somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামাযের দলীলসমূহ

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূচীপত্র
ইকামতের বাক্য গুলো দু’বার
করে বলা সুন্নত ৪
নামাযে কব্জির উপর হাত বেঁধে
নাভির নীচে রাখা সুন্নত ২১
প্রসঙ্গ: ছানা পড়া ৩৩
মুকতাদী সূরা ফাতেহা পড়বেনা ৩৭
নামাযে নি¤œস্বরে আমীন বলা সুন্নত ৫৫
শুধু তাকবীরে তাহরীমার সময়
হাত তোলা সুন্নত ৭১
সেজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু, পরে হাত,
তারপর চেহারা রাখা সুন্নত ৮৩
প্রথম রাকাত শেষ করে সোজা
উঠে দাঁড়ানো সুন্নত ৪৪
নামাযে ১ম ও শেষ বৈঠকে বাম পা বিছিয়ে তার
উপর বসা ও ডান পা খাড়া রাখা সুন্নত ৪৫
বিত্র নামায পড়ার তরীকা ৫৫
জুমআর আগের ও পরের সুন্নত ৬০
ঈদের নামাযে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর সুন্নত ৭০
জানাযার নামায পড়ার পদ্ধতি ৭৫
তারাবী বিশ রাকাত পড়া সুন্নত ৮০
মহিলাদের নামায-পদ্ধতি পুরুষের নামাযের মত নয় ৯৩


ইকামতের বাক্য গুলো দু’বার করে বলা সুন্নত
১. হযরত আব্দুর রাহমান ইবনে আবী লায়লা র. বলেনÑ
حَدَّثَنَا أَصْحَابُ مُحَمَد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؛ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ زَيْدٍ الأَنْصَارِيَّ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ كَأَنَّ رَجُلاً قَامَ وَعَلَيْهِ بُرْدَانِ أَخْضَرَانِ عَلَى جِذْمَةِ حَائِطٍ ، فَأَذَّنَ مَثْنَى ، وَأَقَامَ مَثْنَى ، وَقَعَدَ قَعْدَةً ، قَالَ : فَسَمِعَ ذَلِكَ بِلاَلٌ ، فَقَامَ فَأَذَّنَ مَثْنَى ، وَأَقَامَ مَثْنَى ، وَقَعَدَ قَعْدَةً. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف) ২১৩১(
واخرجه الطحاوى ১/১০০-১০২ و ابن خزيمة فى صحيحه ৩৮০ والبيهقى ১/৪২০ من طريق ابن ابى شيبة. قال ابن حزم الظاهرى : هذا اسناد فى غاية الصحة. وقال الماردينى فى الجوهر النقى : رجاله على شرط الصحيح.
অর্থ: হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একাধিক সাহাবী আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ আল আনসারী রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে দেখলাম, এক ব্যক্তি যার পরনে ছিল সবুজ রং এর একজোড়া কাপড়- যেন দেয়ালের একাংশে দাঁড়িয়ে জোড়া জোড়া শব্দে আযান দিলেন এবং ইকামাতও দিলেন জোড়া জোড়া শব্দে। আর কিছু‏ক্ষণ (মাঝখানে) বসে রইলেন, তিনি বলেন, পরে বিলাল রা. তা শুনলেন এবং তিনিও জোড়া জোড়া শব্দে আযান দিলেন, জোড়া জোড়া শব্দে ইকামাত দিলেন। আর (আযান ও ইকামাতের মাঝখানে) একটু বসলেন। ইবনে আবী শায়বা রা. আল মুসান্নাফ, হাদীস নং (২১৩১) তাহাবী. ১ম খৃ: ৪২০ পৃ. সহীহ ইবনে খুযাইমা হা.৩৮০ সুনানে কুবরা, বাইহাকী ১/৪২০
ইবনে হায্ম বলেছেন, এ হাদীসটির সনদ অত্যন্ত সহীহ। আলাউদ্দীন মারদীনী রহ. বলেছেনÑএটি সহীহ হাদীসের মানোত্তীর্ণ।
২. আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ রা. থেকে বর্ণিতÑ

قال كان أذان رسول الله صلى الله عليه و سلم شفعا شفعا في الأذان والإقامة. رواه الترمذى-১৯৪.
অর্থ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আযান ও ইকামাত ছিল জোড়া জোড়া শব্দে। তিরমিযী, হা.১৯৪
৩. আব্দুর রাহমান ইবনে আবী লায়লা র. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনÑ
كَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ زَيْدٍ الأَنْصَارِيُّ مُؤَذِّنُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَشْفَعُ الأَذَانَ وَالإِقَامَةَ. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف رقم ২১৫১
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুয়ায্যিন আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ আল আনসারী রা. আযান ও ইকামাত জোড়া জোড়া শব্দে দিতেন। মুসান্নাফে ইবনে আবীশায়বা, হাদীস নং (২১৫১)
৪. ইবনে আবী লায়লা র. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনÑ
حَدَّثَنَا أَصْحَابُنَا ؛ أَنَّ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ جَاءَ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، إِنِّي لَمَّا رَجَعْتُ الْبَارِحَةَ وَرَأَيْتُ مِنَ اهْتِمَامِكَ ، رَأَيْتُ كَأَنَّ رَجُلاً قَائِمًا عَلَى الْمَسْجِدِ عَلَيْهِ ثَوْبَانِ أَخْضَرَانِ فَأَذَّنَ ، ثُمَّ قَعَدَ قَعْدَةً ، ثُمَّ قَامَ فَقَالَ مِثْلَهَا ، غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ : قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ ، رواه ابن ابى شيبة فى المصنف رقم-২১৩৭ وابو داود رقم ৫০৬ كلاهما من طريق شعبة عن عمرو بن مرة به.
অর্থ: সাহাবীগণ আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, আনসার গোত্রের জনৈক ব্যক্তি এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! গতকাল যখন আমি ফিরে গেলাম এবং আপনার পেরেশানী দেখলাম, তখন আমি দেখলাম একটি লোক যেন মসজিদে দাঁড়িয়ে আছে। তার পরিধানে ছিল সবুজ রং এর দুটি কাপড়। তিনি আযান দিলেন। পরে একটু বসলেন। অতঃপর আবার দাঁড়ালেন এবং আগের মতোই বললেন। শুধু এবার قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ ، বাড়িয়ে বললেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২১৩৭; আবূ দাউদ, হাদীস নং ৫০৬।
৫.হযরত মুআয ইবনে জাবাল রা. বলেনÑ

قَالَ فَجَاءَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَقَالَ فِيهِ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ قَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ مَرَّتَيْنِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ مَرَّتَيْنِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ثُمَّ أَمْهَلَ هُنَيَّةً ثُمَّ قَامَ فَقَالَ مِثْلَهَا إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ زَادَ بَعْدَ مَا قَالَ ্র حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ গ্ধ. قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ. قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- ্র لَقِّنْهَا بِلاَلاً গ্ধ. فَأَذَّنَ بِهَا بِلاَلٌ.اخرجه ابوداود رقم-৫০৭
অর্থ: আনসার গোত্রের লোক আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ রা. আসলেন। তিনি এও বললেন, ( ঐ ব্যক্তি যাকে তিনি স্বপ্নে দেখেছিলেন) কিবলামূখী হলেন, এবং বললেন, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। হায়্যা আলাস সালাহ, দু‘বার, হায়্যা আলাল ফালাহ, দু‘বার। আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ,। তবে ‘হায়্যা আলাল ফালাহ’ বলার পর ‘কাদ্ কামাতিস্ সালাহ, কাদ্ কামাতিস্ সালাহ’ বৃদ্ধি করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বিলালকে এগুলি শিখিয়ে দাও। এর পর থেকে বিলাল রা. এগুলি দিয়েই আযান ইকামাত দিতেন। আবু দাউদ,হাদীস নং ৫০৭
৬. আবু মাহযূরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেনÑ
أن النبي صلى الله عليه و سلم علمه الأذان تسع عشرة كلمة والإقامة سبع عشرة كلمة قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح. اخرجه الترمذى رقم- ১৯২ والطيالسى رقم ১৩৫৪ والدارمى ১১৯৬، ১১৯৭ والنسائى ৬৩০ وقال الترمذى حسن صحيح.
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আযানের কালিমা ১৯ টি ও ইকামাতের কালিমা ১৭ টি শিখিয়েছেন। তিরমিযী, হাদীস নং ১৯২; আবূ দাউদ তায়ালিসী, হাদীস নং ১৩৫৪; দারিমী, হাদীস নং ১১৯৬, ১৯৯৭; নাসাঈ, হাদীস নং ৬৩০। ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।

৭. আবূ মাহযূরা রা. বর্ণনা বলেনÑ
عَلَّمَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الأَذَانَ تِسْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً وَالإِقَامَةَ سَبْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً ، الأَذَانُ : . . . . وَالإِقَامَةُ : اللَّهُ أَكْبَرُ ، اللَّهُ أَكْبَرُ ، اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ، أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ ، أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ ، حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ ، حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ ، حَيَّ عَلَى الْفَلاَحِ ، حَيَّ عَلَى الْفَلاَحِ ، قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ ، قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ ، اللَّهُ أَكْبَرُ ، اللَّهُ أَكْبَرُ ، لاَ إلَهَ إِلاَّ اللَّهُ.اخرجه ابن ابى شيبة رقم- ২১৩২ وابو داود رقم ৫০২ كلاهما من طريق همام عن عامر الاحول. وفى طريق لابى داود وعلمنى الاقامة مرتين.رقم৫০১
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আযানের কালিমা শিখিয়েছেন ১৯ টি, আর ইকামাতের কালিমা শিখিয়েছেন ১৭ টি। আযানের কালিমাগুলি বলার পর তিনি বলেন, আর ইকামাতের কালিমাগুলি হলোÑ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। হায়্যা আলাস্ সালাহ, হায়্যা আলাস্ সালাহ, হায়্যা আলাল্ ফালাহ, হয়্যা আলাল্ ফালাহ, কাদ্ কামাতিস্ সালাহ, কাদ্ কামাতিস্ সালাহ। আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লালাøহ। মুসান্নাফে ইবনে আবীশায়বা, হাদীস নং ২১৩২; আবূদাউদ, হাদীস নং ৫০২। আবূ দাউদ শরীফের আরেকটি বর্ণনায় আছে- আমাকে ইকামাতের কালিমা দু‘বার করে বলা শিখিয়েছেন। (হাদীস নং ৫০১)

৮. আসওয়াদ ইবনে ইয়াযীদ র. থেকে বর্ণিত আছে যে,
أن بلالا كان يثني الأذان ويثني الإقامة.اخرجه عبد الرزاق ১/৪৬২ والطحاوى ১/১০২ والدارقطنى ১/২৪২ كلهم عن معمر عن حماد عن إبراهيم عنه.واخرجه عبد الرزاق ايضارقم- ১৭৯১أخبرنا عبد الرزاق عن الثوري عن

بي معشر عن إبراهيم عن الأسود عن بلال قال كان أذانه وإقامته مرتين مرتين. قال الماردينى فى الجوهر النقى:هذا سند جيد.
অর্থ: বিলাল রা. আযান (এর কালিমাগুলি) দু‘বার করে বলতেন, ইকামাতও দু‘বার করে বলতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, ১ খৃ, ৪৬২পৃ; তাহাবী, ১ খৃ, ১০২ পৃ;। অন্য একটি সনদে আব্দুর রায্যাক রা. আসওয়াদ রা. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, বিলাল রা. আযান ও ইকামাত দুবার দুবার করে বলতেন।(দ্র. ১/ ৪৬৩) আল্লামা মারদীনী র. বলেছেনÑএর সনদ উত্তম।

৯. সুওয়ায়দ ইবনে গাফালা রা. থেকে বর্ণিতÑ
سمعت بلالا يؤذن مثنى ويقيم مثنى اخرجه الطحاوى ১/১০১
অর্থঃ তিনি বলেছেন, আমি বিলাল রা. কে আযান ও ইকামাত দুবার দুবার করে বলতে শুনেছি। তাহাবী, ১/১০১

১০. হযরত আবূ জুহায়ফা রা. থেকে বর্ণিত আছে যে,
ان بلالا كان يؤذن للنبى صلى الله عليه وسلم مثنى مثنى ويقيم مثنى مثنى. اخرجه الطبرانى فى الكبير ৯/১৯২ والدارقطنى ১/২৪২ وفى اسناده زياد بن عبد الله البكائى مختلف فيه واحتج به مسلم.
অর্থ: বিলাল রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য আযানও দিতেন জোড় শব্দে, ইকামাতও দিতেন জোড় শব্দে। তাবারানী, ৯/১৯২ দারাকুতনী, ১/২৪২
১১. হাজান্না ইবনে কায়স থেকে বর্ণিত আছে যে,
أَنَّ عَلِيًّا كَانَ يَقُولُ : الأَذَانُ مَثْنَى وَالإِقَامَةُ ، وَأَتَى عَلَى مُؤَذِّنٍ يُقِيمُ مَرَّةً مَرَّةً ، فَقَالَ : أَلاَ جَعَلْتَهَا مَثْنَى ؟ لاَ أُمَّ لِلْآخَرِ. اخرجه ابن ابى شيبة رقم-২১৪৯
অর্থ: আলী রা. বলতেন, আযান ও ইকামাতের বাক্যগুলো দুবার করে বলতে হবে। তিনি একজন মুয়ায্যিনকে একবার একবার করে ইকামাত বলতে শুনলেন। তাকে তিনি বললেন, দুবার করে বললেনা কেন? হতভাগ্যের মা না থাক্। মুসান্নাফে ইবনে আবীশায়বা, হাদীস নং ২১৪৯।

১২. উবায়দ রা. থেকে বর্ণিত,
قال ان سلمة كان يثنى الاقامة . اخرجه الطحاوى ১/১০২
অর্থ: সালামা ইবনেুল আক্ওয়া রা. ইকামাতের শব্দগুলো দুবার করে বলতেন। তাহাবী, ১/১০২

১৩. আবূ ইসহাক রা. থেকে বর্ণিত,
قَالَ : كَانَ أَصْحَابُ عَلِيٍّ ، وَأَصْحَابُ عَبْدِ اللهِ يَشْفَعُونَ الأَذَانَ وَالإِقَامَةَ. اخرجه ابن ابى شيبة رقم-২১৫৪
অর্থ: তিনি বলেনÑহযরত আলী রা. ও আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ রা. এর শিষ্যগণ আযান ও ইকামাতের বাক্যগুলি দুবার দুবার করে বলতেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২১৫৪।

১৪. মুজাহিদ র. থেকে বর্ণিত,
قال ذكر له الإقامة مرة مرة فقال هذا شيء قد استخفته الأمراء الإقامة مرتين مرتين.رواه عبد الرزاق فى المصنف رقم-১৭৯৩
অর্থ: তিনি বলেনÑ তার নিকট ইকামাতের বাক্যগুলো একবার করে বলার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হলে তিনি বললেন, শাসকরা (বনী উমায়্যার) এটা হাল্কা করেছে। ইকামাতের শব্দগুলো হবে দুবার করে। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, ১/৪৬৩; তাহাবী, ১/১০১
১৫. ইবরাহীম নাখায়ী রা. বলেন,
لاَ تَدَعُ أَنْ تُثَنِّيَ الإِقَامَةَ. اخرجه ابن ابى شيبة رقم- ২১৫৩ ومحمد فى كتاب الحجة على اهل المدينة ص.২২
অর্থ: আযান ও ইকামাতের শব্দগুলো দুবার দুবার বলতে ছাড়বে না। মুসান্নাফে ইবনে আবীশায়বা, হাদীস নং ২১৫৩; ইমাম মুহাম্মাদ, কিতাবুলহুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনা, পৃ. ২২।

নামাযে কব্জির উপর হাত বেঁধে নাভির নীচে রাখা সুন্নত
হাত বাঁধার নিয়ম সম্পর্কিত হাদীস
১. হযরত সাহল ইবনে সা’দ রা. বলেন,
كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلَاةِ.صحيح البخاري (٧٤٠ )
অর্থ : মানুষকে এই আদেশ দেওয়া হতো যে, তারা যেন নামাযে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখে। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৭৪০।
২. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন,
قُلْتُ لأَنْظُرَنَّ إِلَى صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- كَيْفَ يُصَلِّى فنظرت إليه فَقَامَ فَكَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى حَاذَتَا بأُذُنَيْهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى كَفِّهِ الْيُسْرَى وَالرُّسْغِ وَالسَّاعِدِ. أخرجه أبو داود (٧٢٧-٧٢٦) والنسائي (٨٨٩) واللفظ له وأحمد ٤/٣١٨ وابن خزيمة (٤٨٠) بإسناد صحيح. وفي رواية لأبي داود: ثم أخذ شماله بيمينه.
অর্থ: আমি (মনে মনে) বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে নামায পড়েন তা আমি লক্ষ্য করবো। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি দাঁড়িয়ে তাকবীর বললেন এবং উভয় হাত কান বরাবর রাখলেন। অতঃপর তাঁর ডান হাত বাম হাতের পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর রাখলেন।
আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭২৬,৭২৭; নাসাঈ শরীফ, হাদীস নং ৮৮৯; মুসনাদে আহমদ ৪খ, ৩১৮পৃ; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস নং ৪৮০। আবূ দাউদ শরীফের আরেক বর্ণনায় আছে, ثم أخذ شماله بيمينه
অর্থাৎ অতঃপর তিনি ডান হাত দ্বারা বাম হাত ধরলেন। এ হাদীসটি সহীহ।
ইবনে খুযায়মা র. উক্ত হাদীসের উপর শিরোনাম দিয়েছেন,
باب وضع بطن الكف اليمنى على الكف اليسرى
অর্থাৎ ডান হাতের তালু বাম হাতের তালুর পিঠ কব্জি ও বাহুর উপর রাখবে।
وعند الدارمي ١/٢٨٣ بإسناد صحيح في حديث وَائِلٍ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى قَرِيباً مِنَ الرُّصْغِ .
অর্থাৎ দারিমী র. এক বর্ণনায় সহীহ সনদে ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাত বাম হাতের কব্জির কাছে রাখতে দেখেছি। সুনানে দারিমী, ১খ, ২৮৩পৃ।
৩. হযরত হুলব আততাঈ রা. বলেন,
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يؤمنا فيأخذ شماله بيمينه.
أخرجه الترمذي (٢٥٢) وابن ماجه (٨٠٩) وابن أبي شيبة (٣٩٥٥) والدارقطني ١/٢٨٥
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমাম হতেন। তিনি ডান হাত দ্বারা বাম হাত চেপে ধরতেন। তিরমিযী শরীফ,হাদীস নং ২৫২; মুসনাদে আহমদের বর্ণনায় আছে, ডান হাত দ্বারা বাম হাতের ধরার বিবরণ দিতে গিয়ে ইয়াহইয়া র. ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রেখেছেন।
৪. হযরত শাদ্দাদ ইবনে শুরাহবীল রা. বলেন,
رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم قائما يده اليمنى على يده اليسرى قابضا عليها يعني في الصلاة . رواه البزار والطبراني .ذكره الهيثمي في مجمع الزوائد ٢/٢٢٥ وقال: وفيه عباس بن يونس ولم أجد من ذكره ،
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দন্ডায়মান দেখলাম। তার ডান হাতটি বাম হাতের উপর, তিনি সেটাকে চেপে ধরে আছেন। বাযযার ও তাবারানী এটি উদ্ধৃত করেছেন। (দ্র, মাজমাউয যাওয়াইদ, ২খ, ২২৫ পৃ)
৫. হযরত জারীর আদ্দাব্বী বলেন,
كان علي إذا قام في الصلاة وضع يمينه على رسغه .أخرجه ابن أبي شيبة (٣٩٦١) موصولا والبخاري قبل حديث رقم ١١٩٨ تعليقا. كتاب العمل في الصلاة ، باب إستعانة اليد في الصلاة الخ
অর্থ: হযরত আলী রা. যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন তার ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখতেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৯৬১; বুখারী শরীফ, ১১৯৮নং হাদীসের এর পূর্বে। এ হাদীসটির সনদ সহীহ।
নাভির নীচে হাত রাখা
১. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন,
رأيت النبي صلى الله عليه وسلم وضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة. أخرجه ابن أبي شيبة قال: حدثنا وكيع عن موسى بن عمير عن علقمة بن وائل عن أبيه وإسناده صحيح. قال الحافظ قاسم بن قطلوبغا في تخريج أحاديث الاختيار شرح المختار : هذا سند جيد وقال الشيخ أبو الطيب السندي في شرحه على الترمذي : هذا حديث قوي من حيث السند وقال الشيخ عابد السندي في طوالع الأنوار: رجاله كلهم ثقات أثبات اهـ
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে নাভির নীচে রাখতে দেখেছি। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৯৫৯। এর সনদ সহীহ।
হাফেজ কাসিম ইবনে কুতলূবুগা র., তিরমিযী শরীফের ভাষ্যকার আবুত্ তায়্যিব সিন্ধী র. ও আল্লামা আবেদ সিন্ধী র. প্রমুখ হাদীসটিকে মজবুত ও শক্তিশালী বলেছেন। এর সনদ এরূপ: ইবনে আবী শায়বা র. ওয়াকী’ থেকে, তিনি মূসা ইবনে উমায়ের থেকে, তিনি আলকামার সূত্রে হযরত ওয়াইল রা. থেকে। এই সনদে কোন দুর্বল রাবী নেই।
২. হযরত আলী রা. বলেন,
السُّنَّةُ وَضْعُ الْكَفِّ عَلَى الْكَفِّ فِى الصَّلاَةِ تَحْتَ السُّرَّةِ. أخرجه أبو داود (في رواية ابن الأعرابي وابن داسة) ٧٥٦ وأحمد ١/١١٠ (٨٧٥) وابن أبي شيبة (٣٩٦٦) والدارقطني ١/٢٨٦ والضياء في المختارة ٢/٧٧٢ وفيه عبد الرحمن بن إسحاق الواسطي وهو ضعيف. ولكن يشهد له الحديث السابق.
অর্থ: সুন্নত হলো তালু তালুর উপর রেখে নাভির নীচে রাখা । আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭৫৬; মুসনাদে আহমদ ১খ, ১১০ পৃ, হাদীস নং ৮৭৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৯৬৬; দারাকুতনী, ১খ, ২৮৬পৃ; যিয়া ফিল মুখতারা, ২খ, ৭৭২পৃ। এর সনদে আব্দুর রহমান ইবনে ইসহাক রয়েছেন। তিনি দুর্বল। তবে প্রথম হাদীসটি এর সমর্থন করছে।
৩. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন,
أَخْذُ الأَكُفِّ عَلَى الأَكُفِّ فِى الصَّلاَةِ تَحْتَ السُّرَّةِ. أخرجه أبو داود (٧٥٨) وفيه عبد الرحمن المذكور.
অর্থ: হাতের তালু অপর তালুর উপর রেখে নাভির নীচে রাখতে হবে। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭৫৮। এতেও পূর্বোক্ত আব্দুর রহমান রয়েছেন।
৪. হযরত আনাস রা. বলেছেন,
ثلاث من أخلاق النبوة تعجيل الإفطار وتأخير السحور ووضع البد اليمنى على اليسرى في الصلاة تحت السرة. أخرجه ابن حزم في المحلى تعليقا ٣/٣٠
অর্থ: তিনটি বিষয় নবীস্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। ইফতারে বিলম্ব না করা, সাহরী শেষ সময়ে খাওয়া, এবং নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে নাভির নীচে রাখা। ইবনে হাযম, আল মুহাল্লা, ৩খ, ৩০পৃ। তিনি এর সনদ উল্লেখ করেননি।
৫. হাজ্জাজ ইবনে হাসসান র. বলেন,
سمعت أبا مجلز أو سألته قال : قلت كيف يصنع قال : يضع باطن كف يمينه على ظاهر كف شماله ويجعلها أسفل من السرة . أخرجه ابن أبي شيبة في مصنفه. (٣٩٦٣)
অর্থ: আমি আবূ মিজলায র. (বিশিষ্ট তাবেয়ী)কে বলতে শুনেছি, অথবা হাজ্জাজ বলেছেন, আমি আবূ মিজলায র.কে জিজ্ঞেস করলাম, কিভাবে হাত বাঁধবো? তিনি বললেন, ডান হাতের তালু বাম হাতের তালুর পিঠে রেখে নাভির নীচে বাঁধবে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৯৬৩। এর সনদ সহীহ।
৬. ইবরাহীম নাখায়ী র. (যিনি তাবেয়ী ছিলেন) বলেন,
يضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة . أخرجه ابن أبي شيبة ٣٩٦٠
অর্থ: নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে নাভির নীচে বাঁধবে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৯৬০ । এর সনদ হাসান।
আল্লামা ইবনুল মুনযির র. তার আল আওসাত গ্রন্থে লিখেছেন,
-وقال إسحاق: تحت السرة أقوى في الحديث وأقرب إلى التواضع.
অর্থাৎ ইসহাক (যিনি বুখারী র. এর উস্তাদ ছিলেন) বলেছেন, নাভির নীচে হাত বাঁধার হাদীস অধিক শক্তিশালী এবং বিনয়ের নিকটতর। ( ৩খ,২৪৩পৃ)
১ ও ৫ নং হাদীস দুটি সহীহ। ৬ নং হাদীসটি হাসান।
প্রসঙ্গ: ছানা পড়া
ইমাম আবূ হানীফা র. ও ইমাম আহমাদ র. দুজনেরই মত হলো - নামাযে তাকবীর (আল্লাহু আকবার ) বলার পর এভাবে ছানা পড়া উত্তম:
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
এমতের পক্ষে প্রমাণগুলো নি¤েœ প্রদত্ত হলো:
১.আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, وسبح بحمد ربك حين تقوم অর্থ: যখন তুমি দাঁড়িয়ে যাবে, তখন তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করবে।(সূরা তূর,৪৮)
যাহহাক র. বলেছেন, উক্ত আয়াতের মর্ম হলো নামাযে এই ছানা পাঠ করা:
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
ইবনুল জাওযী, যাদুল মাসীর ৮খ. ৩০পৃ.।
ইমাম তিরমিযী র. লিখেছেন, والعمل على هذا عند أكثر أهل العلم من التابعين وغيرهم অর্থাৎ তাবেয়ীন ও অন্যান্য আলেমগণের অধিকাংশের আমল হলো- এই ছানা পাঠ করা।
২. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেছেন,
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا افتتح الصلاة قال: سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك، أخرجه النسائي(٨٩٩،٩٠٠) والترمذي (٢٤٢) وأبو داود (٧٧٥) وابن ماجه(٨٠٤)، كلهم من طريق جعفر بن سليمان عن علي بن علي عن أبي المتوكل عنه.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করার সময় বলতেন, سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং ৮৯৯,৯০০; তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৪২; আবু দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭৭৫; ইবনে মাজা শরীফ, হাদীস নং ৮০৪। এ হাদীসটি সহীহ।
৩. হযরত আয়েশা রা. বলেন,
كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا افتتح الصلاة قال سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك أخرجه الترمذي من طريق أبي معاوية عن حارثة بن أبي الرجال عن عمرة عنها، وحارثة قد تكلم فيه من قبل حفظه قاله الترمذي (٢٤٣) وأخرجه أبو داود من طريق طلق بن غنام عن عبد السلام بن حرب الملائي عن بديل بن ميسرة عن أبي الجوزاء عنها(٧٧٦)
অর্থ: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায শুরু করতেন তখন বলতেন سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৪৩; আবু দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭৭৬। আবূ দাউদের সনদ বা সূত্রকে আল্লামা আহমাদ শাকের র. তিরমিযী শরীফের টীকায় সহীহ বলেছেন। ৪. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন,
كان رسول الله يعلمنا إذا استفتحنا الصلاة أن نقول: سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك وكان عمر بن الخطاب يفعل ذلك وكان عمر يعلمنا ويقول كان رسول الله يقوله. أخرجه الطبراني في الأوسط (١٠٢٦)
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শিখিয়েছেন, আমরা যখন নামায শুরু করি, তখন যেন বলি,
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
উমর ইবনুল খাত্তাব রা.ও এমনটি করতেন। তিনি আমাদেরকে শেখাতেন এবং বলতেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এভাবে বলতেন। তাবারানী, আল-আওসাত, হাদীস নং ১০২৬। এর সনদ সহীহ।
৫. হযরত আনাস রা. বর্ণনা করেন,
عن أنس عن النبي صلى الله عليه و سلم أنه كان إذا كبر رفع يديه حتى يحاذي أذنيه يقول سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك. أخرجه الطبراني في الأوسط (٣٠٣٩) والدارقطني : ١٠/٣٠٠، قال الهيثمي في مجمع الزوائد: رجاله موثوقون. ٢/٢٢٨
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন الله أكبر বলতেন তখন উভয় কান বরাবর হাত উঠাতেন। আর বলতেন,
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
তাবারানী, আল-আওসাত, হাদীস নং ৩০৩৯।
৬. আবদা র. থেকে বর্ণিত:
أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ يَجْهَرُ بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ يَقُولُ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ. أخرجه مسلم(٣٩٩)
باب حُجَّةِ مَنْ قَالَ لاَ يَجْهَرُ بِالْبَسْمَلَةِ. ورواه الدارقطني وفيه: يسمعنا ذلك ويعلمنا، ١/٣٠١
অর্থ: হযরত উমর রা. এই কালিমাগুলো উচ্চস্বরে পড়তেন
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ و تَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ
মুসলিম শরীফ, হাদীস নং(৩৯৯)
দারাকুতনী র.ও এটি উদ্ধৃত করেছেন, সেখানে একথাও আছে, তিনি আমাদেরকে শোনাতেন এবং শেখাতেন। ১ খ, ৩০১ পৃ,।
৭. ইবনে জুরায়জ র. বলেছেন,

