somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সম্পর্ক

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লাবনির নিঃশ্বাস আটকে আসছে।

মনে হচ্ছে লোহার মত কঠিন আর শীতল দুটো হাত দিয়ে কেউ তার গলা চেপে ধরেছে।

লাবনি অপেক্ষা করছে। অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর কিছুর জন্যে।

বিশাল ঘরটির ভেতর আধো অন্ধকার। ঘরে লাবনি একা। ঘরের এক পাশের দেয়াল জুড়ে বড় একটা অয়েল পেইন্টিং। মধ্যিখানে একটা এলোমেলো বিছানা ছাড়া ঘরে আর কোন আসবাব নেই।

বাইরে মৃদু শব্দ শোনা যায়।

কেউ একজন আসছে।

ঘরের এক কোনে দরজাটি এই প্রথম লাবনির চোখে পড়ে। লাবনির শরীরের প্রতিটি কোষ একত্রে আর্তনাদ করে উঠে। লাবনিকে বলে ছুটে পালাতে। কিন্তু লাবনি জানে সে পালাতে পারবে না। তার পা দুর্বল হয়ে আসে। সে বসে পড়ে বিছানার এক কোনে।

সে আসছে। ভয়ঙ্কর কোন আশঙ্কায় লাবনির শরীর থরথর করে কাঁপছে। তার বুক ধকধক করছে।

দরজার বাইরে একটি কালো ছায়া দেখা যায়। মানুষটি চলে এসেছে। আর সময় নেই।

মানুষটি ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। তার মুখে হাসি। এই হাসি লাবনির পরিচিত। বড় বেশী পরিচিত।

***

“আজ কেমন আছ লাবনি?”

“জি ভালো”, লাবনি মাথা নাড়ে।

“কলেজ যাচ্ছ নিয়মিত? “

চেষ্টা করছি।

“হুম, শুধু চেষ্টা করলে কি চলবে! তোমাকে জোর করে হলেও বাইরে যেতে হবে, সবার সাথে মিশতে চেষ্টা করে হবে।“

লাবনি উত্তর দেয় না।

তোমার চেহারাও দেখি শুকিয়ে গেছে। খাওয়া দাওয়া করছ না ঠিকমত?

লাবনি কথা বলে না, শুধু মাথা নাড়ে।

প্রখ্যাত সাইকিয়াট্রিস্ট ড এনামুল হক জিয়া চশমার কাচ ঘসে আবার চোখে দিয়ে বললেন, এবার বল এই এক হপ্তায় ক’বার স্বপ্নটা দেখলে?

প্রায় প্রতি রাতেই।

শেষ কবে দেখেছ?

গত পরশু।

স্বপ্ন দেখার সময়ে কোন পরিবর্তন এসেছে?

নাহ, আগের সময়ই আছে।

মাঝ রাত থেকে শেষ রাত?

লাবনি মাথা ঝাঁকায়।

ফোনে বলেছিলে স্বপ্নের ঘটনায় কিছু পরিবর্তন এসেছে।

হু, এখন আমি লোকটির মুখ দেখতে পারছি।

মুখটি কি তোমার পরিচিত?

হু...

তুমি আমাকে বলতে চাও লোকটি কে?

না।

ঠিক আছে। না বলতে চাইলে অসুবিধে নেই। ড জিয়া তার কাঁচাপাকা চুলে বিলি কাটতে কাটতে প্রসঙ্গ পালটে বললেন, তোমার বয় ফ্রেন্ডের কথা বল, কি যেন নাম... সাদিক, রাইট? কেমন আছে ও?

ভালো।

কি যেন করছে ও?

বুয়েটে পড়ছে, কম্পিউটার সায়েন্স।

হুম, দেখা সাক্ষাত চলছে নিয়মিত?

জি। মৃদু একটা হাসি ফুটে ওঠে লাবনির ঠোঁটে।

এক দিন পরিচয় করিয়ে দিও ওর সাথে।

জি আচ্ছা।

শেষবার তুমি বলেছিলে যে তুমি ভার্জিন। তোমার কি মনে আছে?

