somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কমেডি নাকি ট্রাজেডি !!!! :|:|:|:D

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এই সিরিজটা কন্টিনিউ করতে আমার খুবই মন চায়। কিন্তু চাইলেই সম্ভব না, কারণ ঘটনা ত ঘটে না। আর যখন ঘটে তখন মনেও হয় না যে এটা বলার মত কিছু। অনেক পরে যখন নিজে নিজে মনে আসে, তখন খেয়াল করি, আরে এইটা ত “বলার মত বিশাল ঘটনা।”

এরকম অনেকদিন পরে লেখার কিছু পাওয়া গেলো।



মাস খানেক আগের ঘটনা। আমরা ক্লাসের পোলাপান ধুমধাম করে ডিসিশান নিয়ে ফেললাম যে সেমিস্টার ফাইনালের আগে ঢাকার কাছাকাছি কোথাও ১ দিনের জন্যে ঘুরে আসি। একেবারে সেকশানের সবাই মিলে। কুইক প্ল্যান অনুযায়ী তার পরের দিন সবাই বের হয়ে গেলাম সেই ভোরে। কোথায় যে যাচ্ছি সঙ্গত কারণেই সেটা এখন বলা যাবে না।



আমাদের ৪০টা ছেলের সাথে ২-৩ জন মেয়েও ছিলো। এখন ওরা ত রাত পর্যন্ত রাস্তায় থাকবেনা। সুতরাং ওদের জন্য পুরা প্ল্যান অনেক শর্ট করা হল। এমনভাবে সব কিছু ঠিক করা হল যেন রাত ৮টার মধ্যে ওরা বাসায় পৌঁছাতে পারে। ত অনেক ঝামেলা করে ভোরে ঘুম থেকে উঠে লোকাল বাস আর লোকাল ট্যাম্পুতে করে আমরা এত্তগুলা পোলাপান সেই জায়গাতে পৌঁছালাম। কিন্তু এরপরে ত বিশাল ঝামেলা, কারণ আমরা পৌঁছেছি সকাল ১১ টায়। আর উনারা গেট খুলবেন ২ টা ৩০ মিনিটে। কী আজব ব্যাপার, অথচ এই সাড়ে ৩ ঘণ্টা মিস গেলে ত ঘোরাঘুরি শেষ হতে অনেক সময় লেগে যাবে। তাড়াহুরার প্ল্যান আর আগে যারা বেড়াতে এসেছিলো এখানে কেউই এইরকম কোন নিয়মের কথা বলেনি। আমরা জেনেছিলাম গেলেই নাকি ঢোকা যায়। এখন ত পুরা ধরা । X(



গেইটে আমরা অনেক রিকোয়েস্ট করলাম। অনেক ভাবে বললাম, বুঝালাম কিন্তু কিছুতেই কাজ হল না। সবার সব রকম কেরামতি শেষ কিন্তু লাভ হল শূণ্য। হঠাৎ পোলাপান আমাকে আর আমার এক বান্ধবীকে দেখিয়ে গেটম্যানকে বলে যে, এই দুইটা আমাদের টিচার। আমাদের নিয়ে আসছে। আপনাদের ম্যানেজমেন্টে যারা আছেন তাদের সাথে উনাদের একটু কথা বলিয়ে দেন। আমি আর সেই বান্ধবী ত পুরা থতমত। এখন কী আর করা, যা ডুবার ডুবে ত গেছিই। তাছাড়া বাইরের লোকদের সামনে ওই ছেলেগুলাকে ধরে পিটানীও ত দেয়া যায় না।X((

ত আমি গেটে যারা ছিলো আর কেয়ারটেকার/ম্যানেজার এর সাথে ভুং চুং বললাম। কোনভাবেই উনারা গেট খুলতে রাজি না। উনাদের নাকি চাকরি চলে যাবে। অনেক ভাব গম্ভীরতার সাথে ভাব টাব মেরে অনেক বুঝিয়ে টুঝিয়ে একটা চুক্তিতে আসলাম যে আমাদের অন্তত ১ টায় ঢুকতে দিবে। তার আগে কোন মতেই না। তাও হিসব অনুযায়ী ২ ঘণ্টা আমাদের শুধু বসেই থাকতে হবে। পোলাপান খুবই হতাশ।


