somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পড়াশুনা করে যে হাতি ঘোড়া চড়ে সে.......।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হায়রে পড়াশুনার পাঠ যখন শেষ করলাম মনে মনে ভাবলাম "অবশেষে!!......শেষ হইলো নিজের উপর এই নির্মম অত্যাচারের যুগ!....... আহ্ যেন প্রান আসলো ধরে.......! আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে.......! জীবনটা কি সুন্দর!!......" আরো কত কি...। কিছুদিন এই ভাবে আনন্দে জীবন কাটানোর পরে হঠাৎই একদিন সকালে আবার পড়াশুনার ভুত চেপে বসল...। কেনরে বাবা তুই ভুত এত খাটাখাটনি আর কস্ট দেবার পরে অবশেষে একদিন যখন ঘাড় থেকে নামলিই তবে আবার ফেরার কি দরকার ছিলরে বাপ তোর :(?? জ্ঞানার্জন তো আর কম হয়নি জীবনে। এত জ্ঞান দিয়ে করবটা কি?

তো এই ভুত আবার ঘাড়ে চাপাতে আবারও নাম লেখানো হলো গায়ে পরে সেই কস্ট নেবার জীবনে......এহ্ এ যেন জেনে শুনে ড্রাগে আসক্ত হওয়া :((:((

যাই হোক এখন সমস্যা হলো পড়তে বসলেই পৃথিবীর সবচাইতে যে জরুরী কথা, সেগুলো মাথায় আসে, আর তা হলো:

১। মনে হয় এক বছর অভুক্ত আছি, সব মন গলানো খাবারের কথা মাথায় আসে............। মনে হয় খাদ্য ছারা আর দু'মিনিট কাটালে প্রান বুঝি যাবেই চলে। সময়ের অভাবে আর আলসেমিতে একটা স্যান্ডউইচ বানিয়ে খেতে গেলে অর্ধেকটাও শেষ করতে পারিনা কারন খিদে আসলে লাগেই নাই :|X(

২। মনে পরে করবিকে একটা ভিষন জরুরী কথাটা বলা দরকার, যা গতরাতেও কথা বলার সময় বলা হয়নি :P

৩। মনে পরে পারভিন আপু কে খুবই জরুরী একটা অষুধের নাম এস এম এস করা হয়নি যা গত তিন মাস ধরে করব বলে কথা দিয়েছি :|

৪। ফেসবুকে শুভ'র বান্দরামি কমেন্টের উত্তরটা গতকাল দুপুরে থেকে আজ পর্যন্ত দেয়া হয়নি X((

৫। আরে স্বপ্নকে তো অনেকদিন ঝারিঝুরি মারা হচ্ছেনা ছেলেটা কে একটা ঝারি দেবার সময় হয়েছে।

৬। রিতুর কাজ শেষ হলেই যে জরুরী ইনফরমেশনটা তাকে দেয়া দরকার সেটা এখনই ড্রাফ্ট না করে রাখলে আর পরে মনে থাকবেনা।:D তিন দিন ধরে সেই কথাটা মাথায় আছে।

৭। আহা গত তিন বার যখন আম্মার সাথে কথা হয়েছে তখন আম্মাকে তো বলা হয়নি যে আমি কবে ঢাকা থেকে ফিরতি ফ্লাইট টা ধরব :-* আম্মাকে একটা ফোন করা দরকার।

৮। গত তিনদিন ধরে আমার ডাক্তারেরকে এপয়েন্টমেন্টের জন্য ফোন করা হয়নি।

৯। পড়তে বসে চশমা খুজে না পাওয়া এবং ঘন্টা দেড়েক চশমা খুজতে টাইম পাস করা, কারন চশমা ছাড়া আমি আন্ধা ফকির। X( ভাবি চশমার সাথে একটা রিং টোন থাকা উচিত ছিল। চশমা হারালেই চশমাকে ফোন দিতাম আর চশমা বেজে উঠত....আমিও জেনে যেতাম চশমা কোথায়। এমন করে ঘরের চাবিরও একটা রিং টোন দরকার। মোবাইল হারালে যেমন ল্যান্ড ফোন থেকে মোবাইলে কল করলেই মোবাইল জানান দেয় কোথায় আছে ;) ঠিক তেমন। চশমা আর ঘরের চাবি সব সময় হারায়। :( এই দুইটাকে কল করার ব্যবস্থা থাকা অতি জরুরী।

১০। পড়তে বসে পেন ও মার্কার পেন হতের চৌদ্দ সীমানায় না পাওয়া। X(( মার্কার খুজতে আবার কয়েক মিনিট চলে যায়। :(

১১। আমার পড়াশুনার অর্ধেক ল্যাপি বেইসড। ল্যাপিতেও চার্জ তাড়াতারি চলে যায়, নিপো ভাইয়ার শেষ গাওয়া গান গুলো ননস্টপ বাজানোর জন্য :( ( গান না শুনলে আবার পড়া ভাল হয় না কিনা ;) ) এই নিপো ভাইটার কোন গান ইউটিউবে নাই। তাই নিজেই ওর একটা গান ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে দিয়ে দিলাম। জীবনে কোনদিন ভিডিও বানাই নাই :)

নিপো

১২। মনে পরে রিতু, পারভিন আপু, দিদি, অামি আর অদিতির কনফারেন্স চ্যাটে ওরা কত মজা করে কথা বলছে আমি মিস করে ফেললাম সব মজা :((:(( যাই একটু কথা বলে আসি ;) । উমম পারভিন আপু আর অদিতি আবার ভাষা শিক্ষা ক্লাসে আছেন এখন। কি যন্ত্রনারে বাবা এরা আবার ভাষা শেখার জন্য এত পাগল হলো কেন।/:)

১৩। এর পর পড়তে বসে পড়া বুঝি না, ফোন দেই হেলপ লাইনে মেনটর বা টিউটরকে, মহিলার সাথে বকর বকর করি ঘন্টা খানেক। তার কথা আধেক বুঝি আধেক না বুঝেই দাঁতে নখ কেটে হ্যা হু করি। মহিলা কথা বলে একদিকে আর

আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি সামনের গাছে ঝোলা পাখির বাসাটায় কয়টা পাখি ঢুকল আর বেরুলো।

যখন ফোন রাখি ভুলে যাই মহিলা কি নিয়ে আমাকে লেকচারটা দিলেন।:-/

১৪। ফোন রাখতেই তুলির রান্না করে বেঁধে দেয়া কই মাছের ঝোলের কথা মনে পরে, পেটে খিদেটা আবার নড়ন চরন করে টেনে ধরে :(। তবু খেতে যাই না।

পড়ার বাহানা দেখিয়ে চার হাত পা চারদিকে ছরিয়ে রাজ্যের কাগজ পত্র, চায়ের কাপ, খাতা কলম, ফাইল আর যা যা হাতের কাছে পাওয়া যায় তা দিয়ে লিভিং

রুমের যাচ্ছে তাই অবস্থা বানিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে পরন্ত দুপুরের সাগরের ভাটার টানের দিকে তাকিয়ে বেসুরো গলায় গান ধরি। :P:P


১৫। মনে পরে রিকটাকে চুল কাটানোর জন্য আরকটু বকা না দিলেই না। মাথার মধ্যে একগাদা চুল নিয়ে বান্দরে মত মাথা মুখ করে আবার ছবি তোলে ভুতোটা।

১৬। ফেসবুকে দেয়া রোমানের তোলা নতুন ছবি গুলো ভাল হয়েছে। ছবি গুলোতে একটা কমেন্ট করা দরকার উৎসাহ দেবার জন্য।

১৭। এর পর ভাবি হায় গত দু/তিন মাস ভাল ঘুম হচ্ছে না তাই এখন একটু ঘুম দেয়া খুবই জরুরী B-)B-)

ব্যাস আর কই যাই গুটিশুটি মেরে ঘুমাতেই যাই.......... লিস্টের অন্য কাজ গুলো বরাবরের মতন না সেরেই ;)

ছোট বেলাতেও এই করতাম। পড়তে পড়তে পড়ার ভয়ে বই খাতার মধ্যেই মুখথুবড়ে ঘুম দিতাম। আর ফুপু এসে বলত, "আহারে মেয়েটা পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে না খেয়েই ঘুমিয়ে গেল, যাক ডাকিস না ওকে কেউ এখন, এত পড়াশুনা করে, একটু বিশ্রাম নিক, একটু পরে ডেকে খাওয়ালেই হবে তার পর পড়তে বসেবে আবার"। হায়রে আমার সরল ফুপু! আমি যে পড়ার ভয়ে ঘুমের ভান করতে করতে ঘুমিয়ে পরেছি সে যদি জানত! :(। পরে উঠে খেয়ে অবশ্য একটু আধটু পড়তাম তবে তখন রাত গভীর পরের দিন স্কুল আছে তাই ঘুমানোও দরকার ;)। পড়াশুনা শেষ!!!

ঘুমাতে গিয়ে মনে পরে হায়রে ফেসবুকে এতো গুলো নোটিফিকেশন এসে বসে আছে তা তো দেখা হলো না। যাই একটু ফেসবুকিং করে আসি। সারাদিন এত পড়লে চলে?? লেখাপড়া করে যে হাতি ঘোড়া চড়ে সে, আর আমিতো হাতি ঘোড়া চড়ি না গাড়ি চড়ি আমার আর কি হবে লেখাপড়া এত এত করে ;) পড়ার পাঠ শিকেয় তুলে ফেসবুকিং শুরু ............ তার যাথে যোগ হয় সামু ;)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ ভোর ৫:১৮
৫৬টি মন্তব্য ৫৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×