somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্যালেন্টাইন | Valentine

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ মাঘ মাসের ১৮ তারিখ । শীত আঊটগোয়িং, বসন্ত ইনকামিং । কবি’দের মাঝে বসন্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় । বসন্ত নিয়ে তাই কবিতা,গান, ছড়া, উপন্যাস মাশাআল্লাহ কোন কিছুরই কমতি নেই ।
বসন্ত আসিতেছে, আমার মাঝেও কবি ভাব যেন ঝাপিয়ে পড়িতেছে !

১৯ বসন্ত পাড়ি গেলো, পাইলাম না তারি দেখা ;
আরে পাগলা, ১৯ বসন্ত পাড়ি গেলো, পাইলাম না তারি দেখা ;
খাইলাম আমি কেবল ছ্যাকা আর ছ্যাকা” ।
[ আদাব-আদাব ]

কাব্য চর্চা থেকে সরে আসি খানিকটা, মার-টার খাওয়ার ইচ্ছা আপাতত নেই (এমনি’তেই মনের দুঃখে জর্জরিত) । /:) ভ্যালেন্টাইন ডে’র ইতিহাস’টা খানিক জেনে নেয়া যাক ।

আমাদের গল্পের নায়ক ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন প্রীস্ট; পাদ্রী । রোমের অধিকর্তা তখন ক্লডিয়াস দ্যা সেকেন্ড । তো একদিন ক্লডিয়াস ব্যক্তিগত টয়লেটে বসে হাগু করছিলেন, সাথে গুনগুনিয়ে গান’ও গাচ্ছিলেন,

“ ক্যান এই কলা-ভেড়ী , কলা-ভেড়ী , কলা-ভেড়ী
দি ... হায় দি ... উফফ দি ... ইসস দি ...” । :P :P

এমন সময় দরজায় ঠাঁক ঠাঁক আওয়াজ । কার এত বড় স্পর্ধা যে রোম অধিপতি’র সঙ্গীত চর্চায় বাধাঁ দেয় ? ক্লডিয়াস তার সহধর্মিনী’র আওয়াজ পেলেন এবার ।
“ওরে বুড়ো ভাম, বের হবি না তুই? নাকি ওইখানেই নতুন রাজ্য খুলে নিছিস”?

বড়ই অপমানজনক কথা বার্তা ! X(( কিন্তু রোম অধিপতি যে স্ত্রী ভয়ে কাবু ! আস্তে করে আওয়াজ দিলেন,
“এই তো আর একটু জান”।

বাকি ঘটনা নাই শুনলাম আর, সেই মুহুর্তেই ক্লডিয়াস দ্যা সেকেন্ড সিদ্ধান্ত নিলেন, তার অধীনস্ত সকল সৈন্যদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ ! বাহাদুর জওয়ানেরা’ও স্ত্রী ভয়ে কাবু হয়ে থাকবে, তা তো হয় না ! গ্লাডিয়েটর’রা হবে সকল কিছুর উর্দ্ধে !
কিন্তু ক্লডিয়াস বললেই কি হবে, সৈন্যদের তো শখ আহ্লাদ আছে । তারা শরণাপন্ন হল পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন’র কাছে । সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন তাদের আশ্বাস দিলেন, বিয়ে তিনি পড়াবেন এবং তা হবে গোপনে ।
ক্লডিয়াস’র কানেও এই কথা গেলো । ভ্যালেন্টাইন যা করেছে, তা মার্জনাযোগ্য নয় । তিনি জল্লাদ’কে আদেশ দিলেন,
“ও মাইকেল, অমুক দিন সকালে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের সানডে মানডে ক্লোজ করে দিবা” । X(X(

জল্লাদ প্রতুত্তরে বললো,
“আমার নাম মাইকেল, পাহাড়ে চালাই সাইকেল; কাজ হয়ে যাবে” । B-)B-)