হু।

তোমাকে আমি কিছু টেস্ট করতে দিয়ে ছিলাম। সেগুলোর রেজাল্ট চলে এসেছে।

লাবনি চোখ বড়বড় করে ড জিয়ার দিকে তাকায়।

তুমি হয়তো বুঝতে পারনি আমি তোমার প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে দিয়েছিলাম। টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ এসেছে।

লাবনির মুখ সাদা হয়ে গেল। ড জিয়া কিছুক্ষণ বিরতি দিলেন। লাবনিকে সময় দিলেন নিজেকে সামলে নেয়ার।

“ইজ ইট সাদিক?”

লাবনি মাথা নারে,হ্যাঁ।

তোমার বাবা কিছু জানেন না?

না...

আর সাদিক?

সে জানে।

ব্যপারটা কতদিন দিন হল, দুই মাস?

দুই মাস দশ দিন।

ড জিয়া চোখ থেকে চশমা খুলে বললেন, “তোমার সমস্যাটি আসলে খুব একটা জটিল নয়। আমার ধারনা স্বপ্নে তুমি যে মানুষটিকে দেখছ সে হচ্ছে সাদিক।“

জি।

দ্যাট এনসারস এভরিথিং। তোমার বয়স অত্যন্ত কম। এই বয়েসে এই ধরনের একটি অভিজ্ঞতা মনের উপর চাপ ফেলতেই পারে। তাছাড়া প্রেগন্যান্ট অবস্থায় শরীরে বেশ কিছু নতুন হরমোন তৈরি হয়, যা চিন্তা ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। তুমি খুশি যে এটা তোমার ভালবাসার মানুষের সাথে হয়েছে। কিন্তু একই সাথে এটা তোমার ভেতর তীব্র অপরাধ বোধ সৃষ্টি করছে। তোমার ভেতর দুটি পরস্পর বিপরীত অনুভূতি কাজ করছে। তোমার মন সেটা নিতে পারছে না। তোমার অবচেতন মন এর জন্যে দায়ী করছে সাদিককে। এরই প্রতিফলন ঘটছে তোমার স্বপ্নে। স্বপ্নে তুমি সাদিককে দেখছ একজন ভয়ঙ্কর আততায়ী রূপে।

লাবনি কোন উত্তর দেয় না, কিন্তু ওর চোখেমুখে একটা অবিশ্বাসের ছাপ ফুটে উঠে।

“আই সি দ্যাট ইউ আর নট ফুল্লি কনভিন্সড। ইটস ওকে। তবে আমার সাজেশন হচ্ছে তোমরা দুজন দ্রুত ব্যাপারটি নিয়ে সিদ্ধান্ত নাও, এবং এটি বড়দের সাথে শেয়ার কর। তাতে অন্তত তোমার মনের উপর থেকে চাপ কিছুটা কমবে। আর যদি এতে কাজ না হয় তাহলে আমরা অবশ্যই অন্যান্য সমাধানের কথা চিন্তা করব। কথাটা কিভাবে তোমার বাবাকে জানাবে সে ব্যাপারে চাইলে আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি।“

আরও মিনিট দশেক কথা বলার পর লাবনি বিদায় নিল। ড জিয়া ভ্রু কুচকে সিলিঙের দিকে তাকিয়ে রইলেন। লাবনিকে তিনি যে ব্যাখ্যা দিয়াছেন তার পেছনে যুক্তিতে কোন ভুল নেই, তবু কেন যেন তার মনটা খচ খচ করছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা তার দৃষ্টি এড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি ল্যাপটপে আবার লাবনির ফাইলটা খুলে পড়তে শুরু করলেন।

***

পড়ন্ত বিকেলের হাইওয়ে ধরে একটা নীল স্টেশন-ওয়াগন ছুটে চলেছে আশুলিয়ার দিকে। গাড়িতে হাল্কা ভলিউমে একটা বিদেশি মেলোডি বাজছে। চালকের আসনে বসা সাদিক। তার পাশে লাবনি মিউজিকের তালে মাথা দোলাচ্ছে। জানালার কাচ নামানো। হু হু বাতাসে লাবনির চুল উড়ছে।