حدثني من أصدق عن أبي بكر ، وعن عمر ،وعن عثمان ، وعن ابن مسعود : أنهم كانوا إذا استفتحوا قالوا: سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
অর্থ: আবু বকর রা. উমর রা. উছমান রা. ও আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে এমন এক ব্যক্তি আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, যাকে আমি সত্যবাদী মনে করি।তাঁরা যখন নামায শুরু করতেন, তখন পড়তেন:
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا إله غيرك
মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ২৫৫৮, তাবারানী, আল-কাবীর, হাদীস নং ৯১৯৮।
মুকতাদী সূরা ফাতেহা পড়বেনা
কুরআন মাজীদ ও হাদীস শরীফ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, ইমামের পেছনে মুকতাদী সূরা ফাতেহা বা অন্য কোন সূরা পড়বেনা । এর প্রমাণগুলো নি¤েœ প্রদত্ত হলো Ñ
১.আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন
" وإذا قرئ القرآن فاستمعوا له وأنصتوا لعلكم ترحمون "
অর্থ: আর যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ কর এবং চুপ থাক। যাতে তোমাদের প্রতি করুণা করা হয় ।
২. হযরত আবূ মূসা আশআরী রা. বলেছেন,
إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- خَطَبَنَا فَبَيَّنَ لَنَا سُنَّتَنَا وَعَلَّمَنَا صَلاَتَنَا فَقَالَ ্র إِذَا صَلَّيْتُمْ فَأَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ ثُمَّ لْيَؤُمَّكُمْ أَحَدُكُمْ فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وإذا قرأ فأنصتوا وَإِذَا قَالَ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ فَقُولُوا آمِينَ. يُجِبْكُمُ اللَّهُ فَإِذَا كَبَّرَ وَرَكَعَ فَكَبِّرُوا وَارْكَعُوا فَإِنَّ الإِمَامَ يَرْكَعُ قَبْلَكُمْ وَيَرْفَعُ قَبْلَكُمْ গ্ধ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- ্র فَتِلْكَ بِتِلْكَ وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. يَسْمَعُ اللَّهُ لَكُمْ فَإِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ -صلى الله عليه وسلم- سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. وَإِذَا كَبَّرَ وَسَجَدَ فَكَبِّرُوا وَاسْجُدُوا. أخرجه مسلم باب التشهد في الصلاة (٤٠٤) من طريق جرير عن سليمان التيمي عن قَتَادَةَ عَنْ يُونُسَ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ حِطَّانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقَاشِىِّ عنه. وليس سليمان متفردا فيه بل تابعه عمر بن عامر وسعيد بن أبي عروبة عند الدارقطني والبيهقي، وأبو عبيدة مجاعة بن الزبير العتابي الأزدي أحد الثقات عند أبي عوانة.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে বয়ান দিলেন, আমাদেরকে দীনের পথ বুঝিয়ে দিলেন এবং নামায শিখিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, তোমরা যখন নামায শুরু করবে তখন কাতার ঠিক করে নেবে। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে বয়োজ্যেষ্ঠ তাকে ইমাম বানাবে। ইমাম যখন তাকবীর দেবে তোমরাও তখন তাকবীর দেবে। আর যখন সে কেরাত পড়বে, তোমরা তখন চুপ করে থাকবে। সে যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ পড়বে, তোমরা তখন আমীন বলবে। তাহলে আল্লাহ তোমাদের দোয়া কবুল করবেন। অতঃপর সে যখন আল্লাহু আকবার বলবে এবং রুকু করবে তোমরাও তখন আল্লাহু আকবার বলবে এবং রুকু করবে। কারণ ইমাম তোমাদের পূর্বে রুকুতে যায়। আবার তোমাদের পূর্বেই রুকু থেকে উঠে পড়ে। এতে তার ও তোমাদের রুকুতে অবস্থান সমানই হলো। অতঃপর সে যখন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলবে, তোমরা তখন বলবে اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ । আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রশংসা শুনবেন। কেননা তিনি তাঁর নবীর মাধ্যমে আমাদের জানিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করে আল্লাহ তার প্রশংসা শুনেন। আর যখন সে তাকবীর দেবে এবং সেজদা করবে তখন তোমরাও তাকবীর দেবে এবং সেজদা করবে।
মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪০৪; আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৯৭৩; ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং ৮৪৭; মুসনাদে আহমাদ, ৪খ, ৪১৫ পৃ; মুসনাদে বাযযার, (দ্র, নাসবুর রায়াহ, ২খ, ১৫পৃ); সহীহ আবূ আওয়ানা, ২খ, ১৩২পৃ।
ইমাম আহমদ, ইমাম মুসলিম, ইমাম ইবনে জারীর তাবারী র. প্রমুখ এ হাদীসকে সহীহ বলেছেন। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী র. ফাতহুল বারী গ্রন্থে বলেছেন, এটি সহীহ হাদীস।
৩. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- ্র إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا قَرَأَ فَأَنْصِتُوا وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَقُولُوا رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. رواه أبو داود والنسائي وابن ماجه وابن أبي شيبة من طريق أَبي خَالِدٍ عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِى صَالِحٍ عَنْه. وتابع أبا خالد محمد بن سعد الأشهلي أحد الثقات عند النسائي (٩٢٣) والدارقطني ١/٣٢٧ وتابعه أيضا محمد بن ميسر الصاغاني عند أحمد ٢/٣٧٦.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইমাম নিয়োগ করার উদ্দেশ্য তাকে অনুসরণ করা । সুতরাং সে যখন তাকবীর বলবে, তোমরাও তখন তাকবীর বলবে। আর যখন কেরাত পড়বে, তখন তোমরা নীরব থাকবে। যখন সে سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলবে, তখন তোমরা রাব্বানা লাকাল হামদ বলবে।
আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৬০৪; নাসাঈ শরীফ, হাদীস নং ৯২২-৯২৩; ইবনে মাজা শরীফ, হাদীস নং ৮৪৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৮২০; মুসনাদে আহমদ, ২খ, ৩৭৬ পৃ; দারাকুতনী, ১খ, ৩২৭পৃ।
ইমাম মুসলিম র. বলেছেন, هو عندي صحيح আমার দৃষ্টিতে এটি সহীহ। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং, হাদীস নং ৪০৪।
৪. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন,
..... أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ ্র إِذَا قَالَ الْقَارِئُ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ. فَقَالَ مَنْ خَلْفَهُ آمِينَ . فَوَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ أَهْلِ السَّمَاءِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ গ্ধ. أخرجه مسلم في باب التسميع والتأمين (٤١٠) من طريق قُتَيْبَة بْنِ سَعِيدٍ عن يَعْقُوبَ- يَعْنِى ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ - عَنْ سُهَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْه. وقريب منه ما رواه البخاري بلفظ إذا أمن القاري فأمنوا فإن الملائكة تؤمن (٦٤٠٢) وأخرجه ابن ماجه في باب الجهر بآمين من طريق سفيان عن الزهري عن سعيد بن المسيب وأبي سلمة بن عبد الرحمن عنه نحو رواية مسلم (٨٥٢)
অর্থ: কুরআন পাঠ কারী (অর্থাৎ ইমাম) যখন বলে غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ এবং যারা তার পেছনে, তারা (মুকতাদীরা) বলে আমীন, যার আমীন বলা আসমান বাসী (ফেরেশতা)দের আমীন বলার সাথে মিলে যাবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪১০।
ইমাম বুখারী র.ও স্বীয় সহীহ গ্রন্থে (বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৬৪০২) হাদীসটি এভাবে উল্লেখ করেছেন- কুরআন পাঠকারী যখন আমীন বলবে, তোমরাও তখন আমীন বলবে। কেননা ফেরেশতাগণও আমীন বলে থাকে। ইমাম ইবনে মাজা র.ও হাদীসটি মুসলিম শরীফের অনুরূপ উদ্ধৃত করেছেন। (দ্র, হাদীস নং ৮৫১-৮৫২)।
৫. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন,
.... ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال إذا قال الامام غير المغضوب عليهم ولا الضالين فقولوا آمين فانه من وافق قوله قول الملائكة غفر له ما تقدم من ذنبه. أخرجه البخاري (٧٨٢)
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইমাম যখন غير المغضوب عليهم ولا الضالين বলবে, তোমরা তখন আমীন বলো। কেননা যার আমীন বলা ফেরেশতার আমীন বলার সঙ্গে মিলে যাবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। বুখারী শরীফ, হাদীস নং৭৮২।
৬. হযরত জাবির রা. বলেছেন,
.....عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : كل من كان له إمام فقراءته له قراءة. أخرجه ابن أبي شيبة (٣٨٢٣) قال حدثنا مالك بن إسماعيل عن حسن بن صالح عن أبي الزبير عنه. وإسناده صحيح. وأخرجه عبد بن حميد في مسنده قال : ثنا أبو نعيم ثنا الحسن بن صالح عن جابر عن أبي الزبير عنه مرفوعا. قال البوصري : إسناده صحيح على شرط مسلم. وأخرجه أحمد بن منيع في مسنده قال: أنا إسحاق الأزرق نا سفيان وشريك عن موسى بن أبي عائشة عن عبد الله بن شداد عن جابر مرفوعا. قال البوصري: إسناده صحيح على شرط الشيخين. وأخرجه الإمام محمد في الموطا (صـ٩٨) عن أبي حنيفة نا أبو الحسن موسى بن أبي عائشة عن عبد الله بن شداد بن الهاد عن جابر مرفوعا. وإسناده صحيح. وأخرجه أحمد عن أسود بن عامر – وهو ثقة – عن الحسن بن صالح عن أبي الزبير عن جابر مرفوعا وهو إسناد صحيح أيضا. وأخرجه ابن ماجه كذلك وفي إسناده جابر الجعفي (٨٥٠)
অর্থ: নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির ইমাম আছে, তার ইমামের কেরাতই তার কেরাত বলে গণ্য হবে।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৮২৩। এ সনদটি সহীহ।
দ্র, মুহাম্মদ আওওয়ামা মাদ্দা যিল্লুহু এর মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বার টীকা; মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ, পৃ ৯৮; মুসনাদে আহমদ, ৩খ, ৩৩৯পৃ; (এ সনদ দুটিও সহীহ)। ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং ৮৫০। এতে জাবির জু’ফী রয়েছে।
৭. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- ্র إِذَا جِئْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ وَنَحْنُ سُجُودٌ فَاسْجُدُوا وَلاَ تَعُدُّوهَا شَيْئًا وَمَنْ أَدْرَكَ الرَّكْعَةَ فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلاَةَ গ্ধ. أخرجه أبو داود عن مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْحَكَمِ حَدَّثَهُمْ أَخْبَرَنَا نَافِعُ بْنُ يَزِيدَ حَدَّثَنِى يَحْيَى بْنُ أَبِى سُلَيْمَانَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِى الْعَتَّابِ وَابْنِ الْمَقْبُرِىِّ عنه(٨٩٣) وأخرجه نحوه عبد الرزاق عن شيخ من الأنصار . ٢/٢٨١
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমরা সেজদায় থাকাবস্থায় যদি তোমরা নামাযে শরীক হও তবে তোমরাও সেজদা করবে। সেটাকে কিছু গণ্য করবেনা। যে ব্যক্তি রুকু পেল সে নামায (অর্থাৎ ঐ রাকাত ) পেল।
আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৮৯৩; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ২/২৮১।
৮. হযরত আবূ বাকরা রা. বলেছেন,
عن أبى بكرة انه انتهى إلى النبي صلى الله عليه وسلم وهو راكع فركع قبل ان يصل إلى الصف فذكر ذلك للنبى صلى الله عليه وسلم فقال زادك الله حرصا ولا تعد. أخرجه البخاري (رقم ٧٨٣) وفي رواية البخاري في كتاب القراءة والطبراني: فقال: أيكم صاحب هذا النفس قال خشيت أن تفوتني الركعة معك.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকুতে থাকাবস্থায় তিনি এসে পৌঁছলেন। এবং কাতারে যাওয়ার পূর্বেই রুকুতে চলে গেলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তিনি ব্যাপারটি জানালে তিনি বললেন, আল্লাহ তোমার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিন। তবে এমনটি আর করো না। বুখারী শরীফ, হাদীস নং৭৮৩।
وعن زيد بن وهب قال دخلت أنا وابن مسعود المسجد والامام راكع فركعنا ثم مضينا حتى استوينا بالصف فلما فرغ الامام قمت أقضى فقال قد أدركته . قال الهيثمي في مجمع الزوائد: ورجاله ثقات .)٢/٢٨٣( وعبد الرزاق في المصنف)٢/٢٨٣(
অর্থাৎ যায়দ ইবনে ওয়াহব র. বলেন, আমি ও ইবনে মাসউদ রা. মসজিদে প্রবেশ করলাম। ইমাম তখন রুকুতে ছিলেন। আমরা রুকু করে হেঁটে হেঁটে কাতারে পৌঁছলাম। ইমাম নামায শেষ করলে আমি রাকাতটি পড়বার জন্যে দাঁড়াতে যাচ্ছিলাম। তিনি বললেন, তুমি তো রাকাত পেয়ে গেছ। হায়ছামী বলেন, এর বর্ণনাকারীরা বিশ্বস্ত। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ২খ, ২৮৩পৃ।
বুখারী শরীফের হাদীস ও সাহাবীগণের এসব ফতোয়ার প্রেক্ষিতে অধিকাংশ আলেম এই মত পোষণ করতেন যে, যে ব্যক্তি রুকু পেল সে রাকাত পেয়ে গেল।
৯. আতা ইবনে ইয়াসার র. বলেছেন,
..... أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَأَلَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ عَنِ الْقِرَاءَةِ مَعَ الإِمَامِ فَقَالَ لاَ قِرَاءَةَ مَعَ الإِمَامِ فِى شَىْءٍ . أخرجه مسلم (٥٧٧) في باب سجود التلاوة. والنسائي في باب ترك السجود في النجم. (٩٦٠)
অর্থ: তিনি ইমামের সঙ্গে কেরাত পড়া সম্পর্কে যায়দ ইবনে ছাবিত রা.কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি জবাব দিলেন, কোন নামাযেই ইমামের সঙ্গে কোন কিছু পড়বেনা। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৫৭৭।
১০. নাফে র. থেকে বর্ণিত:
.... أن عبد الله بن عمر كان إذا سئل هل يقرأ أحد خلف الإمام قال إذا صلى أحدكم خلف الإمام فحسبه قراءة الإمام وإذا صلى وحده فليقرأ قال وكان عبد الله بن عمر لا يقرأ خلف الإمام. موطا مالك صـ ٢٩
অর্থ: হযরত ইবনে উমর রা.কে যখন জিজ্ঞেস করা হতো, ইমামের পেছনে কেরাত পড়া যাবে কিনা? তিনি বলতেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পেছনে নামায পড়ে তখন ইমামের কেরাতই তার জন্যে যথেষ্ট হয়। আর যখন সে একাকী পড়ে, তখন যেন নিজেই কেরাত পড়ে। নাফে বলেন, ইবনে উমর রা. ইমামের পেছনে কেরাত পড়তেননা।(মুয়াত্তা মালিক, পৃ২৯)।
১১. হযরত আবুদ্দারাদা রা. বলেছেন,
سئل رسول الله صلى الله عليه و سلم أفي كل صلاة قراءة قال نعم قال رجل من الأنصار وجبت هذه فالتفت إلي وكنت أقرب القوم منه فقال ما أرى الإمام إذا أم القوم إلا قد كفاهم. أخرجه النسائي (٩٢٣) وأحمد ٦/٤٤٨ والدارقطني ١/٣٣٣ والطحاوي ١/١٥٨
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, প্রত্যেক নামাযেই কি কেরাত আছে? তিনি বলেলেন, হ্যাঁ। একজন আনসারী ব্যক্তি তখন বললেন, এটা তো ওয়াজিব হয়ে গেল। আমি তার সবচেয়ে কাছে ছিলাম । তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আমি মনে করি, কোন জামাতে ইমাম থাকলে সকলের পক্ষে তিনিই যথেষ্ট।
নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং৯২৩; মুসনাদে আহমদ, ৬খ, ৪৪৮ পৃ; তাহাবী শরীফ, ১খ, ১৫৮ পৃ; দারাকুতনী , ১খ, ৩৩৩পৃ।
১২. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন,
.... أن رسول الله صلى الله عليه و سلم انصرف من صلاة جهر فيها بالقراءة فقال : هل قرأ معي منكم من أحد ؟ فقال الرجل أنا يا رسول الله قال: فقال : إني أقول ما لي أنازع القرآن ؟ فانتهى الناس عن القراءة مع رسول الله صلى الله عليه و سلم فيما جهر به من الصلاة حين سمعوا ذلك. أخرجه مالك في الموطا صـ ٢٩ والترمذي (٣١٢) وقال حديث حسن و أبو داود (٨٢٦) والنسائي (٩١٩) وابن ماجه (٨٤٨-٨٤٩) وأحمد في مسنده ٢/٢٨٤
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শেষ করলেন, যে নামাযে তিনি উচ্চস্বরে কেরাত পড়েছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ কি একটু পূর্বে আমার সঙ্গে কেরাত পড়েছে? তখন একজন বললেন, হ্যাঁ, আমি পড়েছি ইয়া রাসূলুল্লাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাইতো বলছি কুরআনের সঙ্গে আমার টানাটানি হচ্ছে কেন? লোকেরা যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একথা শুনলেন, সেদিন থেকে তারা সেসব নামাযে কেরাত পড়া ছেড়ে দিলেন, যেসব নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চস্বরে কেরাত পড়তেন।
মুয়াত্তা মালিক, পৃ,২৯; তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ৩১২, তিনি এটিকে হাসান বলেছেন। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৮২৬; নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং ৯১৯; মুসনাদে আহমদ,৪খ, ২৮৪ পৃ; ইবনে মাজা শরীফ, হাদীস নং ৮৪৮,৮৪৯।
১৩. হযরত জাবির রা. থেকে বলেছেন,
من صلى ركعة لم يقرأ فيها بأم القرآن فلم يصل إلا أن يكون وراء الإمام. أخرجه الترمذي (٣١٣) وقال هذا حديث حسن صحيح ومالك في الموطا صـ ٢٨
অর্থ: যে ব্যক্তি নামাযের কোন রাকাত পড়ল, তাতে সূরা ফাতেহা পড়লনা, সে যেন নামাযই পড়লনা। তবে যদি সে ইমামের পেছনে নামায পড়ে তবে তার ব্যাপার ভিন্ন।)
তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ৩১৩; তিনি এ হাদীসকে সহীহ বলেছেন। মুয়াত্তা মালিক, পৃ ২৮।
নামাযে নি¤œস্বরে আমীন বলা সুন্নত
ইমামের আস্তে আমীন বলার দলিল:
عن وائل بن حجر قال: صلى بنا رسول الله صلى الله عليه و سلم فلما قرأ غير المغضوب عليهم ولا الضالين قال آمين وأخفى بها صوته.ورواه الترمذى رقم (২৪৮) واحمد فى المسند.رقم (১৮৮৫৪) . ورواه الحاكم فى المستدرك ) ২৯১৩)وقال:هذا حديث صحيح على شرط الشيخين و لم يخرجاه.وقال الذهبى فى التلخيص: على شرط البخاري ومسلم والطيالسى (১০২৪) والدارقطنى ১/৩৩৪ والبيهقى ২/৫৭ والطبرانى فى الكبير ২২/৪৩رقم( ১০৯،১১০،১১২)
অর্থ:ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমাদেরকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়লেন। তিনি যখন غير المغضوب عليهم ولا الضالين পড়লেন, তখন আমীন বললেন এবং আমীন বলার সময় তাঁর আওয়াযকে নিম্ন করলেন। তিরমিযী শরীফ (২৪৯); দারাকুতনী ১ম খ. ৩৩৪পৃ. বায়হাকী, খ.২ পৃ.৫৭।
এ হাদীসকে হাকেম র. সহীহ বলেছেন। যাহাবী র.ও তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছেন। ইবনে জারীর তাবারী র.ও এটিকে সহীহ বলেছেন।
২.হযরত হাসান বসরী হতে বর্ণিতÑ
قال : سكتتان حفظتهما عن رسول الله صلى الله عليه و سلم فأنكر ذلك عمران بن حصين وقال حفظنا سكنة فكتبنا إلى أبي بن كعب بالمدينة فكتب أبي أن حفظ سمرة قال سعيد قتلنا لقتادة ما هاتان السكتتان ؟ فقال إذا دخل في صلاته وإذا فرغ من القراءة ثم قال بعد ذلك وإذا قرأ ولا الضالين قال. وكان يعجبه إذا فرغ من القراءة أن يسكت حتى يتراد إليه نفسه.اخرجه الترمذى(۲۵١) واللفظ له وابوداود (۷۸۰) واحمد ৫/۲۳
অর্থাৎ হাসান বসরী র. হতে বর্ণিত। সামূরা রা. বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দুটি সাকতা (নিরবতা) স্মরণ রেখেছি। ইমরান ইবনে হুসাইন রা. এটা আস্বীকার করলেন। তিনি বললেন, আমরা তো একটি সাকতা স্মরণ রেখেছি। পরে আমরা মদীনা শরীফে উবায় ইবনে কা’ব রা. এর নিকট পত্র লিখলাম। তিনি লিখে পাঠালেন যে, সামূরা সঠিক স্মরণ রেখেছে। সাঈদ বলেন, আমরা কাতাদা র. কে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ দুটি সাকতা কোথায় কোথায় ছিল? তিনি বললেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে প্রবেশ করতেন। আর যখন কিরাআত পাঠ সমাপ্ত করতেন। এরপর কাতাদা বলেছেন, যখন ولا الضالين পাঠ শেষ করতেন। তিনি আরো বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পছন্দ ছিল, যখন তিনি কেরাত পাঠ সমাপ্ত করতেন তখন শ্বাস স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিরব থাকতেন।
তিরমিযী শরীফ (২৫১); আবূ দাউদ শরীফ (৭৮০); মুসনাদে আহমদ, (৫খ,২৩ পৃ,)।
৩.হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেনÑ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ :إِذَا قَالَ الإِمَامُ ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ ) فَقُولُوا آمِينَ فَانه مَنْ وَافَقَ قوله قول الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ .ورواه البخارى برقم -৭৮২ باب جهر المأمومين بالتأمين ومسلم )৪১০(
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলে শেষ করবে তখন তোমরা আমীন বলবে। কেননা যে ব্যক্তির আমীন বলা ফেরেশতাগণের আমীন বলার সঙ্গে মিলে যাবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। বুখারী শরীফ হাদীস নং ৭৮২; মুসলিম শরীফ হাদীস নং ৪১০
মুসলিম শরীফে আবূ মুূসা আশআরী রা. এর বর্ণিত হাদীসেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِذَا قَالَ الإِمَامُ ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ ) فَقُولُوا آمِينَ.
অর্থাৎ ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলে শেষ করবে, তোমরা তখন আমীন বলবে। (হাদীস নং- ৪০৪)।
নাসাঈ শরীফে আবূ হুরায়রা রা. বর্ণিত হাদীসটিতে সহীহ সনদে একথাও বর্ণিত আছে যেÑ
فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ تَقُولُ آمِينَ وَإِنَّ الإِمَامَ يَقُولُ آمِينَ.
অর্থাৎ কেননা ফেরেশতারাও এসময় আমীন বলে, ইমামও আমীন বলে। (হাদীস নং ৯২৭)।
৪. উমর রা. এর ফতোয়া:
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ: قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ: يُخْفِي الإِمَامُ أَرْبَعًا -: التَّعَوُّذُ، وَ بسم الله الرحمن الرحيم وَآمِينَ، وَرَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. المحلى لابن حزم ২/২৮০
অর্থ: আব্দুর রহমান ইবনে আবী লায়লা বলেন, উমর রা. বলেছেন, ইমাম চারটি বিষয় নিঃশব্দে পড়বে। আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও রাব্বানা লাকাল হামদ। (আল মুহাল্লা, ২/২৮০)।
৫. ইবনে মাসউদ রা. এর ফতোয়া:
عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالأَسْوَدِ، كِلاهُمَا عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: يُخْفِي الإِمَامُ ثَلاثًا الاسْتِعَاذَةُ، وَ بسم الله الرحمن الرحيم وَآمِينَ. . المحلى لابن حزم ২/২৮০
অর্থ: ইমাম তিনটি কথা নিঃশব্দে বলবে। আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন। (আল মুহাল্লা, ২/২৮০)।
৬. ইবরাহীম নাখায়ী র. এর ফতোয়া:
عن حماد عن إبراهيم قال أربع يخفيهن الإمام بسم الله الرحمن الرحيم والإستعاذة وآمين وإذا قال سمع الله لمن حمده قال ربنا لك الحمد. عبد الرزاق- ২৫৯৬ وابن ابى شيبة فى المصنف-برقم ৪১৫৯
অর্থ: হাম্মাদ {আবু হানীফা র. এর খাস উস্তাদ ছিলেন} র. ইবরাহীম নাখায়ী র. হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইমাম চারটি কথা নিঃশব্দে বলবে, আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও রাব্বানা লাকাল হামদ। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক (২৫৯৬); মুসান্নাফে ইবনে আবীশায়বা (৪১৫৯)।
৭. উমর রা. ও আলী রা. এর আমল:
عن أبي وائل قال كان عمر وعلي رضي الله عنهما لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ ولا بالتأمين.رواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/১৫০
অর্থ: আবূ ওয়াইল র. হতে বর্ণিত। উমর রা. ও আলী রা. বিসমিল্লাহ, আউযুবিল্লাহ ও আমীন স্বশব্দে পড়তেন না। (তাহাবী শরীফ ১/১৫০)
৮. ইবনে মাসউদ রা. এর আমল:
عن أبي وائل قال كان علي و ابن مسعود لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ ولا بآمين. رواه الطبراني في الكبير-৯৩০৪.وفي هذين الاثرين أبو سعد البقال، قال البخارى فيه مقارب الحديث كما فى علل الترمذى الكبير. وقال الهيثمى فى مجمع الزوائد২/১০৮ وهو ثقة مدلس.
অর্থ: আবূ ওয়াইল র. বলেন, আলী ও ইবনে মাসউদ র. বিসমিল্লাহ, আউযুবিল্লাহ ও আমীন স্বশব্দে পড়তেন না। তাবারানী, আল কাবীর (৯৩০৪); মুসান্নাফে ইবনে আবীশায়বা, (৪১৬০)।
৯. ইবরাহীম নাখায়ী র. এর আমল:
عن مغيرة عن ابراهيم انه كان اذا كبر سكت هنيهة ، واذا قال غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين سكت هنيهة.رواه عبد الرزاق برقم-২৮৫৮
অর্থ: মুগীরা র. বলেন, ইবরাহীম নাখায়ী র. তাকবীর দিয়ে কিছু সময় নিরব থাকতেন। আবার যখন غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين পড়তেন তখনও কিছু সময় নিরব থাকতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক (২৮৫৮)।
মোকতাদীর আস্তে আমীন বলার দলিল
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেছেনÑ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يُعَلِّمُنَا يَقُولُ لاَ تُبَادِرُوا الإِمَامَ إِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا قَالَ وَلاَ الضَّالِّينَ . فَقُولُوا آمِينَ. وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. اخرجه مسلم فى الصحيح )৪১৫(
অর্থ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শেখাতেন। তিনি বলতেন, ইমামের পূর্বে কিছু করো না। যখন ইমাম তাকবীর বলবে, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে। ইমাম যখন وَلاَ الضَّالِّينَ পড়ে শেষ করবে তখন তোমরা আমীন বলবে। ইমাম যখন রুকু করবে তোমরাও তখন রুকু করবে। আর যখন سمع الله لمن حمده বলবে, তোমরা তখন বলবে اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ । মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪১৫।
শুধু তাকবীরে তাহরীমার সময় হাত তোলা সুন্নত
একাধিক হাদীস ও অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ীর আমল একথা প্রমাণ করে যে, নামাযে শুধু প্রথম তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত তোলা সুন্নত। রুকুতে যাওয়ার সময় এবং রুকু থেকে ওঠার সময় হাত তোলা সুন্নত নয়।
১. আলকামা র. বলেন,
قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ أَلاَ أُصَلِّى بِكُمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ في أول مَرَّة. أخرجه أبو داود (٧٤٨) والترمذي (٢٥٧) والنسائي (١٠٥٨) وقال الترمذي : حديث حسن وصححه ابن حزم في المحلى ٤/٨٨ وقال أحمد شاكر في تعليقه على الترمذي : هذا الحديث صححه ابن حزم وغيره من الحفاظ وهو حديث صحيح وما قالوا في تعليقه ليس بعلة.
অর্থ: আব্দল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামাযের মত নামায পড়বনা? একথা বলে তিনি নামায পড়লেন, এবং তাতে শুধু প্রথম বারই হাত তুলেছিলেন। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭৪৮, তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৫৭, নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং ১০৫৮, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৬, মুসনাদে আহমদ, ১খ, ৩৮৮পৃ। ইমাম তিরমিযী র. এ হাদীসকে ‘হাসান’ বলেছেন,
২. হযরত বারা ইবনে আযিব রা. থেকে বর্ণিত:
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا افتتح الصلاة رفع يديه إلى قريب من أذنيه ثم لا يعود. أخرجه أبو داود (٧٥٢) وابن أبي شيبة (٢٤٥٥) والطحاوي ١/ -- وعبد الرزاق في المصنف (٢٥٣٠) والدارقطني (٢٢) فرواه عن البراء ثقتان عدي ين ثابت عند الدارقطني وعبد الرحمن بن أبي ليلى عند غيره وعنهما يزيد بن أبي زياد والحكم بن عتيبة وعيسى والحكم وعيسى ثقتان ويزيد صدوق عند البخاري ومسلم وصحح حديثه الترمذي رقم ( ) وعن يزيد ابن أبي ليلى والسفيانان وشريك و اسرائيل واسماعيل بن زكريا والإمام أبو حنيفة وغيرهم.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করার সময় কানের কাছাকাছি হাত তুলতেন। এরপর আর কোথাও হাত তুলতেননা।
আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং৭৫২, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৫, তাহাবী শরীফ, খ১।
৩. হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত:
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ترفع الأيدي في سبعة مواطن، افتتاح الصلاة واستقبال البيت والصفا والمروة والموقفين وعند الحجر، أخرجه ابن أبي شيبة (٢٤٦٥) موقوفا والطبراني (١٢٠٧٢) مرفوعا.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাতটি জায়গায় হাত তুলতে হবে। ১. নামাযের শুরুতে, ২. কাবা শরীফের সামনে আসলে, ৩. সাফা পাহাড়ে উঠলে, ৪. মারওয়া পাহাড়ে উঠলে। ৫. আরাফায় ৬. মুযাদালিফায় ৭. হাজরে আসওয়াদের সামনে।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৬৫( সাহাবীর বক্তব্যরূপে)। তাবারানী, মুজামে কাবীর(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যরূপে) নং ১২০৭২। সুনানে বায়হবাকী, ৫খ, ৭২-৭৩ পৃ। হায়ছামী র. হযরত ইবনে উমর রা. থেকেও মারফূরূপে এটি উল্লেখ করেছেন।(দ্র, ২খ, ২২২ পৃ)
৪. হযরত জাবির ইবনে সামুরা রা. থেকে বর্ণিত:
خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فَقَالَ مَا لِى أَرَاكُمْ رَافِعِى أَيْدِيكُمْ كَأَنَّهَا أَذْنَابُ خَيْلٍ شُمْسٍ اسْكُنُوا فِى الصَّلاَةِ গ্ধ. أخرجه مسلم (٤٣٠)
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এসে বললেন, ব্যাপার কি? তোমাদেরকে দেখছি বেয়াড়া ঘোড়ার লেজের মতো করে হাত ওঠাও। নামাযে স্থির থাক। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪৩০।
৫. হযরত ইবনে উমর রা. বলেছেন,
رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا أفتتح الصلاة رفع يديه حذو منكبيه وإذا أراد أن يركع وبعد ما يرفع رأسه من الركوع فلا يرفع ولابين السجدتين. أخرجه الحميدي في مسنده من طريق سفيان قال ثنا الزهري قال أخبرني سالم بن عبد الله عن أبيه. وسنده صحيح. ٢/٢٧٧ رقم ٦١٤.
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি যখন নামায শুরু করতেন তখন কাঁধ বরাবর হাত ওঠাতেন। আর যখন রুকু করতে চাইতেন এবং রুকু থেকে উঠতেন, তখন হাত ওঠাতেননা, দুই সেজদার মাঝখানেও না।
হুমায়দী (ইমাম বুখারীর উস্তাদ) তাঁর মুসনাদে এটি উদ্ধৃত করেছেন। ২খ, ২৭৭ পৃ,(হাদীস নং ৬১৪)। এর সনদ সহীহ।
৬. হযরত ইবনে উমর রা. বলেছেন,
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يرفع يديه إذا افتتح الصلاة ثم لا يعود. رواه البيهقي في الخلافيات من حديث محمد بن غالب ثنا أحمد بن محمد البرتي ثنا عبد الله بن عون الخراز ثنا مالك عن الزهري عن سالم عن ابن عمر. قال الحافظ مغلطائي: لا بأس بسنده. وقال الشيخ عابد السندي: هذا الحديث عندي صحيح لا محالة رجاله رجال الصحيح.(راجع- الإمام ابن ماجه وكتابه السنن صـ ٢٥٢) قلت: ويؤيده أيضا عمل ابن عمر على وفقه كما عند الطحاوي ١/١١٠ وابن أبي شيبة (٢٤٦٧) والبيهقي في المعرفة عن مجاهد قال: صليت خلف ابن عمر فلم يكن يرفع يديه إلا في التكبيرة الأولى من الصلاة. وأخرجه الإمام محمد في الموطا عن محمد بن أبان بن صالح عن عبد العزيز بن حكيم قال: رأيت ابن عمر يرفع يديه حذاء أذنيه في أول تكبيرة افتتاح الصلاة ولم يرفعهما فيما سوى ذلك. صـ
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায শুরু করতেন তখন রফয়ে ইয়াদাইন করতেন। এর পর আর করতেননা। (বায়হাকী, আল খিলাফিয়াত) । হাফিজ মুগলতাঈ র. বলেছেন, এর সনদে কোন সমস্যা নেই। শায়খ আবেদ সিন্ধী র. বলেছেন, আমার দৃষ্টিতে এটি অবশ্যই সহীহ। ইমাম মালিক র. থেকে ইবনুল কাসিম ও ইবনে ওয়াহব র. একবার হাত ওঠানোর যে বর্ণনা পেশ করেছেন, যা আল মুদাওয়ানা’য় বিদ্ধৃত হয়েছে, তা এই বর্ণনার সমর্থন করে। এমনিভাবে হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত পূর্বের হাদীসটি এবং তাঁর আমলও এর সমর্থক।
ইবনে আবী শায়বা র. স্বীয় মুসান্নাফে ও তাহাবী র. শরহে মাআনিল আছার গ্রন্থে মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, আমি হযরত ইবনে উমর রা. এর পেছনে নামায পড়েছি। তিনি নামাযের সূচনায় ছাড়া আর কোথাও হাত তোলেন নি। এর সনদ সহীহ। ইমাম মুহাম্মদ র.ও মুয়াত্তায় হযরত ইবনে উমর রা.এর অনুরূপ আমলের কথা উদ্ধৃত করেছেন।
৭. আসওয়াদ র. বলেছেন,
رأيت عمر بن خطاب رض يرفع يديه في أول تكبيرة ثم لا يعود. أخرجه ابن أبي شيبة (٢٤٦٩) والطحاوي ١/١١١ وصححه الزيلعي وقال الحافظ ابن حجر في الدراية : وهذا رجاله ثقات. وقال المارديني في الجوهر النقي ٢/٧٥: هذا سند صحيح على شرط مسلم.
অর্থ: আমি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা.কে দেখেছি, তিনি প্রথম তাকবীরের সময় হাত তুলতেন; পরে আর তুলতেন না।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৬৯; তাহাবী শরীফ, ১খ, ১১১পৃ।
৮. আসিম ইবনে কুলায়ব র. তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন,
عن عاصم بن كليب عن أبيه أن عليا رضـ كان يرفع يديه في أول تكبيرة من الصلاة ثم لا يرفع بعد. أخرجه ابن أبي شيبة ٢٤٥٧ والطحاوي ١/١١٠ والبيهقي ٢/٨٠ صححه الزيلعي وقال الحافظ في الدراية : رجاله كلهم ثقات وقال العيني : صحيح على شرط مسلم.
অর্থ: হযরত আলী রা. নামাযে শুধু প্রথম তাকবীরের সময় হাত তুলতেন। এরপর আর কোথাও তুলতেন না।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৭; তাহাবী শরীফ, ১খ, ১১০পৃ।
৯. ইবরাহীম নাখায়ী র. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. সম্পর্কে বর্ণনা করেন,
أنه كان يرفع يديه في أول ما يفتتح ثم لا يرفعهما . أخرجه ابن أبي شيبة (٢٤٥٨) والطحاوي ١/١١١ وعبد الرزاق ٢/٧١ وإسناده صحيح.
অর্থ: তিনি নামায শুরু করার সময় হাত তুলতেন। পরে আর কোথাও হাত তুলতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৮; তাহাবী শরীফ, ১খ, ১১১পৃ; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ২খ, ৭১পৃ। এটির সনদ সহীহ।
১০. হযরত আব্বাদ ইবনুয যুবায়র রা. থেকে বর্ণিত:
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا افتتح الصلاة رفع يديه في أول الصلاة ثم لم يرفعهما في شيئ حتى يفرغ. أخرجه البيهقي في الخلافيات. كما في نصب الراية ١/٤٠٤
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায শুরু করতেন, তখন শুধু নামাযের শুরুতেই উভয় হাত তুলতেন। এর পর নামায শেষ করা পর্যন্ত আর কোথাও হাত তুলতেননা। বায়হাকী তার ‘আল-খিলাফিয়াত’ গ্রন্থে এটি উদ্ধৃত করেছেন।
এ হাদীসটির সনদ সম্পর্কে আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী র. বলেছেন, এর বর্ণনাকারীরা সকলেই বিশ্বস্ত।
১১. আবূ ইসহাক সাবিয়ী র. বলেন,
كان أصحاب عبد الله رض وأصحاب علي رض لا يرفعون أيديهم إلا في افتتاح الصلاة. قال وكيع: ثم لا يعودون. أخرجه ابن أبي شيبة بسند صحيح جدا (٢٤٦١)
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর শাগরেদগণ এবং হযরত আলী রা. এর শাগরেদগণ কেবল মাত্র নামাযের শুরুতে হাত ওঠাতেন। ওয়াকী র. বলেন, এর পর আর হাত ওঠাতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৬১। এর সনদ অত্যন্ত সহীহ।
সেজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু, পরে হাত, তারপর চেহারা রাখা সুন্নত
১. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন Ñ
رَأَيْتُ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا سَجَدَ وَضَعَ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ وَإِذَا نَهَضَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ. رواه الأربعة وابن خزيمة وابن حبان وابن السكن وحسنه الترمذي.
অর্থ- আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি তিনি যখন সেজদায় যেতেন তখন হাত রাখার আগে হাঁটু রাখতেন। আর যখন সেজদা থেকে উঠতেন তখন হাঁটুর পূর্বে হাত উঠাতেন। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৮৩৮; তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৬৮; নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং ১০৮৯; ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং ৮৮২; ইবনে খুযায়মা, হাদীস নং
৬২৬; ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ১৯০৯ ও ইবনুস সাকান (দ্র. আছারুস সুনান,পৃ. ১৪৮) তিরমিযী বলেছেন এটি হাসান গারীব ।
২. হযরত আনাস রা. বলেন,
عن أنس رض قال: رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم انحط بالتكبير فسبقت ركبتاه يديه. رواه الدارقطني والحاكم والبيهقي وقال الحاكم: هو على شرطهما ولا أعلم له علة. وقال البيهقي : تفرد به العلاء بن إسماعيل وهو مجهول.
অর্থÑ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখলাম, তিনি তাকবীর দিয়ে সেজদায় গেলেন এবং হাত রাখার আগে হাঁটু রাখলেন । দারাকুতনী, হাকেম ও বায়হাকী । (দ্র. আছারুস সুনান, পৃ. ১৪৭)
৩. হযরত সাদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রা. বলেন,
كنا نضع اليدين قبل الركبتين فأمرنا أن نضع الركبتين قبل اليدين. أخرجه ابن خزيمة في صحيحه (٦٢٨) وفيه إبراهيم بن إسماعيل بن سلمة بن كهيل عن أبيه وهما ضعيفان.
অর্থ: আমরা হাঁটুর পূর্বে হাত রাখতাম। পরে আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হল, হাতের পূর্বে হাঁটু রাখবে। সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস নং ৬২৮।
৪. আসওয়াদ র. বলেন,
أن عمر كان يقع على ركبتيه . أخرجه ابن أبي شيبة (٢٧١٩)
অর্থ: হযরত উমর রা. হাঁটু দিয়েই সেজদায় যেতেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৭১৯।
তাহাবী র. আলকামা ও আসওয়াদ র. দুজনের সূত্রেই হযরত উমর রা. এর এই আমল উল্লেখ করেছেন। সেখানে একথাও আছে, তিনি হাত রাখার পূর্বে হাঁটু রাখতেন।
৫. নাফে র. হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণনা করেন,
كان يضع ركبتيه إذا سجد قبل يديه ويرفع يديه إذا رفع قبل ركبتيه.
أخرجه ابن أبي شيبة (٢٧٢٠)
অর্থ: তিনি যখন সেজদায় যেতেন, তখন হাত রাখার পূর্বে হাঁটু রাখতেন। আর যখন সেজদা থেকে উঠতেন তখন হাঁটুর পূর্বে হাত ওঠাতেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৭২০।
প্রথম রাকাত শেষ করে সোজা উঠে দাঁড়ানো সুন্নত
১. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেন,
كان النبي صلى الله عليه وسلم ينهض في الصلاة على صدور قدميه. أخرجه الترمذي (٢٨٨) وقال: حديث أبي هريرة عليه العمل عند أهل العلم يختارون أن ينهض الرجل في الصلاة على صدور قدميه.
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামনামাযে পায়ের উপর ভর দিয়েই উঠে পড়তেন। তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৮৮; এর একজন রাবী খালিদ ইবনে ইলয়াস যঈফ। তিরমিযী র. বলেন, এ হাদীস অনুযায়ীই আলেমগণের আমল। তারা নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়ানোই পছন্দ করতেন।
২. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেন,
....عن النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال( في المسيئ في الصلاة): إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَأَسْبِغْ الْوُضُوءَ ثُمَّ اسْتَقْبِلْ الْقِبْلَةَ فَكَبِّرْ وَاقْرَأْ بِمَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنْ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَسْتَوِيَ وَتَطْمَئِنَّ جَالِسًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَسْتَوِيَ قَائِمًا ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلَاتِكَ كُلِّهَا. أخرجه البخاري (٦٦٦٧)
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নামাযে ভুলকারী জনৈক ব্যক্তিকে) বলেছেন, তুমি যখন নামায পড়তে ইচ্ছা কর, তখন ভালভাবে ওযু করে নাও। অতঃপর কিবলামুখী হও। আল্লাহু আকবার বলো এবং কুরআনের যতটুকু তোমার জন্যে সহজ হয় পাঠ কর। অতঃপর রুকু কর এবং স্থির হয়ে রুকু কর। এরপর মাথা তোল এবং স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাক। এরপর সেজদা কর এবং সেজদায় স্থির হয়ে থাক। অতঃপর ওঠ এবং স্থির ও শান্ত হয়ে বসে পড়। এরপর আবার সেজদা কর এবং সেজদায় স্থির হয়ে থাক। অতঃপর উঠে সোজা দাাঁড়িয়ে যাও। পুরো নামাযে এভাবেই সব কাজ কর। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৬৬৬৭। এখানে দ্বিতীয় সেজদা থেকে উঠে সোজা দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে।
৩. ইকরিমা র. বলেন,
عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ شَيْخٍ بِمَكَّةَ فَكَبَّرَ ثِنْتَيْنِ وَعِشْرِينَ تَكْبِيرَةً فَقُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ إِنَّهُ أَحْمَقُ فَقَالَ ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ سُنَّةُ أَبِي الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. أخرجه البخاري (٧٨٨)
অর্থ: আমি মক্কা শরীফে এক শায়খের পেছনে নামায পড়লাম। তিনি নামাযে ২২ বার আল্লাহু আকবার বললেন। আমি হযরত ইবনে আব্বাস রা.কে বললাম, লোকটি আহমক। তিনি বললেন, তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক, এটা তো আবুল কাসেম (রাসূল) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৭৮৮।
৪. হযরত আব্বাস বা আয়্যাশ ইবনে সাহল আস-সাঈদীর বর্ণনা:
أَنَّهُ كَانَ فِى مَجْلِسٍ فِيهِ أَبُوهُ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- وَفِى الْمَجْلِسِ أَبُو هُرَيْرَةَ وَأَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِىُّ وَأَبُو أُسَيْدٍ فذكر الحديث وفيه: ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ ثُمَّ كَبَّرَ فَقَامَ وَلَمْ يَتَوَرَّكْ. أخرجه أبو داود (٩٦٦) وإسناده صحيح.
অর্থ: তিনি একটি মজলিসে ছিলেন যেখানে তার পিতাও ছিলেন। তার পিতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী ছিলেন। উক্ত মজলিসে আবূ হুরায়রা রা., আবূ হুমায়দ আসসাঈদী রা. ও আবূ উসায়দ রা.ও উপস্থিত ছিলেন। অতঃপর যে হাদীস উল্লেখ করেছেন, তাতে একথাও আছে- পরে তিনি তাকবীর বললেন এবং সেজদা করলেন। এরপর আবার তাকবীর বলে দাঁড়িয়ে গেলেন,বসেন নি। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৯৬৬। এর সনদ সহীহ।
৫. আব্দুর রহমান ইবনে গানম র. বলেন,
أن أبا مالك الأشعري جمع قومه فقال يا معشر الأشعريين اجتمعوا واجمعوا نساءكم وأبناءكم أعلمكم صلاة النبي صلى الله عليه و سلم صلى لنا بالمدينة فاجتمعوا وجمعوا نساءهم وأبناءهم فتوضأ وأراهم كيف يتوضأ فأحصى الوضوء إلى أماكنه حتى لما أن فاء الفيء وانكسر الظل قام فأذن فصف الرجال في أدنى الصف وصف الولدان خلفهم وصف النساء خلف الولدان ثم أقام الصلاة فتقدم فرفع يديه فكبر فقرأ بفاتحة الكتاب وسورة يسرهما ثم كبر فركع فقال سبحان الله وبحمده ثلاث مرار ثم قال سمع الله لمن حمده واستوى قائما ثم كبر وخر ساجدا ثم كبر فرفع رأسه ثم كبر فسجد ثم كبر فانتهض قائما فكان تكبيره في أول ركعة ست تكبيرات وكبر حين قام إلى الركعة الثانية فلما قضى صلاته أقبل إلى قومه بوجهه فقال احفظوا تكبيري وتعلموا ركوعي وسجودي فإنها صلاة رسول الله صلى الله عليه و سلم التي كان يصلي لنا كذا الساعة من النهار. أخرجه أحمد ٥/٣٤٣ (٢٣٢٩٤) قال النيموي: إسناده حسن

