somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাসের ক্যাচাল B-)B-);)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্যাচাল আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংগ হয়ে দাড়িয়েছে। ক্যাচাল শুধু ব্লগেই ঘটে না। মাঠে-ঘাটে, অফিস-আদালতে সব জায়গায়ই ক্যাচাল।:P:P বাসের মধ্যে ঘটা এমনি দুটি ক্যাচালময় কাহিনী দেওয়া হল।


ঘটনা ১: বাসে যাতায়াত করা কি যন্ত্রনার সেটা বাসে ভ্রমণ করা লোক মাত্রই জানেন। সেদিন ক্লাস শেষ করে বাসে উঠে বাদুড়ের মত ঝুলতে ঝুলতে বাসায় আসছিলাম। বাসে উঠার সময়ই দেখেছিলাম মহিলা সিটে দুইজন ছেলে বসে আছে। যাই হোক, পরের স্টপিজে তিনজন মহিলা বাসে উঠলেন। যেই ঘটনা হওয়ার কথা ছিল অবধারিতভাবে তাই ঘটল। :|:| একজন মহিলা সিট ছেড়ে উনাদের উঠতে বললেন। উনারা বললেন উনারা কিছুতেই সিট ছেড়ে উঠবেন না। কারণ, উনারা সিটে আগে বসেছেন। তাছারা, দেশে ছেলে-মেয়ের সমান অধিকার। মেয়েদের জন্য আলাদা কোন সিটের দরকার নাই। শুরু হয়ে গেল ঝগড়া। ঝগড়া শুধু উনাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। বলতে গেলে পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়ল ঝগড়া। পুরো বাস দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ল। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে দু-একজন ছাড়া বেশিরভাগই ওই ছেলেদের পক্ষ নিলেন । চিল্লাচিল্লি আর শোরগোল এতটাই চরমে গিয়ে পৌছল যে, ড্রাইভার বাস থামিয়ে বাস এক-সাইডে দাড় করিয়ে রাখলেন। ব্যাস। এবার পুরো বাস এক হয়ে গেল। সবাই মিলে ড্রাইভারের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলেন। যারা এতক্ষণ চুপ ছিলেন তারাও অশ্লীল ভাষায় চিল্লাচিল্লি শুরু করলেন। :P:P সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল যে দুইজনের জন্য এত ঝগড়া উনাদের মধ্যে একজন নিজের সিট ছেড়ে ড্রাইভারের কলার ধরে মারতে গেলেন। উনার সিট ছাড়া দেখে অন্য ভাইয়াটাও সিট ছেড়ে উঠে দাড়ালেন। বাস স্টার্ট নিল। এবার আর মহিলা সিটে ভাইয়ারা বসলেন না। মনে হল পুরো ঘটনার জন্য নিজেরাই আংশিক লজ্জা পেলেন।:|:| পেছনের দিক থেকে একজন লোক বললেন- দেশটার যে কি হবে!