কাচ কি নামিয়ে দেব? সাদিক জিজ্ঞাসা করল।

নাহ, আমার বাতাসটা ভালো লাগছে।

তোমার সারা মুখে চুল পেঁচিয়ে ভুতের মত লাগছে।

তাই! কি ভুত বলত, মামদো ভুত না গেছো ভুত? লাবনি কপাল থেকে চুল সরাতেই আবার বাতাসের ঝপটায় একরাশ চুল এসে ওর মুখ ঢেকে দেয়।

শাঁকচুন্নি...। সাদিকের মুখ ভর্তি হাসি।

দুম করে ওর পিঠে একটা কিল বসিয়ে দিল লাবনি। এই এই, এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে। কপট আতঙ্কে চেঁচিয়ে উঠল সাদিক।

হোক এক্সিডেন্ট, দুইজন সত্যি সত্যি ভুত হয়ে যাব। ভাল হবে না?

হু, কিন্তু আমাদের বাবুর কি হবে, সে কথা খেয়াল আছে?

লাবনি নিশ্চুপ হয়ে যায়।

“ডক্টর কি বলল আমাকে কিন্তু জানালে না।“

ডক্টর বলেছে বিষয়টা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বাসার সবাইকে জানিয়ে দিতে।

আমারও সেটাই মনে হয়। আমরা যত দেরি করব কাজটা ততই কঠিন হয়ে যাবে। আঙ্কেল মনে হয় না বিশেষ রাগ করবে, তিনি আমাকে এমনিতেই অনেক পছন্দ করেন। ঝামেলা হবে আমার বাবাকে নিয়ে।

চাচার দেশে ফেরার ডেট ঠিক হয়েছে?

নাহ, আগামী হপ্তায় ফিরতে পারে।

দেশে ফিরলে সব জানাবে ভাবছ?

জানি না, তার সাথে কথা বলা কোন সহজ বিষয় না। দুনিয়ার সব কাজের জন্যেই তার হাতে সময় থাকে, শুধু ফ্যামিলির মানুষের জন্যে সে কখনো সময় বের করতে পারে না। আমার লাইফের কোন বড় সিদ্ধান্তে আমি তাকে পাইনি। এবারই বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন! যাক গে, ডক্টর স্বপ্ন দেখা নিয়ে কিছু বলেনি?

বলেছে।

কি?

হাবিজাবি একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে, তোমার শোনা লাগবে না। এই শোন সামনে গাড়ি থামাবে, আমি ফুচকা খাব। গতবার যেখানে খেয়েছিলাম মনে আছে, এইমা কি বিশ্রী স্বাদ!! লাবনি ঠোঁট কুচকে ফেলল।

সাদিকের মুখে একটা চিন্তার ছায়া পড়ে। লাবনি তার কাছ থেকে কিছু একটা লুকিয়ে ফেলছে।

***

ঘড়ির কাটা বলছে এখন সময় রাত সাড়ে এগারোটা। কিন্তু লাবনির মনে হচ্ছে এখন গভীর রাত। তাদের গুলশানের এই এলাকাটা রাতে খুব তাড়াতাড়ি নিঝুম হয়ে যায়। আর লাবনিদের বাসাটা তো সবসময়ই চুপচাপ।

লাবনি নিজের ঘরে বিছানায় পা তুলে বসে আছে। মাঝে মাঝে ওর দৃষ্টি চলে দেয়ালের ঘড়িটার দিকে। আর আধঘণ্টা পরেই তার বয়স সতের বছর পূর্ণ হবে। তাকে নিশ্চয়ই তার বন্ধুরা উইশ করতে চেষ্টা করবে। ফেইসবুকটা খুললে এমন ভুরি ভুরি উইশ দেখা যাবে। কিন্তু লাবনির জন্মদিন ভালো লাগে না। তাই আজ এবং কাল সারা দিন সে মোবাইল ফোন বন্ধ রাখবে। পরিচিত বন্ধু বান্ধব কারও সাথে দেখা করবে না। এমনকি সাদিকের সাথেও না। গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে সে একা একা কাঁদবে। দিনের বেলা একা একা বাগানে ঘুরে বেড়াবে।

