somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামাজ!নামাজ!!নামাজ!!!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নামায অবহেলাকারীর দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তি!

নামায অবহেলাকারীর দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তি!
সালাতের উপকারিতাঃ’সালাত’ আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ দু’আ, তাসবীহ, রাহমাত কামনা, ইসতিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা), দয়া ইত্যাদি। (ইসলামী বিশ্বকোষ, ই.ফা. ২৪ খন্ড ২য় ভাগ ১১১পৃ) শারী’আতের পরিভাষায় নির্দিষ্ট রুকন ও যিকরসমূহকে বিশেষ পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ে আদায় করাকে সালাত বলে।
ঈমান ছাড়া অন্য চারটি রুকনের (ভিত্তির) মধ্যে এটা সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বজনীন। সালাতকে দ্বীনের খুঁটি বলা হয়, খুঁটি ছাড়া যেমন ঘর হয় না সেরূপ সালাত ছাড়াও দ্বীন পরিপূর্ণ হয় না।

সালাতের মর্যাদাঃ
১। নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ “ব্যক্তি এবং শির্ক ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালত ছেড়ে দেয়া।” (মুসলিম হাঃ ১৫৪)
২। রুরাইদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “আমাদের এবং কাফিরদের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত, অতএব যে সালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল।” (নাসাঈ, ই.সে. হাঃ৪৬৪)
৩। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আরো বলেছেন, “ক্বিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার সালাতের হিসাব নেয়া হবে। যদি তা যথাযথ হয়, তবে সে সফল হলো এবং মুক্তি পেল। যদি তা গড়বড় হয় সে ধ্বংস হলো ও ক্ষতিগ্রস্ত হলো। (নাসাঈ হাঃ ৪৭৫)
৪। নাবী (সাঃ) আরো ইরশাদ করেন, “আমি মানুষের সাথে সংগ্রাম করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত তারা স্বীকার করে নেবে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তারা সালাত কায়িম করবে।” (বুখারী, আ.প্র. হাঃ ২৪)
৫। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞেসা করলাম, কোন ‘আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেনঃ ওয়াক্তমত সালাত আদায় করা, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা এবং মহামহিমাম্বিত আল্লাহর পথে জিহাদ করা।”(মুসলিম, ই.সে. হাঃ ১৬১)
৬। নাবী (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সালাতের হিফাযত করে তার জন্য তা ক্বিয়ামতের জ্যোতি, দলীল ও পরিত্রাণের কারণ হবে।” (মিশকাত হাঃ৫৩১)
৭। আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী (সাঃ) বলেন, তোমরা বলতো যদি তোমাদের দরজার সন্নিকটে একটি নদী থাকে যাতে সে প্রত্যাহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে তার (দেহে) কি কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে? সকলে বলল, তার কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না। তিনি বললেন, অনুরূপই পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উপমা। এর দ্বারা আল্লাহ পাপরাশিকে মুছে ফেলেন।”(বুখারী, হাঃ ৪৯৭)
৮। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এবং এক জুমু’আর সালাত থেকে পরবর্তী জুমু’আর সালাত তার মাঝখানে সংঘটিত (ছোটখাট) গুনাহসমূহের কাফফারা (ক্ষতিপূরণ) হয়ে যায়; তবে শর্ত হলো কাবীরাহ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।”(তিরমিযী হাঃ ২০৫)