অর্থ: হযরত আবূ মালিক আল আশআরী রা . তার গোত্রের লোকদের একত্রিত করে বললেন, তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের নারী ও সন্তানরা একত্রিত হও। আমি তোমাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায শেখাব, যে নামায তিনি আমাদেরকে নিয়ে মদীনায় পড়েছিলেন। তারা সবাই একত্রিত হলে তিনি ওযু করলেন এবং সবাইকে তার ওযু দেখালেন। তিনি ওযুর স্থানগুলো ভাল করে ধৌত করলেন। অতঃপর যখন বেলা গড়ে গেল তখন তিনি দাঁড়িয়ে আযান দিলেন। এরপর পুরুষদেরকে তার কাছের কাতারে দাঁড় করালেন। ছেলেদেরকে তার পরের কাতারে এবং নারীদেরকে তার পরের কাতারে দাঁড় করালেন। এরপর ইকামত দিয়ে সামনে গেলেন। অতঃপর হাত তুলে আল্লাহু আকবার বললেন। পরে সূরা ফাতেহা এবং অন্য একটি সূরা নিঃশব্দে পাঠ করলেন। অতঃপর তাকবীর বলে রুকু করলেন। রুকুতে তিনবার বললেন, سبحان الله وبحمده এরপর বললেন, سمع الله لمن حمده এবং সোজা দাঁড়িয়ে রইলেন। এরপর তাকবীর বলে সেজদায় চলে গেলেন। পরে তাকবীর বলে মাথা তুললেন। এরপর পুনরায় তাকবীর বলে সেজদা করলেন। অতঃপর তাকবীর বলে সোজা দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবে প্রথম রাকাতে তার তাকবীর হলো ছয়টি। দ্বিতীয় রাকাত থেকে তিনি যখন দাঁড়ালেন, তখনও তাকবীর বললেন। নামায শেষ করে গোত্রের লোকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, আমার তাকবীর (সংখ্যা) ভালভাবে স্মরণ রাখ এবং আমার রুকু ও সেজদা শিখে নাও। কেননা দিনের এই সময়ে আমাদের নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নামায পড়েছিলেন, এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সেই নামায। (মুসনাদে আহমদ, ৫খ,৩৪৩পৃ, হাদীস নং ২৩২৯৪)।
এর সনদ হাসান। ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন, আবুন নদর (أبو النضر ) থেকে, তিনি আব্দুল হামীদ ইবনে বাহরাম আল ফাযারী থেকে, তিনি শাহর ইবনে হাওশাব থেকে, তিনি ইবনে গানম থেকে।
৬. নুমান ইবনে আবী আয়্যাশ র. বলেন,
أدركت غير واحد من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم فكان إذا رفع رأسه من السجدة في أول ركعة والثالثة قام كما هو ولم يجلس .
أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠١١) وإسناده حسن ، قاله النيموي رحمه الله.
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনেক সাহাবীকে দেখেছি, তারা ১ম ও ৩য় রাকাতে সেজদা থেকে উঠে সোজা দাঁড়িয়ে যেতেন, বসতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০১১। নীমাবী র. বলেছেন, এটির সনদ হাসান।

