somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রসফায়ার, একটি সরকারি প্রেস-নোট আর যুদ্ধাপরাধী ও একটি সার্কাসের সমাপ্তি

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেখুন আমরা বাঙ্গালিরা বিভিন্ন কঠিন সমস্যার অদ্ভুত সব সমাধান বের করেছি। যার মধ্যে গত এক দশকে দুটি জিনিস খুবিই জনপ্রিয় আর কার্যকর হিসেবে নাম করেছে তার একটি হল ক্রসফায়ার আর অপরটি সরকারি প্রেস-নোট (তবে ইদানীং গুম হত্যা নামক আরও দারুণ ব্যাপার চালু হয়েছে); এদুটি জিনিস আমরা মেলা কাজে ব্যবহার করেছি বিরোধীদল দমন থেকে শুরু করে, বেয়ারা ছাত্র অথবা উঠতি রংবাজ এরকম সব অপ্রয়োজনীয় মানব দঙ্গল পরিষ্কারে এর জুড়ি নাই। তো আর একটি কাজে একে ব্যবহার করলে তেমন আর কি ক্ষতিবৃদ্ধি হবে। যুদ্ধাপরাধী দমনে একে ব্যবহার করলে কেমন হয়। কল্পনা করুন আজ থেকে কয়েক সপ্তাহ পরের একটি সরকারি প্রেস-নোট
****
প্রজ্ঞাপন অধিকর্তা : তন্ত্র-মন্ত্রহীন বাংলাদেশ সরকার
বিষয় : মাঝরাতে কতিপয় যুদ্ধাপরাধীর ক্রসফায়ার প্রসঙ্গে

গতকাল মাঝরাতে সরকারি R, P এবং M বাহিনীর একটি সমন্বিত দল একদল যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে বিশেষ অভিযানে বের হয়, কিন্তু পথিমধ্যে কিছু সংখ্যক রাজাকার আর তাদের সহযোগী দোসর B পার্টির সন্ত্রাসী দ্বারা আক্রান্ত হয়। ধারনা করা হচ্ছে যে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য ছিল যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে তাদের বিদেশে পাচার করা যাতে তারা বিচারের হাত থেকে বেচে যেতে পারে। আমদের সাহসী বাহিনী তাদের সেই চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছ। শুধু তাই নয় গো.আ., সা.কা., মতি সহ সকল যুদ্ধাপরাধী পলানোর সময় মারা গেছে যদিও সন্ত্রাসীদের কাউকেই ধরা সম্ভব হয় নাই। .......... বাকি অংশ পুরনো যেকোনো প্রেস-নোট থেকে কপি করে নিন।
****

যদি আনন্দিত হন কোন কথা নাই। কিন্তু চমকিত্ বা অবাক হলে দুইটা কথা আছে। কেন ভাই সব ভুলে গেলেন নাকি গত এক দশক ধরে এটাইত আমাদের বিচারের পদ্ধতি, সস্তা এবং জনপ্রিয় ঠিক বাংলা সিনেমার মত। তবে মনে হয় একটু ভুল হয়ে গেল, এক দশক নয় বরং চার দশক ধরে আমাদের ক্ষুদ্র ইতিহাসে এভাবেই ন্যায় প্রতিষ্ঠা করছি। রাজনৈতিক হত্যা শুরু হয়েছিল সিরাজ শিকদার দিয়ে তারপর, শেখ মুজিব, চার নেতা, তাহের, জিয়া, ডা: মিলন আর বছর বছর নামহীন কতশত মানুষ যাদের জীবননাশ সংবাদপত্রের এক লাইনে উল্লেখেরও যোগ্য নয়।

তবে আমি এটাকে সমর্থন দিচ্ছি অন্য এক কারণে। কোন কিছু বলা যায় না, হাজার অন্যায় এর কোন প্রতিবাদ করা যায় না, কারণ একটাই ক্ষমতাসীন আর তাদের চেলচামুন্ডারা রৈ রৈ করে ওঠে – সব কিছু গোল্লায় যাক, আগে হবে যুদ্ধাপরাধীর বিচার তার পর সব কিছু, তাতে গণতন্ত্র নামক যত্তসব তন্ত্র ফন্ত্র আগামী কয় দশক ধরে বন্ধ থাকে তাতে কুছ পরোয়া নেই। আমরা শেয়ার মার্কেট লুটবো, বিদ্যুতের নামে ব্যাংকের সমস্ত আমানত লুটবো, পুরনো স্টাইলের চুরি চামরী আর টেন্ডার-বাজি তো আছেই । আর সব আখের গুছিয়ে পাঠাব বিদেশে, স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় নয়ত প্রভুর দেশ বিলেতে, নিদেন পক্ষে মরু শহর দুবাই তো আছেই। বিদেশের সবাই ডাকছেরে আমায় কত ডিগ্রী কত পুরস্কার শুধু তোরাই আমার দামটা বুঝলি না।

আগের ক্ষমতাসীনরা ছিল চোর আর বর্তমানেরটা ডাকাত। কিন্তু ডাকাতই বা বলি কি ভাবে, ডাকাত অন্যায় করে কিন্তু দুর্বল আর কাপুরুষ বলে কেউ গালি দিতে পারবে কি? পড়শি ভারত যখন নেংটা করে পিটায়, মেরে কাটাতারে ঝুলিয়ে রাখে কই তখন তো কোন হুংকার শুনিনি, তখন জিভ দিয়ে লালা পরে আনন্দে লেজ নাচাতে থাকে ঠিক যেন কার্তিক মাসের কুকুরী। আনন্দে সব দিয়ে দেয় নদী, মাটি পারলে আমদের বসন টুকুও।

অন্ধ হ বোবা হ কালা হ, বেশী খারাপ লাগলে গলায় দড়িদে কিন্তু কিছু দেখবি না, কিছু শুনবি না আর অবশ্যই মুখ খুলবি না যদি জানের মায়া থাকে। ঠিক আছে প্রভু তাই সই, কিন্তু প্রার্থনা ছিল যে একটা। কি?? একী সার্কাস দেখতে দেখতে একঘেয়েমিতে মরে যাচ্ছি প্রভু। ঝুলিয়ে দিন না যুদ্ধাপরাধী কুমিরের ছানা গুলিকে, এবার না হয় আমরা তুল তুলে শালিক ছানা ধরে নিয়ে আসব।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×