয়ত বিদ্যমান ছিলেন। খুব কম সময় হাতে নিয়ে আমি মেলার প্রাঙ্গনে ঘুড়ে বেড়িয়েছি। ষাট মিনিট অতিবাহিত হবার পর ব্লগের একজনকে মাত্র পেলাম। তিনি নিজ উদ্যোগেই আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন তাই দেখা হয়ে গেল। আরো দুজনের সাথে ফোনে কথা হলেও দেখা হলোনা। এক প্রকাশনীর ষ্টল থেকে আরেক প্রকাশনীর ষ্টলে উচ্ছসিত পদচারনা হলো আমার। বইয়ের গন্ধে কখনোবা নিজেকে কেমন যেন মনে হতো লাগলো।
ধুলোয় মাখানো বইয়ের মলাট কিংবা সদ্য মলাট কৃত নিম্ন মানের বাইন্ডিং দেখে কিছুটা বিব্রত অনুভুতি হল। আর যে বিষয়টাতে হতবাকত্ব হলাম সেটা হলো আমার ব্লগ ব্যাতিত অন্য কোন ব্লগের ছাউনিওয়ালা ষ্টল চোখে পড়লো না। সেবা প্রকাশনীর ষ্টলটাতেই জনসমাগম বেশি মনে হলো তার সাথে আছে অন্য প্রকাশ, দিব্য প্রকাশ অনন্যা সূচীপত্র আর নন্দিতা প্রকাশনীতেও।


২.

প্রথমেই নজরে এলা হুমায়ুন আহমেদ এর রঙ পেন্সিল ও তার আশে পাশের অনেক বই।



অগ্রদূত এর ষ্টলে প্রতীয়মান যুবকের মুখটি




প্রাইম ব্যাংকের স্পন্সর করা বর্নমালা স্ট্যাচু টি


ভালো লাগলো এই ষ্টলটি দেখে। বই আর বই, এখানে বই বিক্রি করার মানুষ কই

তারপর.....

মেলার ভেতর মহলে চোখে এলো ঘরে বসেই বই কিনতে পাওয়া রকমারী ডট কম রকমারী ষ্টল। রোদের আচ থেকে শরীর বাচাতে তরুণীর চেষ্টা আর আমার চোখ নজরে দুই মার্ত্রিক বই বহুমাত্রিক আর চতুর্মাত্রিক।




“পকেট যখন দুধহীন দই কি করে কিনি বই” যাই হোক তবুও চতুর্মাত্রিক বইটির গায়ে চোখ বুলিয়ে যখন দেখলাম ভেতরের ফ্রন্ট আকারে ছোট আর সচরাচর যে ফ্রন্ট দেখি তারচে ভিন্ন এবং বইটি আমার কেনার সাধ্য ক্ষমতার বাইরে তখন কেনা হলো না। আর বহুমাত্রিক বইটি কেনা হলো সেটারও সেই ভিন্নতা আনার চেষ্টায় ভিন্ন ফ্রন্ট।


চোখে ভাসলো মুক্তধারা...


আমি অবাক হলাম জসীম উদ্দীনের আর কৃষণ চন্দরের বই মেলায় দেখতে পেয়ে...


মেলায় দেখতে পেলাম বিষনগর আর অভ্র


এভাবেই ধুলো ভরা বুকে পড়ে আছে ডাকটিকিট এর পাশাপাশি রাহাত রাস্তির গোপন টোকা। ডাকটিকিট কিনলাম ২৫ টাকা দিয়ে (জনসাধারনের বাজেটের মধ্যে হওয়ায় বেশ’কজন কিনেছে)


বুঝতে পারলাম না চশমা ভাইয়া এভাবে কেন তাকিয়ে রইলো


চলে এলাম আমারব্লগ এর ষ্টলে


সুদীপ্ত সালামের ফটোগ্রাফী বইটি তরুন ফটোগ্রাফারদের সহযোগী হবে। সজলদার ব-দ্বীপের শায়েরী চোখে পড়লো ভাবলাম কবিতা তো অনেক পড়লাম এবার পড়া যাক শায়েরী। এই মানবী বললেন মোবাইল ফোনের উপরে একটা বইয়ের কথা কিন্তু নিতে পারলাম না ফোনের বয়স পেরিয়ে গেছে আরো ৫ বছর আগেই...
------------------------------------------------------------------------

মেলায় বইয়ের পাশাপাশি আছে বাহারী নাকফুল কাদের দুল, মাটির বাসন, লেডিস ব্যাগ, ইত্যাদি






লিটিল ম্যাগ কর্নারে আমার চোখ খুজে ফেরে....



