প্রখ্যাত কৃষক নেতা জিতেন ঘোষ
মা, বাবা, ভাই-বোনের সাধারণ পরিবারে জিতেন ঘোষ ছিলেন কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী। বাল্যকাল সম্পর্কে তিনি লিখেছেন-“রাজনীতিতে তখনও নাম লিখাইনি। কিন্তু মনে মনে এদেশে ইংরেজ রাজত্ব পছন্দ করতাম না। একটু অপমান ও লজ্জা বোধ করতাম ইংরেজদের অধীনে আছি বলে” (জেল থেকে জেলে-পৃষ্ঠা:-১)। কৈশোরের প্রথম থেকেই তিনি গীতা, চন্ডী পাঠ করে আত্মিকশক্তি ও সংগ্রামী মনোভাবকে উদ্দীপ্ত করে সাধারণ মানুষকে সেবা করার জন্য সেবাশ্রম ও লাইব্রেরী গড়ে তোলেন। এখান থেকে তিনি দেশপ্রেমের ভাবধারাকে সহপাঠী তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাকে বিপ্লবীদের একজন মনে করে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কয়েক দিন আটক রেখে মারধর ও জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। আগুনে ঘৃতাহুতির মতো, একারণে জিতেন ঘোষের মনে স্বাধীনতার আগুন জ্বলে উঠে।
প্রাথমিক পড়াশুনা শেষ করার পর তাকে কাজিরপাগলা অভয়কুমার তালুকদার হাই স্কুলে ভর্তি করানো হয়। স্কুলে পড়াশুনাকালীন সময়ে তিনি বিপ্লববাদী দল যুগান্তরের সাথে যুক্ত হন। বিক্রমপুরের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রদেরকে নিয়ে বিপ্লবী গ্রুপ গঠন করেন। ১৯১৭ সালে এই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর আই.এ. ভর্তি হন। এসময়েও তিনি বিপ্লবী দলে কলেজ ছাত্রদের টেনে আনার কাজে যুক্ত থাকেন। ১৯১৯ সালে আইএ পাশ করার পর ১৯২০ সালে বিএ ভর্তি হন। ১৯২১ সালে তিনি অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে কলেজ ত্যাগ করে ওই আন্দোলনে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত হন এবং স্কুল-কলেজের শত শত ছাত্রকে এই অসহযোগ আন্দোলনে শামিল করেন। এই আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে ব্রিটিশ তাকে গ্রেফতার করে দেড় বছর সশ্রম কারাদন্ড দিয়ে ঢাকা জেলহাজতে পাঠায়।
তখন জেলখানাগুলোতে দেশপ্রেমিক কয়েদীদের উপর ব্রিটিশ সীমাহী নির্যাতন চালাত। কয়েদীদের ঘানি টানানো হতো। দুর্গন্ধযুক্ত, পাথর মিশানো ভাত, জঙ্গলের তরিতরকারী ও ছোবলাসহ ডাল ছিল কয়েদীদের খাবার। আর কথায় কথায় দৈহিক নির্যাতন তো রয়েছেই। কিন্তু এর কোনোকিছুই জিতেন ঘোষকে দুর্বল করতে পারেনি। তিনি ইংরেজ জেলের নিয়ম-কানুন পরোয়া করতেন না। এজন্য তাঁকে বহুবার বেদমভাবে মারধর করা হয়েছে। তবু তাঁর একই কথা তিনি ইংরেজ জেলের নিয়ম-কানুন মানেন না। একদিন তাঁকে ঘানি টানার জন্য নেয়া হল। তিনি প্রথম থেকেই একাজ করতে অস্বীকৃতি জানান। জেলের কর্মকর্তা তাকে প্রচন্ডভাবে মারধর শুরু করেন। জিতেন ঘোষও হাতের কাছে যা পান তা দিয়ে মার প্রতিরোধ শুরু করলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ পাগলাঘন্টি বাজালো। ততক্ষণাৎ লাঠী, বন্দুকধারী সিপাহীরা এসে প্রচন্ডভাবে মরতে শুরু করে। তাঁর নিজের বিবরণ থেকে বুঝা যাবে মারের রূপ কি ছিল।
“—চলল মার। উঃ কি দারুণ সে মার’। “আমার গা দিয়ে রক্ত বেরুল। নাক দিয়ে রক্ত ছুটল। আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। অজ্ঞান অবস্থায় আমাকে নিয়ে ডিক্রীতে বন্ধ করে দেওয়া হল। আমি মেঝেতেই পড়ে রইলাম। বেশ কিছুক্ষণ পড়ে জেগে দেখি পানির কলসিটাও নেই। সরানো হয়ে গেছে। একটু পানিও খেতে পেলাম না। ডাক্তার আসাতো দুরের কথা, একফোটা ঔষধও পেলাম না। পানির অভাবে নাক-মুখের রক্তও ধোয়া গেল না। কম্বলটা বেশ করে বিছিয়ে শুয়ে পরলাম” (জেল থেকে জেলে-পৃষ্ঠা:-১৩)।
এত অত্যাচারের পরও তিনি জেলের নিয়ম-শৃঙ্খলা মানলেন না। এর ফলে সদাসন্ত্রস্ত কয়েদীদের কাছে তিনি হয়ে উঠেন এক অসাধারণ মানুষ এবং দুর্ধর্ষ কয়েদীরা এসে তাকে সেলাম দিতে শুরু করে। কারাঘারা একজন কয়েদীর এ ধরণের প্রতিবাদ, দ্রোহ দেখে সবাই একটু একটু প্রতিবাদী হয়ে উঠতে শুরু করেন। এই বৈশিষ্ট না থাকলে বন্দীদের জেল জীবনের সম্মান রক্ষার লড়াই করা সম্ভব হতো না।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আকুতি
দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ক- এর নুডুলস
অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।
ক
একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন