আমার মত সহজসরল একজন মানুষ ভার্সিটির আতেলদের মধ্যে পড়ে যখন চিড়েচ্যাপ্টা তখন কেউ একজন শুভাকাঙ্খী আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিল "আরে দোস্ত চিন্তা করিসনা এখানে চোথাগুলান পাতার মত ওড়ে"।
্ভার্সিটিতে ভর্তির আগে নিজের জান কোরবান করে পড়ালেখা করলাম এই ভরসায় যে একবার এইখানে ভর্তি হতে পারলে আর পড়ালেখা করতে হবেনা। খালি সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে পড়ার ভান করে কিংবা মল চত্বরে আড্ডা মেরে যেভাবেই হোক সুখে শান্তিতে দিন গুজরান করলেই দেশের সর্বোচ্চ বিদ্বান হয়ে বের হওয়া যাবে।কিন্তু ভর্তির পর এক ধাক্কায় আমার সে স্বপ্নের মৃত্যু ঘটাতে হল যখন দেখলাম এখানকার পোলাপাইন প্রেম করার সময়ও অর্ধেক প্যাচাল কেবল পড়া নিয়েই করে।
সবচেয়ে অবাক হলাম যখন দেখতাম সবাই খালি দৌড়ায় হাতে হয় বই নয়ত কাগজের শীট নিয়ে। মেয়েরা কেউ কেউ উপর ক্লাসের ছেলেদের "ভাইয়া" বানিয়ে ফেলেছে।ভাইয়াদের কাছে চাইলেই নাকি নোটস পাওয়া যায়।শুধু তাই নয় এই ক্যাম্পাসে নাকি নোটস বাতাসে ওড়ে।কেবল নাকি ধরতে জানতে হয়।আমার মত গাধারে কে শিখাবে সেই নোট ধরার কৌশল ।
দেখতে দেখতে এক্সাম চলে এল।আমি রাতের পর রাত জেগে আর কাপের পর কাপ চা উজাড় করে ইংলিশ বইয়ের বিশুদ্ধ তর্জমা করে কিছু একটা লেখা যখন দাড় করলাম,তখন তাতে নতুন কিছু এড হয়েছে কিনা দেখার জন্যে আমার বন্ধু সংখ্যা বাড়তে লাগল আর তার বিনিময়ে দেখা পেতে লাগলাম সেই উড়ন্ত নোটসের।একই টপিকসের দশ বার সেট ভার্সন কপি।(একটা নোটসেরই ভিন্ন কপি পেয়েছিলাম ১৬টা।তারমধ্যে একখানায় আবার সেই বার বছর আগের সাইনও ছিল।আহা কত আগের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সেই নোট।)
যাকগে এবার আসি বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে।শুনি বাংলাদেশেও নাকি এমনি করে টাকা ওড়ে।সেও নাকি ধরার কৌশল আছে!!!!!!!!!!
আজ আমার এক নতুন কলিগের সাথে কথা হল।উনার হাজব্যান্ড কি করেন আল্লাহই ভালো জানেন।তাদের দুইখান পুত্র।দুইজনই ডিপিএস(দিল্লী পাব্লিক স্কুল)এপড়ে।ছোট ছেলে ক্লাস ফাইভে।যার ভর্তি ফী দুইলক্ষ পাচ হাজার পাচশ।আর প্রতি মাসে সাত হাজার টিউশন ফী।
আমি নেহাতই একটা মেয়ে মানুষ।তাই এতসুন্দর গল্পের ইস্যু হাতের কাছ দিয়ে চলে যাবে আর গল্প জমবেনা তা কি করে হয়?এবার জমে উঠল গল্প। তিনি উত্তরায় নিজ বাড়িতেথাকেন । গল্পে গল্পে হাতের বালা কানের দুল নেড়েচেড়ে দেখলাম।মেয়ে মানুষ বলে কথা!!!সবই হাল্কাপাতলা পড়েছেন।তবে ডায়মন্ডের ছোয়া খুব যতনে লেগে আছে তাতে।ভদ্রমহিলা খুব সৌখিন মানুষ তাই উনার হাজব্যান্ড কিছুতেই না করেন না।আহ হারে কত ভাল হাজব্যান্ডরে
সে কেন চাকরিতে এসেছে তাও এই ধরণের চাকরিতে মিষ্টি হেসে সে জবাব দিল বাসায় সময় কাটেনা।
াজ উনার সাথে গল্প করার সময় আজ আবার সেই ঢাবির নোটসের কথা মনে পড়ল।মনের মধ্যে তোলপাড় খাচ্ছিল একটা কথাই কে বলে বাংলাদেশ গরীব দেশ?এখানে দেখি নোটের ছড়াছড়ি তবে কেন সবাই সেই উড়ন্ত নোটের নাগাল পায়না।