somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসায় ব্যর্থ: কী করব

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মোহিত কামাল | তারিখ: ০৮-০২-২০১২

ভালোবাসার ভিত শক্ত করে বিশ্বাস। যাকে ভালোবাসব, জনম জনম ভালোবাসব—এই বিশ্বাসই বড়। বিশ্বাস ছাড়া ভালোবাসা টিকে না, স্থায়ী হয় না। বাঁধনে বিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দিলে ভালোবাসায় প্রতিস্থাপিত হতে পারে ঘৃণা কিংবা প্রতিহিংসা। সাহিত্যের ভাষায়, ভালোবাসার উল্টো পিঠে রয়েছে ঘৃণা। বিজ্ঞানের ভাষায়ও ঘৃণা হচ্ছে ভালোবাসার বিপরীত আবেগ। যাকে ভালোবাসে মানুষ, যে সুন্দর মুখের জন্য প্রকম্পিত হয় মন, সেই মুখের প্রতি ঘৃণাও জাগতে পারে। তাই বন্ধনের পর পরিচর্যা করতে হবে সম্পর্কের। পরিচর্যা ছাড়া টেকে না সম্পর্ক। পরিচর্যাহীন সম্পর্কে ভাঙন আসতে পারে, ফাটল তৈরি হতে পারে। তথ্যটা সব সময় মনে রাখার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যখন সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়, ব্রেকআপ ঘটে দুজনের, কী প্রতিক্রিয়া হয়? কী করতে হবে তখন? কী করা উচিত? উত্তরগুলো মনে রাখা প্রয়োজন।
ধারালো ছুরি দিয়ে পোঁচ দিলে কেটে যায় দেহ, রক্ত বেরোয়। রক্ত দেখে ভীত হই, চিৎকার করি আমরা। ব্রেকআপ হলেও ধারালো ছুরির মতো ভয়ংকর অস্ত্র আমূল বসে যায় বুকে। মন রক্তাক্ত হয়, সেই রক্ত দেখি না আমরা। তাই বুঝি না কষ্ট কাকে বলে। তীব্র কষ্ট, বেদনা ও যাতনায় ভেঙে যায় মানুষের মন। ভেঙে যায় আত্মবিশ্বাসের ভিত। পুড়ে যায় আত্মপ্রত্যয়ী মন। কষ্ট হয়, ভীষণ কষ্ট। ওই মুখ ছাড়া বাঁচব কীভাবে? এমনি চিন্তার বড়শিতে গেঁথে যায় মন। ঘুম চলে যায়। খাওয়ার রুচি হারিয়ে যায়, শরীর ভেঙে যেতে থাকে অনিয়মের কারণে। বেঁচে থাকার আগ্রহ, স্বপ্ন মরে যায়। আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে, পরিকল্পনা জাগে। আত্মহত্যার জন্য প্রবৃত্তও হয় কেউ কেউ। কেউ বেঁচে যায়, কেউ বা চলে যায় ওপারে। মনে রাখা জরুরি, এ অবস্থার বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা রয়েছে। কষ্ট কমানো যায়। নেভানো যায় কষ্টের আগুন। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানো যায়। নতুনভাবে আবার জড়ানো যায় ভালোবাসার বাঁধনে। নতুন মুখ সমানভাবে আলোড়িত করতে পারে ব্রেন। নতুন ভালোবাসাও প্রথম ভালোবাসার মতো একই রকম ঢেউ জাগাতে পারে মনে। এসবের জন্য ভাঙনের শুরুতেই নিতে হবে মনোচিকিৎসা। ভুল পথে যাওয়া চলবে না। মাদক নিয়ে কষ্ট ভোলার অশুভ ধ্বংসাত্মক পরামর্শ দিতে পারে কেউ কেউ। কষ্ট ভোলার এমন ভুল পথ গ্রহণ করে আসছে তরুণ প্রজন্ম।
মাদক গ্রহণ এই সমস্যার সমাধান নয়। মাদক গ্রহণ করলে যে ছেড়ে গেল, বিজয়ী হয়ে গেল সে। আঙুল উঁচিয়ে সে বলবে, ওই যে ওকে ছেড়ে ভালোই করেছি। এমন নেশাখোরের সঙ্গে সম্পর্ক কি চালিয়ে যাওয়া যায়? তাকে আত্মতৃপ্তিতে ভোগার সুযোগ দেওয়া চলবে না। ভেঙে না পড়ে, পড়াশোনার পথ থেকে ছিটকে না গিয়ে, মন জোগাতে হবে পড়াশোনায়। মাথা উঁচিয়ে চলতে হবে। নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। মনোচিকিৎসায় সেটা অর্জন করা সম্ভব। কোনোমতেই বিট্রেয়ারকে জয়ী হতে দেওয়া যাবে না। এই বিশ্বাসে ঋদ্ধ হতে হবে।
ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে কী করা যায়? কী করা উচিত?
প্রথম কাজ হচ্ছে, নিজের অবস্থান শনাক্ত করা। নিজেকে বোঝা জরুরি। বোঝার জন্য বিশ্লেষণ করতে হবে নিজেকে। সৎভাবে উপলব্ধি করতে হবে নিজের দোষ-ত্রুটি, নিজের ঘাটতি। ভাঙনের প্রাথমিক অবস্থায় নেতিবাচক আবেগের ধোঁয়াশায় ডুবে যাওয়ার কারণে সহজ হয় না নিজেকে বোঝা। এ কারণে প্রফেশনাল হেলপ নিতে হয়।
অবসেশন ঝেড়ে ফেলতে হবে। অবসেসড কাউকে পছন্দ করে না মানুষ। বারবার কল করা, টেক্সট মেসেজ পাঠানো, বারবার ই-মেইল করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভাঙনের পর এমনটিই বেশি করে থাকে ভুক্তভোগীরা। না, এমন করা চলবে না। বারবার হান্টিং করার প্রবণতা রুখতে হবে। মন শক্ত করতে হবে। এ অবস্থা থেকে নিজেকে রোখা না গেলে তুচ্ছ হয়ে যেতে হবে সঙ্গীর কাছে। নিজেকে তুচ্ছ করা চলবে না।
সম্পর্ক ফিরে পেতে হলে আচার-আচরণ ও মননশীলতায় ফিরে যেতে হবে মধুর সম্পর্ককালীন সময়ে।
সর্বোপরি মনে রাখতে হবে, সঙ্গীকে আয়ত্তে আনা কিংবা নিয়ন্ত্রণের জন্য বেপরোয়া না হয়ে নিজেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নিজেকে সামলানো গেলে পুনরায় সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সফল হওয়া সম্ভব। সঙ্গী যখন বুঝবে তিক্ত ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরিবর্তন ঘটেছে, সে-ই ফিরে আসার জন্য বাকি ৫০ শতাংশ চেষ্টা করবে।
নিজের ভুলের জন্য সরি বলা যেতে পারে। তবে বারবার ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া কিংবা ভিক্ষুকের মতো হাত না পাতাই ভালো। বরং সম্পর্কোন্নয়নের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মায়ের নতুন বাড়ি

লিখেছেন সাদা মনের মানুষ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২২

নতুন বাড়িতে উঠেছি অল্প ক'দিন হলো। কিছু ইন্টরিয়রের কাজ করায় বাড়ির কাজ আর শেষই হচ্ছিল না। টাকার ঘাটতি থাকলে যা হয় আরকি। বউয়ের পিড়াপিড়িতে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও পুরান... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×