৭. আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াযীদ র. বলেন,
رمقت عبد الله بن مسعود رض في الصلاة فرأيته ينهض ولا يجلس قال : ينهض على صدور قدميه في الركعة الاولى والثالثة. أخرجه عبد الرزاق (٢٩٦٦-٢٩٦٧) وابن
أبي شيبة (٣٣٩٩) والطبراني في الكبير والبيهقي في السنن الكبرى (٢/١٢٥) وصححه. وقال الهيثمي في مجمع الزوائد: رجاله رجال الصحيح. (آثار السنن صـ ١٥٢)
অর্থ: আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.কে নামাযে ভালভাবে লক্ষ্য করলাম, আমি লক্ষ্য করলাম , তিনি সোজা উঠে পড়লেন, বসলেননা। তিনি আরো বলেন, তিনি ১ম ও ৩য় রাকাতে পায়ের উপর ভর দিয়েই দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ২৯৬৬,২৯৬৭। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৩৯৯,৪০০১। তাবারানী র. আলকাবীর গ্রন্থে, বায়হাকী আস সুনানুল কুবরা গ্রন্থে (২/১২৫), তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন। হায়ছামী র. ‘মাজমাউয যাওয়াইদ’ গ্রন্থে বলেছেন, এর রাবীগণ সহীহ হাদীসের রাবী। (দ্র, আছারুস সুনান,পৃ ১৫২)।
৮. আবু আতিয়্যা র. বর্ণনা করেছেন,
إن ابن عباس وابن عمر كانا يفعلان ذلك. أخرجه عبد الرزاق (٢٩٦٨)
অর্থÑ হযরত ইবনে আব¦াস রা. ও ইবনে উমর রা.ও অনুরূপ করতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীস নং ২৯৬৮।

৯. আব্দুর রায্যাক র. ইবনে জুরায়জ র. থেকে বর্ণনা করেন,
قال : أخبرني عطاء : أنه رأى معاوية إذا رفع رأسه من السجود لم يتلبث قال : ينهض وهو يكبر في نهضته للقيام. أخرجه عبد الرزاق (٢٩٦٠) وإسناده صحيح
অর্থÑ আতা র. আমাকে বলেছেন,হযরত আমি মুআবিয়া রা.কে দেখেছি, তিনি সেজদা থেকে উঠে দেরী করতেন না। তাকবীর বলেই দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীস নং ২৯৬০। এর সনদ সহীহ।
১০. ওয়াহব ইবনে কাইসান র. বলেন,
رأيت ابن الزبير إذا سجد السجدة الثانية قام كما هو على صدور قدميه .
أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٥) وإسناده صحيح.
অর্থÑ আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়র রা.কে দেখেছি, তিনি যখন দ্বিতীয় সেজদা থেকে উঠতেন তখন পায়ের উপর ভর দিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০৫। এর সনদ সহীহ।
১১. উবায়দ ইবনে আবিল-জা’দ র. বলেছেন,
كان على ينهض في الصلاة على صدور قدميه . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٠) وعن نافع كذلك (٤٠٠٧)
অর্থÑ হযরত আলী রা. নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়েই দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০০; নাফে’ থেকেও অনুরুপ বর্ণিত আছে, (দ্র. হাদীস নং ৪০০৭) ।
১২. হযরত ইবনে উমর রা. সম্পর্কে খায়ছামা র. বলেন,
ينهض في الصلاة على صدور قدميه . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٢)
অর্থÑ আমি তাঁকে নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়ে উঠে পড়তে দেখেছি। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০২।
১৩. শা’বী র. বর্ণনা করেন,
أن عمر وعليا وأصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم كانوا ينهضون في الصلاة على صدور أقدامهم . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٤)
অর্থÑ হযরত উমর রা. আলী রা. ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়েই উঠে পড়তেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০৪।
১৪. ইমাম যুহরী র. বলেন,
كان أشياخنا لا يمايلون يعني إذا رفع أحدهم رأسه من السجدة الثانية في الركعة الاولى والثالثة ينهض كما هو ولم يجلس . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٩)
অর্থÑ আমাদের উস্তাদগণ যখন ১ম ও ৩য় রাকাতে ২য় সেজদা থেকে উঠতেন তখন তাঁরা সোজা দাঁড়িয়ে যেতেন, বসতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০৯।
প্রথম রাকাত শেষ করে সোজা উঠে দাঁড়ানো সুন্নত
১. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেন,
كان النبي صلى الله عليه وسلم ينهض في الصلاة على صدور قدميه. أخرجه الترمذي (٢٨٨) وقال: حديث أبي هريرة عليه العمل عند أهل العلم يختارون أن ينهض الرجل في الصلاة على صدور قدميه.
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামনামাযে পায়ের উপর ভর দিয়েই উঠে পড়তেন। তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৮৮; এর একজন রাবী খালিদ ইবনে ইলয়াস যঈফ। তিরমিযী র. বলেন, এ হাদীস অনুযায়ীই আলেমগণের আমল। তারা নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়ানোই পছন্দ করতেন।
২. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেন,
....عن النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال( في المسيئ في الصلاة): إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَأَسْبِغْ الْوُضُوءَ ثُمَّ اسْتَقْبِلْ الْقِبْلَةَ فَكَبِّرْ وَاقْرَأْ بِمَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنْ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَسْتَوِيَ وَتَطْمَئِنَّ جَالِسًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَسْتَوِيَ قَائِمًا ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلَاتِكَ كُلِّهَا. أخرجه البخاري (٦٦٦٧)
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নামাযে ভুলকারী জনৈক ব্যক্তিকে) বলেছেন, তুমি যখন নামায পড়তে ইচ্ছা কর, তখন ভালভাবে ওযু করে নাও। অতঃপর কিবলামুখী হও। আল্লাহু আকবার বলো এবং কুরআনের যতটুকু তোমার জন্যে সহজ হয় পাঠ কর। অতঃপর রুকু কর এবং স্থির হয়ে রুকু কর। এরপর মাথা তোল এবং স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাক। এরপর সেজদা কর এবং সেজদায় স্থির হয়ে থাক। অতঃপর ওঠ এবং স্থির ও শান্ত হয়ে বসে পড়। এরপর আবার সেজদা কর এবং সেজদায় স্থির হয়ে থাক। অতঃপর উঠে সোজা দাাঁড়িয়ে যাও। পুরো নামাযে এভাবেই সব কাজ কর। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৬৬৬৭। এখানে দ্বিতীয় সেজদা থেকে উঠে সোজা দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে।
৩. ইকরিমা র. বলেন,
عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ شَيْخٍ بِمَكَّةَ فَكَبَّرَ ثِنْتَيْنِ وَعِشْرِينَ تَكْبِيرَةً فَقُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ إِنَّهُ أَحْمَقُ فَقَالَ ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ سُنَّةُ أَبِي الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. أخرجه البخاري (٧٨٨)
অর্থ: আমি মক্কা শরীফে এক শায়খের পেছনে নামায পড়লাম। তিনি নামাযে ২২ বার আল্লাহু আকবার বললেন। আমি হযরত ইবনে আব্বাস রা.কে বললাম, লোকটি আহমক। তিনি বললেন, তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক, এটা তো আবুল কাসেম (রাসূল) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৭৮৮।
৪. হযরত আব্বাস রা. বা আয়্যাশ ইবনে সাহল আস-সাঈদীর বর্ণনা:
أَنَّهُ كَانَ فِى مَجْلِسٍ فِيهِ أَبُوهُ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- وَفِى الْمَجْلِسِ أَبُو هُرَيْرَةَ وَأَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِىُّ وَأَبُو أُسَيْدٍ فذكر الحديث وفيه: ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ ثُمَّ كَبَّرَ فَقَامَ وَلَمْ يَتَوَرَّكْ. أخرجه أبو داود (٩٦٦) وإسناده صحيح.
অর্থ: তিনি একটি মজলিসে ছিলেন যেখানে তার পিতাও ছিলেন। তার পিতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী ছিলেন। উক্ত মজলিসে আবূ হুরায়রা রা., আবূ হুমায়দ আসসাঈদী রা. ও আবূ উসায়দ রা.ও উপস্থিত ছিলেন। অতঃপর যে হাদীস উল্লেখ করেছেন, তাতে একথাও আছে- পরে তিনি তাকবীর বললেন এবং সেজদা করলেন। এরপর আবার তাকবীর বলে দাঁড়িয়ে গেলেন,বসেন নি। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৯৬৬। এর সনদ সহীহ।
৫. আব্দুর রহমান ইবনে গানম র. বলেন,
أن أبا مالك الأشعري جمع قومه فقال يا معشر الأشعريين اجتمعوا واجمعوا نساءكم وأبناءكم أعلمكم صلاة النبي صلى الله عليه و سلم صلى لنا بالمدينة فاجتمعوا وجمعوا نساءهم وأبناءهم فتوضأ وأراهم كيف يتوضأ فأحصى الوضوء إلى أماكنه حتى لما أن فاء الفيء وانكسر الظل قام فأذن فصف الرجال في أدنى الصف وصف الولدان خلفهم وصف النساء خلف الولدان ثم أقام الصلاة فتقدم فرفع يديه فكبر فقرأ بفاتحة الكتاب وسورة يسرهما ثم كبر فركع فقال سبحان الله وبحمده ثلاث مرار ثم قال سمع الله لمن حمده واستوى قائما ثم كبر وخر ساجدا ثم كبر فرفع رأسه ثم كبر فسجد ثم كبر فانتهض قائما فكان تكبيره في أول ركعة ست تكبيرات وكبر حين قام إلى الركعة الثانية فلما قضى صلاته أقبل إلى قومه بوجهه فقال احفظوا تكبيري وتعلموا ركوعي وسجودي فإنها صلاة رسول الله صلى الله عليه و سلم التي كان يصلي لنا كذا الساعة من النهار. أخرجه أحمد ٥/٣٤٣ (٢٣٢٩٤) قال النيموي: إسناده حسن
অর্থ: হযরত আবূ মালিক আল আশআরী রা . তার গোত্রের লোকদের একত্রিত করে বললেন, তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের নারী ও সন্তানরা একত্রিত হও। আমি তোমাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায শেখাব, যে নামায তিনি আমাদেরকে নিয়ে মদীনায় পড়েছিলেন। তারা সবাই একত্রিত হলে তিনি ওযু করলেন এবং সবাইকে তার ওযু দেখালেন। তিনি ওযুর স্থানগুলো ভাল করে ধৌত করলেন। অতঃপর যখন বেলা গড়ে গেল তখন তিনি দাঁড়িয়ে আযান দিলেন। এরপর পুরুষদেরকে তার কাছের কাতারে দাঁড় করালেন। ছেলেদেরকে তার পরের কাতারে এবং নারীদেরকে তার পরের কাতারে দাঁড় করালেন। এরপর ইকামত দিয়ে সামনে গেলেন। অতঃপর হাত তুলে আল্লাহু আকবার বললেন। পরে সূরা ফাতেহা এবং অন্য একটি সূরা নিঃশব্দে পাঠ করলেন। অতঃপর তাকবীর বলে রুকু করলেন। রুকুতে তিনবার বললেন, سبحان الله وبحمده এরপর বললেন, سمع الله لمن حمده এবং সোজা দাঁড়িয়ে রইলেন। এরপর তাকবীর বলে সেজদায় চলে গেলেন। পরে তাকবীর বলে মাথা তুললেন। এরপর পুনরায় তাকবীর বলে সেজদা করলেন। অতঃপর তাকবীর বলে সোজা দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবে প্রথম রাকাতে তার তাকবীর হলো ছয়টি। দ্বিতীয় রাকাত থেকে তিনি যখন দাঁড়ালেন, তখনও তাকবীর বললেন। নামায শেষ করে গোত্রের লোকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, আমার তাকবীর (সংখ্যা) ভালভাবে স্মরণ রাখ এবং আমার রুকু ও সেজদা শিখে নাও। কেননা দিনের এই সময়ে আমাদের নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নামায পড়েছিলেন, এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সেই নামায। (মুসনাদে আহমদ, ৫খ,৩৪৩পৃ, হাদীস নং ২৩২৯৪)। এর সনদ হাসান।
৬. নুমান ইবনে আবী আয়্যাশ র. বলেন,
أدركت غير واحد من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم فكان إذا رفع رأسه من السجدة في أول ركعة والثالثة قام كما هو ولم يجلس .
أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠١١) وإسناده حسن ، قاله النيموي رحمه الله.
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনেক সাহাবীকে দেখেছি, তারা ১ম ও ৩য় রাকাতে সেজদা থেকে উঠে সোজা দাঁড়িয়ে যেতেন, বসতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০১১। নীমাবী র. বলেছেন, এটির সনদ হাসান।
৭. আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াযীদ র. বলেন,
رمقت عبد الله بن مسعود رض في الصلاة فرأيته ينهض ولا يجلس قال : ينهض على صدور قدميه في الركعة الاولى والثالثة. أخرجه عبد الرزاق (٢٩٦٦-٢٩٦٧) وابن أبي شيبة (٣٣٩٩) والطبراني في الكبير والبيهقي في السنن الكبرى (٢/١٢٥) وصححه. وقال الهيثمي في مجمع الزوائد: رجاله رجال الصحيح. (آثار السنن صـ ١٥٢)
অর্থ: আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.কে নামাযে ভালভাবে লক্ষ্য করলাম, আমি লক্ষ্য করলাম , তিনি সোজা উঠে পড়লেন, বসলেননা। তিনি আরো বলেন, তিনি ১ম ও ৩য় রাকাতে পায়ের উপর ভর দিয়েই দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ২৯৬৬,২৯৬৭। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৩৯৯,৪০০১। তাবারানী র. আলকাবীর গ্রন্থে, বায়হাকী আস সুনানুল কুবরা গ্রন্থে (২/১২৫), তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন। হায়ছামী র. ‘মাজমাউয যাওয়াইদ’ গ্রন্থে বলেছেন, এর রাবীগণ সহীহ হাদীসের রাবী। (দ্র, আছারুস সুনান,পৃ ১৫২)।
৮. আবু আতিয়্যা র. বর্ণনা করেছেন,
ابن عباس وابن عمر كانا يفعلان ذلك. أخرجه عبد الرزاق (٢٩٦٨)
অর্থÑ হযরত ইবনে আব¦াস রা. ও ইবনে উমর রা.ও অনুরূপ করতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীস নং ২৯৬৮।
৯. আব্দুর রায্যাক র. ইবনে জুরায়জ র. থেকে বর্ণনা করেন,
قال : أخبرني عطاء : أنه رأى معاوية إذا رفع رأسه من السجود لم يتلبث قال : ينهض وهو يكبر في نهضته للقيام. أخرجه عبد الرزاق (٢٩٦٠) وإسناده صحيح
অর্থÑ আতা র. আমাকে বলেছেন,হযরত আমি মুআবিয়া রা.কে দেখেছি, তিনি সেজদা থেকে উঠে দেরী করতেন না। তাকবীর বলেই দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীস নং ২৯৬০। এর সনদ সহীহ।
১০. ওয়াহব ইবনে কাইসান র. বলেন,
رأيت ابن الزبير إذا سجد السجدة الثانية قام كما هو على صدور قدميه .
أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٥) وإسناده صحيح.
অর্থÑ আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়র রা.কে দেখেছি, তিনি যখন দ্বিতীয় সেজদা থেকে উঠতেন তখন পায়ের উপর ভর দিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০৫। এর সনদ সহীহ।
১১. উবায়দ ইবনে আবিল-জা’দ র. বলেছেন,
كان على ينهض في الصلاة على صدور قدميه . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٠) وعن نافع كذلك (٤٠٠٧)
অর্থÑ হযরত আলী রা. নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়েই দাঁড়িয়ে যেতেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০০; নাফে’ থেকেও অনুরুপ বর্ণিত আছে, (দ্র. হাদীস নং ৪০০৭) ।
১২. হযরত ইবনে উমর রা. সম্পর্কে খায়ছামা র. বলেন,
ينهض في الصلاة على صدور قدميه . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٢)
অর্থÑ আমি তাঁকে নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়ে উঠে পড়তে দেখেছি। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০২।
১৩. শা’বী র. বর্ণনা করেন,
أن عمر وعليا وأصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم كانوا ينهضون في الصلاة على صدور أقدامهم . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٤)
অর্থÑ হযরত উমর রা. আলী রা. ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ নামাযে পায়ের উপর ভর দিয়েই উঠে পড়তেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০৪।
১৪. ইমাম যুহরী র. বলেন,
كان أشياخنا لا يمايلون يعني إذا رفع أحدهم رأسه من السجدة الثانية في الركعة الاولى والثالثة ينهض كما هو ولم يجلس . أخرجه ابن أبي شيبة (٤٠٠٩)
অর্থÑ আমাদের উস্তাদগণ যখন ১ম ও ৩য় রাকাতে ২য় সেজদা থেকে উঠতেন তখন তাঁরা সোজা দাঁড়িয়ে যেতেন, বসতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৪০০৯।