লাবনির জন্মের সময় বিশেষ জটিলতা দেখা দেয়। ডক্টরের আপ্রাণ চেষ্টায় লাবনির প্রাণ বেঁচে যায়। কিন্তু লাবনির মা নাসরিন অতোটা ভাগ্যবান ছিলেন না। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে লাবনির জন্মের দ্বিতীয় দিনের মাথায় নাসরিনের মৃত্যু হয়।

বাড়িতে দুইটি প্রাণী। লাবনি আর ওর বাবা জামাল সাহেব। জামাল সাহেব একজন সফল ব্যবসায়ি। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আর বিয়ে থা করেননি। একমাত্র মেয়েকে বুকে আগলেই সতেরটা বছর পার করে দিয়েছেন।
জামাল সাহেব এমনিতে যথেষ্ট হাসি খুশি মানুষ। কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যু বার্ষিকীর সময়টা এলেই তিনি ভীষণ গম্ভীর হয়ে পড়েন। স্ত্রীর শক তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। এই সময়টাতে তার মদ্যপান বেড়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিজেকে স্টাডি রুমে আটকে রেখে তিনি হুইস্কির নেশায় ডুবে যান। নাসরিনের মৃত্যুবার্ষিকী চলে যেতেই তিনি আস্তে আস্তে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন।

লাবনির ঘুম পাচ্ছে। কিন্তু ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না। ঘুমালেই সেই বিশ্রী স্বপ্নটা আবার দেখতে হবে। লাবনি আনন্দের কিছু ভাবতে চেষ্টা করে। সে তার বাচ্চার কথা ভাবে। এখন মাত্র আড়াই মাস। তাকে দেখে এখনো কিছুই বুঝা যায় না। কিভাবে কিভাবে যে এত কিছু হয়ে গেল! ঘটনাটা ঘটেছিল সাদিকদের বাড়িতে। সাদিকের বহুদিনের পুরনো কুকুরটা মারা গেছে। তার ভীষণ মন খারাপ। লাবনি গেছে তাকে সান্ত্বনা দিতে। এক পর্যায়ে ঝোঁকের মাথায় সে সাদিককে জরিয়ে ধরে। তারপর কি থেকে কি হয়ে গেল সে আর বলতে পারবে না। প্রায় আধঘণ্টা পর যখন সব ঝড় থেমে যায় তারা একে অপরকে আবিষ্কার করে বিধ্বস্ত রূপে। আহ, সাদিকটা যা ভয় পেয়েছিল। লাবনি নিজের মনে হেসে উঠে।

একটা চাপা আর্তনাদে লাবনির ভাবনায় ছেদ পরে। শব্দটা আসছে স্টাডি থেকে। জামাল সাহেব কাঁদছেন। অন্যান্য বারের চেয়ে এইবার যেন তার কষ্ট বেড়ে গেছে। রাত দিন মদের বোতল নিয়ে স্টাডিতে পরে থাকছেন।
বাবার খোঁজে লাবনি ঘর থেকে বের হল। স্টাডি রুমের দরোজা ভিড়ানো। ভেতরে অন্ধকার। লাবনি বাতি জ্বেলে দেখল জামাল সাহেব ঘরের এক কোনে একটা আরাম কেদারায় গা এলিয়ে পরে আছেন। মেঝেতে হুইস্কির বোতল গড়াগড়ি খাচ্ছে। লাবনি কাছে গিয়ে বুঝতে পারল তার বাবা ঘুমের মধ্যে কাঁদছে। সে জামাল সাহেবকে ঠেলে জাগানর চেষ্টা করল। জামাল সাহেব জাগলেন না, বিড়বিড় করতে করতে পাশ ফিরে আবার ঘুমিয়ে গেলেন।