ঘটনা ২: কয়েকদিন আগের ঘটনা। বাসে করে বাসায় আসছিলাম। আমার সামনের সিটে এক ভাইয়া বসে ছিলেন। হঠাত করে একটি মেয়ে বাসে উঠল। বাসে কোন সিট ছিল না। ভাইয়া উনার সিট ছেড়ে দিলেন। মেয়েটি ভাইয়াকে অনেক ধন্যবাদ জানালেন। উনাদের কথোপকথন শুরু হল। বেশ জোড়েই উনারা কথা বলছিলেন। কথোপকথনের মাঝে ভাইয়া আপুকে উনার মোবাইল নম্বর দিলেন। :|:| কথাক্রমে বুঝলাম আফামণি সাইফুরসে ভর্তি হবেন। ভাইয়ার মনে হয় সাইফুরসে পরিচিত কেউ ছিল। কাউকে ফোন করে এমন চিল্লায়ে চিল্লায়ে কথা বলছিলেন যেন তিনি মাইকে ভাষন দিচ্ছেন। ফোন রাখার পর তিনি জানালেন যে সাইফুরসে ভর্তি কোন সমস্যাই না। নামমাত্র টাকাতেই তিনি আফামণিকে ভর্তি করিয়ে দিবেন। ঘটনা শুইনা আফামণি মনে হইল যার পর নাই খুশি হইলেন। তাহারা হিন্দি ছবির বিভিন্ন নায়ক-নায়িকা নিয়ে উচ্চ স্বরে আলোচনে করছিলেন। উনারা মনে হয় ভুইলা গেছিলেন উনারা বাসে।:P:P এর মাঝে আমার একবার মনে হইল আমিও ওই ভাইজানকে বলি আমার লাইগা সাইফুরসে আইএলটিএসের একটা ব্যবস্থা করতে। ফাউ একটা কোর্স করতে পারলে অসুবিধা কি!! :|;) যখনই বলতে যাব তখনই দেখি পাশের এক আঙ্কেল অত্যন্ত উত্তেজিত ভাষায় কথা বলা শুরু করলেন। কেন ভাইয়া আর আফা বাসের মধ্যে চিল্লাচ্ছিলেন এটার জন্য উনি ব্যফুক রাগান্বিত হইলেন। বেশ কিছুক্ষণ ঝাড়ি মারলেন তিনি। ভাইয়া আর আফামণি উভয়েই সব ঝাড়ি নিরবে সহ্য করলেন। ক্যাচাল লাগল তখনই যখন আঙ্কেল বললেন ওই মেয়ের বাপ-মা কেন এইরকম ফালতু মেয়ের জন্ম দিয়েছেন। আফামনি তখন কানতে শুরু করলেন আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কি জানি বলতে লাগলেন। উনার কান্না দেইখা ওই ভাইয়াও চিল্লাচিল্লি শুরু করলেন। চিল্লাচিল্লি পুরো বাস-ময় ছড়িয়ে পড়ল। এবারে বাসের পেছনের অংশ সমান দুইভাগে বিভক্ত হল। এক ভাগ আঙ্কেলের পক্ষে আরেক ভাগ ভাইয়া আর আফামনির পক্ষে। বিরাট ক্যাচালে কার কি লাভ হল সেটা না বুঝলেও কন্টাকটারের যে লস হইছে এই ব্যাপারে কুনু সন্দেহ নাই। :| মাঝে তিনি যখন একবার ভাড়া নিতে আসছিলেন তখন তিনি হাতাহাতি দেখে আর ভাড়া চাওয়ার সাহস পান নাই। পাঠকগণ মনে করতে পারেন ভাইয়ার সাথে আঙ্কেলের হাতাহাতি। আসলে তা না!! ভাইয়ার এক সাপোর্টারের সাথে আঙ্কেলের এক সাপোর্টারের হাতাহাতি!:P:P যাই হোক, আঙ্কেল পরের স্টেশনে পিছনের ভাড়া না দিয়েই দরজা দিয়ে নেমে গেলেন। তারপরের স্টেশনে ওইভাইয়া আর আফামণিও নেমে গেলেন! বাসের ক্যাচাল তাও থামে না।:|:| একপক্ষ বলতে লাগল এই যুগের পোলাপানরা সব বদ। আরেকপক্ষ বলতে লাগল ওরা বদ হইলে বাকিদের সমস্যা কি! যাই হোক, আমি নামার আগ পর্যন্ত এই ক্যাচাল চলছিল। বাস থেকে নামার সময় দেখি হেল্পার আর কন্টাকটারের মন খারাপ। উনাদের কত ভাড়া লস হল কে জানে!
৩৬টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহর সাহায্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪০



দুই মেয়ের পরীক্ষা বিধায় আমার স্ত্রীকে লক্ষ্মীপুর রেখে আসতে গিয়েছিলাম। বরিশাল-মজুচৌধুরীর হাট রুটে আমার স্ত্রী যাবে না বলে বেঁকে বসলো। বাধ্য হয়ে চাঁদপুর রুটে যাত্রা ঠিক করলাম। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডয়েজ ভেলে'র প্রকাশিত এই প্রামাণ্যচিত্রটি বেশ উদ্বেগজনক

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন বাহিনী থেকে প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ডে যুক্ত সৈনিকদের ইউ.এন. এর পিস কিপিং মিশনে পাঠানোর বিষয়ে ইউ.এন. এর কর্মকর্তাগণ বেশ উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে ডয়েচ ভেলে ক'দিন আগেই একটি প্রামাণ্যচিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুলের চিন্তার কাবা প্রাচ্য নাকি পাশ্চাত্য?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:০৫


কাজী নজরুলের বড় বিপত্তি তিনি, না গোঁড়া ধর্মীয় লোকের কবি আর অতিমাত্রায় বামের কবি, না হোদাই প্রগতিশীলের কবি। তিনি সরাসরি মধ্যপন্থীর। অনেককেই দেখি নজরুলের কিছু কথা উল্লেখ করে বলেন কাফের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সর্তকতা।

লিখেছেন কাল্পনিক_ভালোবাসা, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর ব্লগারদের কাছে যদি স্থানীয় ঝড়ের অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×