নামাযে ১ম ও শেষ বৈঠকে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসা ও ডান পা খাড়া রাখা সুন্নত
১: হযরত আয়েশা রা. বলেন,
كَانَ) رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم-( يَقُولُ فِى كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى. أخرجه مسلم في باب صفة الصلاة( ٤٩٨) وابن أبي شيبة، (٢٩٤٣)
অর্থ: তিনি ( রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক দুই রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়তেন। এবং বাম পা বিছিয়ে দিতেন ও ডান পা খাড়া রাখতেন। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪৯৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৯৪৩।
২: হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন,
قدمت المدينة قلت لأنظرن إلى صلاة رسول الله صلى الله عليه سولم فلما جلس يعني للتشهد افترش رجله اليسرى ووضع يده اليسرى يعني على فخذه اليسرى ونصب رجله اليمنى. أخرجه الترمذي(٢٩٢ )وقال حسن صحيح وابن أبي شيبة، (٢٩٤٢).
অর্থ: আমি মদীনা শরীফে আসলাম, আর (মনে মনে) বললাম, আমি অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর নামায দেখবো। (তিনি বলেন), যখন তিনি বৈঠক করলেন, অর্থাৎ তাশাহহুদের জন্যে তখন তার বাম পা বিছিয়ে দিলেন, আর ডান পা খাড়া রাখলেন। তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৯২; তিনি বলেছেন, এটি হাসান সহীহ। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৯৪২।
৩ : হযরত ইবনে উমর রা. বলেছেন,
إنما سنة الصلاة أن ينصب رجلك اليمنى وتثنى اليسرى. أخرجه البخاري(٨٢٧)والنسائي(١١٥٧-١١٥٨) ومالك في الموطا --- وابن أبي شيبة (٢٩٤٤).
অর্থ: নামাযে সুন্নত হলো ডান পা খাড়া রাখবে এবং বাম পা বিছিয়ে দেবে। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৮২৭; নাসাঈ শরীফ, হাদীস নং ১১৫৭,১১৫৮; মুয়াত্তা মালিক, ----; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৯৪৪।
বিত্র নামায পড়ার তরীকা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কর্ম ও নির্দেশনা এবং তাঁর একনিষ্ঠ অনুসারী খোলাফায়ে রাশেদীন ,অধিকাংশ সাহাবা-তাবেয়ীনের বর্ণনা ও আমল থেকে প্রমাণিত বিত্র নামায নি¤œরূপ:
ক.তিন রাকাত।
খ.দ্বিতীয় রাকাত শেষে প্রথম বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়ে তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠে যাবে। সালাম ফেরাবে তিন রাকাত পূর্ণ করে।
গ. বিত্র নামায মাগরিবের নামাযেরই অনুরূপ। অর্থাৎ দুই বৈঠক ও এক সালামে তিন রাকাত। তবে পার্থক্য হল বিত্র নামাযের তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহা পাঠ করার পর সূরা মেলাবে, যা মাগরিবের নামাযে নেই।
ঘ.তৃতীয় রাকাতে সূরা মিলানোর পর তাকবীর বলে দোয়ায়ে কুনূত পড়বে। নি¤েœ হাদীস ও আছার থেকে কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করা হল:
ক. বিত্র নামায তিন রাকাত:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাত বিত্র পড়তেনÑ
১.হযরত আবু সালামা র. থেকে বর্ণিতÑ
أنه سأل عائشة رضي الله عنها كيف كانت صلاة رسول الله صلى الله عليه و سلم في رمضان ؟ فقالت ما كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يزيد في رمضان ولا في غيره على إحدى عشرة ركعة يصلي أربعا فلا تسئل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي أربعا فلا تسئل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي ثلاثا . قالت عائشة فقلت يارسول الله أتنام قبل أن توتر ؟ فقال: يا عائشة إن عيني تنامان ولا ينام قلبي رواه البخارى برقم ১১৪৭ ومسلم برقم ৭৩৪ ومحمد فى الحجة على اهل المدينة ১/১৩৩ وقال أبو عمر ابن عبد البر أيضا فى الاستذكار২/১০০ في معنى قوله في حديث هذا الباب: أربعا ثم أربعا ثم ثلاثا وجه رابع وهو أنه كان ينام بعد الأربع ثم ينام بعد الأربع ثم يقوم فيوتر بثلاث.
তিনি হযরত আয়েশা রা. কে জিজ্ঞেস করেন যে, রমযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায কেমন হত? তিনি উত্তরে বলেনÑ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে এবং রমযানের বাইরে এগার রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করোনা! এরপর আরও চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে প্রশ্ন করোনা! এরপর তিন রাকাত (বিত্র) পড়তেন। সহীহ বুখারী হা.১১৪৭ সহীহ মুসলিম হা.৭৩৪
২.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবী কাইস বলেনÑ
قلت لعائشة رضي الله عنها: بكم كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يوتر ؟ قالت كان يوتر بأربع وثلاث وست وثلاث وثمان وثلاث وعشر وثلاث ولم يكن يوتر بأنقص من سبع ولا بأكثر من ثلاث عشرة.رواه ابوداود فى السنن برقم- ১৩৫৭ واحمد فى المسند برقم ২৫১৫৯ وقال شعيب: إسناده صحيح على شرط مسلم. والطحاوى فى شرح معانى الآثار১/২০১ وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২৪১ اسناده صحيح.
আমি হযরত আয়েশা রা. এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম যে,নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিত্রে কত রাকাত পড়তেন? উত্তরে বলেনÑ চার ও তিন, ছয় ও তিন, আট ও তিন এবং দশ ও তিন। তিনি বিত্রে সাত রাকাতের কম এবং তের রাকাতের অধিক পড়তেন না। সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৩ হা.১৩৫৭ তহাবী শরীফ ১/২০১ মুসনাদে আহমদ ৬/১৪৯ হা.২৫১৫৯
এ হাদীসে রাতের পুরো নামাযকেই বিত্র শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। আর সর্বাবস্থায় তিন রাকাত আলাদা ভাবে পড়ার কথা উল্লেখিত হয়েছে, এটিই বিত্র।
৩.হযরত সা‘দ ইবনে হিশাম র.বর্ণনা করেনÑ
عن عائشة ان رسول الله صلى الله عليه و سلم كان إذا صلى العشاء دخل المنزل ثم صلى ركعتين ثم صلى بعدهما ركعتين أطول منهما ثم أوتر بثلاث لا يفصل فيهن.ثم صلى ركعتين وهو جالس يركع وهو جالس ويسجد وهو قاعد جالس. رواه احمد فى المسند برقم ۲٥۱۰۱ ورجاله ثقات رجال الشيخين ما خلا محمد راشد وهم ثقة، كذا قال شعيب الارنووط فى تحقيق المسند.
হযরত আয়েশা রা.বলেনÑ ইশার নামায শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করতেন। তারপর দুই রাকাত নাময পড়তেন। অতঃপর আরও দুই রাকাত পড়তেন, যা পূর্ব থেকে দীর্ঘ হত। তার পর তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন, তাতে মাঝে অর্থাৎ দুই রাকাত শেষে সালাম ফেরাতেন না। মুসনাদে আহমদ-৬/১৫০-১৫১ হা.২৫১০১
৪.হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেনÑ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّى مِنَ اللَّيْلِ ثَمَانِ رَكَعَاتٍ وَيُوتِرُ بِثَلاَثٍ وَيُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْفَجْرِ .رواه النسائى فى السنن ১/২৪৯ برقم ১৭০৭ والطحاوى ১/২০২ وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২৫২ على شرط مسلم.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে আট রাকাত নামায পড়তেন। অতপর তিন রাকাত বিত্র পড়তেন এবং ফজরের নামাযের পূর্বে আরো দুই রাকাত নামায আদায় করতেন। সুনানে নাসায়ী ১/২৪৯ হা.১৭০৭ তহাবী ১/২০২ নুখাবুল আফকার ৩/২৫১
৫.হযরত শাবী র. বলেনÑ
سألت عبد الله بن عباس وعبد الله بن عمر عن صلاة رسول الله صلى الله عليه و سلم بالليل . فقالا ثلاث عشرة ركعة ، منها ثمان، ويوتر بثلاث، وركعتين بعد الفجر.رواه ابن ماجة فى السنن برقم ১৩৬১ وابن نصر فى صلاة الوتر كما فى مختصرالمقريزى- ২৬০ والطحاوى فى شرح معانى الآثار১/১৯৭:وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২১১ :اسناد صحيح على شرط الشيخين.
আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. কে জিজ্ঞেস করেছিÑ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাতের নামায কেমন ছিল? তাঁরা উভয়ে বলেন: (তিনি রাতে) মোট তের রাকাত (নামায) পড়তেন। প্রথমে আট রাকাত পড়তেন। অতঃপর তিন রাকাত বিত্র পড়তেন। আর ফজরের ওয়াক্ত হয়ে গেলে দুই রাকাত (ফজরের সুন্নত) আদায় করতেন। সুনানে ইবনে মাযাহ হা.১৩৬১ তহাবী ১/১৯৭ এর সনদ সহীহ, নুখাবুল আফকার ৩/২১১ সালাতুল বিত্র পৃ.২৬০
৬.মুহাম্মদ ইবনে আলী তাঁর পিতা থেকে, এবং তিনি তাঁর দাদা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেনÑ
عن رسول الله صلى الله عليه وسلم : أَنَّهُ قَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَاسْتَنَّ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ نَامَ ثُمَّ قَامَ فَاسْتَنَّ ثُمَّ تَوَضَّأَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى صَلَّى سِتًّا ثُمَّ أَوْتَرَ بِثَلاَثٍ وَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ .رواه النسائى فى السنن برقم- ১৭০৪ واحمد فى المسند برقم-৩২৭১ وقال شعيب : إسناده قوي على شرط مسلم. والطحاوى فى شرح معانى الاثار ১/২০১-২০২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে শয্যা থেকে উঠলেন। এরপর মিসওয়াক করলেন, অযু করলেন এবং দুই রাকাত নামায পড়লেন; এভাবে দুই-দুই করে ছয় রাকাত পূর্ণ করলেন। এরপর তিন রাকাত বিত্র পড়লেন। এবং সবশেষে আরও দুই রাকাত নামায পড়লেন। সুনানে নাসায়ী ১/২৪৯ হা.১৭০৪ মুসনাদে আহমদ ১/৩৫০ হা.৩২৭১ তহাবী শরীফ ১/২০১-২০২
সহীহ মুসলিম শরীফের বর্ণনায়Ñ
ثم فعل ذلك ثلاث مرات ست ركعات كل ذلك يستاك ويتوضأ ويقرأ هؤلاء الآيات ثم أوتر بثلاث.
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে তিন বারে ছয় রাকাত নামায আদায় করলেন। প্রতি বারই মিসওয়াক ও অযু করেছেন এবং উপরিউক্ত আয়াতগুলো পড়েছেন। সবশেষে তিন রাকাত বিত্র পড়েছেন। সহীহ মুসলিম ১/২৬১ হা.৭৬৩ সহীহ আবু আওয়ানা ২/৩২১
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাত বিত্র পড়তেন এবং তিন রাকাতে তিনটি নির্দিষ্ট সূরা তিলাওয়াত করতেন:
১. আব্দুল আযীয ইবনে জুরাইজ বলেনÑ
سألت عائشة رضي الله عنها بأي شيء كان يوتر رسول الله صلى الله عليه وسلم؟ قال يقرأ في الأولى بسبح اسم ربك الأعلى، وفي الثانية بقل يا ايها الكافرون وفي الثالثة بقل هو الله احد والمعوذتين. رواه الترمذى فى السنن১/৬১ برقم-৪৬৩ وقال :هذا حديث حسن صحيح.(احمد شاكر) وابوداود ১/২০১ وابن ماجة صـ ৭৩ واحمد فى المسندبرقم-২৫৯৪৮ والخوارزمى فى جامع المسانيد১/৪০৭-৪০৮ . وقال الحافظ ابن حجر فى نتائج الافكار فى تخريج الاذكار১/৩৫৫:هذا حديث حسن.
আমি আয়েশা রা.কে জিজ্ঞেস করেছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিত্র নামাযে কী কী সূরা পাঠ করতেন? উম্মুল মু’মিনীন বলেছেন, তিনি প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ ও ‘মুআওয়াযাতাইন’ (ফালাক ও নাস) পড়তেন। সুনানে তিরমিযী ১/৬১ সুনানে আবু দাউদ ১/২০১ সুনানে ইবনে মাযাহ পৃ.৭৩ মুসনাদে আহমদ ৬/২২৭ জামেউল মাসানীদ ১/৪০৭-৪০৮
২.হযরত ‘আমরা বিনতে আব্দুর রহমান উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণনা করেনÑ
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يوتر بثلاث. يقرأ في الركعة الأولى بسبح اسم ربك الأعلى، وفي الثانية قل يا ايها الكافرون وفي الثالثة قل هو الله احد وقل اعوذ برب الفلق وقل اعوذ برب الناس. رواه الحاكم فى المستدرك ১/৩০৫ برقم-১১৪৪ وقال: هذا حديث صحيح على شرط الشيخين ولم يخرجاه. وقال الذهبي فى التلخيص: رواه الثقات عنه، وهو على شرط البخارى ومسلم. ورواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/২০১.وقال الذهبى فى تنقيح التحقيق ১/৩২৮- تصحيحا للحديث وردا على ابن الجوزى :هذا تعنت فان يحى بن ايوب من رجال الصحيحين. وقال الحافظ ابن حجر فى نتائج الافكار فى تخريج احاديث الأذكار১/৩৫৬: هذا حديث حسن. وقال فى التلخيص২/১১০: قَالَ الْعُقَيْلِيُّ : إسْنَادُهُ صَالِحٌ . وقال العينى فى نخب الافكار :اسناده صحيح.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিত্র নামায তিন রাকাত পড়তেন। প্রথম রাকাতে সূরা আ‘লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন ও তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়তেন। আলমুসতাদরাক ১/৩০৫ তহাবী ১/২০১ হাদীসটি সহীহÑ আত্তানকীহ লিয যাহাবী ১/৩২৮ নাতাইযুল আফকার ফি তাখরীজিল আযকার লি ইবনে হাজার ১/৩৫৬
৩.হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. বলেনÑ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ كَانَ يُوتِرُ بِثَلاَثِ رَكَعَاتٍ كَانَ يَقْرَأُ فِى الأُولَى بِـ سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى وَفِى الثَّانِيَةِبـ قُلْ يَا أَيُّهَاالْكَافِرُونَ وَفِى الثَّالِثَةِ بِـ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَيَقْنُتُ قَبْلَ الرُّكُوعِ. رواه النسائى فى السنن১/১৯১ برقم-১৬৯৯والطحاوى فى شرح مشكل الآثار ১১/৩৬৮ وقال شعيب:اسناده صحيح. وابن ماجة برقم-১১৮২ وابوعلى ابن السكن فى الصحيح كما ذكره الحافظ فى التلخيص ২/১৮ وقال ابن القطان فى الوهم والايهام : صححه ابومحمد عبدالحق ووافقه فيه ابن القطان أيضا. وقال العينى فى العمدة ৭/১৯:اسناده صحيح.وقال الألبانى فى ارواء الغليل ২/১৬৭: قلت : وهذا سند جيد رجاله كلهم ثقات رجال الشيخين غير علي بن ميمون وهو ثقة كما في " التقريب ". وقد تابعه فطر بن خليفة عند الدارقطني ( ১৭৫ ) ومسعر بن كدام عند البيهقي ( ২ / ৪০ ) كلاهما عن زبيد به . قلت : فصح بذلك الإسناد . وله إسناد آخر عن سعيد بن عبد الرحمن الخ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। প্রথম রাকাতে সূরা আ‘লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন, তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পড়তেন। এবং রুকুর পূর্বে দুআ কুনূত পড়তেন । সুনানে নাসায়ী ১/১৯১ হা.১৬৯৯ মুশকিলুল আছার ১১/৩৬৮ হাদীসটি সহীহ, আলওয়াহামু ওয়াল ইহাম ৩/৩৮৩ আলবানী সাহেবও এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেনÑ ইরওয়াউল গালীল ২/১৬৭
৪.সায়ীদ ইবরে জুবাইর রা. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.থেকে বর্ণনা করেনÑ
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يوتر بثلاث يقرأ في الأولى سبح اسم ربك الأعلى وفي الثانية قل يا ايها الكافرون وفي الثالثة قل هو الله احد.رواه النسائى فى السنن ১/২৪৯ برقم-১৪২৭ والترمذى ১/৬১ برقم-৪৬২ والدارمى برقم-১৫৮৯ وابن ابى شيبة ৪/৫৫২ برقم-৬৯৫১ واحمد فى المسند ১/২৯৯ .قال الشيخ محمود سعيد ممدوح فى "التعريف باوهام من قسم السنن الى صحيح وضعيف" ৪/৪৩৯ :اسناده صحيح كما قال الامام النووى وغيره. وقال ايضا ৪/৪৪৪ :صحيح الاسناد رجاله حفاظ ثقات.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিত্র নামায তিন রাকাত পড়তেন। প্রথম রাকাতে সূরা আ‘লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পড়তেন। সুনানে নাসায়ী১/২৪৯ হা.১৪২৭ সুনানে তিরমিযী ১/৬১ হা.৪৬২ সুনানে দারিমী হা.১৫৮৯ ইবনে আবি শাইবা ৪/৫১২ হা.৬৯৫১ মুসনাদে আহমদ১/২৯৯-৩০০
ইমাম নববী ও অন্যান্যরা বলেছেনÑ এ হাদীস সহীহÑ আত্তা‘রীফ, মাহমূদ সায়ীদ মামদূহ-৪/৪৪৪
৫.হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আব্যা রা.বর্ণনা করেনÑ
أنه صلى مع النبي صلى الله عليه و سلم الوتر فقرأ في الأولى ب سبح اسم ربك الأعلى وفي الثانية قل يا أيها الكافرون وفي الثالثة قل هو الله أحد فلما فرغ قال سبحان الملك القدوس ثلاثا يمد صوته بالثالثة.رواه النسائى فى السنن برقم- ১৭৩৩.والطحاوى فى شرح معانى الآثار১/২০৫ وابن ابى شيبة برقم- ৬৯৪৩ والخوارزمى فى جامع المسانيد ১/৪১৪ واحمد برقم-১৫৩৯০ وقال شعيب: إسناده صحيح على شرط الشيخين. وقال الحافظ فى التلخيص ২/১১১ : وَحَدِيثُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبْزَى : رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالنَّسَائِيُّ وَإِسْنَادُهُ حَسَنٌ .وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২৭১ :رجاله ثقات. وقال الشيخ محمد عوامة :اسناد المصنف (ابن ابى شيبة) صحيح.
যে, তিনি একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের সাথে বিত্র পড়েছেন। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পড়েছেন। তহাবী ১/২০৫ ইবনে আবীশাইবা ৪/৫১০ হা.৬৯৪৪ কিতাবুল আছার-১/৩২৬ জামেউল মাসানীদ ১/৪১৪
ইবনে হাজার আসকালানী র. আত্তালখীছুল হাবীতে বলেনاسناده حسن এই সনদ হাসান তথা নির্ভরযোগ্য।
এছাড়াও বিত্র নামাযে তিন রাকাতে তিন সূরা পড়ার হাদীস বর্ণিত হয়েছে:
৬.হযরত আলী রা. (তিরমিযী ১/৬১ তহাবী ১/২০৬ আব্দুর রাযযাক ৩/৩৪)
৭.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আউফা রা. (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১ কাশফুল আসতার ১/৩৫৪)
৮.হযরত ইবনে মাসউদ রা. (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১ কাশফুল আসতার ১/৩৫৪ আলমাতালিবুল আলীয়া ৩/৩৫)
৯.হযরত নু’মান ইবনে বাশীর রা. মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১
১০.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১ কাশফুল আসতার ১/৩৫৫)
১১.হযরত আবু হুরায়রা রা. (মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৫০৬)
১২.হযরত মুয়াবিয়া ইবনে খাদিজ রা. (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১)
১৩.হযরত আবু উমামা রা. (মুসনাদে আহমদÑ মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৫০৬)
১৪.হযরত আনাস রা. (আলআহাদীসুল মুখতারাহ হা.১৮১৯ ইতহাফুল মাহারাহ হা.৬৬২ ছালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী পৃ.২৭৯)
১৫.হযরত আবু সায়ীদ খুদ্রী রা. (কাশফুল আসতার হা.৬৯১)
১৬.হযরত যাম্রাতা ইবনে আবি যামরা রা. (আল মুদাওয়ানাতুল কুবরা ১/১৫১)
১৭.হযরত আবুজর গিফারী রা. (আলফাওয়াইদুল মুয়াল্লালাহ লি আবি যুরআ আদদিমাশকী হা.২৬ {মাখতূত})
১৮.হযরত সামূরা ইবনে হাবীব রা. (মু‘জামুস সাহাবা লি ইবনে কানে, হা.৬৬৮)

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পর সাহাবা-তাবেয়ীগণও তিন রাকাত বিত্র পড়তেন। নি¤েœ কিছু আছার তুলে ধরা হলÑ
১.হযরত উমর রা. বলেনÑ

