আটটার দিকে বাড়ী থেকে বের হয়ে মোড়ের চায়ের দোকান থেকে হাত দশেক দূরে দাঁড়িয়েছি রিক্সা ধরব বলে।হঠাৎ দেখি রিমি আসছে রিকশায় চড়ে।রিমি হচ্ছে আমার পছন্দের একমাত্র মেয়ে।অনেকদিন যাবৎ চেষ্টা করেও কোন কূল কিনারা হলোনা তাকে এখন বলতে পারিনি “আমি তোমাকে ভালবাসি”।অনেক সুযোগ খুজেছি মনের কথাটা বলার জন্য কিন্তু পাইনি।রিমি এবার নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছে।
আমার আর রিমির পড়ালেখার তফাৎ ও কিছূদুর।আমার বন্ধু তোরাব তাকে প্রাইভেট পড়ায়।তোরাব অবশ্যই জানে আমি রিমিকে পছন্দ করি।কিন্তু শালা সেও পছন্দ করে রিমিকে।এখানেই প্যাঁচ।তাকে সাহায্য করতে বললে সে বলে,দেখ দোস্ত,শুধু তুই কেন আরো পাচজন বন্ধুর ও একই প্রস্তাব রিমির ব্যাপারে আমি যেন তাদের সাহায্যকরি।আমি শুধু তোর জন্য তো আর পাঁচজন কে কষ্ট দিতে পারিনা।তাছাড়া আমার ও রিমিকে পছন্দ।
তবু আমি জানি রিমি আমাকে কিছুটা লাইক করে।তাই ভেবে চিন্তে আজই তাকে মনের মতো করে মনের কথা বলব বলে সিদ্ধান্ত নিলাম।কেননা এরপর হয়তো এমন সুযোগ নাও মিলতে পারে।
আমার কাছাকাছি রিক্সা আশামাত্রই রিমিকে ডাক দিলাম।রিমি রিক্সা দাঁড় করিয়ে নেমে আমার কাছে এসে বলল,কিছু কি বলবেন ভাইয়া?
আমার ভীষন ভয় হলো,ভয়ে ভয়ে বললাম তুমি কোথায় যাচ্ছ?উত্তরে সে বলল,না কোথাও না,এমনি এদিকে এক বান্ধবীর বাড়ী যাচ্ছি।আর কিছু কি বলবেন?
:না মানে তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।
:হ্যা বলুন।
(ভয়ে তখন আমার হাঁটু কাপছে,কেন যে এত ভয় পাচ্ছি নিজেও জানিনা)
চারিদিকে তাকিয়ে বললাম,কথাটা কি এখানে বলব?
রিমি কিছুটা হেসে জবাব দিল,কোন সমস্যা না থাকলে এখানেই বলতে পারেন।
তাড়াতাড়ি বলুন আমার কিন্তু দেরী হয়ে যাচ্ছে।
আমি জানি রিমি এতক্ষণে বুঝে ফেলেছে আমি কোন কথাটা বলতে ডেকেছি।কিন্তু আমার খুব ভয় হচ্ছে বিধায় বলার সাহস পাচ্ছিলাম না।তারপর ও মুখ খুলে বলার চেষ্টা করলাম,আমি
তো……তো……তো……
:হ্যাঁ বলুন কি বলতে চান?রিমি বলল।
:না মানে আমি তো……তোরাব কে খুজছি,তুমি কি জানো সে কোথায় আছে?
তারপর রিমি ‘জানিনা’ বলে হেসে রিক্সা উঠে চলে গেল আর আমার দিকে লক্ষ করে বলে গেল “বেচারা”।
আর আমিও বোকার মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার গমন পথের দিকে তাকিয়ে রইলাম।