somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রচন্ড গরমে রিকশায়...

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ প্রথমবারের মত বিনা প্রস্তুতিতে বোর্ড স্ট্যান্ডার্ড পরীক্ষা দিলাম। ভালোই হয়েছে...তো বন্ধুরা বলল, "কোপাইয়া পরীক্ষা দিছ এখন একটা ঘন্টা ক্যাম্পাসে থাক"। কি আর করার জোরাজুরি করাতে থাকলাম। ক্যন্টিনে হালকা কিছু সমুচা-সিঙ্গারা খেয়ে ক্যান্টিনের বাইরে টিনের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম আমরা তিনজন। B-) আমি, আমার ভ্রমনসঙ্গী শেখ ফয়সাল আর আমাদের সি আর মোরশেদ। ওরা দুজন যখন প্রায় মিনিট দশেক যাবত আলাপ করছিল তখন বার বার আমি বলতে লাগলাম, “দোস্ত, বাসায় যাই গা, ভাল্লাগতেছে নাহ্‌। অনেক গরম”। আরও মিনিট কয়েক পর আমার প্রাণপ্রিয় সহচরদ্বয় আমার সাথে একমত প্রকাশ করলো!! এরপর আরকি যে যার মত দিন কয়েকের জন্য ভার্চুয়াল বিদায় নিয়ে আমি আর ফয়সাল পানিপথ পার হলাম। ভিআইপি এন্ট্রেন্স দিয়ে বের হওয়ার কিছুদূর যেতেই ফয়সাল বিদায় নিয়ে চলে গেল ভিন্ন রাস্তায় ভিন্ন পথে...! আমি অনেক্ষন দাঁড়িয়ে অনেক রিকশাওয়ালা ভাই/চাচাকে জিজ্ঞেস করলাম! কেউ যেতে রাজি না...হয়তো অন্য কোন গন্তব্যের যাত্রীর খোজে অপেক্ষায় আছে...! হাটতে হাটতে আরও সামনে এগোচ্ছিলাম...প্রচন্ড গরমে আমার মনে হচ্ছিল রাস্তায় পরে যাবো। খুব অস্বস্তি লাগছিলো আমার দুর্বল ক্লান্ত দেহে...:(
অনেকখানি পথ এগিয়ে এক চাচাকে পেলাম যিনি যেতে রাজী হলেন। :-0 খানিক স্বস্তি নিয়ে রিকশায় উঠলাম...তিনি যখন রিকশা চালাচ্ছিলেন তার অবস্থা খেয়াল করলাম...বয়স পঞ্চাশোর্ধ হবে, হয়তো সকালের মত এখন আর শরীরে তেমন শক্তি নেই, যা উনার ধীর গতিতেই আন্দাজ করতে পারছিলাম। পরনে জীর্ণ শার্টের পিছন দিকটা সম্পূর্ণ ঘামে ভেজা।
হঠাৎ, পেছনে এক রিকশা সজোরে ধাক্কা দেয়াতে পিছনের কিসের একটা নাট খুলে গেল...!! #:-S B:-) আমি অবাক হলাম, উনি কোন প্রতিবাদ করলেন নাহ্‌। চুপচাপ উনার আমার চেয়ে কয়েকগুল বেশী ক্লান্ত দেহটি নিয়ে রিকশা থেকে নেমে কোনমতে কিছু একটা ঠিক করে আবার ধীরে ধীরে চালানো শুরু করলেন......আমি আবার আমার চিন্তায় মগ্ন হচ্ছিলাম...হঠাৎ, রাস্তার পাশের একটি সাইকেল রিপিয়ারিং এর দোকানে থামালেন...দোকানের লোকের কাছ থেকে কিছু একটা যন্ত্র এনে রিকশার পিছনের অসঙ্গতিটা হয়তো ঠিক করলেন...পূর্বের মত এবারও আমি ঠায় রিকশায় বসেই ছিলাম। প্রায় পাচ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর উনি আবার রওনা দিলেন...! যেই রোদের তাপ আমি মিনিট সহ্য করতে পারি না সেই রোদে দুই দফায় প্রায় সাত থেকে আট মিনিট বসে ছিলাম। উনাকে কিছুই বললাম না, কোনো তাড়াও দিলাম নাহ্‌। :| :|
রিকশা ধীর গতিতে চলছে......আমি চিন্তা করতে লাগলাম আসলে কিছু মানুষের জীবন কতটা কঠিন, তাদের প্রতিদিনের জীবনেই এরকম কষ্ট এখন স্বাভাবিক বিষয়। মহান আল্লাহ্‌ আমাকে নিঃসন্দেহে এদের চেয়ে ভালো অবস্থায় রেখেছেন। নিয়মানুযায়ী তীব্র ইচ্ছা জাগলো এরকম খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য কিছু করার....কিছু বলতে আসলে অনেক কিছু!! কিন্তু, বর্তমানে ফিরে আসলাম, আমার সেই সামর্থ্য আছে কি??! :( :( এসব মানুষের জন্য কিছু করার তৌফিক যাতে আল্লাহ্‌ তা'আলা আমাকে দান করেন সেই আশা করতে করতে উনার ধীর গতির রিকশা আমার বাসার সামনে হাজির হল...আমি জানি উনাকে সাহায্য করার মত সামর্থ্য এখন আমার নেই...আমি উঠতি বয়সের ছাত্র, বাচ্চা বয়সের নেটওয়ার্কার। আমি নেমে উনার দাবীকৃত ভাড়ার চেয়ে মাত্র পাচ টাকা বেশী দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেলাম। খনিকের জন্য লক্ষ্য করলাম, সে মূল ভাড়ার সাথে অতিরিক্ত পাচ টাকার নোটটি দেখে বিচলিত হলো...!!
এরপর আমি আর কিছু খেয়াল করিনি...! কোনমতে বাসায় এসে ক্লান্ত দেহটাকে একটু স্বস্তি দিতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম............... |-) |-)
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বর্গের নন্দনকাননের শ্বেতশুভ্র ফুল কুর্চি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৭