তিনি পাশ ফিরতেই চারকোনা একটা কাগজ তার হাত থেকে খসে পড়ল মেঝেতে। লাবনি কাগজটি তুলে নিয়ে দেখল সেটা বহু পুরনো একটা ফোটোগ্রাফ। এক সময় রঙিন ছিল বুঝা যাচ্ছে, কিন্তু এখন দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে রঙ ফ্যাকাসে হয়ে এসেছে। তার বাবা আর মায়ের বিয়ের ছবি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তার মা হাসি মুখে বসে আছে। মায়ের পাশে লাজুক ভবে বসে আছে বাবা। তাদের পেছনে আরও অনেকে দাড়িয়ে আছে। লাবনি শুধু তার বড় চাচাকে চিনতে পারল। চাচার পাশে কাকিমা’র কোলে এক বছরের সাদিক। আহ, কতটুকু ছিল তখন! এখন বড় হয়ে ঠিক চাচার মতই দেখতে হয়েছে। এই ছবিটা কোত্থেকে এলো? কোন এক অজানা কারণে জামাল সাহেব তার মৃত স্ত্রীর সব ছবি বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলেছেন। এই ছবিটা কথায় ছিল কে জানে!

দেয়ালের বড় ঘড়িটা ঘণ্টা বাজিয়ে সময় জানান দিল রাত বারোটা। একটা নিঃশ্বাস ফেলে লাবনি নিজেকে বলল, হ্যাপি বার্থডে লক্ষ্মী সোনা।

***

ঘরের ভেতর আধো অন্ধকার। ঠিক মধ্যিখানে একটা এলোমেলো বিছানা। এছাড়া ঘরে আর কোন আসবাব নেই। লাবনি ভয়ে কাঁপছে। অজানা আতঙ্কে তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।

লোকটা ঘরের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। দরোজায় তার লম্বা ছায়া পড়েছে।
লাবনি লম্বা একটা নিঃশ্বাস নিয়ে প্রস্তুত হয়।

লোকটি ঘরে প্রবেশ করে। তার মুখ ভর্তি হাসি। বড় পরিচিত সেই হাসি। লম্বা হাত বারিয়ে সে লাবনিকে ছুতে চেষ্টা করে। লাবনি এক ঝাটকায় নিজেকে সরিয়ে নেয়, তারপর পড়িমরি করে দৌড় লাগায় দরোজার দিকে। দরোজার কাছে পৌঁছে গেছে, এমনি সময় পেছন শীতল দুটো হাত তাকে চেপে ধরে। তার ছোট্ট শরীরটা খেলনার মত শূন্যে তুলে নিয়ে তাকে আছড়ে ফেলে বিছানায়। লোকটি তার বুকের উপর চেপে বসে। ওর হাত দুটো শক্ত করে বিছানার সাথে ঠেসে ধরে।

লাবনি গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে চায়, কিন্তু তার মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হয়না।

লোকটির মুখে তখনো সেই পরিচিত হাসিটা লেগে আছে। তার চোখ জ্বলজ্বল করছে।

***

লাবনিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিন দিন আগে গভীর রাতে সে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছে। তাকে এরপর আর কেউ দেখেনি। মেয়েটা যেন বাতাসের সাথে মিলিয়ে গেছে। জামাল সাহেব র‍্যাব পুলিশ ডেকে একাকার করেছেন, কিন্তু এখনো কোন ভালো খবর পাওয়া যায়নি।

লিভিং রুমে দুহাতে মুখ ঢেকে বসে আছেন জামাল সাহেব। তার সামনে সোফায় বসে আছেন ড জিয়া। মন দিয়ে তিনি একটা ফটোগ্রাফ দেখছেন। পুরনো দিনের ফটো, জামাল সাহেবের বিয়ের ছবি। গ্রুপ ফটো, হাস্যজ্জল কাপলের পেছনে আরও অনেকে দাড়িয়ে আছে। এতে অস্বাভাবিকত্ব হচ্ছে নাসরিন ছাড়া ছবির বাকি সবার মুখ কালো কালি দিয়ে সম্পূর্ণ ঢেকে দেয়া হয়েছে। ছবিটি পাওয়া গিয়েছিল লাবনির বিছানার পাশে।

এই ছবির বাকি মানুষগুলো কারা? ড জিয়া জিজ্ঞেস করলেন।

পেছনে আমার মামা-মামি, আমার বড় ভাই আর তার স্ত্রী।

আর বাচ্চাটা?

