somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি বাংলায় কথা কই!

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেদিন এই বসন্তে ফাল্গুনের বাতাসে মিশে ছিল কান্নার আওয়াজ।বাসন্তী পরশ সেদিন কারো মন রাঙ্গাতে পারেনি।রফিক,সালাম,বরকত,সফিউরের,…,…রক্তে ভিজে গেছে আমতলা।রক্তে ভেজা বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে বাংলা বর্নমালা।দুষ্টচক্র তাদের হত্যা করেছে ঠিকই।কিন্তু তাদের প্রানে সেদিনের সেই ধ্বনিত বাংলা ভাষা আজও বাংলার আকাশে ধ্বনিত হচ্ছে।তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি।জয় হয়েছে রফিক সালাম বরকতদেরই,জয় হয়েছে বাংলার,জয় হয়েছে বাংলাভাষার।এত ত্যাগের বিনিময়ে আর কোন দেশে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ঘটনা ইতিহাসে বিরল।ভাষার জন্য আমাদের এই আত্নদান বৃথা যায়নি।২১ ফেব্রুয়ারি এখন শুধু শহীদ দিবস নয়,২১ ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।সারা বিশ্ব এখন দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে।ক্রমাগতই বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে।আজ সিয়েরালিওনের প্রধান ভাষা বাংলা।আগামীকাল ২১-এ ফেব্রুয়ারি,মহান শহীদ দিবস,আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।কালের ক্রমান্বয়ে ভেসে কাল আমাদের আত্নদানের ৬০ বছর পুর্ন হবে।রফিক সফিক সালাম বরকরতরা শহীদ হয়েছেন,চলে গেছেন পরজনমে।কিন্তু তাদের স্মৃতির মিনার আজো মাথা উচু করে দাড়ায়ে।তাদের আত্নদানের ফসল এই বাংলা ভাষা এখনো বাংলার আকাশে ধ্বনিত হচ্ছে,সুশোভিত করেছে বাংলার মাটি।তোমাদের ভুলিনাই,ভুলবোনা।যে বাংলা গেথেছি বুকে এ সহজে ছাড়ার নয়।আর এই বাংলা ভাষা যতদিন বেচে থাকবে ততদিন তোমরাও বেচে থাকবে বাংলার বুকে।সশ্রদ্ধ সালাম তোমাদের তরে।ছোট্ট শিশুর মুখে আদর মাখা ‘মা’ ডাক কিংবা ‘বাবা’ ডাক বুঝি এই বাংলা ভাষায়ই এত মিষ্টি করে বলা সম্ভব।আমার মনে হয় পৃথিবীর আর কোন ভাষায় এত সহজে,এত মধুরতায়,এত প্রান ভরে,…,এত আবেগে ভাব বিনিময় সম্ভব নয়।আমাদের অনেক বোদ্ধাজন আক্ষেপ করে বলেন আজো আমরা এই দেশে বাংলা ভাষার সঠিক প্রচলন করতে পারেনি/সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না।এর দায়ভার তারা তরুন সমাজের উপর বর্তান।আমি তাদের সাথে পুরোপুরি একমত হতে পারছিনা।আমাদের আটষট্টি হাজার গ্রামে সহজ সরল খেটে খাওয়া মানুষগুলো এখনো তাদের সেই পরিচিত আঞ্চলিক বাংলা ভাষায়(বাংলা ভাষার এক রুপ) তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে।এটা কখনোই বাংলা ভাষার বিকৃতি নয়।এসব আঞ্চলিক ভাষা সংরক্ষন ও বাচিয়ে রাখার দ্বায়িত্বও আমাদেরই।আর এখনকার তরুন সমাজ তাদের কথোপকোথনে বাংলা ভাষার সাথে অন্য ভাষার মিশ্রন ঘটাচ্ছে।এটা কেবলই সাময়িক কথোপকোথনের সুবিধার্থে।তার মানে এই নয় যে আমরা সব খানে এমনটাই করছি।আধুনিকতার প্রসারে ইংরেজি ভাষায় নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির নিমিত্তে তরুন সমাজ তাদের কথোপকোথনে ইংরেজীর মিশ্রন ঘটাচ্ছে।আর বাংলা ভাষার ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের অনেকের সুস্পষ্ট ধারনা নেই বলে আমরা আমাদের ব্যবহৃত অনেক বাংলা শব্দই ভুল ভাবে উচ্চারিত করছি।এ ক্ষেত্রে প্রশাসন তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাকে নতুন ভাবে যুক্ত করতে পারে।প্রাইমারী পর্যায়ের মত উচ্চ পর্যায়েও বাংলা বিষয়কে পাঠ্যের আওতায় আনা যেতে পারে।আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলা ভাষাকে আরো সম্প্রসারিত করতে হবে।অবিলম্বে জাতিসংঘে বাংলা ভাষাকে দাপ্তরিক ভাষা করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করতে হবে।আমরা কী করবো?আমাদের উচ্চ শিক্ষা নিতে হয় ইংরেজী মাধ্যমে।চাকুরির ক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষাকে প্রাধান্য দেয়া হয়।সুতরাং আমাদের কথোপকোথনে ইংরেজী আসতেই পারে।তবে সাম্প্রতিক মহলে বাংলা ভাষা সম্পর্কে তরুনদের নিয়ে যতই আলোচনা হোক আমি বলবো এই তরুনরাই বাংলা ভাষাকে এখনো টিকিয়ে রেখেছে,টিকিয়ে রাখবেও।কেননা এই তরুন সমাজই একদিন তাজা প্রান সফে দিয়েছিল এই বাংলা ভাষার জন্য।সুতরাং তরুন সমাজ বাংলাকে উপেক্ষা করতে পারেনা।ইন্টারনেটে বাংলার ব্যবহার ক্রমাগতই জনপ্রিয় করে তুলছে এই তরুনরাই।এই বাংলার মায়া যে কারো পক্ষে ছাড়া সম্ভব নয়।সারাদিন হেডফোনে ইংরেজী কিংবা হিন্দিগানে যতটা না প্রান জুড়ায় তার চেয়ে বেশি প্রান জুড়ায় একটি রবীন্দ্রসংগীতে।মাকে একটি বার ‘মা’ না বলে ইংরেজী বা হিন্দি বা অন্য যেকোন ভাষায় ডাকুন,পরমুহুর্তে আপনার কী মনে হয়!মা নামে ডেকে যত তৃপ্তি পাওয়া যায় অন্য কোন ভাষায় মা ডেকে তত তৃপ্তি আপনি পাবেন না।যত যাই বলি না কেন এই বাংলা আমাদের মনের দ্বার উম্মুক্ত করে দিয়েছে।পৃথিবীতে এমন সুমধুর ভাষা আর কী আছে বল!আমি বাংলায় কথা কই-এর চেয়ে বড় গর্ব একজন বাঙ্গালীর জীবনে আর কী হতে পারে?
মোদের গরব
মোদের আশা
আ-মরি বাংলা ভাষা।
আমি ধন্য মাগো জন্মে তোমার কোলে।আমি ধন্য মাগো-আমি বাংলায় কথা কই!


এই ফাগুনে আমি হাসবো কেমন করে,ওরে বলনা তোরা
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×