somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।। মা ।।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রিমন ভার্সিটির স্টুডেন্ট। সারাদিন কাটে ক্লাস,আড্ডা,পড়াশোনা আর ফেসবুক নিয়ে। আজ তার মেজাজটা চরম বিগড়ে আছে। আর মেজাজ খারাপ হবেই বা না কেন?
... মোবাইলটা ধরলেই শুরু হয় মা এর বকবকানি......... "ছেলেটা আমার সারাদিন মোবাইল নিয়ে পরে থাকে কেনো? কি আছে এটাতে? এতো মোবাইল টিপাটিপির কি দরকার?" এসব কথা শুনতে শুনতে আর ভালো লাগে না.......
আজ তাই মার সাথে রাগারাগি করে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। আসার সময় মা-কে বলে এসেছে আর ফিরবে না সে ঘরে ....মা অবশ্য বাধা দিয়েছিলো, কিন্তু তাতে কার কি? যেই ঘরে তার কোনো স্বাধীনতা নেই সেখানে সে ও নেই.........

ও এখন একটা পার্কে বসে আছে। পার্কটা মোটামুটি শান্ত। চারপাশে খুব একটা মানুষ জন নেই। দুপুরবেলা, তাই হয়তো.... যাক! বাঁচা গেলো, এইখানে তো আর কেউ ডিস্টার্ব করতে আসবে না.....

ভাবতে ভাবতেই 'অপেরা মিনি' তে ব্রাউজ করে ফেসবুক এ ঢুকলো। ইদানিং 'ভালোবাসার' গল্প পড়াটা একেবারে নেশা হয়ে গেছে.. আজও সে সেই রকমই একটা পেজ 'ভালোবাসাময় জীবন' এ ক্লিক করল। ক্লিক করতেই তার চোখে পড়লো ৫ মিনিট আগে পোস্ট করা একটা গল্প যার নাম ....'মা'।

দেখেই আবার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো। যার জন্য ঘর ছেড়ে এখন সে এই পার্কে বসে আছে, আবার তিনি এসে হাজির। বলতে বলতেই শত অনিচছা সত্তেও গল্পটা পড়া শুরু করলো...........................

সরণ ঢাকার এক স্বনামধন্য স্কুলের ক্লাস ফোর এর ছাত্র। বাবা বিরাট ব্যবসায়ী। টাকা পয়সার ও তাই কোনো অভাব নেই। কিন্তু তবুও সরণ এর মনে শান্তি নেই। কারণটা, তার মা। সরণ তার মা কে হারিয়েছে সেই জন্মের সময়েই। তার বাবা অবশ্য তার জন্য আর একটা মা এনে দিয়েছেন। কিন্তু সরণ একটা ব্যাপার কিছুতেই বুঝতে পারে না। এই মা টা কেন তাকে আদর করে না??? তার ক্লাসমেটদের মায়েরা দেখি ওদেরকে কত্ত আদর দেয়!!! কত্ত কিছু কিনে দেয়!!! অথচ তার মা তো তাকে সব সময় শুধু শাসনই করে..কোনো দিনই তো কাছে ডাকে না। উল্টো কাছে গেলেই কুকুরের মতো দূরদূর করে তাড়িয়ে দেয়। সরণ এর কাছে সবচাইতে স্মরণীয় সময়টা হচ্ছে তার বাবা বাসায় থাকার সময়টা । কারণ, একমাত্র তার বাবার সামনে থাকলেই তার মা কেমন জানি হয়ে যায়!! তার ফ্রেন্ডরা যেই মায়ের গল্প শোনায় ঠিক সেই মায়ের মতো। ওর ছোট্ট মাথায় কিছুতেই ব্যাপারটা ঢুকে না। সে সব সময়ই ভাবে, ''আচ্ছা কেনো এমন হয়??'' তার ফ্রেন্ডদের থেকে শুনেছে তার মা নাকি সৎ মা। তাই এমন করে । আচ্ছা তার আপন মা থাকলে কেমন হতো? সব সময় সত্যিকারের আদর দিতো? যা এই মা দেয় না!!!!

সরণ এর প্রত্যেকটা দিন এখন কাটছে তার 'মা' এর অপেক্ষায়..............

গল্পটা পড়ার পর রিমন এর চোখ ছলছলিয়ে উঠে। এক মুহুর্তও দেরি না করে সে উঠে দাড়ায়। রিমন এখন হাঁটছে। গন্তব্য : তার বাসা । যেখানে অসীম মমতা নিয়ে অপেক্ষারত তার মা..........

সরণ এর মা না হয় মারা গেছে..কিন্তু,আমাদের যাদের মা আছে..তারা কেনো মা কে কষ্ট দিই?? একবার ভাবুন তো? সরণ এর জায়গায় আপনি হলে কি হতো?পারতেন সেই কষ্ট সহ্য করতে?
মা তো বকা ঝকা করেন আমাদেরই ভালোর জন্য.... তাই না?
চলুন না,আজ থেকে আমরা খুব ভালো সন্তান হয়ে যাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×