ما احب انى تركت الوتر بِثَلاَثٍ وان لى حمر النعم. رواه ابو حنيفة فى كتاب الآثار ومحمد فى الموطأ صـ ১৪৯ وفى كتاب الحجة على اهل المدينة ১/১৩৫.وذكره الخوارزمى فى جامع المسانيد ১/৪১৭.
আমি তিন রাকাতে বিত্র পড়া ছাড়তে কখনোই পছন্দ করি না, যদিও এর বিপরীতে আমাকে লাল উট উপহার দেওয়া হয়। কিতাবুল আছার Ñজামেউল মাসানীদ ১/৪১৭ মুয়াত্তা মুহাম্মদ পৃ.১৪৯
২.হযরত যাযান র. বলেনÑ
أَنَّ عَلِيًّا كَانَ يُوتِرُ بِثَلاَثٍ.رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم- ৬৯১৪ وعبد الرزاق فى المصنف ৩/৩৪
হযরত আলী রা. তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯১ হা.৬৯১৪
৩.হযরত আব্দুল মালিক ইবনে উমাইর র. বলেনÑ
كَانَ ابْنُ مَسْعُودٍ يُوتِرُ بِثَلاَثٍ.رواه ابن ابى شيبة برقم- ৬৮৯৪ والطبرانى فى الكبير كما فى مجمع الزوائد ২/৫০৩
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯১ হা.৬৮৯৪
৪.হযরত ছাইব ইবনে ইয়াযীদ র. বলেনÑ
أن أبي بن كعب كان يوتر بثلاث.رواه عبد الرزاق برقم-৪৬৬১
হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। মুসাননাফে আব্দুররাযযাক ৩/২৬ হা.৪৬৬১
৫.হযরত সায়ীদ ইবনে জুবাইর বলেনÑ
لما أمر عمر بن الخطاب أبي بن كعب أن يقوم بالناس في رمضان ، كان يوتر بهم فيقرأ في الركعة الأولى : إنا أنزلناه في ليلة القدر وفي الثانية : قل يا أيها الكافرون وفي الثالثة : قل هو الله أحد .رواه ابن نصر المروزى فى صلاة الوتر ص. ২৭৯
হযরত উমর রা. যখন হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. কে রমযানে (তারাবীহ ও বিত্র এর) ইমামতির আদেশ করলেন, তখন তিনি বিত্র নামাযের প্রথম রাকাতে সূরা কাদর, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন ও তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ। সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযীÑপৃ.২৭৯
৬.হযরত হুমাইদ র. বলেনÑ
عن أنس رضي الله عنه قال الوتر ثلاث ركعات وكان يوتر بثلاث ركعات.رواه ابن ابى شيبة برقم-৬৮৯৩ والطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/২০২ وابن نصر فى صلاة الوتر صـ ২৭০ وقال الحافظ فى الدراية : اسناده صحيح.وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২৮১ اخرجه من طريقين صحيحين.
হযরত আনাস রা. বলেছেনÑবিত্র নামায তিন রাকাত। এবং তিনি নিজেও তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯১ হা.৬৮৯৩ তহাবী ১/২০২ সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযীÑপৃ.২৬৪
এর সনদ সহীহÑ আদদিরায়াহ, নুখাবুল আফকার ৩/২৮১
৭.হযরত আবু গালিব র. বলেনÑ
كَانَ أَبُو أُمَامَةَ يُوتِرُ بِثَلاَثِ رَكَعَاتٍ. رواه ابن ابى شيبة برقم- ৬৮৯৬ والطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/২০২
হযরত আবু উমামা রা.তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। ইবনে আবী শাইবা ৪/ ৪৯১হা.৬৮৯৬
৮.হযরত আবু মানসূর বলেনÑ
قال : سألت عبد الله بن عباس رضي الله عنهما عن الوتر فقال ثلاث. رواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/২০৩
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. কে জিজ্ঞেস করেছিÑবিত্র কত রাকাত ? তিনি বললেনÑতিন রাকাত। তহাবী ১/২০৩
১.হযরত সা‘দ ইবনে হিশাম বলেনÑ
عن عائشة قالت : كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يوتر بثلاث لا يسلم إلا في آخرهن . و هذا وتر أمير المؤمنين عمر بن الخطاب رضي الله عنه و عنه أخذه أهل المدينة. رواه الحاكم فى المستدرك ১/৩০৪ والنسائى فى السنن ১/২২৮ وابن ابى شيبة برقم-৬৯১৩ ومحمد فى كتاب الحجة فى اهل المدينة ১/১৩৭ والطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/১৯৩ وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২১৪:صحيح على شرط الشيخين. وقال محمود سعيد فى التعريف ৪/৪৪০:الحديث صحيح حجة لا تفرد فيه ولا شذوذ .وقال النووي في " المجموع "৪ / ১৭ :حديث عائشة أن رسول الله ( صلى الله عليه وسلم ) كان لا يسلم في ركعتي الوتر . رواه النسائي بإسناد حسن ورواه البيهقي في السنن الكبير بإسناد صحيح.وقال الكشميرى :سند الحديث فى غاية القوة.
وقال الذهبى فى التنقيح১/৩২৬: بعد هذالحديث- قلنا يجوز هذا ان يوتر بثلاث بسلام واحد ، لكن يتشهد بيهم كاالمغرب. وكذا قال ابن حزم الظاهرى فى "المحلى" ২/৮৯.
হযরত আয়েশা রা. বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু তিন রাকাত বিত্র পড়তেন এবং শুধু শেষ রাকাতে সালাম ফেরাতেন।
হাকেম এই বর্ণনা উল্লেখ করার পর বলেনÑআমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রা.ও বিত্র এভাবে পড়তেন এবং তার কাছ থেকেই মদীনাবাসী এ আমল গ্রহণ করেছে।
আলমুসতাদরাক ১/৩০৪ হা.১১৮১ নাসায়ী ১/২২৮ হা.১৬৯৮ ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯৩-৪৯৪ হা.৬৯১৩ কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মদীনা ১/১৩৭
হাদীস সহীহÑনুখাবুল আফকার ৩/২১৪ ও আত্তা‘রীফ ৪/৪৪০
২.হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. বলেনÑ
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يوتر بثلاث ركعات لا يسلم فيهن حتى ينصرف . أول ركعة بـ " سبح اسم ربك الأعلى " والثانية بـ " قل يا أيها الكافرون " والثالثة بـ " قل هو الله أحد " وأنه قنت قبل الركوع فلما انصرف من صلاته قال سبحان الملك القدوس مرتين يرفع صوته ويجهر بالثالثة.رواه الطحاوى فى مشكل الآثار ১১/৩৬৮ قال شعيب : اسناده صحيح. والنسائى فى السنن برقم ১৭০১ وقد سبق تخريجه.
তিন রাকাত বিত্র পড়তেন। শেষ রাকাতেই কেবল সালাম ফেরাতেন। প্রথম রাকাতে সূরা আ‘লা পড়তেন। দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সুরা ইখলাছ পড়তেন। তিনি (তৃতীয় রাকাতে) রুকুর পূর্বে দুআয়ে কুনূত পড়েছেন। নামায শেষে দুই বার ‘সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুস সামান্য আওয়াজে পড়েছেন; তৃতীয় বারে সজোরে পড়েছেন। শরহু মুশকিলিল আছার ১১/৩৬৮ হা.৪৫০১ সহীহÑশুয়াইব আরনাউত। সুনানে নাসায়ী হা.১৭০১
৩.হযরত ছাবেত আল বুনানী র. বলেনÑ
قال أنس يا أبا محمد خذ عني فإني أحدث عن رسول الله صلى الله عليه وسلم وأخذ رسول الله صلى الله عليه وسلم عن ربه ولن تأخذ عن أحد أوثق مني قال ثم صلى بي العشاء ثم صلى ست ركعات يسلم بين الركعتين ثم أوتر بثلاث يسلم في آخرهن.رواه ابن عساكر فى "التاريخ"৯/৩৬৩ فى ترجمة انس بن مالك رض. وروى الترمذى نفس هذا الحديث مقتصرا على بعض متنه بهذالاسناد فى مناقب انس برقم-৩৮৩১ وقال هذا حديث حسن غريب لا نعرفه إلا من حديث زيد بن حباب . قال الكشميرى :سنده قوى.كما فى معارف السنن ৪/২০৯.
হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. আমাকে বলেছেন, হে আবু মুহাম্মাদ! (ছাবেত এর উপনাম) আমার কাছ থেকে শিখে নাও। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে গ্রহণ করেছি। আর তিনি আল্লাহ তাআলা থেকে গ্রহণ করেছেন। তুমি শেখার জন্য আমার থেকে অধিক নির্ভরযোগ্য অন্য কাউকে পাবে না। অতঃপর তিনি আমাকে নিয়ে ইশার নামায পড়লেন। এর পর ছয় রাকাত নামায পড়লেন এবং এর প্রতি দুই রাকাতে সালাম ফেরান। তারপর তিন রাকাতে বিত্র পড়লেন এবং সবশেষে সালাম ফেরান। তারীখে ইবনে আসাকির ৯/৩৬৩ আনাস ইবনে মালেক অধ্যায়। সুনানে তিরমিযী হা.৩৮৩১ (আংশিক)
হাদীসের সনদ শক্তিশালী, মা‘আরিফুস সুনান ৪/২০৯
৪.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেনÑ
أرسلت أمي ليلة لتبيت عند النبي صلى الله عليه وسلم فتنظر كيف يوتر فباتت عند النبي فصلى ما شاء الله أن يصلي حتى إذا كان آخر الليل وأراد الوتر قرأ: بسبح اسم ربك الأعلى " في الركعة الأولى وقرأ في الثانية: " قل يا أيها الكافرون " ثم قعد، ثم قام ولم يفصل بينهما بالسلام ثم قرأ بــ " قل هو الله أحد الله الصمد لم يلد ولم يولد ولم يكن له كفواً أحد " حتى إذا فرغ كبر ثم قنت فدعا بما شاء الله أن يدعو ثم كبر وركع . ذكره بهذا اللفظ ابن عبد البر فى الاستيعاب৪/১৯৪৬ وذكره الحافظ ابن حجر فى الاصابة ৭/২৫৬ وقال . رواه ابن ابى شيبة فى المصنف باختصار৪/৫২১ وكذا فى مسنده كما فى المطالب العالية ৩/৩৭ و الدارقطنى فى السنن ২/৩২ والبيهقى الكبرى ৩/৪১ والحافظ طلحة بن محمد فى مسند ابى حنيفة كما فى جامع المسانيد ১/৩১৮ ،وقال فى جامع المسانيد: قال الحافظ (لعله الخوارزمى) اسناده حسن. وفى كلها روى يزيد ابن هارون و الامام ابو حنيفة والامام سفيان الثورى و حفص بن سليمانل هؤلاء الايمة عن ابان ابن ابى عياش به.
وابان مختلف فيه-فقال الطحاوى فى مشكل الاثار۱۱-٣٦٥: وإن كان إنما دار على أبان بن أبي عياش فإنه قد احتمله غير واحد من أهل الأسانيد ، وأدخلوه في هذا الباب إذا كان عن غير أنس بن مالك ، فأدخلناه نحن أيضا فيه لذلك . وقال ابن عدى فى الكامل১/৩৮১:ارجو انه ممن لايتعمد الكذب ،الا انه يشبه اليه ويغلط . وعامة ما اتى به ابان من جهة الرواة لا من جهته.لانه روى عنه قوم مجهولون انتهى. وتكلم شعبةُ على ابان ،ثم هو لم يصبر على أن روى عنه حديث القنوت هذا.وذكر ابن عدى ان يزيد بن هارون قال لشعبة –اتقول فى ابان ما قلت وتحدث عنه؟!
و مع ذلك تابعه الامامُ الاعمش عند البيهقى فى الخلافيات كما فى الجوهر النقى ৩/৪২(مع السنن) وتابعه ايضا يزيد بن هارون كما ذكره الحافط فى الاصابة ৮/২৫৬ سكت عليه بل صنيعه فيه - يدل على ان لهذا الاسناد مكانا عنده .
আমার মাকে পাঠালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের (স্ত্রীদের) নিকট রাত্রি যাপন করে তাঁর বিত্র নামায প্রত্যক্ষ করার জন্য। তিনি একদিন থাকলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে রাতে নামায পড়লেন, যতটুকু আল্লাহর ইচ্ছা হয়েছে। অতঃপর শেষ রাতে যখন বিত্র পড়তে দাঁড়ালেন, প্রথম রাকাতে সূরা আ‘লা এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন পড়লেন। এরপর প্রথম বৈঠক করলেন এবং সালামের মাধ্যমে নামায পৃথক না করেই তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন। এতে সূরা ইখলাছ পড়ে শেষে তাকবীর বলে দূয়ায়ে কুনূত পড়লেন। তার পর তাকবির দিয়ে রুকুতে গেলেন। আল ইসতিআব ৪/১৯৪৬ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৪/৫২১ সুনানে দারা কুতনী ২/৩২ সুনানে বাইহাকী ৩/৪১
হাদীসটি হাসান তথা আমল যোগ্যÑ জামেউল মাসানীদ ১/৩১৮
৬. হযরত আয়েশা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সকল নামাযের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেনÑ
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ –صلى الله عليه وسلم- يَسْتَفْتِحُ الصَّلاَةَ بِالتَّكْبِيرِ وَالْقِرَاءَةَ بِ (الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) وَكَانَ إِذَا رَكَعَ لَمْ يشْخصْ رَأْسَهُ وَلَمْ يُصَوِّبْهُ وَلِكَنْ بَيْنَ ذَلِكَ وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِىَ قَائِمًا وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِىَ جَالِسًا وَكَانَ يَقُولُ فِى كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ ... رواه مسلم فى الصحيح برقم-১১৩৮
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করতেন তাকবীর দিয়ে এবং কেরাত শুরু করতেন আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন দিয়ে। রুকুতে মাথা উপরেও উঠাতেন না আবার নিচেও নামাতেন না। বরং মাঝামাঝি অবস্থায় রাখতেন। রুকু থেকে সোজা হয়ে না দাড়িয়ে সেজদায় যেতেন না। এক সেজদা থেকে উঠে সোজা হয়ে না বসে আরেক সেজদায় যেতেন না। আর তিনি বলতেনÑ নামাযের প্রতি দুই রাকাতেই একবার করে বৈঠক করবে। ....... সহীহ মুসলিম হা.১১৩৮ , সহীহ মুসলিমÑ১৭৩৯
সাহাবা-তাবেয়ীনও একই নিয়মে বিত্র পড়তেন। এখানে কয়েকটি বর্ণনা তুলে ধরা হলÑ
১.হযরত মাকহুল র. বলেনÑ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ؛ أَنَّهُ أَوْتَرَ بِثَلاَثِ رَكَعَاتٍ ، لَمْ يَفْصِلْ بَيْنَهُنَّ بِسَلاَمٍ. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم- ৬৯০১
হযরত উমর রা. তিন রাকাতে বিত্র পড়লেন। এবং দ্বিতীয় রাকাতে সালাম ফেরাননি। ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯২ হা.৬৯০১
২.হযরত মিস্ওয়ার ইবনে মাখরামা রা. বলেনÑ
دفنا أبا بكر ليلا فقال عمر انى لم أوتر فقام وصففنا وراءه فصلى بنا ثلاث ركعات لم يسلم الا في آخرهن. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৮৯১ والطحاوى ১/২০৬ وعبد الرزاق ৩/২০ وابن نصر المروزى فى صلاة الوتر صـ ২৭০
আমরা রাতের বেলা হযরত আবু বকর রা. এর দাফন সম্পন্ন করলাম। তখন হযরত উমর রা. বলেনÑআমি বিত্র পড়িনি। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন । আমরাও তাঁর পিছনে কাতার বাঁধলাম। তিনি তিন রাকাত নামায পড়লেন এবং সবশেষে সালাম ফিরালেন। তহাবী ১/২০৬ ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯১ হা.৬৮৯১ মুসান্নাফে আব্দুররায্যাক ৩/২০ সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী পৃ.২৭০
৩.হযরত হাবীব আল মুআল্লিাম বলেনÑ
قيل للحسن أن ابن عمر كان يسلم في الركعتين من الوتر فقال : كان عمر أفقه منه كان ينهض في الثالثة بالتكبير.رواه الحاكم فى المستدرك برقم- ১১৪১ والبيهقى فى الكبرى برقم-৫০০৩. وابن نصر فى صلاة الوتر صـ ২৭০. رجاله ثقات ما خلا شيخ الحاكم -احمد بن محمد السمرقندى ، وهو ثقة. لانه قد روى عنه الحاكم فى مواضع من صحيحه وصحح له برقم-১১৩৭ ووافقه فيه الذهبى فى التلخيص.ووصفه الحاكم –بـ"الحافظ" فى اسناد عند البيهقى فى شعب الايمان برقم-১০০৩৭. فهو ايضا ثقة. وذكره الحافظ فى فتح البارى ۲/٥٥۸ وسكت عليه، بل رضيه وبين معناه.
হাসান বসরী রা. কে জিজ্ঞেস করা হলÑ আব্দুুল্লাহ ইবনে উমর রা. বিত্রের দুই রাকতের পর সালাম ফিরিয়ে তৃতীয় রাকাত পৃথক পড়েন? তিনি বলেনÑ খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর রা. তাঁর থেকে বেশী প্রজ্ঞাবান ছিলেন, তিনি (দ্বিতীয় রাকাতে স্বাভাবিক নিয়মে বৈঠক শেষে সালাম না ফিরিয়ে) তাকবীর বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যেতেন। আলমুসতাদরাক হা.১১৪১ সুনানে কুবরাÑবাইহাকী হা.৫০০৩ সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী পৃ.২৭০
হাদীসের সনদ সহীহ ।
৪.হযরত ছাবেত র. বলেনÑ
صلى بي أنس رضي الله عنه الوتر- أنا عن يمينه وأم ولده خلفنا - ثلاث ركعات لم يسلم الا في آخرهن ، ظننت أنه يريد أن يعلمنى. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৯১০ والطحاوى ১/২০৬
হযরত আনাস রা. আমাকে নিয়ে বিত্র পড়লেন। আমি তাঁর ডান পাশে দাঁড়ালাম এবং তাঁর (বাদী) উম্মে ওয়ালাদ আমাদের পিছনে দাঁড়াল। তিনি তিন রাকাত নামায পড়লেন এবং তিন রাকাত পূর্ণ করেই সালাম ফিরালেন। আমি বুঝতে পারলাম, তিনি আমাকে (বিত্র নামাযের তরীকা) শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এটি করেছেন। তহাবী ১/২০৬ ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯৩ হা.৬৯১০
৫.হযরত হসান বসরী র. বলেনÑ
كان أبي بن كعب يوتر بثلاث لا يسلم إلا في الثالثة مثل المغرب.رواه عبد الرزاق برقم- ৪৬৫৯ وابن نصرصـ ২৭০. رجاله ثقات.
হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. মাগরিবের নামাযের মতই তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। এবং সালাম ফিরাতেন তৃতীয় রাকাত পূর্ণ করে। মুসান্নাফে আব্দুররায্যাক ৩/২৬ হা.৪৬৩৯ সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী পৃ.১২২
এর বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য।
৬.হযরত আবু ইসহাক বলেনÑ
كَانَ أَصْحَابُ عَلِيٍّ ، وَأَصْحَابُ عَبْدِ اللهِ لاَ يُسَلِّمُونَ فِي رَكْعَتَيَ الْوِتْرِ. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৯১১ وابن نصر صـ ২৭০.اسناده صحيح.
হযরত আলী ও হযরত ইবনে মাসউদ রা. এর শাগরেদগণ বিত্রের দ্বিতীয় রাকাতে সালাম ফিরাতেন না। ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯৩ হা.৬৯১১ সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী পৃ.২৭১
৭.হযরত হিশাম র. বলেনÑ
عَنْ مَكْحُولٍ ؛ أَنَّهُ كَانَ يُوتِرُ بِثَلاَثٍ ، لاَ يُسَلِّمُ إِلاَّ فِي آخِرِهِنَّ. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৯০৬
হযরত মাকহুল র. তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। সালাম ফিরাতেন তিন রাকাত পূর্ণ করেই। ইবনু আবী শাইবা ৪/৪৯৩ হা.৬৯০৬
৬.হযরত হাম্মাদ র. বলেনÑ
نَهَانِي إِبْرَاهِيمُ أَنْ أُسَلِّمَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِنَ الْوِتْرِ. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৯০৮ . واسناده صحيح.
ফকীহ তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী র. বিত্রের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফিরাতে নিষেধ করেছেন। ইবনু আবী শাইবা ৪/৪৯৩ হা.৬৯০৮
৭.হযরত কাতাদাহ র. বলেনÑ
عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، قَالَ : لاَ يُسَلَّمُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِنَ الْوِتْرِ. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم- ৬৯০৭ واسناده صحيح.
হযরত সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়িব বলেনÑবিত্র নামাযের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফিরানো যাবে না। ইবনু আবী শাইবা ৪/৪৯৩ হা.৬৯০৭
৮. হযরত আবুয যিনাদ র. বলেনÑ
عَنْ السَّبْعَةِ ، سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ ، وَعُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ ، وَالْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، وَأَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، وَخَارِجَةَ بْنِ زَيْدٍ ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، وَسُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ ، فِي مَشْيَخَةٍ سِوَاهُمْ أَهْلِ فِقْهٍ وَصَلَاحٍ وَفَضْلٍ وَرُبَّمَا اخْتَلَفُوا فِي الشَّيْءِ فَأَخَذَ بِقَوْلِ أَكْثَرِهِمْ وَأَفْضَلِهِمْ رَأْيًا .فَكَانَ مِمَّا وَعَيْتُ عَنْهُمْ عَلَى هَذِهِ الصِّفَةِ أَنَّ الْوِتْرَ ثَلَاثٌ لَا يُسَلِّمُ إلَّا فِي آخِرِهِنَّ فَهَذَا مَنْ ذَكَرْنَا مِنْ فُقَهَاءِ الْمَدِينَةِ وَعُلَمَائِهِمْ قَدْ أَجْمَعُوا أَنَّ الْوِتْرَ ثَلَاثٌ لَا يُسَلِّمُ إلَّا فِي آخِرِهِنَّ.رواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/২০৭ وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২৮৯ :رجاله ثقات. وقال النيموى فى آثار السنن صـ ২০৪ والبنورى فى معارف السنن ৪/২২৭ وابوابوفا الافغانى فى التعليق على كتاب الآثار ১/৩২২: اسناده حسن.
আমি মদীনার সাত ফকীহ, অর্থাৎ সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়্যিব, কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ, উরওয়া ইবনে যুবাইর , আবু বকর ইবনে আব্দুররহমান, খারিজা ইবনে যায়েদ, উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ও সুলায়মান ইবনে ইয়াসারÑ এর যুগ পেয়েছি। তাছাড়া আরো অনেক শায়খের যামানা পেয়েছি, যারা ইলম ও তাকওয়ায় অনন্য ছিলেন। কখনো তাদের মধ্যে মতভেদ হলে তাদের অধিকাংশের মত অনুযায়ী কিংবা প্রাজ্ঞতার বিচারে যিনি অগ্রগণ্য তার সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা হত। এই মূলনীতি অনুসারে তাদের যে সব সিদ্ধান্ত আমি ধারণ করেছি তন্মধ্যে একটি হচ্ছেÑ তাঁরা সকলে একমত হয়েছেন, বিত্র নামায তিন রাকাত; আর শেষ রাকাতেই কেবল সালাম ফিরাবে। তহাবী ২/২০৭
৯.হযরত সুফইয়ান ছাউরী র. তাঁর অনুসরণীয় পূর্বসূরী মহা মনীষীদের বিত্র নামাযের বিবরণে বলেনÑ
كانوا يستحبون أن يقرأ ، في الركعة الأولى : سبح اسم ربك الأعلى وفي الثانية : قل يا أيها الكافرون ثم يتشهد ، وينهض ، ثم يقرأ في الثالثة : قل هو الله أحد . رواه ابن نصر فى صلاة الوتر ص. ২৭৯ وقال الحافظ فى نتائج الافكار ২/১১৪ و ২/৫০৩ :اخرج محمد بن نصر بسند صحيح عن سفيان الثورى به.
তাঁরা তিন রাকাত বিত্রের প্রথম রাকাতে সূরা আ‘লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন পড়তেন। তারপর বসে তাশাহহুদ পড়ে আবার উঠে দাঁড়াতেন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পড়তেন। সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী পৃ. ২৭৯

