somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

মার্ক টোয়েন

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রখ্যাত মার্কিন কথাশিল্পী মার্ক টোয়েন ছিলেন অতিমাত্রায় অনুভূতিপ্রবণ। পেনসিলভানিয়া স্টিমারে খালাসীর কাজ করার সময় একদিন তিনি তার বোনের বাসায় বেড়াতে যান। রাতও কাটান সেখানে। রাতে তিনি দেখেন এক অভাবিত স্বপ্ন। তিনি দেখেন একটি হল ঘর, অনেক লাশের মধ্যে রয়েছে তার ছোট হেনরীর লাশ। অন্যান্য লাশ কাঠের কফিনে থাকলেও হেনরীর লাশ রয়েছে ধাতব কফিনে। হেনরীর বুকের ওপরে রয়েছে শ্বেত পুষ্পস্তবক। আর তার মাঝখানে শোভা পাচ্ছে একটি লাল গোলাপ।

এ স্বপ্ন তাকে এত আচ্ছন্ন করে ফেলে যে তিনি বিছানা থেকে উঠে পোশাক পরে বেরিয়ে পড়েন। সে গভীর রাতে রাস্তায় কোনো গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই রওয়ানা হন ভাইয়ের লাশ দেখার উদ্দেশ্যে। অবশ্য আধা মাইল হাঁটার পর তিনি উপলব্ধি করতে সক্ষম হন যে, তিনি শুধুমাত্র স্বপ্ন দেখেছিলেন, এর সাথে বাস্তবের কোনো যোগাযোগ নেই। তাই আবার বাসায় ফিরে আসেন। সকালে নাস্তার টেবিলে তিনি স্বপ্নের কথা বলেন তার বোনের কাছে।

এর কয়েকদিন পর তিনি ও হেনরী পেনসিলভানিয়া স্টীমারে করে নিউ ওরলিন্সে যান। সেখান থেকে তাকে বদলী করা হয় টিএ লেকী স্টীমারে। পেনসিলভানিয়া দু’দিন আগেই নিউওরলিন্স থেকে যাত্রা শুরু করে। কয়েকদিন পরে পেনসিলভানিয়ায় বিস্ফোরণ ঘটে হেনরী মারাত্মকভাবে আহত হন। দুর্ঘটনার পর ছয় দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে হেনরী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।

মার্ক টোয়েনকে তার ভাইয়ের লাশ দেখানোর জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়। হেনরীর লাশ দুর্ঘটনায় নিহত অন্যান্যের লাশের সাথে একটি হল কক্ষে রাখা হয়েছিল।

হল কক্ষে হেনরীর লাশ ছাড়া অন্যান্যের লাশ ছিলো কাঠের কফিনে। হেনরীর লাশই শুধু ছিল ধাতব কফিনে। তার তারুণ্য ও আকর্ষণীয় চেহারা মেমফিসের মহিলাদের বেশ প্রভাবিত করেছিলো। তারা চাঁদা করে হেনরীর জন্যে একটা ধাতব কফিন কেনে। তার জন্যে বিশেষভাবে তৈরি করে শ্বেত পুষ্পের একটা তোড়া। তারা তোড়াটি রাখে হেনরীর ঠিক বুকের ওপর।

মার্ক টোয়েন হল ঘরের দরজায় এসেই থমকে দাঁড়ান, এবার বাস্তবতাকেই স্বপ্ন বলে ভ্রম হয় তাঁর। স্বপ্নে দেখা ঘটনা আর বাস্তবতায় অমিল নেই কোনো- শুধু লাল গোলাপটি ছাড়া। তিনি দরজায় দাঁড়িয়ে যখন এ কথা ভাবছেন, তখন আর এক মহিলা একটি লাল গোলাপ হাতে নিয়ে তার গা ঘেঁষে কক্ষে প্রবেশ করে। মহিলা সরাসরি হেনরীর কফিনের নিকট যায়। শ্বেত পুষ্পস্তবকের ওপর আলতোভাবে রাখে লাল গোলাপটি।
### ### ####

ম্যান দ্বীপে বসবাসরত বালক এড্রিন ক্রিশ্চিয়ান স্বপ্ন দেখে যে, সে একটি জাহাজে ক্যাপ্টেনের দায়িত্বলাভ করেছে। তার পরিবার রয়েছে অন্য জাহাজে। তারপর জাহাজটি হঠাৎ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং সে তার জাহাজ নিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরদিন সকালে সে তার ভাই টমাসকে স্বপ্নের কথা বলে। বালক এড্রিন একদিন সত্যি সত্যি জাহাজের ক্যাপ্টেনে পরিণত হয়।

১৮৮০ সালে ‘বৃটিশ ইণ্ডিয়া’ জাহাজ অস্ট্রেলিয়ার লণ্ডনী থেকে রেঙ্গুনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ জাহাজ পরিচালনার ভার ছিল ক্যাপ্টেন এড্রিন ক্রিশ্চিয়ানের ওপর। রেঙ্গুন অভিমুখে যাত্রার কয়েকদিন পর পর ক্যাপ্টেন এড্রিন স্বপ্ন দেখেন যে, একটি জাহাজ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। স্বপ্নের শেষে ‘ফ্যামিলি’ শব্দটি অত্যন্ত জ্বলজ্বলভাবে তার চোখের সামনে ভাসতে থাকে। ছোট বেলার স্বপ্নের কথা মনে পড়ে যায় তার। পরদিন তিনি তার সন্ধান তৎপরতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করলেন।

পরবর্তী রাতে একই স্বপ্নের পুনরাবৃত্তি ঘটে। তার মধ্যে এ অনুভূতির সঞ্চার হয় যে, বিপদগ্রস্ত জাহাজটি তার নিজের জাহাজের উত্তরে রয়েছে। অধীনস্থ অফিসারদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও তিনি তার জাহাজের গতি উত্তরে পরিবর্তিত করেন। দু’দিন ক্রমাগত চলার পর তিনি দূর-দিগন্তে একটি নিমজ্জমান জাহাজের মাস্তুল দেখতে পান। বিপন্ন জাহাজের কাছে সময়মত পৌঁছতে পারায় ২৬৯টি প্রাণ রক্ষা পায়। এদের মধ্যে তার ভাই টমাসও ছিলেন। নিমজ্জিত জাহাজটির নাম ছিল ফ্যামিলি।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×