২০০৮ সালের নভেম্বরে যৌথভাবে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ক্লিন এয়ার ইনিশিয়েটিভ-এশিয়া সেন্টার প্রণীত ‘ক্লিন এয়ার ইন বাংলাদেশ: সামারি অব প্রোগ্রেস অন ইমপ্রুভিং এয়ার কোয়ালিটি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরই বাতাসে অসহনীয় মাত্রায় ছিল বস্তুকণা। প্রতিবেদনে থাকা উপাত্ত অনুযায়ী, ২০০৭ সালে গড়ে ঢাকার বাতাসে পিএম২.৫ (২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণা) ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৭০ মাইক্রোগ্রামেরও বেশি। অথচ বছরের গড় হিসাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহনীয় মাত্রা ১৫ মাইক্রোগ্রাম। এ ক্ষেত্রে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বস্তুকণা প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। একই উপাত্ত অনুযায়ী, ওই বছর ঢাকার বাতাসে পিএম১০ (১০ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণা) ছিল ১৩০ মাইক্রোগ্রামের বেশি। অথচ এ ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের সহনীয় মাত্রা ৫০ মাইক্রোগ্রাম।
ঢাকা শহরের বায়ুতে বস্তুকণার পরিমাণ জানতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে একটি কার্যক্রম চালিয়েছে। তারা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের সাহায্যে ২০০৭-০৮ সালে ঢাকার বাতাস থেকে বস্তুকণার পরিমাণ বের করেছে। তাতে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় প্রবাহিত বাতাসে পিএম২.৫ (ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটার) বস্তুকণা বা ধূলিকণার পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে ১১০ মাইক্রোগ্রাম। পিএম২.৫-এর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত সহনীয় মাত্রা ২৫ এবং যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি-নির্ধারিত সহনীয় মাত্রা ৩৫ মাইক্রোগ্রাম। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর ৬৫ মাইক্রোগ্রামকে সহনীয় মাত্রা হিসেবে নির্ধারণ করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের এই সহনীয় মাত্রা হিসাবে ধরলে ঢাকার বাতাসে বস্তুকণা সহনীয় মাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
ঢাকা শহরের ম্যানহোলগুলোর ঢাকনা তুলে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রতিনিয়ত যে মানব স্খলিত মল-নির্যাস তুলে দিনের পর দিন ফেলে রাখা হয় এবং তা শুকিয়ে যখন এসব বস্তুকণার সহযোগী হিসেবে আমাদের শ্বাসযন্ত্র দিয়ে শরীরে ঢুকছে তার পরিমাণ কত মাইক্রোগ্রাম ? সেই হিসাবটা করেছেন কি ?
ভাবুনতো - তাহলে এই সব বস্তু কণার মধ্যে ঢাকা শহরের মানুষ দৈনিক কত মাইক্রোগ্রাম মানব-মল খাচ্ছেন ?