“ওই গাঁখানি কালো কালো, তারি হেলান দিয়ে,
ঘরখানি যে দাঁড়িয়ে হাসে ছোনের ছানি নিয়ে ;
সেইখানে এক চাষীর মেয়ে নামটি তাহার সোনা,
সাজু বলেই ডাকে সবে, নাম নিতে যে গোনা |”
এরপর তার বর্ণনা এভাবে-
“লাল মোরগের পাখার মত ওড়ে তাহার শাড়ী,
ভোরের হাওয়া যায় যেন গো প্রভাতী মেঘ নাড়ি |
মুখখানি তার ঢলঢল ঢলেই যেত পড়ে,
রাঙা ঠোঁটের লাল বাঁধনে না রাখলে তায় ধরে |
ফুল-ঝর-ঝর জন্তি গাছে জড়িয়ে কেবা শাড়ী,
আদর করে রেখেছে আজ চাষীদের ওই বাড়ি |
যে ফুল ফোটে সোণের খেতে, ফোটে কদম গাছে,
সকল ফুলের ঝলমল গা-ভরি তার নাচে |”
জসীমউদ্দীন এই চরিত্রটি বাস্তব এক চরিত্র অবলম্বনে রচনা করেন। এই বাস্তব চরিত্রটি হচ্ছেন ছবির এই মানুষটি । ঊনার আসল নাম ‘আমেনা বেগম’। গবেষকদের কারও কারও মতে ঊনার নাম ছিল ‘ললিতা বেগম’
আমার ছোটবেলার প্রায় পুরোটা সময় ঊনার সাথে কেটেছে। ইনি আমার দাদী। আমি অবশ্য দাদা বলেই ডাকতাম….
জসীমউদ্দীন ১২-১৩ বছরের এই নারীর রুপেগুণে মুগ্ধ হয়ে বিখ্যাত এই কাব্যগ্রন্থ রচনা করে ফেলেন। ভাগ্যিস কাজী নজরুল ইসলাম ৬০ বছর বয়সী এই আমেনা বেগমকে দেখেননি। দেখলে হয়ত আরেকটা বিদ্রোহী কাব্য লিখার অনূপ্রেরনা পেয়ে যেতেন। সে গল্প আরেকদিন হবে…
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