এই দুই ঘণ্টা আমরা বনে বাদারে, মাটির ঘরে, দোকানে চা খেয়ে, রাস্তায় ঘুরে টুরে কাটালাম। পরে যখন ফেরত আসছি, আমার ত আর খেয়াল নাই যে আমি টিচার !! এতক্ষণ অপেক্ষা করে ঢোকার সুযোগ পেয়েছি; সুতরাং ভিতরে যেয়েই হই হই রই রই করে চেচামিচি শুরু করে দিছি। ত ম্যানেজার আর বাকিরা দেখি তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমার একটু অবাক লাগলেও পাত্তা দেই নি আর। /:)

কিন্তু ঘটনা হল, আমার ফাজলামি ত তখনও শুরুই হয় নাই। ভিতরে দারুণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে সাথে প্রচুর মূর্তি/ভাস্কর্য। খুবই আর্টিস্টিক আর সুন্দর কারুকাজ করা। ছেলে আর ছেলের মা, পরী, দানব, ডাইনোসর এইসব মূর্তিতে ভরা। চারিদিকে খালি ক্যামেরার ক্লিট ক্লিট আওয়াজ। এর মধ্যে আমি একটা “পরকীয়া” পোজ দিলাম :P। মানে হলো, সেই যে ছোট ছেলে আর তার মায়ের মূর্তি আছে না; ঐখানে দাঁড়িয়ে ঐ ইয়েতে হাত দিয়ে কয়েকটা ছবি তুললাম। এরপর ত পোলাপানের মধ্যে এইসব ছবি তোলার জোয়ার এসে গেল। :P খালি ক্যামেরার আওয়াজে আকাশ বাতাস কাপতেছে তখন। এরপর দিঘীর পাশে পরী দাঁড়িয়ে। হাতে লাইট। আমার সাথে ৪-৫ টা বিটলা পোলাপান সেইখানেও পরীদের ইয়েতে হাত দিয়ে, মাথা দিয়ে, মুখ দিয়ে কয়েকটা অশ্লীল ছবি তুলে ফেলল :D। এখন সিরিয়ালে আমি শেষে। অবশেষে একেকজনের দুর্লভ ফটোসেশনের পর একসময় আমার পালা আসে। আমি দু একটা ছবি তুললাম। এরপর যখন পিছন ঘুরে মূর্তির ইয়ে ধরে একটা ইয়ে মার্কা পোজ দিয়ে ছবি তুলতে গেছি, সামনে দেখি কেউ নাই। আরে কী আজব ত, ১ মিনিটে সবাই কই গেলো !! :-/:-/

দেখি ঘটনা তা না, আমার পিছে কেয়ারটেকার/ম্যানেজার আর গেটের ওই লোকেরা দাঁড়িয়ে আছে। ওহ, ঠিক একই সময়ে মনে পড়ল উনারা ত জানে আমি টিচার !!!!!!
:-/:-/আআআআআআআআআআআ:-/:-/আআআআআআ:-/:-/আআআআআআ। (উফফফ, সেই সময় টিচার সাজার কথা আমার মনে না পড়লে এমন কিছু খারাপ লাগত না।)

মানে পালানোরও উপায় নেই, চেহারা ঢাকারও উপায় নাই। পোলাপান আমাকে বলারও সুযোগ পায় নাই, আগেই সব ভাগছে। আর আমি নিজে পোজ দিচ্ছিলাম বলে টের পাইনি।/:)

আমি ভাবতেছি ওই ব্যাটারা কী ভাবতেছে যে এই টিচার কী করতেছে !! ওহ।

আমার মান ইজ্জত সাগর সমান। বালতি বালতি গেলেও তাই গায়ে লাগে না, কারণ আরও এক সাগর বাকি। তবে সেই দিন মনে হয় কয়েকশত বালতি মান ইজ্জত ধুলায় মিশে গেছিল !! নইলে এত লাগত না !!:|:|

। Shame on me !!! আমি পুরাই খারাপ !! X((X((X((



এই সিরিজের বাকি লেখা গুলা দেখতেঃ Click This Link

এইটা ১৬ তম পর্ব।

নতুন লেখাগুলোর খবর পেতে লাইক দিতে পারেন Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৩৪
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×