১.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেনÑ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وِتْرُ اللَّيْلِ ثَلاَثٌ كَوِتْرِ النَّهَارِ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ رواه الدارقطنى فى السنن برقم- ১৬৭২.
ضعف بعضهم يحى بن زكريا ولم يصب. قال الحافط فى اللسان: يحيى بن زكريا ابن ابى الحواجب عن الاعمش. قال الدارقطني ضعيف، قلت : يحتمل ان يكون الذي قبله انتهى. وذكره ابن حبان في الثقات . فالاسناد حسن.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনÑ দিনের বিত্রÑ মাগরিবের মত রাতের বিত্রও তিন রাকাত। দারাকুতনী হা.১৬৭২
এর সনদ হাসানÑ আমীন ছফদর, মজমুআ রাসায়েল ৩/৫৪
২.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেনÑ
عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : صلاة المغرب وتر النهار فأوتروا صلاة الليل .. رواه احمد فى المسند برقم- ৪৮৪৭ وقال شعيب:رجاله ثقات، رجال الشيخين وابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৭৭৩ وعبد الرزاق برقم-৪৬৭৫
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনÑ দিনের বিত্র হল মাগরিবের নামায। তোমরা রাতের নামাযকেও অনুরূপ বিত্র করে পড়। মুসনাদে আহমদ হা.৪৮৪৭ ইবনে আবীশাইবা ৪/৪ হা.৬৭৭৩,৬৭৭৮ আব্দুররাযযাক হা.৪৬৭৫
এর সনদ সহীহ, শোয়াইব আরনাউত।
৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.বলেনÑ
الْوِتْرُ ثَلاَثٌ ، كَصَلاَةِ الْمَغْرِبِ وِتْرُ النَّهَارِ.رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৭৭৯ وقال فى مجمع الزوائد -৩৪৫৫ : رواه الطبراني في الكبير ورجاله رجال الصحيح.
দিনের বিত্রÑ মাগরিবের মত রাতের বিত্রও তিন রাকাত। ইবনে আবী শাইবা ৪/ হা.৬৭৭৯ আল মু‘জামুল কাবীর হা.৯৪২১-৯৪২২ সনদ সহীহ, মাযমাউয যাওয়ায়েদÑ হা.৩৪৫৫
৪.হযরত উকবা ইবনে মুসলিম বলেনÑ
سَأَلْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنْ الْوِتْرِ فَقَالَ : أَتَعْرِفُ وِتْرَ النَّهَارِ ؟ قُلْتُ : نَعَمْ ، صَلَاةُ الْمَغْرِبِ قَالَ : صَدَقْتَ أَوْ أَحْسَنْتَ .رواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/১৯৭ واسناده صحيح.
আমি আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. কে জিজ্ঞেস করলামÑবিত্র নামায সম্পর্কে। তিনি বললেনÑ তুমি দিনের বিত্র দেখনি? বললাম হাঁ, মাগরিবের নামায। বলেন, ঠিক বলেছ। (রাতের বিত্রও তার মতই)। তহাবী ২/১৯৭ সুনানে কুবরা হা.৪৯৮৫
৫.হযরত হাসান বসরী র. বলেনÑ
كان أبي بن كعب يوتر بثلاث لا يسلم إلا في الثالثة مثل المغرب.رواه عبد الرزاق برقم- ৪৬৫৯ ،৪৬৬০
হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. (যাকে উমর রা. তারাবীহ ও বিত্রের ইমাম নিযুক্ত করেছিলেন) তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন এবং তাতে মাগরিবের মতই তৃতীয় রাকাতে সালাম ফিরাতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক হা.৪৬৫৯-৪৬৬০
এর সনদ সহীহ।
৬.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেনÑ
الوتر كصلاة المغرب. رواه محمد فى المطأ ص.১৫০ وفى كتاب الحجة على اهل المدينة.১/১৩৬
বিত্র নামায মাগরিবেরই অনুরূপ। মুয়াত্তা মুহাম্মদ পৃ.১৫০ কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মদীনাহ ১/১৩৬
৭.হযরত ছাবেত আল বুনানী র.বলেনÑ
صليت مع أنس وبت عنده قال : فرأيته يصلى مثنى مثنى ، حتى إذا كان في آخر صلاته أوتربثلات مثل المغرب رواه عبد الرزاق برقم-৪৬৩৬ وابن نصرفى صلاة الوتر صـ ২৭০
আমি হযরত আনাস রা. এর ঘরে রাত্রি যাপন করেছি এবং তাঁর সাথে নামায পড়েছি। তাঁকে দেখেছি রাতে দুই দুই রাকাত করে নামায পড়েছেন এবং সব শেষে মাগরিবের নামাযের মত তিন রাকাত বিত্র পড়লেন। মুসান্নাফে আব্দুররাযযাক হা.৪৬৩৬ সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী- পৃ. ১২৩
৮.হযরত যিয়াদ ইবনে আবী মুসলিম র.বলেনÑ
سَأَلْتُ أَبَا الْعَالِيَةَ ، وَخِلاَسًا عَنِ الْوِتْرِ ؟ فَقَالاَ : اَصْنَع فِيهِ كَمَا تَصْنَعُ فِي الْمَغْرِبِ. رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৯০৯
আমি প্রসিদ্ধ তাবেয়ী আবুল আলীয়া ও খিলাস র.কে জিজ্ঞেস করলামÑবিত্র নামায কিভাবে পড়ব ? তাঁরা উভয়ে বললেনÑ মাগরিবের নামাযে যা যা কর বিত্র নামাযেও তাই করবে। ইবনে আবী শাইবা হা.৬৯০৯ ৯.হযরত আবু খাল্দা তাবেয়ী আবুল আলীয়াকে বিত্র নামাযের তরীকা জিজ্ঞেস করলেন। তিনি উত্তরে বললেনÑ
عَلَّمَنَا أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْ عَلَّمُونَا أَنَّ الْوِتْرَ مِثْلُ صَلَاةِ الْمَغْرِبِ ، غَيْرَ أَنَّا نَقْرَأُ فِي الثَّالِثَةِ ، فَهَذَا وِتْرُ اللَّيْلِ ، وَهَذَا وِتْرُ النَّهَارِ .رواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/২০৬ وقال العينى فى نخب الافكار ৩/২৭৯ رجاله ثقات. قال البنورى فى معارف السنن ৪/২২১ والافعانى فى تعليق الآثار ১/৩২৩: اسناده صحيح. واخرجه ابن نصر فى صلاة الوتر صـ ২৭৯
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেনÑ বিত্র নামায মাগরিবের নামাযের মতই; কেবল পার্থক্য হল আমরা বিত্রের তৃতীয় রাকাতে কেরাত পড়ি (যা মাগরিবে নেই)। এটি রাতের বিত্র, আর মাগরিব হল দিনের বিত্র। তহাবী ১/২০৬ সালাতুল বিত্র লিল মারওয়াযী পৃ.২৭৯ । এর বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্যÑ নুখাবুল আফকার ৩/২৭৯
ঘ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তৃতীয় রাকাতে কেরাত সমাপ্ত করার পর রুকু করার পূর্বে দুআয়ে কুনূত পড়তেন:
১.হযরত আসিম আহ্ওয়াল বলেনÑ
سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ الْقُنُوتِ فِي الصَّلَاةِ فَقَالَ نَعَمْ فَقُلْتُ كَانَ قَبْلَ الرُّكُوعِ أَوْ بَعْدَهُ قَالَ قَبْلَهُ قُلْتُ فَإِنَّ فُلَانًا أَخْبَرَنِي عَنْك أَنَّكَ قُلْتَ بَعْدَهُ قَالَ كَذَبَ إِنَّمَا قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ شَهْرًا أَنَّهُ كَانَ بَعَثَ نَاسًا يُقَالُ لَهُمْ الْقُرَّاءُ وَهُمْ سَبْعُونَ رَجُلًا إِلَى نَاسٍ مِنْ الْمُشْرِكِينَ وَبَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَهْدٌ قِبَلَهُمْ فَظَهَرَ هَؤُلَاءِ الَّذِينَ كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَهْدٌ فَقَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ شَهْرًا يَدْعُو عَلَيْهِمْ. رواه البخارى فى الصحيح-৪০৯৬
আমি হযরত আনাস রা. কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, কুনূত আছে । আমি জিজ্ঞেস করলাম রুকুর আগে না পরে? তিনি বললেনÑরুকুর আগে। আমি বললাম একজন আমাকে বলেছেন, আপনি রুকুর পরে কুনূত পড়ার কথা বলেছেন? তিনি বললেনÑ সে ভুল বলেছে । রুকুর পরে তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু এক মাস কুনূত পড়েছেন। (যা ছিল মূলত কুনূতে নাযেলা)। সহীহ বুখারী হা.৪০৯৬
২.হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. বলেনÑ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ كَانَ يُوتِرُ بِثَلاَثِ رَكَعَاتٍ كَانَ يَقْرَأُ فِى الأُولَى بِـ سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى وَفِى الثَّانِيَةِبـ قُلْ يَا أَيُّهَاالْكَافِرُونَ وَفِى الثَّالِثَةِ بِـ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَيَقْنُتُ قَبْلَ الرُّكُوعِ.رواه النسائى فى السنن برقم-১৬৯৯والطحاوى فى مشكل الآثار ১১/৩৬৮ وصححه ابن القطان فى الوهم والايهام ৩/৩৮৩ والالبانى ايضا فى ارواء الغليل ২/১৬৭ كما سبق.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাতে বিত্র পড়তেন। প্রথম রাকাতে সূরা আ‘লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন, তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পড়তেন। এবং রুকুর পূর্বে দুআ কুনূত পড়তেন । সুনানে নাসায়ী ১/১৯১ হা.১৬৯৯ মুশকিলুল আছার ১১/৩৬৮
হাদীসটি সহীহÑ আল ওয়াহামু ওয়াল ইহাম ৩/৩৮৩ (হাদীসটি তিন রাকাতে তিন সূরা পড়া শিরোনামে উদ্ধৃত হয়েছে)
অনুরূপ সাহাবায়ে কেরামও বিত্র নামাযে রুকুর পূর্বে দূয়া কুনূত পড়তেন ; যা সহীহ সনদে প্রমাণিত।
কেরাত সমাপ্তির পর তাকবীর বলে দূয়া কুনূত পড়বে:
হযরত মাসরূক,আসওয়াদ ও ইবনে মাসউদ রা.এর আরো কতিপয় শিষ্য বলেনÑ
كان عبد الله ্র لا يقنت إلا في الوتر ، وكان يقنت قبل الركوع ، يكبر إذا فرغ من قراءته حين يقنت গ্ধ رواه الطحاوفى مشكل الآثار ১১/৩৭৪ وابن ابى شيبة برقم-৭০২১ (وكذا ثبت عن اصحابه ايضا, واسناده صحيح, اقر به الالبانى فى الارواء ২/১৬৬) وكذاروى عن على عند ابن ابى شيبة ৫/৩৯ برقم-৭১১৩ وغيره .
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. শুধু বিত্র নামাযেই কুনূত পড়তেন। তাঁর কুনূত ছিল রুকুর পূর্বে। কেরাত সমাপ্ত করার পর তাকবীর বলে কুনূত শুরু করতেন। মুশকিলুল আছার ১১/৩৭৪ ইবনে আবী শাইবা হা.৭০২১ এর সনদ সহীহ। তাঁর শিষ্যবর্গও অনুরূপ আমল করতেন। এবং হযরত আলী রা. থেকে অনুরূপ আমল বর্ণিত হয়েছে। ইবনে আবী শাইবা হা.৭১১৩
দুআয়ে কুনূত:
হাদীস শরীফে এ প্রসঙ্গে একাধিক দুআ এসেছে। তন্মধ্যে
ক.“আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তা‘ঈ নুকা ...”
মুহাম্মদ ইবনে নসর আল মারওয়াযী বর্ণনা করেনÑ
وروينا عن عمر: أنه كَانَ يقول في القنوت في الوتر: بسم اللَّه الرحمن الرحيم، اللهم إنا نستعينك ونستغفرك ونثني عليك وَلا نكفرك ونخلع، ونترك من يفجرك بسم اللَّه الرحمن الرحيم، اللهم إياك نعبد ولك نصلي ونسجد وإليك نسعى ونحفد، نرجو رحمتك ونخاف عذابك إن عذابك بالكافرين ملحق. رواه ابن نصر فى صلاة الوتر
হযরত উমর রা. বিতরের কুনূতে পড়তেনÑ “আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা‘ঈ নুকা ...” দুআটি।
হযরত আবু আব্দুর রহমান বলেনÑ
عَلَّمَنَا ابْنُ مَسْعُودٍ أَنْ نَقْرَأَ فِي الْقُنُوتِ : اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ ، وَنُثْنِي عَلَيْكَ الْخَيْرَ ، وَلاَ نَكْفُرُكَ ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ ، اللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ ، وَلَكَ نُصَلِّي وَنَسْجُدُ ، وَإِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ ، نَرْجُو رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ ، إِنَّ عَذَابَكَ الْجِدَّ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ.رواه ابن ابى شيبة فى المصنف برقم-৬৯৬৫
শব্দের সামান্য ব্যতিক্রম সহ অন্যান্য বর্ণনায়ও এ দুআ এসেছ। যেমন: এক বর্ণনায়Ñونؤمن بك ونتوكل عليك، এ বাক্য দুটি বর্ধিত এসেছে। ইবনে আবী শাইবা ১৫/৩৪৪
তহাবীর এক বর্ণনায় (১/১৭৭)ونشكرك শব্দটিও রয়েছে।
এই বর্ণনা গুলির আলোকে পূর্ণ দুআটি এভাবে পড়া যায়Ñ
اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ ، ونؤمن بك ونتوكل عليك، وَنُثْنِي عَلَيْكَ الْخَيْرَ ، ونشكرك وَلاَ نَكْفُرُكَ ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ ، اللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ ، وَلَكَ نُصَلِّي وَنَسْجُدُ ، وَإِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ ، نَرْجُو رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ ، إِنَّ عَذَابَكَ الْجِدَّ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ.
অর্থ: ইয়া আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই, তোমার কাছেই ক্ষমা প্রর্থনা করি, তোমার প্রতিই ঈমান রাখি এবং তোমারই উপরই ভরসা করি। আর তোমার উত্তম প্রশংসা করি। আমরা তোমার শোকরগোযারী করি, নাশোকরী করি না। যে তোমার অবাধ্য হয় তাকে আমরা পরিত্যাগ করি ও তার সংশ্রব বর্জন করি। ইয়া আল্লাহ! আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমার জন্যই নামায পড়ি, তোমাকেই সাজদা করি এবং তোমার দিকেই ধাবিত হই। আর তোমারই দাসত্ব অবলম্বন করি। আমরা তোমার রহমতের আশা রাখি, তোমার আযাবকে ভয় করি। নিশ্চয় তোমার আযাব কাফেরদের উপর পতিত হবে।
সুনানে বায়হাকীর এক বর্ণনায় এসেছে যে, হযরত জিব্রীল আ. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কুনূত শিক্ষা দিয়েছেন। এরপর শব্দের সামান্য তারতম্যসহ উপরোক্ত দুআটি উল্লেখিত হয়েছে। (বাইহাকী: ২/২১০ আল মুদাওয়ানা ১/১০১ বর্ণনাটি মুরসাল এবং এর বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্যÑনাতাইযুল আফকার লি ইবনে হাজার ২/১১১)
খ.হযরত হাসান ইবনে আলী রা. বলেনÑ
علمني رسول الله صلى الله عليه و سلم كلمان أقولهن في الوتر : اللهم اهدني فمين هديت وعافني فيمن عافيتن وتولني فيمن توليت وبارك لي فيما أعطيت وقني ما قضيت فإنك تقضي ولا يقضى عليك وإنه لا يذل من واليت تباركت ربنا وتعاليت.رواه الترمذى فى السنن برقم-৪৬৪ وابو داود فى السنن ১/৫২৬ والنسائى ১/২৫২ وابن ماجة ১/১৮৫ واحمد فى المسند برقم-১৭১৮ وقال شعيب : اسناده صحيح.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিত্রে পড়ার জন্য কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দিয়েছেনÑ (অর্থ:) ইয়া আল্লাহ! যাদেরকে আপনি হেদায়েত দিয়েছেন তাদের সঙ্গে আমাকেও হেদায়েত দিন, যাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছেন তাদের সঙ্গে আমাকেও নিরাপত্তা দিন, যাদেরকে আপনার তত্ত্বাবধানে গ্রহণ করেছেন তাদের সঙ্গে আমাকেও গ্রহণ করুন, আমাকে যা কিছু দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন, আর আমাকে আপনার অকল্যাণের ফায়সালা থেকে হেফাযতে রাখুন। কেননা আপনিই ফায়সালাকারী, আপনার ওপর কোনো ফয়সালাকরী নেই। নিঃসন্দেহে যাকে আপনি সাহায্য করেন সে কখনো লাঞ্ছিত হয় না; আর যাকে আপনি সাহায্য-বঞ্চিত করেন সে কখনো সম্মান লাভ করে না। হে আমাদের রব, আপনি মহান, সমুচ্চ! (সুনানে আবু দাউদ: ১/৫২৬; সুনানে নাসায়ী: ১/২৫২; জামে তিরমিযী: ১/১০৬ হা.৪৬৪; সুনানে ইবনে মাজা: ১/১৮৫ মুসনাদে আহমদ হা.১৭১৮)
বরং নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বিত্রে এ দুআটি পড়েছেন। (দ্র.সুনানে কুবরা-বাইহাকী, ২/২১০ মুখতাসারু সালাতুল বিতর লিল মারওয়াযী-২৯৬-২৯৭ )
তাই অনেকে উভয় দুআই পড়তেনÑ
হযরত সুফইয়ান ছাউরী বলেনÑ
كانوا يستحبون أن يجعلوا ، في قنوت الوتر هاتين السورتين : اللهم إنا نستعينك ونستغفرك ، ونثني عليك ولا نكفرك ، ونخلع ونترك من يفجرك ، اللهم إياك نعبد ولك نصلي ونسجد ، وإليك نسعى ونحفد ، نخشى عذابك ونرجو رحمتك ، إن عذابك بالكفار ملحق ، وهذه الكلمات : اللهم اهدني فيمن هديت ، وعافني فيمن عافيت ، وتولني فيمن توليت ، وبارك لي فيما أعطيت ، وقني شر ما قضيت ، إنك تقضي ولا يقضى عليك ، لا يذل من واليت تباركت ربنا وتعاليت ، ويدعو بالمعوذتين.رواه ابن نصر فى صلاة الوتر صـ ৩০১ وقال الحافظ فى نتائج الافكار ২/১১৪، ৫০৩: اخرجه ابن نصر بسند صحيح... انتهى.
আমি আমার পূর্বসুরীদের দেখেছি তাঁরা বিত্রে উপরোক্ত দুটি দুআ পড়াকেই উত্তম মনে করতেন। সালাতুল বিত্র পৃ.৩০১
মুসান্নাফ গ্রন্থকার ইমাম আব্দুররাযযাক র.ও এ তরিকা অবলম্বন করেছেন (আল মুসান্নাফ৩/১১৬)। ইমাম নববী র. আমাদের অনেকেই বলেনÑ উভয় দুআ একত্রে পড়াটাই উত্তম (শরহুল মুহাযযাব ৩/৪৭৫-৪৭৮)।
পরবর্তী হানাফী ফকীহদের অনেকেই উভয় দুআ একত্রে পড়াকে পছন্দ করেছেন। দ্র. মাবসূতে সারাখসী ১/১৬৫ বাদয়েউস সানায়ে ২/২৩২ আল বাহরুর রায়েক ২/৪১-৪২ আল মুহীতুল বুরহানী ২/২৬৮ গুন্ইয়াতুল মুসতামলী পৃ.৪১৭ জামির রুমুজ ১/২৫২ মাজমাউল আনহুর ১/১৯১ মারাকিল ফালাহ পৃ.২০৯ তাহতাবী আলাদদুর ১/২৮০ আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া ১/১১১
জুমআর আগের ও পরের সুন্নত
আতা ইবনে আবী রাবাহ র. জুমআর পূর্বে ১২ রাকাত পড়তেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৫৫২১)। এমনিভাবে উমর ইবনে আব্দুল আযীয র. অন্যদেরকে জুমআর পূর্বে দশ রাকাত পড়ে নিতে বলতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৪০৪)
১. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বর্ণনা করেছেন:
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ ্র مَنِ اغْتَسَلَ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَصَلَّى مَا قُدِّرَ لَهُ ثُمَّ أَنْصَتَ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ خُطْبَتِهِ ثُمَّ يُصَلِّىَ مَعَهُ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى وَفَضْلَ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ গ্ধ. أخرجه مسلم (٨٥٧)
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি গোসল করলো, অতঃপর জুমআয় আসলো, এবং তৌফিক অনুসারে নামায পড়লো, এরপর ইমাম খুতবা শেষ করা পর্যন্ত চুপ রইলো এবং তার সঙ্গে নামায আদায় করলো তার পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৮৫৭।
২. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- ্র إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمُ الْجُمُعَةَ فَلْيُصَلِّ بَعْدَهَا أَرْبَعًا গ্ধ. أخرجه مسلم ( الصلاة بعد الجمعة ، رقم الحديث ٨٨١) وفيه :قال سهيل: فإن عجل بك شيئ فصل ركعتين في المسجد وركعتين إذا رجعت.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন জুমআ (ফরজ) পড়ে তখন সে যেন ‘বা’দাল জুমআ’ চার রাকাত পড়ে নেয়। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৮৮১। সুহায়ল র. বলেন, তারা থাকলে মসজিদে দুই রাকাত , ঘরে ফিরে দুই রাকাত পড়ো।
৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত,
عَنْ ابن عمر أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يُصَلِّى بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ. أخرجه الجماعة.
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পরে দুরাকাত পড়তেন। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৯৩৭; মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৮৮২; আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ১১৩২; তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ৫২১; নাসাঈ শরীফ, হাদীস নং ১৪২৮; ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং ১১৩১।
৪. হযরত ইবনে উমর রা. সম্পর্কে আতা র. বলেছেন,
كَانَ إِذَا كَانَ بِمَكَّةَ فَصَلَّى الْجُمُعَةَ تَقَدَّمَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ تَقَدَّمَ فَصَلَّى أَرْبَعًا وَإِذَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ صَلَّى الْجُمُعَةَ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى بَيْتِهِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَلَمْ يُصَلِّ فِى الْمَسْجِدِ فَقِيلَ لَهُ فَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَفْعَلُ ذَلِكَ. أخرجه أبو داود (رقم الحديث١١٣٠ ) وقال العراقي: إسناده صحيح. آثار السنن صـ ٣٠٢
অর্থ: তিনি যখন মক্কা শরীফে অবস্থান করতেন এবং জুমআর নামায পড়তেন, তখন সামনে অগ্রসর হয়ে দুই রাকাত পড়তেন, এরপর আরেকটু অগ্রসর হয়ে চার রাকাত পড়তেন। আর যখন মদীনা শরীফে জুমআ আদায় করতেন তখন ঘরে ফিরে গিয়ে দুই রাকাত পড়তেন। মসজিদে পড়তেননা। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই করতেন। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ১১৩০;আল্লামা ইরাকী বলেছেন, এর সনদ সহীহ।
৫. আতা র. বলেন,
عن عَطَاءٌ أَنَّهُ رَأَى ابْنَ عُمَرَ يُصَلِّى بَعْدَ الْجُمُعَةِ فَيَنْمَازُ عَنْ مُصَلاَّهُ الَّذِى صَلَّى فِيهِ الْجُمُعَةَ قَلِيلاً غَيْرَ كَثِيرٍ قَالَ فَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَالَ ثُمَّ يَمْشِى أَنْفَسَ مِنْ ذَلِكَ فَيَرْكَعُ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ قُلْتُ لِعَطَاءٍ كَمْ رَأَيْتَ ابْنَ عُمَرَ يَصْنَعُ ذَلِكَ قَالَ مِرَارًا. أخرجه أبو داود (١١٣٣ -الصلاة بعد الجمعة) وأصل الحديث في الترمذي أيضا باب الصلاة قبل الجمعة وبعدها.
অর্থ: তিনি হযরত ইবনে উমর রা.কে দেখেছেন, তিনি জুমআর নামাযের পর মুসল্লা থেকে একটু সরে গিয়ে দুই রাকাত পড়লেন। এরপর আরেকটু সরে চার রাকাত পড়লেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আতা র.কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি হযরত ইবনে উমর রা. কে কতবার এমন করতে দেখেছেন? তিনি বললেন, অনেকবার। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ১১৩৩।
৬. জাবালা ইবনে সুহায়ম র. হযরত ইবনে উমর রা. সম্পর্কে বলেছেন,
عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما أنه كان يصلى قبل الجمعة أربعا لا يفصل بينهن بسلام ثم بعد الجمعة ركعتين ثم أربعا. أخرجه الطحاوي إسناده صحيح (آثار السنن)
অর্থ: তিনি ‘কাবলাল জুমআ’ (জুমআর পূর্বে) চার রাকাত পড়তেন। মাঝখানে সালাম ফেরাতেন না। জুমআর ফরজের পর তিনি প্রথমত দুই রাকাত পরে চার রাকাত পড়তেন। তাহাবী শরীফ। এর সনদ সহীহ।
৭. নাফে র. বলেন,
كان ابن عمر يهجر يوم الجمعة فيطيل الصلاة قبل أن يخرج الامام . أخرجه ابن أبي شيبة (٥٤٠٣) وفي رواية أبي داود(١١٢٨) كان يطيل الصلاة قبل الجمعة ويصلي بعدها ركعتين في بيته.
অর্থ : হযরত ইবনে উমর রা. জুমআর অনেক আগেই মসজিদে চলে যেতেন এবং ইমাম বের হয়ে আসা পর্যন্ত লম্বা নামায পড়তেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৪০৩।
আবূ দাউদ শরীফে আছে, তিনি জুমআর পূর্বে লম্বা নামায পড়তেন এবং জুমআর পর ঘরে গিয়ে দুই রাকাত পড়তেন।
৮. কাতাদা র. বলেন,
أن ابن مسعود كان يصلي قبل الجمعة أربع ركعات وبعدها أربع ركعات ، قال أبو إسحاق : وكان على يصلي بعد الجمعة ست ركعات ، وبه يأخذ عبد الرزاق . أخرجه عبد الرزاق (٥٥٢٤) ورواه الطبراني وإسناده صحيح قاله النيموي في آثار السنن.
অর্থ: হযরত ইবনে মাসউদ রা. কাবলাল জুমআ চার রাকাত ও বা’দাল জুমআ চার রাকাত পড়তেন। আবূ ইসহাক র. বলেন, হযরত আলী রা. বা’দাল জুমআ ছয় রাকাত পড়তেন। আব্দুর রাযযাক র. এ অনুসারেই আমল করতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং৫৫২৪। তাবারানী শরীফ। এর সনদ সহীহ।
৯. আবূ আব্দুর রহমান সুলামী র. বলেন,
كان عبد الله يأمرنا أن نصلي قبل الجمعة أربعا ، وبعدها أربعا ، حتى جاءنا علي فأمرنا أن نصلي بعدها ركعتين ثم أربعا . أخرجه عبد الرزاق (٥٥٢٥) وإسناده صحيح.
অর্থ : আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমাদেরকে কাবলাল জুমআ চার রাকাত, বা’দাল জুমআ চার রাকাত পড়ার নির্দেশ দিতেন। অবশেষে হযরত আলী রা. যখন আমাদের এখানে (কূফায়) আসলেন, তখন তিনি আমাদেরকে বা’দাল জুমআ দুই রাকাত তারপর চার রাকাত (মোট ছয় রাকাত) পড়ার আদেশ দিয়েছেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৫৫২৫। এন সনদ সহীহ।
১০. আবূ আব্দুর রহমান র. বলেন,
قدم علينا ابن مسعود فكان يأمرنا أن نصلي بعد الجمعة أربعا فلما قدم علي أمرنا أن نصلي ستا فأخذ بقول علي وتركنا قول عبد الله. رواه ابن أبي شيبة (٥٤١٠) ورواه الطحاوي وإسناده صحيح.(آثار السنن)
অর্থ : হযরত ইবনে মাসউদ রা. আমাদের নিকট (কূফায়) আসলেন। তিনি আমাদেরকে বা’দাল জুমআ চার রাকাত পড়ার নির্দেশ দিতেন। অতঃপর যখন হযরত আলী রা. আমাদের নিকট আসলেন, তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন ছয় রাকাত পড়তে। আমরা তখন হযরত আলী রা. নির্দেশ গ্রহণ করলাম এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর কথা ছেড়ে দিলাম। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৪১০; তাহাবী শরীফ, এর সনদ সহীহ।
১১. আবূ বকর র. তদীয় পিতা আবূ মূসা আশআরী রা. সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন,
عن أبي بكر بن أبي موسى عن أبيه : كان يصلي بعد الجمعة ست ركعات .
أخرجه ابن أبي شيبة (٥٤٠٣)
অর্থ: তিনি বা’দাল জুমআ ছয় রাকাত পড়তেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৪১৩।
১২. মুহাম্মদ ইবনে সীরীন র. বা অন্য কেউ বর্ণনা করেছেন ,
أن عمران بن حصين صلى مع زياد الجمعة ، ثم قام فصلى بعدها أربعا ،
أخرجه عبد الرزاق (٥٥٢٥)
অর্থ: হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রা. যিয়াদের সঙ্গে জুমআ আদায় করলেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বা’দাল জুমআ চার রাকাত পড়লেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৫৫৩০।
১৩. ইবরাহীম নাখায়ী র. বলেন,
كانوا يصلون قبلها أربعا وبعدها أربعا .أخرجه ابن أبي شيبة (٥٤٠٥،٥٤٢٢)
অর্থ: সাহাবায়ে কেরাম কাবলাল জুমআ চার রাকাত, বা’দাল জুমআ চার রাকাত পড়তেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৪০৫,৫৪২২।
১৪. হযরত আলী রা. বলেছেন,
من كان مصليا بعد الجمعة فليصل ستا. أخرجه الطحاوي وإسناده صحيح (آثار السنن)
অর্থ: যে ব্যক্তি জুমআর পরে নামায পড়বে সে যেন ছয় রাকাত পড়ে। তাহাবী শরীফ। এর সনদ সহীহ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনুস সাইব রা. এর বর্ণিত হাদীসে আছে:
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصلي أربعا بعد أن تزول الشمس قبل الظهر – أي :قبل صلاة فريضتها - وقال أنها ساعة تفتح فيها أبواب السماء وأحب أن يصعد لي فيها عمل صالح. أخرجه أحمد ٣/٤١١ والترمذي (٤٧٨) وهذا المعني مذكور في حديث أبي أيوب عند ابن أبي شيبة (٥٩٩٢) ولفظه: أن أبواب الجنة تفتح عند زوال الشمس.
অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলে যাওয়ার পর জোহরের পূর্বে - অর্থাৎ জোহরের ফরজ পড়ার পূর্বে - চার রাকাত নামায পড়তেন। তিনি বলেছেন, এ সময়টায় আসমানের দ্বার খোলা হয়। আর এ সময় আমার নেক আমল উপরে উঠুক, আমি তা পছন্দ করি। মুসনাদে আহমদ, ৩/৪১১; তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ৪৭৮। হযরত আবূ আইয়্যুব রা. এর হাদীসেও অনুরূপ বক্তব্য পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে- সূর্য ঢলার সময় জান্নাতের দরজা খোলা হয়। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৯৯২।
ঈদের নামাযে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর সুন্নত
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একাধিক সহীহ হাদীসে এবং বহু সাহাবী ও তাবিয়ী এর ফতোয়া ও আমল দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, ঈদের নামাযে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর দেওয়া সুন্নত। ছয় তাকবীর সম্পর্কিত হাদীস:
১. কাসেম আবূ আব্দির রহমান র. বলেন,
حدثني بعض اصحاب رسول الله صلى الله عليه و سلم قال صلى بنا النبي صلى الله عليه و سلم يوم عيد فكبر اربعا واربعا ثم اقبل علينا بوجهه حين انصرف قال لا تنسوا كتكبير الجنائز وأشار بأصابعه وقبض إبهامه. أخرجه الطحاوي في شرح معاني الآثار ٢/٤٠٠ من طريق عبد الله بن يوسف عن يحيى بن حمزة عن الوضين بن عطاء عنه. قال الطحاوي: فهذا حديث حسن الإسناد وعبد الله بن يوسف ويحيى بن حمزة والوضين والقاسم كلهم أهل رواية معروفون بصحة الرواية ليس كمن روينا عنه الآثار الأول فان كان هذا الباب من طريق صحة الإسناد يؤخذ فان هذا أولى ان يؤخذ به مما خالفه غيره.
অর্থ: আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একজন সাহাবী বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে ঈদের দিন নামায পড়লেন এবং চারটি করে তাকবীর দিলেন। নামায শেষ করে আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, ভুলে যেয়োনা, জানাযার তাকবীরের মতো। এই বলে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি গুটিয়ে বাকী চার আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করলেন। (তাহাবী শরীফ, ২খ, ৪০০ পৃ)
২ . মাকহুল র. বলেন,
أخبرنى أبو عائشة جليس لأبى هريرة ان سعيد بن العاص سال أبا موسى الأشعرى وحذيفة بن اليمان كيف كان رسول الله -صلى الله عليه وسلم- يكبر فى الأضحى والفطر فقال أبو موسى كان يكبر اربعا تكبيره على الجنائز. فقال حذيفة صدق. فقال أبو موسى كذلك كنت أكبر فى البصرة حيث كنت عليهم. وقال أبو عائشة وأنا حاضر سعيد بن العاص. أخرجه أبو داود (١١٥٣) وسكت عنه هو والمنذري ورواه أحمد في مسنده ٤/٤١٦ وابن أبي شيبة (٥٧٤٤)
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রা. এর একজন সঙ্গী আবূ আয়েশা র. আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, সাঈদ ইবনুল আস রা. (কুফার গভর্নর) এসে হযরত আবূ মূসা আশআরী রা. ও হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান রা.কে জিজ্ঞেস করলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় কিভাবে তাকবীর দিতেন? আবূ মূসা রা. বললেন, তিনি জানাযার মতো চার তাকবীর দিতেন। তখন হুযায়ফা রা. বললেন, আবূ মূসা সঠিক বলেছেন। আবূ মূসা রা. বললেন, আমি যখন বসরার গভর্নর ছিলাম তখন এভাবেই তাকবীর দিতাম। আবূ আয়েশা র. বলেন, এসময় আমি সাঈদ ইবনুল আসের কাছে উপস্থিত ছিলাম। আবূ দাউদ শরীফ (১১৫৩), মুসনাদে আহমাদ ৪খ, ৪১৬পৃ, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং (৫৭৪৪)
৩. আলকামা র. ও আসওয়াদ র. বলেছেন,
كان ابن مسعود رض جالسا وعنده حذيفة وأبو موسى الاشعري رض فسالهما سعيد بن العاص عن التكبير في الصلاة يوم الفطر والاضحى ، فجعل هذا يقول : سل هذا ، وهذا يقول : سل فقال له حذيفة :سل هذا - لعبد الله بن مسعود - فساله ، فقال ابن مسعود : يكبر اربعا ، ثم يقرا ، ثم يكبر ، فيركع ، ثم يقوم في الثانية فيقرا ثم يكبر اربعا ، بعد القراءة. أخرجه عبد الرزاق عن معمر عن أبي إسحاق عنها. ٣/٢٩٣-٢٩٤ وإسناده صحيح. وهذا وان كان موقوفا لكنه في حكم المرفوع لان مثل هذا لا يكون من جهة الرأي والقياس وقد وافق ابن مسعود جماعة من الصحابة.
অর্থ: হযরত ইবনে মাসউদ রা. বসা ছিলেন। তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন হযরত হুযায়ফা রা. ও আবূ মূসা আশআবী রা.। তাঁদের দুজনকে হযরত সাঈদ ইবনুল আস রা. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাযে তাকবীর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। ইনি বলতে লাগলেন, ওনাকে জিজ্ঞেস করুন। আর উনি বললেন, এনাকে জিজ্ঞেস করুন। অবশেষে হযরত হুযায়ফা রা. তাঁকে বললেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করুন। এই বলে তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. কে দেখিয়ে দিলেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। হযরত ইবনে মাসউদ রা. তখন বললেন, চার তাকবীর দেবে। অতঃপর কেরাত পড়বে। আবার তাকবীর বলে রুকু করবে, এরপর দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবে। পরে কেরাত পড়বে। কেরাতের পরে চার তাকবীর দেবে।
মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ৩খ. ২৯৩-৯৪পৃ.। এর সনদ সহীহ। এটি সাহাবীর বক্তব্য হলেও মূলত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরই বক্তব্য। কারণ কিয়াস ও যুক্তি দ্বারা এমনটা বলা অসম্ভব। তাছাড়া এক্ষেত্রে হযরত ইবনে মাসউদ রা. একা নন। অনেক সাহাবী তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।
৪. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন,
التكبير في العيدين اربعا كالصلاة على الميت. رواه الطبراني في الكبير وقال الهيثمي: رجاله ثقات.
অর্থ: জানাযার নামাযের মতো দুই ঈদে চার তাকবীর হবে। তাবারানী র. এটি উদ্ধৃত করেছেন। হায়ছামী র. বলেছেন, এর বর্ণনাকারীগন সকলে বিশ্বস্ত। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ২/৩৬৮)
৫. মাসরূক র. বলেন,
كان عبد الله يعلمنا التكبير في العيدين تسع تكبيرات خمس في الاولى واربع في الآخرة ويوالى بين القراءتين . أخرجه ابن أبي شيبة – وإسناده حسن.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমাদেরকে দুই ঈদের তাকবীর শেখাতেন। মোট নয় তাকবীর। প্রথম রাকাতে পাঁচ ও দ্বিতীয় রাকাতে চার। উভয় রাকাতের কেরাত একাধারে পড়বে। (অর্থাৎ উভয় রাকাতের কেরাতের মাঝে তাকবীর বলবে না। ইবনে আবী শায়বা এটি উদ্ধৃত করেছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৭৪৬)। এটির সনদ হাসান।
৬. ইবনে আব্বাস রা. বলেন,
لما كان ليلة العيد ارسل الوليد بن عقبة إلى مسعود وأبي مسعود وحذيفة والاشعري فقال لهم ان العيد غدا فكيف التكبير فقال عبد الله يقوم فيكبر اربع تكبيرات ويقرا بفاتحة الكتاب وسورة من المفصل ليس من طوالها ولا من قصارها ثم يركع ثم يقوم فيقرا فإذا فرغ من القراءة كبر اربع تكبيرات ثم يركع بالرابعة. أخرجه ابن أبي شيبة عن هشيم عن أشعث عن كردوس عنه (٥٧٥٤) وأخرجه نحوه الإمام محمد في كتاب الآثار صـ ٢٠٥ وفي الحجة على أهل المدينة صـ ٨٥ من طريق أبي حنيفة عن حماد عن إبراهيم عن عبد الله بن مسعود ورواه الطبراني في الكبير من طريق زكريا ابن أبي زائدة عن أشعث عن كردوس ، قال الهيثمي: رجاله ثقات، ورواه الطحاوي في شرح معاني الآثار من طريق أبي بكر ثنا أبو داود قال ثنا هشام بن أبي عبد الله عن حماد عن إبراهيم عن علقمة بن قيس قال خرج الوليد بن عقبة بن أبي معيط على ابن مسعود وحذيفة والاشعري رضي الله عنهم فقال ان العيد غدا فكيف التكبير فقال ابن مسعود رضي الله عنه فذكر نحو ذلك وزاد فقال الاشعري وحذيفة رضي الله عنهما صدق أبو عبد الرحمن. ذكره ابن كثير بإسناد الطحاوي (تحت قوله: ان الله وملائكته يصلون على النبي) وقال: إسناد صحيح.
অর্থ: ওয়ালীদ ইবনে উকবা ঈদের রাতে হযরত ইবনে মাসউদ রা., আবূ মাসউদ রা. ও আবূ মূসা আশআরী রা. এর কাছে লোক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আগামী কাল তো ঈদ, তাকবীর কিভাবে দিতে হবে? হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বললেন, নামাযে দাঁড়িয়ে চার তাকবীর দেবে, পরে সূরা ফাতিহা এবং মুফাসসাল থেকে এমন একটি সূরা পড়বে যা বড়ও নয়, আবার ছোটও নয়। এরপর রুকু করবে। পরে (রাকাত শেষ করে) পুনরায় দাঁড়াবে। এবং কেরাত পাঠ করবে। কেরাত পাঠ শেষ হলে চারটি তাকবীর দেবে এবং চতুর্থ তাকবীর বলে রুকুতে যাবে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৭৫৪; ইমাম মুহাম্মদ র. এর কিতাবুল আসার, পৃ,২০৫; কিতাবুল হুজ্জাহ , পৃ ৮৫; তাবারানী , আলমুজামুল কাবীর, (দ্র, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ২/৩৬৭) হায়ছামী বলেছেন, এর বর্ণনাকারীগন বিশ্বস্ত; তাহাবী শরীফ ২খ,------ তাহাবীর সনদে ইবনে কাছীর র. স্বীয় তাফসীর গ্রন্থে। তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন। (৩খ, ৫৬৪পৃ)
হযরত ইবনে মাসউদ রা. যেমন ফতোয়া দিতেন, নিজেও ঠিক সেভাবে আমল করতেন। নি¤েœর হাদীসটি তার প্রমাণ।
৭. আলকামা র. ও আসওয়াদ র. বলেন,
.... ان ابن مسعود كان يكبر في العيدين تسعا تسعا اربعا قبل القراءة ثم كبر فركع وفي الثانية يقرا فإذا فرغ كبر اربعا ثم ركع . أخرجه عبد الرزاق ٣/٢٩٣ (٥٦٨٦) عن الثوري عن أبي إسحاق عنهما وابن أبي شيبة نحوه عن الشعبي ( ٥٧٤٧) والإمام محمد في الحجة صـ ٨٥
অর্থ: হযরত ইবনে মাসউদ রা. দুই ঈদে নয়টি করে তাকবীর দিতেন। প্রথম রাকাতে কেরাতের পূর্বে চার তাকবীর বলতেন। অতঃপর তাকবীর বলে রুকুতে যেতেন। দ্বিতীয় রাকাতে আগে কেরাত পড়তেন। কেরাত শেষ হলে চার তাকবীর বলে রুকু করতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৫৬৮৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৭৪৭; কিতাবুল হুজ্জাহ, ৮৫পৃ.।
৮. কাতাদা র. বলেন,
عن جابر بن عبد الله وسعيد ابن المسيّب قالا تسع تكبيرات ويوالي بين القراءتين أخرجه ابن أبي شيبة (٥٧٥٦) وعبد الرزاق (٣/٢٩٦) عن إبراهيم بن يزيد عن جابر بن عبد الله وفيه : انه قال : التكبير في يوم العيد في الركعة الاولى اربعا وفي الآخرة ثلاثا.
অর্থ: হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. ও সাঈদ ইবনুল মুসায়্যাব র. দুজনই বলেছেন, তাকবীর হবে মোট নয়টি আর উভয় রাকাতের কেরাত হবে লাগাতার। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৭৫৬; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ৩খ, ২৯৬পৃ।
৯. আব্দর রাযযাক র. বলেছেন,
أخبرنا إسماعيل بن أبي الوليد قال حدثنا خالد الحذاء عن عبد الله بن الحارث قال شهدت ابن عباس كبر في صلاة العيد بالبصرة تسع تكبيرات والى بين القراءتين قال وشهدت المغيرة بن شعبة فعل ذلك أيضا فسالت خالدا كيف فعل ابن عباس ففسر لنا كما صنع ابن مسعود في حديث معمر والثوري عن أبي إسحاق سواء. أخرجه عبد الرزاق ( ٥٦٨٩) وأخرج نحوه ابن أبي شيبة عن هشيم عن خالد به (٥٧٥٧)
অর্থ: ইসমাঈল ইবনে আবিল ওয়ালিদ র. খালেদ আল হায্যা র. থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনুল হারেছ র. থেকে। তিনি বলেছেন, হযরত ইবনে আব্বাস রা. বসরায় ঈদের নামাযে নয়টি তাকবীর দিয়েছিলেন এবং উভয় রাকাতের কেরাত লাগাতার পড়েছিলেন। ঐ নামাযে আমি তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলাম। হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা রা.ও অনুরূপ করেছিলেন। সে নামাযেও আমি উপস্থিত ছিলাম। ইসমাঈল র. বলেন, আমি খালেদ র. কে জিজ্ঞেস করলাম, হযরত ইবনে আব্বাস রা. কিরূপ করেছিলেন? তখন তিনি আমাদের সামনে ব্যাখ্যা করলেন। মা’মার র. ও ছাওরী র. আবূ ইসহাক র. এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে ইবনে মাসউদ রা. এর নামাযের যে বিবরণ এসেছে, ইবনে আব্বাস রা. এর নামাযও ছিল ঠিক তদ্রুপ। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৫৬৮৯; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৭৫৭। এই হাদীসের সনদ সহীহ।
১০. মুহাম্মদ ইবনে সীরীন র. হযরত আনাস রা. সম্পর্কে বলেছেন,
انه كان يكبر في العيد تسعا فذكر مثل حديث عبد الله . أخرجه ابن أبي شيبة (٥٧٦٠)عن يحيى بن سعيد عن أشعث عنه. وإسناده صحيح.
অর্থ: তিনি ঈদের নামাযে নয়টি তাকবীর বলতেন। এরপর ইবনে সীরীন র. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ এর নামাযের মতো করে বিবরণ দিলেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৫৭৬০। এই হাদীসের সনদ সহীহ।
১১. আব্দুর রাযযাক র. ইবনে জুরায়জ র. থেকে বর্ণনা করেছেন:
ان يوسف بن ماهك أخبرني ان ابن الزبير كان لا يكبر إلا اربعا في كل ركعة سواء ، يكبرهن في كل ركعتين ، سمعنا ذلك منه. المصنف ٣/٢٩١ (٥٦٧٦)
অর্থ: ইউসুফ ইবনে মাহাক র. আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে , আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়জ রা. প্রত্যেক রাকাতে চার তাকবীরই বলতেন, এর বেশী বলতেননা। এভাবে উভয় রাকাতেই তিনি তাকবীর বলতেন। আমরা তার কাছ থেকেই শুনেছি। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৫৬৭৬। এই হাদীসের সনদ সহীহ।
জানাযার নামায পড়ার পদ্ধতি
হযরত ইমাম আবু হানীফা রহ. এর মত হচ্ছে, জানাযার নামাজে সূরা ফাতেহা পড়া সুন্নত নয়। বরং প্রথম তাকবীর বলে সানা পড়বে, দ্বিতীয় তাকবীর বলে দুরূদ শরীফ পড়বে, তৃতীয় তাকবীর বলে দুআ পড়বে এবং চতুর্থ তাকবীর বলে সালাম ফিরাবে। হ্যাঁ, সানা হিসেবে (অর্থাৎ সানার পরিবর্তে) সূরা ফাতেহাও পড়তে পারে, কেরাত হিসেবে নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীদের আমল দ্বারাই একথা প্রমাণিত।
এমতের পক্ষে দলিলগুলো নি¤েœ প্রদত্ত হল:
১. হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন,
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ –صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ ্র إِذَا صَلَّيْتُمْ عَلَى الْمَيِّتِ فَأَخْلِصُوا لَهُ الدُّعَاءَ গ্ধ
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা জানাযার নামায পড়বে, তখন তার জন্যে একনিষ্ঠভাবে দুআ কর। (আবূ দাউদ শরীফ, ২খ, ৪৫৬পৃ)
২. নাফে র. থেকে বর্ণিত,
أن ابن عمر كان لا يقرأ في الصلاة على الميت .
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. জানাযার নামাজে কেরাত পড়তেননা।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২২ )
৩. হযরত আবু সাঈদ রা. বলেন,
أنه سأل أبا هريرة كيف تصلي على الجنائز فقال أبو هريرة أنا لعمر الله أخبرك أتبعها مع أهلها فإذا وضعوها كبرت وحمدت الله وصليت على نبيه صلى الله عليه و سلم ثم أقول
তিনি হযরত আবু হুরায়রা রা.কে জিজ্ঞেস করেছেন, আপনি কিভাবে জানাযার নামায পড়েন? হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহর কসম , আমি তোমাকে অবশ্যই তা জানাব। মৃতব্যক্তির পরিবারের সাথে আমি যাই। যখন (নামাজের জন্যে) তারা তার লাশ রাখে, তখন আমি তাকবীর বলি ও আল্লাহর হামদ পাঠ করি, তার নবীর উপর দরূদ পড়ি অতঃপর (নি¤েœাক্ত দুআটি) পড়ি ..........
اَللّهُمَّ عَبْدُكَ وَابْنُ عَبْدِكَ وَابْنُ اَمَتِكَ، كَانَ يَشْهَدُ اَنْ لا اِلهَ اِلا اَنْتَ وَاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُوْلُكَ، وَاَنْتَ اَعْلَمُ بِهِ، اَللّهُمَّ اِنْ كَانَ مُحْسِنًا فَزِدْ فِيْ اِحْسَانِهِ وَاِنْ كَانَ مُسِيْئًا فَتَجَاوَزْ عَنْهُ، اَللّهُمَّ لا تَحْرِمْنَا اَجْرَهُ وَلا تَفْتِنَّا بَعْدَهُ
(মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,হাদীস নং৬৪২৫)
৪. আবুল মিনহাল র.বলেন,
سألت أبا العالية عن القراءة في الصلاة على الجنازة بفاتحة الكتاب فقال ما كنت أحسب أن فاتحة الكتاب تقرأ إلا في صلاة فيها ركوع وسجود .
আমি আবুল আলিয়াকে জানাযার নামাজে সূরা ফাতেহা পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমি মনে করি, সূরা ফাতেহা শুধু সে নামাজেই পড়া যাবে যেখানে রুকু ও সিজদা রয়েছে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং১১৫২৪ )
৫. আবু বুরদা র. থেকে বর্ণিত,
قال له رجل أقرأ على الجنازة بفاتحة الكتاب قال لا تقرأ .
এক লোক তাকে বলল, আমি জানাযার নামাজে সূরা ফাতেহা পড়ি। তিনি তাকে বললেন, তুমি (তা) পড়োনা। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৬।
৬. হাজ্জাজ র. বলেন,
سألت عطاء عن القراءة على الجنازة فقال ما سمعنا بهذا إلا حديثا.
আমি আতাকে জানাযার নামাজের কেরাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমরা একটি হাদীস ছাড়া এমন কিছু শুনিনি। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৭ )
৭. শাবী র.বলেন,
ليس في الجنازة قراءة .
জানাাযার নামাজে কোন কেরাত নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং১১৫২৮ )
৮. ইবনে তাউস তার পিতা ও আতা থেকে বর্ণনা করেন,
عن ابن طاوس عن أبيه وعطاء أنهما كانا ينكران القراءة على الجنازة .
তারা দুজন জানাযার নামাজে কেরাত অপছন্দ করতেন।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৯)
৯. বাক্র ইবনে আব্দুল্লাহ র. বলেন,
لا أعلم فيها قراءة .
জানাযার নামাযে কোন কেরাত আছে বলে আমি জানিনা।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫৩০ )
১০. মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ বলেন,
سألت سالما فقلت القراءة على الجنازة فقال لا قراءة على الجنازة .
আমি সালেমকে জিজ্ঞেস করলাম: জানাযার নামাজে সূরা ফাতেহা (পড়তে হবে)? তিনি বললেন, জানাযায় কোন কেরাত নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫৩২)
১১. ইবনে সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত,
عن ابن سيرين كان لا يقرا في شيء من التكبيرات وكان يقول ৃৃ.
তিনি জানাযার তাকবীরগুলোতে কোন কেরাত পড়তেননা। বরং পড়তেন,
اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَاَلِّفْ بَيْنَ قُلُوْبِهِمْ وَاجْعَلْ قُلُوْبَهُمْ عَلَى قُلُوْبِ اَخْيَارِهِمْ، اَللّهُمَّ ارْفَعْ دَرَجَتَهُ فِيْ الْمُهْتَدِيْنَ وَاخْلُفْهُ فِيْ تَرِكَتِهِ فِيْ الْغَابِرِيْنَ، اَللّهُمَّ لا تَحْرِمْنَا اَجْرَهُ وَلا تُضِلَّنَا بَعْدَهُ.
(মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,হাদীস নং৬৪৩২)
১২. আইয়ুব র. থেকে বর্ণিত,
عن محمد أنه كان لا يقرأ على الميت .
মুহাম্মদ (ইবনে সীরীন) রহ. মৃতের জন্যে (জানাযার নামাযে) কেরাত পড়তেননা। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৩।
১৩. হাম্মাদ র. বলেন,
عن حماد عن إبراهيم قال سألته أيقرا على الميت إذا صلى عليه قال لا
আমি ইবরাহীম রহ.কে জিজ্ঞেস করলাম, যখন মৃতব্যক্তির জন্যে জানাাযার নামাজ পড়া হয় তখন কি কোন কেরাত পড়া হবে? তিনি বললেন, না। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং৬৪৩৩)
১৪. হযরত শাবী বলেন,
التكبيرة الاولى على الميت ثناء على الله والثانية صلاة على النبي صلى الله عليه و سلم والثالثة دعاء للميت والرابعة تسليم
জানাযার নামাজে প্রথম তাকবীর আল্লাহর প্রশংসা, দ্বিতীয় তাকবীর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পড়া, তৃতীয় তাকবীর মৃতের জন্যে দুআ করা এবং চতুর্থ তাকবীর হচ্ছে সালাম ফিরানো। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,হাদীস নং ৬৪৩৪)
১৫. হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত ,
أن النبي صلى الله عليه و سلم لم يوقت فيها قولا ولا قراءة
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে (জানাযার নামাজে) কোন কথা বা দুআ নির্দিষ্ট করেননি। (মুগনী:)
১৬. মানসূর বলেন,
قال قلت لإبراهيم على الميت شيء موقت قال لا أعلمه
আমি ইবরাহীম রহ.কে জিজ্ঞেস করলাম, জানাযার নামাজে নির্দিষ্ট কিছু পড়তে হবে? তিনি বললেন, আমার জানা নেই।(মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৬৪৩৫)
১৭. সাঈদ ইবনুল মুসায়্যাব র. বলেন,
ما نعلم في الصلاة على الميت من قراءة ولا دعاء شيئا معلوما
জানাযার নামাজে নির্দিষ্ট কোন কেরাত ও দুআ আছে বলে আমার জানা নেই।
(মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,হাদীস নং ৬৪৩৬)



