somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনতার সেবক ব্যারিস্টার আনিস আজ হাটহাজারীতে জনতার হাতে গনধোলাই খেয়ে পালিয়ে বাঁচলেন।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নন্দির হাটে মসজিদের উপর হামলার প্রতিবাদে হাটহাজারীর জনসাধারণ হাটহাজারীর কালীবাড়ি মন্দিরে ভাংচুর করে। জুম্মার নামাজের পর লোকজন কালীবাড়ি মন্দিরের সামনে জমায়েত হতে থাকে। সকাল থেকেই মন্দিরের মধ্যে পুলিশ পাহারায় ছিলো। জুম্মার নামাজের পর সকলের সাথে কালীবাড়ির সামনে ছোট ছোট দলে লোকজন মসজিদের দিকে আসতে লাগল। সকলের মুখে প্রতিবাদ ধ্বনি। দফায় দফায় লোকজন মন্দির গেইটে হামলার চেষ্টা করে। গেইটে কিছু মাথা মোটা লোক তাদের কে হামলা করতে নিষেধ করেন। এদিকে হাটহাজারী মাদ্রাসার সব গুলো গেইট সাথে সাথে তালা বদ্ধ করে দেয় মাদ্রাসা কতৃপক্ষ। তাই ম‍াদ্রাসার ছাত্র তেমন যোগ দেওয়ার সুযোগ পাইনি। এক সময় এক দল লোকজন গেইটের সামনে হামলা করে এবং গেইট ভেঙ্গে ফেলে। ভিতরে থাকা পুলিশ বাঁধ‍া দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে জনগণের মার খেতে থাকে। আমিও সেই সময় মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করি। পুলিশের মার খাওয়া দেখে খুব মায়া হল। এক পুলিশ দলপতির মাথায় ইট পড়ে। মাথায় মন্দিরের একটা গামছা বেধেঁ ফেলে।মুষলধরে ইট বৃষ্ট হতে থাকে। আর কিছুক্ষন এভাবে মার খলে হয়তো মারাই যেত কেউ। তাড়া তাড়ি পুলিশদের কে এক পাশে সরিয়ে নিয়ে গেলাম। তারা হাত জোড় করে মাফ চাইতে থাকে। এবং বলতে থাকে আমরাও তো মসলমান। আমাদের কে মারবেন না। আমি পুলিশদের কে বললাম যে আপনারা পেছন দিক দিয়ে বেরিয়ে যান। আপনাদের দেখলে জনগণ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যাবে। এক পুলিশ সদস্য বললো এই দেখেন আমার হাত ভেঙ্গে গেছে। পুলিশ দলপতি বললেন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চলেন। আমি বললাম যে এখন হাসপাতালে যাওয়া ভালো হবে না। আগে থানায় গিয়ে জান বাঁচান। ওদের কে দিওয়াল পার করে দিলাম। পেছনের গলি দিয়ে তাদের কে বেরিয়ে যেতে বললাম। তারা চলে গেলো। এবার মন্দির ফাঁকা। যে যার মত আসতে লাগল এবং এটা ওটা ভাঙা শুরু করল।মন্দিরের দামি জনিস গুলো আগে থেকেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিলো সম্ভবত। তাই তেমন মুল্যবান কোন জিনিস দেখতে পেলম না। তবে একটা কম্পিউটার দেখা গেছে রাস্তার আগুণে জ্বলতে। মন্দিরের কোন জিনিস কেউ নিয়ে যায়নি। যে যা পেয়েছে সব আগুনের মধ্যে ফেলেছে। এর পর এক দল মাথা মোটা লোক আবার এসে হামলাকারীদের সরিয়ে নিয়ে যায়। মন্দিরের বাইরের কিছু জিনিস ভাঙ্গা হয়। মেন প্রাঙ্গন অক্ষতই থেকে যায়। এভাবে দফায় দফায় হামলা চলতে থাকে।
