somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমাকে লেখা শেষ খোলা চিঠি

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রুপা,
কেমন আছো ? ভালো আছো ? অনেক দিন হয়ে গেল তোমাকে দেখি না তোমার কণ্ঠ স্বর শুনি না ? অনেক দিন হয়ে গেল তোমার কবিতা , তোমার গুন গুন করে গেয়ে ওঠা গান শুনি না, রুপা জানো এখনও কোন জ্যোৎস্না রাতে লোভনীয় চাঁদের আলোয় যখন আকাশে তাকিয়ে থাকি,ঠিক তখনই বুকের বা' পাশটায় তোমায় অনুভব করি।
এইতো সেদিন জ্যোৎস্না রাতে মাঠে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর তোমার কথা মনে করছিলাম,কত ভালো সময় পার করেছি আমরা , কত রাত আকাশের দিকে তাকিয়ে তোমার সাথে কথা বলেছি, এই সেদিন বসে মনে মনে ভাবছিলাম আমি নদীতে নৌকা নিয়ে একা একা ঘুরছি,মাঝ নদীতে যেয়ে দেখি তুমিও নৌকা নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছো। ও ভালো কথা আমি কিন্তু এখন ভালো নৌকা চালাতে পারি , আমি কুবের মাঝি ভাইয়ের কাছ থেকে শিখে ফেলেছি।

তোমাকে নিয়ে ভরা নদীতে,ভরা জ্যোৎস্নায় ভালোলাগা আর ভালবাসার আমার কল্পনায় সময় কাটল। অনেক ভালো লাগছিলো কিন্তু সময় খুব দ্রুত চলে গেল আর সকাল হয়ে গেল। সকালের আলো যখন উঁকি দিল দেখি তুমি চলে গেছো!!

একেবারে চলে গেছো, আর ফিরবে না জানি ফিরে আশার ও তেমন কোন কারন নেই ? আমি যে তোমার অযোগ্য সেটা আমি জানি, তোমার সাথে আমার যাই না মেলে না । আমি তো তোমার সাথে মিলতে চাইনি,তুমি এসেছিলে, আমার সব কিছু আমি তোমাকে বলেছিলাম , তুমি সব শুনে কি বলেছিলে তা কি তোমার মনে আছে ??
আমার মনে আছে,আমি তোমার কিছুই ভুলি নাই,আমি একা ছিলাম ভালো ছিলাম কারো মায়ায় নিজেকে জড়ায়নি কিন্তু তুমি আমার সামনে এসে আমার এই মায়া হতে রক্ষার দেয়াল ভেদ করে ঢুকে গেছো,আমি ও পারিনি তোমাকে থামাতে, আমি ও জড়িয়ে গিয়েছিলাম তোমার মায়ায়।কিন্তু এখন বুঝতে পারছি আমার তখন তোমাকে বাধা দেয়া উচিৎ ছিলো,মায়ার জাল কেটে ফেলে তোমাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে রাখা দরকার ছিলো আর ভালো করে মুজবুত দেয়াল দেবার দরকার ছিলো।
কেন যে দিতে পারি নি যদি দিতাম তবে আজ আমার এই সময় গুলো আসতো না,এখন যে সময় আমি পার করছি তা যেন আর কারো জীবনে না আসে।

এখন শুধু একটা কথা মনে বাজে সত্যি কি রুপা তুমি এই নষ্ট ছেলে কে
আপন করে নিয়েছিলে ?
না তাঁর অতীত শুনে তাকে করুণা করে ছিলে ??
আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয় ?
কেন আসলে আবার কেনই বা ছেড়ে চলে গেলে ?
আমার কোন অপরাধ তুমি দেখাতে পারনি ?

আমি আমার জায়গায় একদম স্বচ্ছ পানির মত পরিষ্কার ছিলাম,
তুমি বার বার সেটা কে ঘোলা করেছিলে
নানা রকম মিথ্যা দিয়ে,আর তোমার মিথ্যা গুলো আমি প্রমান করেছি
বার বার এইটা মিথ্যা।
শেষ যেদিন একেবারে চলে গেলে সেদিন ও একটা মিথ্যা বলে আমাকে দোষী
করে চলে গেলে, এইবার আর প্রমান করার কোন সুযোগ দাওনি।
আমি জানি কেন দাওনি ? তুমি আমাকে অনেক আগে হতে দূরে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলে কিন্তু আমার কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছিলে না।

একটা কথা জেনে রাখো আমি তোমার কোন ক্ষতি কোনদিন করিনাই করবো না কোনদিন , তোমার সাথে কোন অন্যায় ও করি নাই তাহলে কেন আমার জীবনে এসে আমার এত বড় ক্ষতি করলে ? এই দুনিয়াই আর কাউকে তোমার নজরে পড়লো না আমিই পড়লাম ?
যাক সমস্যা নেই ভেবে নেব আমি আগে যেমন নষ্ট ছিলাম এখন ও তেমনি আছি শুধু তোমার সাথের সময় গুলোকে আমার ঘুমের ঘোরের স্বপ্ন বলে চালিয়ে নেব,আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম এখন আমার ঘুম ভেঙ্গেছে আমি এখন আমার আসল জীবনে ফিরে আসলাম,যেখানে আমি আমার একাকীত্ব আর আমার নষ্ট জীবন।

