somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএনপি-জামায়াতের বাড়োয়ারী সংগঠনের তালিকা !!

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজধানীকেন্দ্রিক বিএনপি ও জামায়াত ঘরানার নামসর্বস্ব প্রায় অর্ধশত সংগঠন অনেকটা হঠাত্ করেই গড়ে উঠেছে। তাদের বিশেষ কোনো কর্মসূচি নেই। তবে দল ও রাজপথে নিষ্ক্রিয় বিএনপি এবং জামায়াত নেতাদের কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া, বিনিময়ে ক্ষমতায় গেলে সুনজরে থাকা-সেই লক্ষ্যে সংগঠনগুলো ঠিকই স্থির রয়েছে। আর বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কার্যক্রমও এসব সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভা ও গোলটেবিল বৈঠকেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
মাসে মাসে নতুন করে গজিয়ে ওঠা ‘জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী’ এসব সংগঠন প্রায় প্রতিদিনই জাতীয় প্রেসক্লাব এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আলোচনা সভা, গোলটেবিল বৈঠক ও মানববন্ধনের মতো কর্মসূচির আয়োজন করছে। আগামীতে ফায়দা লুটতেই বর্তমানে তাদের আবির্ভাব। বিএনপির মধ্যম সারির এক নেতা বলেন, কেবল বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতার নৈকট্য ও পরবর্তী সময়ে দল ক্ষমতায় গেলে বিশেষ ফায়দা পেতে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়ান-ইলেভেনের সময় ছাড়াও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নতুন কিছু সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ইদানীং এই সংগঠনগুলোর তত্পরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিনই তারা কর্মসূচি পালন করে। তাদের কতগুলোর নেই স্থায়ী কোনো কার্যালয়। অনেকের কাছেই এসব সংগঠন ‘দোকান’ নামে পরিচিত। সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়া বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশেই বসানো হয় কিছু ব্যক্তিকে। তাদের কেউ পরিচিত মুখ না হলেও অনুষ্ঠানের খরচ প্রদানের জন্যই তারা সিনিয়র নেতাদের পাশে ঠাঁই পায়। অভিযোগ রয়েছে, সংগঠনগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারা কর্মসূচি পালনের নাম করে তাদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নামসর্বস্ব সংগঠনগুলোর সভাপতি, মহাসচিব, সাধারণ সম্পাদকসহ মাত্র কয়েকটি পদে লোক থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সংগঠনের মহাসচিব জানান, বড় নেতাদের পাশে বসানোর চুক্তিতে নিচের সারির অনেক নেতার কাছ থেকে টাকা নিয়েই খরচ মেটানো হয়। একটি সংগঠনের এক নেতা জানান, এসব অনুষ্ঠানের সব খরচ মেটানোর পর যা উদ্বৃত্ত থাকে তা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদরা ভাগাভাগি করে নেন। বিএনপির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকলে সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হন বলে সেসব নেতাকে অনুষ্ঠানে রাখাও হয়।
নামসর্বস্ব উল্লেখযোগ্য এই সংগঠনগুলো হল-
আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহর স্বাধীনতা ফোরাম,
মেজর (অব.) মেহবুব রহমানের বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক একাডেমি ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল
আবদুর রহমান তপনের জিয়া সেনা
মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সম্মিলিত সমন্বয় পরিষদ
মো. কামরুজ্জামান সেলিমের স্বদেশ জাগরণ পরিষদ
ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিনের দেশনেত্রী সাংস্কৃতিক পরিষদ
রাজিয়া আলীমের দেশপ্রেমিক ফোরাম
আবদুল মান্নান জমাদ্দারের জিয়া স্মৃতি সংসদ
মিয়া মো. আনোয়ারের জিয়া নাগরিক ফোরাম ইত্যাদি।
এছাড়া যেসব সংগঠন সক্রিয় রয়েছে সেগুলো হল-
জিয়া আদর্শ একাডেমী, তৃণমূল দল
চেতনায় ’৭১, সচেতন নাগরিক ফোরাম
চেতনায় মুক্তিযোদ্ধা, আমরা-৭১
জাগ্রত জনতা ফোরাম, আমাদের কথা
নাগরিক পরিষদ, গণমুক্তি আন্দোলন পরিষদ
বাসাস, নাগরিক অধিকার সোসাইটি
গণতান্ত্রিক ঐক্য ফোরাম
গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট
প্রজন্ম একাডেমি, নাগরিক সংসদ
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন
সচেতন জিয়া নাগরিক সংসদ
সামাজিক আন্দোলন সংস্থা
নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল
গণতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম
সচেতন যুবসমাজ
স্বদেশ মঞ্চ
বাংলাদেশ সচেতন যুবসমাজ
ভয়েস অব বাংলাদেশ
সুশীল ফোরাম
নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ
দেশপ্রেমিক ফোরাম
চিরন্তন বাংলাদেশ
হূদয়ে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম
