somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাকরি, উদ্যোক্তা এবং বেকারত্ব- কি ভাবছেন আপনি

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিটি শিক্ষিত ব্যক্তির জীবনের লক্ষ্য থাকে একটি কর্মজীবনে প্রবেশ করা এবং আয় করা। লেখাপড়া শেষে কেউ একটি চাকুরি পেলে তার শিক্ষার সমাপ্তি বলে ধরে নেয়। ছেলে মাস্টার্স পাশ করে ব্যবসা করে কথাটা অভিভাবকরা সহজভাবে নেন না। তারমানে ছেলে বেকার।

একটা ব্যবসা দাঁড় করাতে গেলে আসলেই অনেকটা বেগার খাটতে হয়। এই খাটা খাটুনিটা যদি অস্থিতিশীল হয় তাহলেই আপনি উদ্যোক্তা হওয়ার প্রেরণা পাবেন না। ধরুন, আপনি পাশ করে বের হয়ে চাকুরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদন দিয়ে যাচ্ছেন। কয়েক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছেন। চাকরি পাচ্ছেন না। এদিকে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কিছু করবেন কিনা সে ভাবনায়ও আপনি দোদূল্যমান। এই দোটানায় পড়ে আপনি একজন উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনাকে তিরোহিত করলেন।

আপনি যদি অনেক মেধাবী হন তবে আপনার আত্মবিশ্বাস থাকবে যে আপনি একটি সম্মানজনক পেশা বেছে নিতে পারবেন। সম্মানজনক পেশা না পেলে হতোদ্যম হয়ে যাবেন না। বর্তমান শিক্ষায় শিক্ষিত আপনি। আপনি চাকুরির চিন্তা না করে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কিছু করার উদ্যোগী হোন। চাকুরি না পেলে ব্যবসা করার চিন্তা করবেন এরকম অনিশ্চিত ক্যারিয়ার চিন্তা আপনাকে পিছিয়ে দেবে।

আমাদের দেশে বর্তমানে প্রাইভেট সেক্টরের চাকরি বলতে গুটিকয়েক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ পদকে বুঝায়। আইটি শিক্ষা বিস্তৃতি পাচ্ছে। টেলিকম প্রতিষ্ঠানে এই শিক্ষিত তরুণদের জায়গা হয়ে যাচ্ছে। প্রাইভেট ব্যাংকগুলো মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান স্মার্ট মেধাবী তরুণদের আকর্ষণ করে।

এনজিওগুলোকে আমি চাকরির বড় উৎস বলবো। বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরির আরেকটি উৎস। কিন্তু এই চাকরিগুলো সামাজিক অবস্থানে আকর্ষণীয় নয় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর কাছে।

এখন দেশে সরকারি চাকরি সোনার হরিণ। প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা পদে প্রতিবছর দেড় দুই হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। আবেদন প্রার্থী থাকে প্রায় দেড় লাখ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর জনবল বেশি। সবমিলিয়ে প্রায় ১১ লাখের মত সরকারি চাকুরিজীবী।

১৬ কোটি লোকের দেশে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৯৪ লাখ চাকুরিজীবী হলে (২০১০ পর্যন্ত, প্রথম আলো, ২৯/০১/২০১২, পৃষ্ঠা ১৫) মোট জনগোষ্ঠীর একটা বৃহৎ অংশই বেকার থাকে বা অন্য কোনো উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করে।

২০১০ সাল নাগাদ দেশে দুই কোটি ২০ লাখ স্বনিয়োজিত কর্মী রয়েছেন। এক কোটি ৬ লাখ দিনমজুর ভিত্তিক শ্রমিক রয়েছেন। ১ কোটি ১৮ লাখ নারী-পুরষ গৃহস্থালীর কাজ করেন।

দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩ কোটি ৮৯ লক্ষ ব্যক্তি এখনো শ্রমশক্তির বাইরে রয়ে গেছেন।

২০০৬ সালেও উদ্যোক্তা ছিলেন ১ লাখ। ২০১০ সালেও উদ্যোক্তা ১ লাখ। তারমানে এই ৫ বৎসরে উদ্যোক্তা একজনও বাড়েনি। ব্যাংকগুলো নবীন উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে না। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যে প্রাথমিক কাজগুলো করতে হয়ে পদে পদে বাধা। ফলে অনেকে শিক্ষা শেষে অনিশ্চিত পথে পা বাড়াতে চায় না।

আমাদের অনেক সম্ভাবনাময় শিক্ষিত যুব সমাজ উদ্যোক্তা হওয়ার প্রচেষ্টায় নামলে দেশে অনেক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। এ প্রসঙ্গে ২৯/০১/২০১২ তারিখের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি জনাব ফজলুল হকের একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে। বক্তব্যটা খুব পরিষ্কার হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে...বাংলাদেশের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়বে। কেননা, প্রযুক্তিগত বিকাশের প্রভাবে কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে, কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে। মানে, কৃষিখাতে কর্মসংস্থান খুব একটা বাড়ার সুযোগ কম। সে ক্ষেত্রে সেবা খাতে কাজের সুযোগ তৈরির চাপ বাড়বে। কিন্তু প্রতিবছর গড়ে ২২ লাখ মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টির যে চাপ এখন বাংলাদেশে রয়েছে, তা মোকাবিলা করতে হলে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধির দিকেই সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, যোগাযোগসহ অবকাঠামোগত সংকট শিল্পখাতের বিকাশে বড় বাধা হয়ে উঠেছে। সরকারের এদিকে নজর দিতে হবে। তা না হলে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়ে সামাজিক অস্থিরতা ও অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাবে, সামাজিক বৈষম্য বেড়ে যাবে।

বেকারত্বের চাপ মোকাবিলায় শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি অপরিহার্য শিরোনামে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটি পড়ে একটি কথা জানতে ইচ্ছ করে শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে। নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ সহজ করতে হবে। বন্ধুরা, আপনাদের ভাবনা কি?

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৩৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×