আসরের বেশ আগে জনতার সেবক ব্যারিস্টার আনিস আহমেদ জনতা কে সান্ত করতে এলেন বেশ চড়া মেজাজ নিয়ে। রাজকিয়ো ভাবো হেলে দুলে থানার দিক থেকে কাচারি রোডের মোড় “ত্রিবেনী” মিষ্টির দোকান পর্যন্ত আসলেন। তার পর মন্দিরের সমনে আসলে ক্ষুদ্ধ স্থানীয় জনগণকে শান্ত করতে গেলেন। নিজে কড়া মেজাজ দেখিয়ে সকলকে শান্ত থাকতে বললেন। তার কড়া মেজাজ দেখে লোক জন আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। লোক জন কে থামাতে তিনি কয়েক জন কে চড়ও মারেন।
জানি একথা শুনে কেউ হয়তো বলবেন যে, এমন পরিস্থিতিতে তিনি কি ভাবে চড় থাপ্পড় মারতে পারেন? কন্ত আসল ঘটনা এমই। তার হাতে চড় খাওয়া এক জন এসে বললো যে, আমি ব্যারিস্টার কে স্রদ্ধা করতাম। কিন্ত সে আমাকে আজ চড় মারল।
আসলে আজকের এই লেখার পেছনে এমন কিছু মানুষের মনের ব্যাথা কাজ করছে। আর মার্কেটের ছাদের উপর থেকে সবই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো।
যা হোক তিনি বললেন যে, “আপনার শান্ত হন। নন্দীর হাটে যে মসজিদ ভাঙ্গা হয়েছে তার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আপনারা শান্ত হন মন্দিরের উপর আর হামলা করবেন না।“ ব্যারিস্টার আনিসের কথা শুনে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। লোক জন বলতে থাকে যে আপনি কি মসজিদ নিয়ে ব্যাবসা করতে এসেছেন। হিন্দুরা মসজিদ ভেঙ্গেছে, মুসলিমদের আপমান করছে। আমরা কি তাদের মন্দিরে আগে গিয়েছিলাম। নামাজের সময় তাদের গান বাজনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। তারা কথা না মেনে গান বাজনা করতে থাকে। এক সময় দুই পক্ষে তর্কাতর্কি হয়্। তার পর মসজিদের দেওয়ালা ভেঙ্গে ফেলে। তাই মন্দির ভাঙ্গা। আর আপনি মসজিদ নিয়ে ব্যাবসা করতে এসেছেন।
তার পর কেউ এক জন বলে উঠে- এই ধর একে, মসজিদ নিয়ে ব্যাবসা করতে এসেছে। এর পর সবাই কিল ঘুষি দেওয়া শুরু করে। জনগণের হাত থেকে রেহাই পেতে এক দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়েন। তার পর দোকানদার সাটার বন্ধ করে দেয়। এবং দোকানের পিছন দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে লোকজন দোকানের উপর আছড়ে পড়ে। এর পর মন্দির মার্কেটের দোকান গুলো ভাঙ্গা শুরু হয়। এভাবে অনেক গুলো দোকান ভেঙ্গে ফেলে। “ত্রিবেনী” মিষ্টির দোকানটিও ভেঙ্গে ফেলে এবং লুটপাট করে।
কিছক্ষন পরে কয়েক শত পুলিস আসে পরিস্থিতি শান্ত করতে। কিন্ত পুলিশ দেখে লোকজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ধাওয়া করলে পুলিশ থানার মধ্যে ঢুকে যাই। পের লোকজন মন্দিরটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের জিনিস পাতি আগে থেকেই সরয়ে ফেলে মন্দির কতৃপক্ষ। তাই বাইরের কিছু ফ্যান এবং অন্নন্য জিনিস পুড়ে যায়। ফয়ার সার্ভিস আসে আগুন নিভাতে। কিছুক্ষণ হোস পাইপ দিয়ে আগুন নিভালে জনগণ ফায়ার সার্ভিস কে ফিরিয়ে দেয়। আসে পাসের দোকানে লুটপাট চলে।
সন্ধার দিকে আমি ওখান থেকে চলে আসি। এর পর প্রশাসন ১৪৪ ধার জারী করে ২৪ ঘন্টার জন্য।সন্ধার পর আর লোকজনকে বাইরে চলা ফেরা করতে দেখা যাইনি। আর এই হলো আজকের ঘটনার সঙ্কিপ্ত বর্ননা।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×