ব্লগার ফোরাম এর পরিবেশনায় শব্দতরী ষ্টল...




সুদৃশ্য মনোরম মায়া মাখানো মলাটে প্রিয়দের লেখা আলোকিত হয়ে আছে যেন বই গুলো। নীড় গল্পগুচ্ছ, নীড় পদাবলী উঠে এলো চোখ থেকে হাতে...কিনে নিলাম শব্দনীড় ২য় বর্ষ ২য় সংখ্যাটি যে মানবীর হাত থেকে নিলাম তিনি জানালেন শব্দনীড়ের কিংবা নীড় গল্পগুচ্ছ বইয়ের লেখকগন বর্তমানে এখানে নেই... অটোগ্রাফ নেয়া হলো না। মানবীর দিকে তাকালাম মনে হলো উনাকে কোন ছাউনিওলা ষ্টলে বসিয়ে দিলেই ভালো ব্যবহারের তুলিতে পাঠকের হাতে তুলে দিতে পারতেন বইগুলো ..



এরপর কালি ও কলম ষ্টলে আমার পায়ে পা ধুলো ভরা পথ আর চোখ ওই যুবককে দেখে নিল বইয়ের বিক্রি হোক বা না হোক মোবাইলে কথা চলবেই...

-------------------------------------------------------------------


উড়ে গেল!!!
-কি ?
-দেখিসনি পাখিটা


উনি মেয়র হতে চান তাই লিফলেট নিলাম একটা।


কুড়মুড়ে মিষ্টি...


এই ছাতা লাগবে ছাতা; হরেক রঙের ছাতা; লাল ছাতা; নীল ছাতা..


মায়ের হাতে বই কেনা


সুরুজ


নন্দিতা প্রকাশনীর সামনে দাড়িয়ে তখন উনার হাসি যেন থামেই না....


আমার চোখে বইমেলা-২০১২


নাম লাগবে নাম?

৩.

অপরাবাস্তব ৬ খুজে পাইনি। রেজওয়ান মাহবুব তানিমের বইটি খুজেই পেলাম না। কবির য়াহমদের বইটি বাংলালায়ন তখনও ছাড়েনি তাই কেনা হলো না। নীল সাধুর জলজ ছায়ায় বইটি উপহার দিয়ে দিলাম একজনকে। হানিফ রাশেদীনের কবিতার বইটি হাতে তুলে নিলাম চোখে পড়লো বাইন্ডিংটি দুর্বল কিন্তু যে প্রকাশনী প্রকাশ করেছে তাদের অবস্থা সবল বইটি ঝুলিতে নিলাম। মেঘ অদিতির জল ডুমুরের গান বইটা খুজে পেলাম না আফসোস রয়ে গেল।


স্বদেশ হাসনাইনের কবিতার বই প্রকাশ করেছে ভনে প্রকাশ। চার কালারের কার্ড আকারের কবিতার বই। ব্লগারদের জন্য দাম ৬০ টাকা হলেও এখানে দেখলাম সবার জন্যই ৬০ টাকা রাখা হয়েছে। সেই সাথে মাহী ফ্লোরার কবিতার বইটিও একই রকম সুন্দর ডিজাইন করা কার্ড সিস্টেম বইটির গায়ের মূল্য ১২০ টাকা দেখে অগ্নিআখি হবার মতো অবস্থা। আমার মনে হলো সাদা পাতায় আর বেশক’টি লেখা দিয়ে বই আকারে বের করলে অনেক বেশি পাঠকের কাছে পৌছানে যেত। চোখে পড়লো নৈর্ঝর-নৈশব্দ এর সম্পাদনায় মুক্তগদ্য-২। সংখ্যাটি নিলাম খাকি রঙের মলাটে লিটল ম্যাগ। বেশ কিছু লিটল ম্যাগ নিলাম।
পরিশেষে ভাষাচিত্র প্রকাশনী থেকে নিলাম এসএম পাশার সম্পাদনায় সুদৃশ্য মলাট বন্দী বই ব্লগারদের গল্প সংকলন অবন্তি। আর সহজ কবিতার বই- তিতিরের লেখা- মেঘ হয়ে যাই। সন্ধ্যে হবার আগেই মেলা প্রাঙ্গন ত্যাগ করলাম। যার সাথে দেখা হয়েছিল সেই একমাত্র ব্লগার বন্ধু সমা বিলাই তার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। আর এভাবেই আমার প্রথম বই মেলা দর্শন শেষ হয়ে গেল।

_________________________________________

২৮টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×