৯। সালাতের উপকারিতা সম্পর্কে হাদীসে রয়েছে- যে ব্যক্তি ফারয সালাতসমূহের হিফাযত করবে অর্থাৎ যথাসময়ে ও সঠিকভাবে সালাত আদায় করবে আল্লাহ তা’আলা তাকে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য দ্বারা সম্মানিত করবেন। (০১) ‘অভাব-অনাটন ও দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে তাকে মুক্ত রাখবেন, (০২) তার ক্ববর আযাব হবে না, (০৩) তার ‘আমালনামা ডান হাতে দেয়া হবে, (০৪) সে বিদ্যুতের ন্যায় (জাহান্নামের উপরের) পুলসুরাত পার হয়ে যাবে এবং (০৫) বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (কিতাবুল কাবায়ির-ঐ, ২৬পৃঃ)
১০। ইবনু মুহাইরীয (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহ বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফারয করেছেন। যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে এবং এগুলোর মধ্যে কোন সালাতকে অবজ্ঞাভরে ধ্বংস করবে না, তার জন্য আল্লাহর এই ওয়াদা রয়েছে যে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।”(নাসাঈ হাঃ৪৬২)

সালাত অমান্যকারীর ভয়াবহ পরিণাম:
১। আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামীদের প্রসঙ্গে ইরশাদ করেনঃ “তোমাদের কিসে জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, আমরা সালাত আদায় করতাম না।” (সুরা মুদদাসসির, আঃ ৪২-৪৩)
২। আলী (রাঃ) -কে এক বেনামাযী মহিলা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, যে সালাত আদায় করে না সে কাফির।” (তিরমিযী)
৩। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করেনা তার কোন দ্বীন নেই।” (মুহাম্মাদ ইবনু নসর মারফূ সনদে বর্ণনা করেন)
৪। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সালাত বিনষ্টকারী হিসাবে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হবে আল্লাহ তার অন্যান্য পুণ্যের প্রতি গুরুত্ব দিবেন না। (কিতাবুল কাবায়ির ইমাম শামসুদ্দিন যাহাবী (রঃ), ২৩-২৪)
৫। একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবাদের উপলক্ষ করে বলেছেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে কোন হতভাগা এবং বঞ্চিতকে রেখো না। অতঃপর তিনিই জিজ্ঞেসা করলেনঃ তোমরা কি জান কে হতভাগা এবং বঞ্চিত? তারা বললেনঃ কে সে ব্যক্তি হে আল্লাহর রাসূল, (আমরা তা জানি না) তিনি বললেনঃ “সে হলো সালাত তরককারী।” বর্ণিত আছে যে, কিয়ামাদের দিন সর্বপ্রথম সালাত পরিত্যাগকারীর চেহারা কাল হবে। জাহান্নামে ‘মুলহাম’ নামে একটি উপত্যকা আছে। সেখানে নানা প্রকার সাপ রয়েছে। প্রত্যেকটি সাপ উটের ঘাড়ের মত মোটা এবং দৈর্ঘ্য হলো এক মাসের পথ। ঐ সাপ সালাত তরককারীকে দংশন করবে এবং তার বিষক্রিয়া সত্তর বছর পর্যন্ত শরীরে স্থায়ী থাকবে। অতঃপর তার গোশত পঁচে গলে পড়ে যাবে।
৬। একদা বনী ঈসরাইলের এক মহিলা মুসা (আঃ)-এর নিকট গিয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি জঘন্য পাপ করেছি এবং এজন্য আমি আল্লাহ তা’আলার দরবারে তাওবাও করেছি। আপনি আল্লাহ তা’আলার কাছে আমার তাওবাহ ক্ববুল হওয়ার ও আমার গুনাহ মাফ করে দেয়ার জন্য দু’আ করুন! মুসা (আঃ) তাকে বললেন, তুমি কী অপরাধ করেছ? সে বলল হে আল্লাহর রাসূল! আমি ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে পড়েছিলাম, এতে আমার একটি সন্তান জন্ম নিয়েছিল। অতঃপর আমি তাকে হত্যা করে ফেলেছি। একথা শুনে মুসা (আঃ) বললেন, ওহে চরিত্রহীনা! তুমি এখান থেকে বেরিয়ে যাও, অন্যথায় তোমার অপকর্মের শাস্তিস্বরূপ আকাশ হতে আগুন এসে আমাদের সকলকে জ্বালিয়ে দিবে। তখন মহিলাটি তার নিকট থেকে মর্মাহত ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বেরিয়ে গেল। তারপর জিবরাঈল (আঃ) নাযিল হয়ে বললেন, হে মুসা আল্লাহ তা’আলা আমাকে এই মর্মে আপনার নিকট কৈফিয়ত তলব করতে বলেছেন যে, কেন আপনি তাওবাকারী মহিলাকে বের করে দিলেন এবং তার মধ্যে আপনি কী দোষ পেয়েছেন? মুসা (আঃ) বললেন, হে জিবরাঈল! তার চেয়ে বেশী পাপী আর কে হতে পারে? জিবরাঈল (আঃ) বললেন, যে ইচ্ছা করে সালাত ত্যাগ করে সে ঐ মহিলার চেয়েও মারাত্মক পাপী।”