ওর নাম সাদিক, আমার বড় ভাইয়ের ছেলে।

সাদিক আর লাবনি তাহলে কাজিন?

হা।

ড জিয়া বড় করে নিঃশ্বাস তেনে বললেন, জামাল সাহেব, আমি এখন আপনাকে একটা প্রশ্ন করব, আপনি ঠিক ঠিক জবাব দেবেন।

"বেশ। জামাল সাহেব মাথা নাড়লেন।

"আপনার স্ত্রীর আসলে কি হয়েছিল?"

প্রশ্নটা শুনেই জামাল সাহেব কেঁপে উঠলেন। ভাঙা গলায় বললেন, "লাবনির জন্মের সময় বিশেষ জটিলতা দেখ দিয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে..."

"আমি জানি, আমি মেডিক্যাল রিপোর্টটা পড়েছি। আমি জেনেছি লাবনিকে জন্ম দেয়ার মাসখানেক আগে তার মাঝে মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা দিয়েছিল।
হ্যাঁ, আমরা সে সময় বেশ কিছু ডক্টর দেখিয়েছিলাম। কোন লাভ হয়নি।
তার মস্তিষ্ক বিকৃতির শুরুটা হয় কিভাবে?"

"আমি ঠিক বলতে পারব না। হঠাৎ করেই যেন ওর মাঝে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। হঠাৎ হঠাৎ কারণ ছাড়াই খেপে যেত, সামনে যাকে পেত তার উপরই ঝাঁপিয়ে পড়ত। এক সময় এমন পরিস্থিতি দেখা দেয় যে সে আর পরিচিত মানুষদের চিন্তে পারছে না।"

"কোন কারণ ছাড়াতো একটা মানুষ পাগল হতে পারে না। নাসরিনের অসুস্থতার পেছনে নিশ্চয়ই কোন কারণ ছিল।"

“আমি জানি না।“

“ওহ ব্লাডি হেভেন, টেল মি দ্যা ট্রুথ, ফর ইয়োর ডটার্স সেক। বাট দেন এগেইন, শি ইজ নট রিয়েলি ইওর ডটার, ইজ শি?”

“হাউ ডেয়ার ইউ, জামাল সাহেব দাঁতে দাঁত ঘষে বললেন, “হাউ ডেয়ার ইউ সে দ্যাট?”

“আই ডোন্ট নো, ইউ টেল মি।“
জামাল সাহেব হাল ছেরে দিলেন, তার কাঁধ ঝুলে পড়ল। কিছুক্ষণ থেমে থেকে তিনি বলতে শুরু করলেন।

“সেই সময়ে, আমি কিছু নোংরা মানুষের সাথে বিজনেসে জরিয়ে পড়েছিলাম। কিছু বুঝে উঠার আগেই আমি তাদের কঠিন জালে জরিয়ে পরলাম। আমি একটা গভীর গর্তে তলিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার বের হয়ে আসার কোন উপায় ছিল না। আমি জানতাম এভাবে চলতে থাকলে একদিন ওরা আমাকে শেষ করে দেবে। এই সময় তারা আমাকে এক অপ্রত্যাশিত প্রস্তাব দেয়। তারা আমাকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে... বিনিময়ে... নাসরিনকে এক রাতের জন্যে ওদের হাতে তুলে দিতে হবে।“

“এবং আপনি তাই করলেন?”

“আমার আর কোন উপায় ছিল না। ওরা আমাকে সত্যি মেরে ফেলত।.... এরপর থেকে ধীরে ধীরে নাসরিন কেমন যেন হয়ে যায়। আমি জানি ওর মৃত্যুর জন্যে আমিই দায়ী। নাসরিনের মৃত্যুর আমি লাবনিকে আগলে রাখি। হয়তো আমার থেকে ওর জন্ম হয়নি, কিন্তু ও নাসরিনেরই অংশ। ওই আমার জীবনে নাসরিনের একমাত্র চিহ্ন। সো ইয়েস, শি ইজ মাই ডটার।“

ড। জিয়া উঠে দাঁড়ালেন। তার কাছে এখন সব কিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে। তার মাথা আর কাজ করতে চাইছে না। আর কিছু না বলে তিনি দরোজার দিকে পা বাড়ালেন।