জিয়া পরিষদ
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম
জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন (জিসাস)
তৃতীয় স্বর
দেশপ্রেমিক যুবশক্তি
নাগরিক ফোরাম
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট
সচেতন নাগরিক পরিষদ
জিয়া ব্রিগেড। এছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব ছিলেন। তিনি বর্তমানে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের এই সংগঠনগুলো জাতীয় ইস্যু ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে মানুষ যেন সচেতন হতে পারে আমরা সে কাজই করছি।
হঠাৎ গজিয়ে ওঠা সংগঠনের ব্যানারে সভা-সেমিনারের আড়ালে রাজনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। এ রকম অন্তত সাতটি সংগঠনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যার নেতৃত্বে আছেন জামায়াতের নেতরাই। দলের পক্ষে প্রচার চালানো ও জনমত গঠনই.এসব.সংগঠনের.কাজ।
বর্তমানে প্রায় ১৫টি জামায়াতপন্থি সংগঠন সক্রিয়। তাদের অনেকগুলোর জন্ম ১৯ সেপ্টেম্বরের পর। আবার এক নেতাই ঘুরে ফিরে প্রায় সব সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। জামায়াতেও তারা পদধারী নেতা। এসব সংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও গণমাধ্যমে পাঠানো হয় একই ই-মেইল ঠিকানা থেকে। মাঝেমাঝে জামায়াতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় একই ঠিকানা থেকে। সংগঠনগুলোর নেই নিবন্ধন কিংবা কমিটি। নেই কোনো কার্যালয়। শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেন্দ্রিক এসব সংগঠন। এদের কাজ হলো জামায়াতের পক্ষে বিভিন্ন ইস্যুতে মানববন্ধন, আলোচনা সভা, সেমিনার কিংবা গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা।
নাগরিক ফোরাম
সুশীল ফোরাম
জাগ্রত জনতা ফোরাম
দেশপ্রেমিক ফোরাম
স্বাধীনতা ফোরাম
দেশপ্রেমিক যুব শক্তি
সম্মিলিত পেশাজীবী ফোরাম
ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ
কৃষিবিদ ফোরাম, চিকিৎসক ফোরাম
মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম নামের এসব প্যাডসর্বস্ব সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন জামায়াতের মহানগর ও থানা পর্যায়ের নেতারা। জামায়াত ও এর দুই অঙ্গসংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এবং চাষি কল্যাণ ফেডারেশন, জামায়াতের অনুসারী ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির পুলিশের বাধায় স্বনামে কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। তাই জামায়াতের পক্ষে এবং সরকার ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিপক্ষে জনমত গঠনে কাজ করছে এসব সংগঠন। জামায়াতের হয়ে কাজ করলেও এসব সংগঠনের সভা-সেমিনারে জামায়াতের নেতাদের আলোচক কিংবা বক্তা হিসেবে খুবই কম আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলোর প্রথমসারির নেতা, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরই এসব সভা-সেমিনারে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এমনকি বামপন্থি নেতারাও এসব আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত বক্তা হন। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল
কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম, স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব এবং এলডিপি সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল অলির মতো নেতাদেরও এসব সংগঠনের আলোচনা সভায় বক্তা করা হয়।
হঠাৎ গজিয়ে ওঠা জামায়াতপন্থি সংগঠনের একটি নাগরিক ফোরামের সভাপতি আবদুল্লাহ মাসুদ জামায়াতের নেতা। তিনি আবার সুশীল ফোরাম ও জাগ্রত জনতা ফোরামের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। জাগ্রত জনতা ফোরাম সভাপতি শহীদ চৌধুরীও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনিও আছেন সম্পৃক্ত হঠাৎ গজিয়ে ওঠা প্রায় সব সংগঠনের সঙ্গেই। ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও মহাসচিব শেখ আল আমীন দু'জনই ঢাকা মহানগর জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তারা দু'জনই দলের রুকন। শেখ আল-আমীন আবার আরেক সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী ফোরামেরও সাধারণ সম্পাদক।
ঢাকা মহানগর জামায়াতের প্রচার সম্পাদক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এসব তথ্য স্বীকার করেন। তিনি বলেন, প্রেস ক্ল্লাব ও ডিআরইউতে যত কর্মসূচি হয়, তাতে আয়োজক-শ্রোতা সবাই আমাদের লোক। সবাই ডানপন্থি।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×