somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শীতের কুয়াশায় বসন্তের ছোয়া

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কনকনে শীতের মাঝে খুব সকালে বাড়ী থেকে বের হলাম ।অনেক টা পথ ।গাজীপুর থেকে ঢাকা এসে অফিস করব।এর থেকেও বড় কথা বাড়ী থেকে দশ কিলো সি এন জি তে এসে গাড়ীতে। মনে করতেয় ভয় হচ্ছিল।আজ একটু বেশীই কোয়াশা।চারপাশের কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।মনে হচ্ছিল সারা প্রকৃতি আজ কোয়াশার চাদর মুরি দিয়ে ক্লান্তীতে জিমিয়ে পরেছে।বেলা ভাড়ছে তারপর ও সূযে'র দেখা নেই। মনে হচ্ছে কোয়াশা আরও বাড়ছে।মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে বৃষ্টি পরতেছে। রাস্তায় জনমানব নেই বললেই চলে।

ঘন কোয়াশার বুক চিরে আমার প্রাইভেট সি এন জি টা খুব আস্তে আস্তেই চলছিল।দুই কিলো কাচা রাস্তা পাড় হয়ে পাকা রাস্তায় ওঠতেই কে যেন পিছন থেকে ডাকল ।মৃদু কন্ঠে আমাকে অনুরোধ করল 'আমি কি আপনার সাথে যেতে পারি'। কোয়াশার মাঝে স্প্ট দেখা যাচ্ছিল না।ভাল করে তাকি্য়ে দেখলাম কাল বোরকা পরা ভদ্র মহিলা। কোন কিছু না ভেবেই তাকে ওঠতে বললাম।

আমি প্রতি রবি বারই খুব সকালে বাড়ী থেকে অফিস করি গত এক বছর এর ব্যতিক্রম হয় নি।তার পরও আজ কেন জানি অন্য রকম লাগছিল।আমার অন্য রকম মনে হবার অবশ্য কারন ও ছিল।আজই প্রথম কোয়াশা এবং একটু একটু বৃষ্টি হচ্ছিল।আমি অনেক মুষলধারে বৃষ্টির মাঝে অফিস করেছি কিন্তু এই প্রথম কোয়াশা আর একটু একটু বৃষ্টি সাথে অসহ্য ঠান্ডার মাঝে অফিস করতে যাচ্ছি।পাশে একজন ভদ্র মহিলা এটাও প্রথম।

প্রাই দশ মিনিট পাশাপাশি বসা দুজন মানুষ।খুব কাছাকাছি কিন্তু আমি তাকে চিনি না।চিনার চেস্টাও করি নি ।এক বার মনে হচ্ছিল তার পরিচয় টা জানা যেতে পারে।আবার মনে হল কি দরকার অপরিচিত মানুষের সাথে আগ বারিয়ে কথা বলতে যাবার।অপরিচিত ঐ মানুষটার সাথে কথা বলার অদম্য ইচ্ছা টা কে দমন করে আমার সি এন জি ড্রাইভার কে প্রশ্ন করলাম আর কতক্ষন লাগবে।সে বলল অনেক কোয়াশা ৩০ মিনিটের মত লাগবে।

ত্রিশ মিনিট অনেক বেশী সময় মনে হচ্ছিল বিশেষ করে একজন ভদ্র মহিলার সাথে আর ও ত্রিশ মিনিট বসে থাকতে হবে।হঠাৎ করে একটা ভয়ংর জিনিস আবিস্কার করলাম।আমার মনে হচ্ছে আমার শরির থেকে কেমন যেন মিষ্টি একটা ঘ্রাণ বেশে আসতেছে।রজনী গন্ধা আর বেলী ফুলের মিশ্রন এর ঘ্রান।আমি রবি বারে কখনই বডিস্প্রে করি না ।

আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ঘ্রাণ টা কোথা থেকে আসতেছে।খুব ভাল করে বুঝতে চেষ্টা করলাম ঘ্রাণ টা কিসের।আমার আর বুঝতে বাকি থাকলানা ।আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম ঘ্রাণ টা আমার পাশে বসা ভদ্র মহিলার শরির থেকেয় আসতেছে।এত মাযাবী গন্ধ কিভাবে একজন মানুষের হতে পারে এর আগে কখনো অনুভব করি নি।

সময়ের সাথে সাথে ঘ্রাণের তীব্রতা কেবলই বাড়তেছিল আর আমি যেন মাতাল হয়ে যাচ্ছিলাম।মনে হচ্ছিল ঐ ভদ্র মহিলা ইচছা করেই আমাকে মাতাল করতে এত মায়াবী বডিস্প্রে করেছে। অসহ্য ঘ্রাণ ।মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাচ্ছি।সবকিছু ওলট পালট হয়ে যাচ্ছে।কি ভয়ংকর অনুভুতি বলে বুঝাতে কষ্ট হচ্ছে।

আমি একবার টেরা চোখ করে দেখতে চেষ্টা করলাম ঐ ভদ্র মহিলাকে।বোরকা পরা তাই মুখ দেখা যাচ্ছিল না।হাতের দিকে তাকাতেই বুক টা কেপে ওঠল।বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল কিভাবে একজন মানুষের হাত এত সুন্দর হতে পারে।কচি লাউয়ের ডগা যখন সকালের মৃদু রোদে অসহ্য সুন্দর ভংগিতে বেরে ওঠে ওনার হাতের আঙ্গুল গুলো ঠিক তেমন মনে হচ্ছিল।কিছুতেই চোখ সরাতে পারছিলাম না। কেন যেন মনে হচ্ছে হাজার বছর ধরে তাকিয়ে থাকি ঐ কচি হাত দুটুর দিকে।চোখ টা ব্যথা হয়ে গেছে।এই প্রথম মনে হল পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে টেরা চোখে কারউ দিকে তাকিয়ে থাকা।

নিজের প্রতি প্রচন্ড অভিযোগ জন্মাতে লাগল।আমার অবচেতন মন আমাকে বার বার বলতে লাগল "কিসের এত অহংকার তোমার? কেন এত নিজেকে ছোট মনে হবার ভয়? কেন এত দুভর্লতা ? কি এমন খতি হবে একজন অপরিচিত ভদ্র মাহিলার সাথে একটু কথা বললে?এটা কি তোমার ভদ্রতা নাকি সময়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে না নিতে পারার ব্যর্থতা ? এই কনকনে শীতের মাঝে বসন্তের মৃদু রজনী গন্ধার ঘ্রানের বিনিময়ে না হয় একটু কথা বল "অনেক চেষ্টা করেও মনে হচ্ছে হেরে যেতে হবে অবচেতন মনের কাছে।

প্রচন্ড খুভ অথবা অভিযোগ হতে লাগল ঐ ভদ্র মাহিলার প্রতি ।কিসের এত অভিমান ? কি এমন খতি হবে আমার সাথে একটু কথা বললে?কেন এত লজ্জা তার ?

আমি পরাজয় মেনে নিলাম আমার অবচেতন মনের কাছে। অনেক কষ্টে জমিয়ে রাখা হাজারও কথার মাঝ থেকে কিছু কথা বলতে সাহস সঞ্চার করলাম মনের মাঝে। কথা গুলো মনের মাঝেই রয়ে গেল।বুঝতে পারলাম আমি চলে এসেছি।

অনেক দিন হয়ে গেছে।আমি অনেক বেশী হতাশ।আমার না বলা কথা গুলো আমাকে আরও বেশী হাতাশ করে দেয় সবসময় ... খুব বেশী।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৫২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সততা হলে প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে

লিখেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নাদিম, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ক্রেতাদের মনে যে প্রশ্নগুলো থাকা উচিত:

(১) ওজন মাপার যন্ত্র কী ঠিক আছে?
(২) মিষ্টির মান কেমন?
(৩) মিষ্টি পূর্বের দামের সাথে এখনের দামের পার্থক্য কত?
(৪) এই দোকানে এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×