৭। যে ব্যক্তি সালাতের প্রতি গাফলতি ও অবজ্ঞা প্রদর্শন করবে আল্লাহ তা’আলা তাকে পনেরটি শাস্তির সম্মুখীন করবেন। এর পাঁচটি শাস্তি হবে দুনিয়াতে, তিনটি হবে মৃত্যুকালে, তিনটি ক্ববরে এবং তিনটি ক্ববর থেকে বের হবার সময়।
দুনিয়ার শাস্তিগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ (০১) তার জীবনকাল থেকে বরকাত উঠে যাবে, (০২) তার চেহারা থেকে নেককার বান্দাদের নূরানী দীপ্তি চলে যাবে, (০৩) আল্লাহ তা’আলা তার কোন ‘আমালেরই প্রতিদান দিবেন না, (০৪) তার দু’আ আসমানে পৌঁছাবে না এবং (০৫) নেককার লোকদের দু’আয় তার অংশ থাকবে না।
মৃত্যুর সময়ের শাস্তিগুলো হলোঃ (০১) সে অপমানিত এবং অপদস্থ হয়ে মারা যাবে (০২) ক্ষুধার্ত অবস্থায় তার মৃত্যু হবে এবং (০৩) এমন তৃষ্ণার্ত অবস্থায় মারা যাবে যে, দুনিয়ার সকল সমুদ্রের পানি পান করানো হলেও তার পিপাসা মিটবে না।
ক্ববরে যে শাস্তি হবেঃ (০১) তার ক্ববর সংকুচিত হবে এবং এমন ভাবে চাপ দিবে যে, এক দিকের পাঁজরের হাড় অন্যদিকে চলে যাবে (০২) তার ক্ববরে আগুল জ্বলতে থাকবে এবং সে রাতদিন সেই অগ্নি স্ফুলিঙ্গের উপর ছটফট করতে থাকবে এবং (০৩) তার ক্ববরে “আশ-শুজা’উল আকরা” বা “বিষধর অজগর” নামে এক বিরাট সাপ নিয়োগ করা হবে। যার চোখ হবে আগুনের, নখগুলো হবে লোহার এবং প্রত্যেকটি নখের দৈর্ঘ্য হবে এক দিনের দুরত্বের সমান। তার আওয়াজ মেঘের গর্জনের মত। সে বজ্র নিনাদে মৃতব্যক্তিকে ডেকে বলবেঃ আশি শজা’ (বিষধর অজগর) আমাকে আমার রব আদেশ করেছেন, তোমাকে ফাজরের সালাত বিনষ্ট করার কারণে সূর্যোদয় পর্যন্ত দংশন করার জন্য। অনুরূপভাবে যুহরের সালাত নষ্ট করার জন্য আসর পর্যন্ত, আসরের সালাত নষ্ট করার জন্য মাগরিব পর্যন্ত, মাগরিবের সালাতের জন্য ইশা পর্যন্ত এবং ইশার সালাতের জন্য ফাজর পর্যন্ত তোমাকে দংশন করতে আদেশ করা হয়েছে। অতঃপর তার উপর আক্রমণ শুরু হবে। প্রতিবার আঘাতে সে সত্তর গজ মাটির নিচে চলে যাবে। এভাবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার উপর শাস্তি চলতে থাকবে।
আর ক্ববর থেকে বের হবার পর যে সব শাস্তি হবেঃ (০১) ক্বিয়ামতের মাঠে তার হিসাব-নিকাশ অত্যন্ত কঠিন হবে, (০২) আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট ও রাগাম্বিত থাকবেন এবং (০৩) সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।


জাম’আতের সাথে সালাত আদায়ের গুরুত্বঃ
আল্লাহ তা’আলা কুরআনে সালাত সম্পর্কে জামা’আতেরই হুকুম দিয়ে বলেছেন, “তোমরা সালাত কায়িম কর” “তোমরা রূকুকারীর সাথে রূকু কর অর্থাৎ জামা’আতে সালাত আদায় কর”
১। আবনু আব্বসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আযান শোনে অথচ জামা’আতে আসে না তার সালাতই হয় না। অবশ্য ওযর ছাড়া’ (ইবনু মাজাহ, হাঃ ৭৯৩)। অন্য বিওয়ায়তে আছে, সাহাবীরা জিজ্ঞেসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ওযর কি? তিনি বললেন, ভয় ও অসুখ (আবূ দাউদ, মিশকাত)। তিনি বলেন, পুরুষ মানুষের সবচেয়ে উত্তম সালাত তার ঘরে, কিন্তু ফারয সালাত নয়। (বুখারী, মুসলিম)
২। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, অন্ধ একটি লোক নাবী (সাঃ) এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে ধরে মাসজিদে নিয়ে আসার মত কেউ নেই। তাকে বাড়িতে সালাত আদায় করার অনুমতি প্রদান করার জন্য সে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে আবেদন জানালো। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে বাড়িতে সালাত আদায় করার অনুমতি দিলেন। কিন্তু লোকটি যে সময় ফিরে যেতে উদ্যত হলো তখন নাবী (সাঃ) তাকে ডেকে জিজ্ঞেসা করলেন? তুমি কি সালাতের আযান শুনতে পাও? সে বললো, হাঁ (আমি আযান শুনতে পাই) নাবী (সাঃ) বললেনঃ তাহলে তুমি জামা’আতে উপস্থিত হও।”(নাসাঈ হাঃ ৮৫১-৮৫২)