***

দুই সপ্তাহ কেটে গেছে।

লাবনির কোন খোজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ যদিও এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে সবাই বুঝতে পারছে এতে কোন লাভ হবে না। মেয়েটাকে হয়তো আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যাবে না।

লাবনির বাবার মাঝে মাথা খারাপের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তিনি এখন সারাদিন নিজেকে একটা ঘরে আটকে রাখেন। নিজের মনেই কথা বলেন, হাসেন-কাঁদেন।

আজ সাদিকের বাবা ইয়োরোপ থেকে ফিরছেন। তাকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে যাবার কথা ছিল, কিন্তু সাদিক যায়নি। লাবনি নিখোঁজ হবার পর থেকে সে আর তেমন ঘরের বাইরে যায়না।
আজ প্রায় বছর দুই পর বাবা দেশে ফিরছে। বাবার সাথে সাদিকের সম্পর্ক ভালো নয়। কোন এক অদ্ভুত কারণে বাবা ও ছেলে, একজন আরেকজনকে সহ্য করতে পারে না।

সাদিক কম্পিউটারের সামনে বসে আছে। সে একটা অডিও ফাইল শুনছে। চারদিন হল সাদিক এই একই ফাইল অসংখ্যবার শুনে গেছে। ফাইলটি সে হ্যাক করেছে ড জিয়ার ল্যাপটপ থেকে।

শেষবার যখন ড জিয়া লাবনিদের বাসায় গিয়েছিলেন তখন তার সাথে জামাল সাহেবের কথোপকথনের অনেকখানি সে দরোজার আড়াল থেকে শুনে ফেলে। এরপর সে বহুবার ড। জিয়ার সাথে দেখা করে সব কথা জানতে চেয়েছে, কিন্তু ডক্টর প্রতিবারই এড়িয়ে গেছেন। শেষমেশ আর কোন উপায় না দেখে সে ডক্টরের কম্পিউটার হ্যাক করে। সে বুয়েটের প্রোগ্রামার, হ্যাকিং তার জন্যে কঠিন কিছু নয়। সে লাবনির কেস ফাইলগুলো ডাউনলোড করে নেয়। সেই ফাইলগুলোর মাঝে এই অডিও ব্লগটিও ছিল। এতে লাবনির কেসের সকল অগ্রগতি রেকর্ড করা আছে।
সাদিক ব্লগের শেষ পাঁচ মিনিট আবার শোনে।

“প্রতিটি জন্ম থেকেই কিছু নির্দিষ্ট কাজে পারদর্শী হয়। তারা জন্ম থেকেই জানে কিভাবে খেতে হয়, কিভাবে মায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। এমনকি দেখা গেছে যে শিশুরা ল অব ফিজিক্সের তারতম্য পর্যন্ত বুঝতে পারে। যেমন কোন একটি ছোট বস্তুর আড়ালে একটি অপেক্ষাকৃত বড় কোন বস্তু আড়াল হয়ে গেলে তারা অবাক হয়। শিশুরা কিভাবে এত কিছু জানে?

বিজ্ঞান এখনো এর কোন স্পষ্ট জবাব দিতে পারেনি তবে সবচে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যাটি হচ্ছে শিশু এগুলো শেখে তার পূর্বপুরুষের স্মৃতি থেকে। মনে করা হয় যে একটি শিশুর জন্মের সময় তার পূর্বপুরুষের কিছু স্মৃতি ক্রোমোজোমের মাধ্যমে শিশুর মধ্যে প্রতিস্থাপিত হয়। আমরা এগুলো কে সাধারণত শিশুর ন্যাচারাল ইন্সটিংট বলে থাকি। কিন্তু এটা কি সম্ভব যে শুধু ন্যাচারাল ইন্সটিঙ্কট নয়, কোন একটি নির্দিষ্ট ঘটনার স্মৃতিও একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুর মধ্যে সঞ্চারিত হতে পারে? সম্ভবত সেটিই ঘটেছে লাবনির ক্ষেত্রে।