আমাদের নায়ক এখন জেলে বন্দি । ভ্যালেন্টাইনের সানডে মানডে ক্লোজ হওয়ার আগের অবশিস্ট দিনগুলোতে তার দেখা-শোনা করার ভার পড়লো জেলার সাহেবের মেয়ের । পাদ্রী ভ্যালেন্টাইনের বয়স কম । তার সৌন্দর্য, কথা বার্তায় জেলার-কন্যা দু’দিনেই মুগ্ধ । এতই মুগ্ধ যে সেই মুগ্ধতার সাগরে আমাদের বীর বিক্রম মুসা ইব্রাহীম’কে ছেড়ে দিলে সে’ও ডুবে যাবে ।

মারা যাবার আগের রাতে ভ্যালেন্টাইন অনেক কস্টে জোগাড় করা কাগজে ওই মেয়ের জন্য একটি নোট লিখলেন । নোটের শেষে সাইন করা ছিল,
“from your Valentine”.
দিনটি ছিল 14th February, 269 A.D
সেই থেকে আজ অবধি, এই দিনটি শুধুই ভালোবাসার ।


এইবার আসি আমার নিজস্ব ভ্যালেন্টাইনের কথায় ।

সাল ২০০৯: আমার এস এস সি’র বছর । ভ্যালেন্টাইনের আগের রাতে আমি “বার্ড ফ্লু” প্যারাগ্রাফ পড়ছিলাম । মুখস্ত বলবো ?

সাল ২০১০: আমার স্ট্রং ডায়রিয়া, স্যালাইন সহকারে বিছানায় শায়িত ।

সাল ২০১১: ১৩ই ফেব্রুয়ারী ফর্মটিচার মাঈন স্যারের হুমকি । পরেরদিন আমি কলেজে না আসলে আছিলা বাশঁ গুহ্যদ্বার দিয়ে ঢোকানো হবে ।
আমাদের কলেজ শুরু’র টাইম ছিল ৮ টা । ১৪ তারিখ সকাল সাড়ে আটটা’তে আমার মা’র ফোনে ক্রিং ক্রিং ।

মাঃ হ্যালো ।
স্যারঃ আপনি কি সঙ্গী’র আম্মু বলছেন ?
মাঃ জ্বি ।
স্যারঃ আপনার ছেলে’তো আজ কলেজে আসে নাই । নিশ্চয় কোন মেয়ের সাথে পার্কে বসে গল্প করছে । ছেলে’টার দিকে একটু নজর রাখুন । দিনে দিনে নস্ট হয়ে যাচ্ছে তো । ওরে নিয়ে আমাদের যা আশা ছিল, সব দূরাশা । মেয়েবাজি করে কি ভালো রেজাল্ট সম্ভব, আপনিই বলেন ?
মাঃ কিন্তু ও’তো ওর রুমেই । ঘুমাচ্ছে । ঊঠতে পারে নাই সম্ভবত । আমি ডেকে দিচ্ছি ।
স্যারঃ :-*:-*:|:|

৯ টায় আমি কলেজে গেলাম, কলেজ থেকে বের হয়ে আবার মাঈন স্যারের সামনে । উনার বাসায় ৬ টা পর্যন্ত E আর mc^2 নিয়া টানাটানির পর আমার বিছানা আমাকে ডাকছিলো, আর কিছু নয় ।

সাল ২০১২: মেরিন থেকে কল আসছে, ১২ই ফেব্রুয়ারী বিকাল ৫ টার মধ্যে একাডেমী’তে রিপোর্টিং । আমার এই ভ্যালেন্টাইন’টা শুরু হবে ভোর ৫ টায় মার্চ পাস্ট দিয়ে ।


সাদা পানযাবী পড়ে, গায়ে আতর মেখে কোন লাল শাড়ি পরিহীতা’র সাথে রিকসায় আর ঘোরা হল না আমার ।
১৯ বসন্ত শেষেও কাউকে বলা হল না,
“ভালোবাসি, অনেক বেশি ভালোবাসি”।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:২৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×