৩। সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী (সাঃ) থেকে স্বপ্নে দেখা বৃত্তান্ত সংক্রান্ত হাদীস বর্ণনা করলে নাসী (সাঃ) বললেন, পাথরের আঘাতে যে ব্যক্তির মাথা চূর্ণ-বিচূর্ন করে দেয়া হচ্ছে সে ব্যক্তি কুরআন মুখস্থ করে (তৎপ্রতি যত্নশীল না হওয়ার কারনে) ভুলে যায় এবং ফাজরের সালাত আদায় না করে ঘুমিয়ে থাকে।” (বুখারী হাঃ ১০৭২)
৪। একদা নাবী (সাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমার কখনো ইচ্ছা হয় যে, একজনকে দিয়ে সালাত শুরু করিয়ে দেই এবং তারপর যারা সালাতে হাযির হয়না আমি পেছন দিয়ে গিয়ে তাদের ঘরে আগুন লাযিয়ে দেই। (তিরমিযী হাঃ ২০৮), মুসনাদে আহমাদের রিওয়ায়তে আছে যে, ঘরের মধ্যে যদি নারীরা ও ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা না থাকতো তাহলে আমি ‘ইশার সালাত শুরু করে দিয়ে যুবকদের হুকুম দিতাম যে, ঘরের মধ্যে যা কিছু আছে তা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দাও। (মিশকাত হাঃ ১০০৬)
৫। আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যদি লোকেরা ‘ইশা’ ও ‘ফাজরের’ সালাতের কী যে ফাযীলাত তা জানতো তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দুই সালাতের জামা’আতে উপস্থিত হতো। (ইবনু মাজাহ, আ.প্র. হাঃ ৭৯৬)
৬। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, জামা’আতের সাথে সালাত আদায় করলে একা সালাত পড়ার তুলনায় ২৭ গুণ বেশী সাওয়াব হয় (মুসলিম হাঃ ১৩৬২)। আনাস আবনু মালিক থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ৪০ দিন জামা’আতে তাকবীরে উলা (জামা’আতের প্রথম তাকবীর) পেয়ে সালাত আদায় করবে তার জন্য দু’টি মুক্তি সনদ লিখে দেয়া হবে; একটি জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি এবং দ্বিতীয়টি মুনাফিক্বী থেকে মুক্তি (তিরমিযী, হাঃ ২২৯)। উসমান হতে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ইশার সালাত জামা’আতে আদায় করে সে যেন অর্ধেক রাত সালাতে কাটায় এবং যে ব্যক্তি ফাজরের সালাত জামা’আতে আদায় করে সে যেন সারারত সালাতে কাটায়।”(মুসলিম হাঃ ১৩৭৬)
৭। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যখন বান্দ প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করে, তখন তা সরাসরি আসমানে পৌঁছে যায় এবং তার জন্য তা নূর হয়। এমনিভাবে তা আরশে আযীম পর্যন্ত উপানীত হয়। পরিশেষে উক্ত সালাত তার আদায়কারীর জন্য ক্বিয়ামতের দিন পর্যন্ত মাগফিরাত কামনা করতে থাকবে। সে বলবে, আল্লাহ তোমাকে হিফাযাত করুন যেভাবে তুমি আমাকে হিফাযাত করেছো, আর যখন কোন বান্দা ওয়াক্ত সরে যাওয়ার পর সালাত আদায় করে তখন তা আসমানে উঠে যায় এবং তার জন্য অন্ধকারস্বরূপ হয়ে যায়। যখন তা আসমানে উপনীত হয় তখন পুটলী তৈরী করা হয় যেমন ছেঁড়াফাড়া ছিন্ন বস্ত্র দ্বারা পুটলী বানানো হয় এবং সে তা সালাত আদায়কারীর চেহারায় নিক্ষপ করে। আর বলতে থাকে, আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুক যেভাবে তুমি আমাকে ধ্বংস করেছো। (কিতাবুল কাবায়ির, ২৪পৃঃ)
আসুন, ব্লগের সকল মু’মিন মুসলমানগণ আমরা সকলে যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামায জাম’আত সহকারে আদায় করি এবং দুনিয়াবাদীর কারনে যেন কখনো নামাযের খিয়ানত না করি। আজ আমরা মুখে যত বড় বড় কথাই বলি না কেন, নিজেদের যত বড় ওস্তাদ/জ্ঞানী বলেই মনে করি না কেন, মৃত্যু যখন সামনে আসবে আমাদের সকল অহমিকা মূহুর্তেই ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। যখন শরীরের শক্তি কমে যাবে তখনকার আমল তেমন একটা কাজে আসবে না, তাই সময় থাকতে আমরা সচেতন হই এবং আল্লাহ কাছে ক্ষমাভিক্ষা চেয়ে চিরতরে বে-নামাযীর খেতাব শরীর থেকে মুছে ফেলি। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করুন। আমীন…
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×