কুর্চি
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : কুরচি, কুড়চী, কূটজ, কোটী, ইন্দ্রযব, ইন্দ্রজৌ, বৎসক, বৃক্ষক, কলিঙ্গ, প্রাবৃষ্য, শক্রিভুরুহ, শত্রুপাদপ, সংগ্রাহী, পান্ডুরদ্রুম, মহাগন্ধ, মল্লিকাপুষ্প, গিরিমল্লিকা।
Common Name : Bitter Oleander, Easter Tree, Connessi Bark,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচলের (সচলায়তন ব্লগ ) অচল হয়ে যাওয়াটই স্বাভাবিক

লিখেছেন সোনাগাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬



যেকোন ব্লগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর, একটি ভয়ংকর খারাপ খবর; ইহা দেশের লেখকদের অদক্ষতা, অপ্রয়োজনীয় ও নীচু মানের লেখার সরাসরি প্রমাণ।

সচল নাকি অচল হয়ে গেছে; এতে সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

হরিপ্রভা তাকেদা! প্রায় ভুলে যাওয়া এক অভিযাত্রীর নাম।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২২ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩


১৯৪৩ সাল, চলছে মানব সভ্যতার ইতিহাসের ভয়াবহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। টোকিও শহর নিস্তব্ধ। যে কোন সময়ে বিমান আক্রমনের সাইরেন, বোমা হামলা। তার মাঝে মাথায় হেলমেট সহ এক বাঙালী... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি বললে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৭

তুমি বললে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

খুব তৃষ্ণার্ত, তুমি তৃষ্ণা মিটালে
খুব ক্ষুধার্ত, তুমি খাইয়ে দিলে।
শ্রমে ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত দেহে তুমি
ঠান্ডা জলে মুছে দিলে, ঊর্মি
বাতাস বইবে, শীতল হবে হৃদয়
ঘুম ঘুম চোখে পাবে অভয়।
তোমার আলপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×