“লাবনির মা নাসরিন বেগম তার স্বামীর দারা এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। এই অভিজ্ঞতা তার মনে অত্যন্ত গভীর ভাবে দাগ কেটে যায়। অভিজ্ঞতাটি তা জন্যে এতই ভয়ঙ্কর ছিল যে তার প্রভাব এমনকি সঞ্চারিত হয় তার গর্ভের সন্তানের মাঝেও।

“লাবনি বেড়ে উঠার সময় তার মাঝে এই স্মৃতি ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। কিন্তু বিপত্তি ঘটে যখন সে প্রেগন্যান্ট হয়ে পরে। অন্তঃসত্ত্বা নারীর শরীর বিভিন্ন পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যায়। সম্ভবত এই পরিবর্তনই তার সুপ্ত মেমোরিকে একটিভেট করে ফেলে। এই মেমোরির প্রকাশ ঘটে তার স্বপ্নের মাধ্যমে। স্বপ্নে সে দেখতে পায় তার প্রেমিক, সাদিক তাকে রেপ করছে। প্রথম প্রথম দিশেহারা হয়ে পরলেও শেষ পর্যন্ত সে তার স্বপ্নের সঠিক অর্থ করতে সমর্থ হয়। সেই সাথে সে বুঝতে পারে জামাল সাহেব তার আসল বাবা নয়।

“ক্যরিয়ারের এক কঠিন সময়ে জামাল সাহেব নিজের স্ত্রীকে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হন। তিনি যেটা জানতেন না তা হল সেই দুর্বৃত্তের আসল পরিচয়। কিন্তু লাবনি জেনে ফেলে কে ছিল সেই ব্যক্তি, কে তার আসল বাবা।

“নাসরিনের প্রতি জামাল সাহেবের বড় ভাই হায়দার হোসেনের প্রবল আসক্তি ছিল। আড়ালে থেকে তিনি নিজেই ছোট ভাইকে ফাদের মুখে ঠেলে দেন। এবং সুযোগ বুঝে ভাইয়ের স্ত্রীকে তিনি নিজের কব্জায় নিয়ে আসেন। লাবনি বুঝতে পারে তার আসল বাবা হচ্ছে হায়দার হোসেন, যাকে সে বড় চাচা হিসেবে জানে। সে এও বুঝতে পারে যে হায়দার হোসেনের ছেলে সাদিক, যে কিনা তার সন্তানের পিতা, আসলে ......”

এইটুকু শোনার পরই সাদিক অডিওটি অফ করে দেয়। তার নিঃশ্বাস আগুনের মত উত্তপ্ত হয়ে উঠে। চোখ দিয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে।
আজ দুই বছর পর সাদিকের বাবা হায়দার সাহেব দেশে ফিরছেন। তিনি সাদিক আর লাবনির সম্পর্কের কথা কিছু জানতেন না। সাদিক ঠিক করে রেখেছিল বাবা দেশে ফিরলে তাকে সব খুলে বলবে।

ড্রাইভওয়েতে একটা গাড়ি পারকিং এর আওয়াজ পাওয়া যায়। হায়দার হোসেন বাড়ি ফিরে এসেছেন।

কলিং বেল বাজছে।

লম্বা দম নিয়ে সাদিক উঠে দাড়ায়। তার এক হাতে একটা ভারি পেপারওয়েট শক্ত করে ধরা। তার হাতটা একটু একটু কাঁপছে। দরোজার ওপাশে তার বাবা অপেক্ষা করছে। সে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় দরোজার দিকে।



(এই গল্পের মুল চরিত্রগুলো কিন্তু এই কাহিনীতেই প্রথম আগমন ঘটেনি। নিচের লেখাগুলোতে তাদের প্রথম আবির্ভাব হয়। লেখক)

দ্বিতীয় ঘাতক Click This Link
খুন! Click This Link


সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:২১
২৭টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট: বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন

লিখেছেন করুণাধারা, ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন! view this link

সামহোয়্যারইনব্লগ থেকে কয়েকজন ব্লগার আলাদা হয়ে শুরু করেছিলেন সচলায়তন বা সংক্ষেপে সচল ব্লগ। এটি বন্ধ হবার মূল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে দুটি:

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×