একটা গানের কথা মনে পড়ে গেল ।

" চলে যদি যাবি দূরে স্বার্থপর
আমাকে কেন জ্যোৎস্না দেখালি "

রুপা, আমি তো জ্যোৎস্না দেখতে চাইনি, আমি আমার আমাবস্যা নিয়ে ভালোই যাচ্ছিলো, তুমি এসে আমাকে জ্যোৎস্না দেখানো শেখালে আর আমি ও জ্যোৎস্না দেখা শুরু করলাম, জ্যোৎস্নার আলোই নিজেকে তোমার সাথে ভাসিয়ে নিলাম,
তুমি আসার পর আমার জীবনে এমন জ্যোৎস্না রাত যায় নি,যে রাতে জ্যোৎস্না মেখে আমি তোমার জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকি নি।আজ আমার জীবনের সঞ্চায়িত সব জ্যোৎস্নার আলো তোমায় দিলাম। আমার এই জ্যোৎস্নার আলো গুলো নিয়ে তুমি পূর্ণ করবে চাঁদের জন্ম ?? আর একবার ফিরে এসে আমার জীবন টা পূর্ণ করবে চাঁদের মত ?? আমি পূর্ণ হতে চাই তোমাকে নিয়ে তোমার ভালোবাসা নিয়ে।

তুমি সারাজীবন একটা কথা মনে রেখো, আমি তোমার ফিরে আসার অপেক্ষায় নদীর পাড়ে বসে আছি । আবার তোমাকে নিয়ে জ্যোৎস্না দেখবো বলে, যেদিন তুমি ফিরে আসবে সেদিন থেকে তোমায় নিয়ে এমন দ্বীপে যাব যেখানে সময় নেই,তোমার আমার মাঝে কোন দেয়াল থাকবে না। শুধু ভরা জ্যোৎস্না আর তুমি আমি।

ভালো থেকো জ্যোৎস্নাময়ী মানবী। সুখে থেকো , ভালো কাটুক তোমার দিন গুলো । আমি আর বিরক্ত করবো না তোমাকে, আমার দ্বারা আর কোন সমস্যা সৃষ্টি হবে না ।

অটোগ্রাফ ছবির সেই গানের কথা গুলো বলে শেষ করছি।

" আমাকে আমার মত থাকতে দাও,

আমি নিজেকে নিজের মত গুছিয়ে নিয়েছি।

যেটা ছিলো না, ছিলোনা; সেটা না পাওয়াই থাক-

সব পেলে নষ্ট জীবন।

তোমারই এ দুনিযার ঝাপসা আলো-

কিছু সন্ধের গুঁড়ো হাওয়া কাঁচের মত

যদি উড়ে যেতে চাও, তবে গা ভাসিয়ে দাও।

দূরবিনে চোখ রাখবোনা, না.না.না.

এই জাহাজ মাস্তুল ছারখার,

তবু গল্প লিখছি বাঁচ বার।

আমি রাখতে চাই না আর তার,

কোন রাত-দুপুরের আবদার।

তাই চেষ্টা করছি বার বার সাঁতরে পাড় খোঁজার …

কখনও আকাশ বেয়ে চুপ করে,

যদি নেমে আসে ভালোবাসা খুব ভোরে।

চোখ ভাঙ্গা ঘুমে তুমি খুঁজো না আমায়,

আশে-পাশে আমি আর নেই।

আমার জন্য আলো জ্বেলো না কেউ,

আমি মানুষের সমুদ্রে গুনেছি ঢেউ।

এই স্টেশনের চত্তরে হারিয়ে গেছি,

শেষ ট্রেনে ঘরে ফিরব. না.না.না.

তোমার রক্তে আছে স্বপ্ন যত,

তারা ছুটছে রাত্রি-দিন নিজের মত,

কখনও সময় পেলে একটু ভেবো-

আঙ্গুলের ফাঁকে আমি কই?

হিসাবের ভিড়ে আমি চাই না ছুঁতে

যত শুকনো পেঁয়াজকলি ফ্রিজের শীতে,

আমি ওবেলার ডাল-ভাতে ফুরিয়ে গেছি

গেলাসের জলে ভাসবোনা,,, না.না.না. "

আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থাকবো,
নষ্ট ছিলাম, নষ্টই থেকে গেলাম,
ভালো হবার কোন সুযোগ পেলাম না।
আর দরকার নেই কারো করুণা, কারো মিথ্যে ভালোবাসা।

ইতি

নিশিথের নিশাচর ( নষ্ট ছেলে )
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×