তারাবী বিশ রাকাত পড়া সুন্নত
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঝে মধ্যে সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে তারাবী পড়েছেন। কত রাকাত পড়েছেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। তবে হযরত উমর রা. এর খেলাফতের দ্বিতীয় বছর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ রাকাত তারাবী পড়া হয়ে আসছে।
১. ইবনে আবী শায়বা র. বলেন,
حدثنا يزيد بن هارون قال انا ابراهيم بن عثمان عن الحكم عن مقسم عن ابن عباس أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصلي في رمضان عشرين ركعة والوتر .
অর্থ: আমাদের নিকট ইয়াযীদ ইবনে হারূন বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমাদেরকে ইবরাহীম ইবনে উসমান জানিয়েছেন হাকামের সূত্রে, তিনি মিকসামের সূত্রে হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে বিশ রাকাত তারাবী ও বিতর পড়তেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৭৭৭৪; তাবারানী , আল কাবীর, হাদীস নং ১২১০২; আল আওসাত, হাদীস নং ৭৯৮; বায়হাকী, ১/৪৯৬।
২. ইয়াযীদ ইবনে খুসায়ফা র. বর্ণনা করেন:
عن السائب بن يزيد قال: كانوا يقومون على عهد عمر بن الخطاب في شهر رمضان بعشرين ركعة
অর্থ: হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ রা. বলেছেন, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর আমলে সাহাবায়ে কেরাম রমযান মাসে বিশ রাকাত পড়তেন। ( বায়হাকী , আসসুনানুল কুবরা ২/৪৯৬)
ক. ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আল আনসারী র. এর বক্তব্য:
إن عمر رض أمر رجلا يصلي بهم عشرين ركعة
অর্থাৎ হযরত উমর রা. জনৈক সাহাবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সাহাবীদের নিয়ে বিশ রাকাত পড়তে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৭৭৬৪।
এই বর্ণাটির সনদ সহীহ।
খ. তাবেয়ী আব্দুল আযীয ইবনে রুফাই র. এর বক্তব্য:
عن عبد العزيز بن رفيع قال: كان أبي بن كعب يصلي بالناس في رمضان بالمدينة عشرين ركعة ويوتر بثلاث.
অর্থ: আব্দুল আযীয ইবনে রুফাই র. (তারা লিখেছেন, রাফে) বলেন, হযরত উবাই ইবনে কাব রা. রমযানে মদীনা শরীফে লোকদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত পড়তেন এবং তিন রাকাত বিতর পড়তেন। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৭৭৬৬।
গ. তাবেয়ী ইয়াযীদ ইবনে রূমান র. এর বক্তব্য:
عن يزيد بن رومان أنه قال: كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب في رمضان بثلاث وعشرين ركعة
অর্থ: ইয়াযীদ ইবনে রূমান র. বলেন, হযরত উমর রা. এর যুগে লোকেরা রমযান মাসে ২৩ রাকাত নামায পড়তেন। (মুয়াত্তা মালিক, ৪০)
৩. হযরত আলী রা. এর কর্মপন্থা:
عن أبي عبد الرحمن السلمي عن علي قال: دعا القراء في رمضان فأمر منهم رجلا يصلي بالناس عشرين ركعة قال: وكان علي يوتر بهم
অর্থ : আবূ আব্দুর রহমান সুলামী র. হযরত আলী রা. সম্পর্কে বলেন, তিনি রমযানে হাফেজদেরকে ডাকলেন এবং তাদের একজনকে লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত পড়তে নির্দেশ দিলেন। তিনি বলেন, হযরত আলী রা. নিজে তাদের নিয়ে বিতর পড়তেন। (সুনানে বায়হাকী, ২খ, ৪৯৬,৪৯৭পৃ)
হযরত আলী রা. থেকে ভিন্ন একটি সনদেও এই হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সেটি এরূপ:
عن أبي الحسناء أن عليا أمر رجلا أن يصلي بهم في رمضان عشرين ركعة
অর্থ: আবুল হাসনা থেকে বর্ণিত। হযরত আলী রা. রমযানে জনৈক ব্যক্তিকে আদেশ দিয়েছিলেন লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত পড়তে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৭৭৬৩।
মহিলাদের নামায-পদ্ধতি পুরুষের নামাযের মত নয়
নারী-পুরুষের শারীরিক গঠন, সক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদি নানা বিষয়ে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি পার্থক্য রয়েছে ইবাদতসহ শরীয়তের অনেক বিষয়ে। যেমন, সতর। পুরুষের সতর হচ্ছে নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত, পক্ষান্তরে পরপুরুষের সামনে মহিলার প্রায় পুরো শরীরই ঢেকে রাখা ফরয। নারী-পুরুষের মাঝে এরকম পার্থক্যসম্বলিত ইবাদতসমূহের অন্যতম হচ্ছে নামায। তাকবীরে তাহরীমার জন্যে হাত উঠানো, হাত বাধা, রুকু, সেজদা, ১ম ও শেষ বৈঠক ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলোতে পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য রয়েছে। তাদের সতরের পরিমান যেহেতু বেশী, তাই যেভাবে তাদের সতর বেশী রক্ষা হয় সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে এ ক্ষেত্রগুলোতে। মুসলিম উম্মাহর প্রায় দেড় হাজার বছরের অবিচ্ছিন্ন আমলের ধারা তাই প্রমাণ করে।
মারফু’ হাদীস
১. তাবেয়ী ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব র. বলেন,
.... أن رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مر على امرأتين تصليان، فقال: اذا سجدتما فضما بعض اللحم الى الأرض، فإن المرأة ليست في ذلك كالرجل. (كتاب المراسيل للإمام أبو داود)
একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্যে) বললেন, যখন সেজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়।” (কিতাবুল মারাসীল, ইমাম আবু দাউদ ৫৫, হাদীস ৮০)
২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :্র إِذَا جَلَستِ الْمَرْأَةُ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَتْ فَخِذَهَا عَلَى فَخِذِهَا الأُخْرَى ، وَإِذَا سَجَدْتْ أَلْصَقَتْ بَطْنَهَا فِى فَخِذَيْهَا كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَيَقُولُ : يَا مَلاَئِكَتِى أُشْهِدُكُمْ أَنِّى قَدْ غَفَرْتُ لَهَا গ্ধ. رواه البيهقي في السنن الكبرى ٢/٢٢٣ في كتاب الصلاة (باب ما يستحب للمرأة من ترك التجافي في الركوع والسجود)، وفيه أبو مطيع البلخي وقال العقيلي فيه : كان مرجئا صالحا في الحديث.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর উপর রাখে। আর যখন সেজদা করবে তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিেেয় রাখে; যা তার সতরের জন্যে অধিক উপযোগী। আল্লাহ তাআলা তাকে দেখে (ফেরেশতাদের সম্বোধন করে) বলেন, ওহে আমার ফেরেশতারা! তোমরা সাক্ষী থাক, আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। সুনানে কুবরা, বায়হাকী ২/২২৩, অধ্যায়: সালাত, পরিচ্ছেদ: মহিলার জন্যে রুকু ও সেজদায় এক অঙ্গ অপর অঙ্গ থেকে পৃথক না রাখা মুস্তাহাব। এটি হাসান হাদীস।
৩. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন,
جئت النبي صلى الله عليه و سلم فقال : فساق الحديث. وفيه: يا وائل بن حجر إذا صليت فاجعل يديك حذاء أذنيك والمرأة تجعل يديها حذاء ثدييها. (رواه الطبراني في الكبير جـ ٢٢ صـ ١٩-٢٠ )
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে দরবারে হাজির হলাম। তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার সাথে একথাও) বলেছিলেন: হে ওয়াইল ইবনে হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে তখন কান বরাবর হাত উঠাবে। আর মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। (আলমুজামুল কাবীর, তাবারানী ১৯-২০/২২, এই হাদীসটিও হাসান)
সাহাবায়ে কেরামের ফতোয়া
১. হযরত আলী রা. বলেছেন,
إذا سجدت المرأة فلتحتفز ولتصق فخذيها ببطنها. رواه عبد الرزاق في المصنف واللفظ له، وابن أبي شيبة في المصنف أيضا وإسناده جيد، والصواب في الحارث هو التوثيق.
" মহিলা যখন সেজদা করবে তখন সে যেন খুব জড়সড় হয়ে সেজদা করে এবং উভয় উরু পেটের সাথে মিলিয়ে রাখে।”
(মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৩/১৩৮, অনুচ্ছেদ: মহিলার তাকবীর, কিয়াম, রুকু ও সেজদা; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ২/৩০৮; সুনানে কুবরা, বায়হাকী ২/২২২)
২. হযরত ইবনে আব্বাস রা. এর ফতোয়া:
عن ابن عباس أنه سئل عن صلاة المرأة، فقال : "تجتمع وتحتفز"(رواه ابن أبي شيبة ورجاله ثقات)
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মহিলা কীভাবে নামায আদায় করবে? তিনি বললেন, খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামায় আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/৩০২)
হযরত আতা ইবনে আবী রাবাহ র. কে জিজ্ঞেস করা হল,
كيف ترفع يديها في الصلاة قال حذو ثدييها .
নামাযে মহিলা কতটুকু হাত উঠাবে? তিনি বললেন, বুক বরাবর। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/২৭০)
২. ইবনে জুরাইজ র. বলেন,
قلت لعطاء تشير المرأة بيديها بالتكبير كالرجل قال لا ترفع بذلك يديها كالرجل وأشار فخفض يديه جدا وجمعهما إليه جدا وقال إن للمرأة هيئة ليست للرجل وإن تركت ذلك فلا حرج
আমি আতা ইবনে আবী রাবাহকে জিজ্ঞেস করলাম, মহিলা তাকবীরের সময় পুরুষের সমান হাত তুলবে? তিনি বললেন, মহিলা পুরুষের মত হাত উঠাবেনা। এরপর তিনি (মহিলাদের হাত তোলার ভঙ্গি দেখালেন এবং) তার উভয় হাত (পুরুষ অপেক্ষা) অনেক নিচুতে রেখে শরীরের সাথে খুব মিলিয়ে রাখলেন এবং বললেন, মহিলাদের পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন। তবে এমন না করলেও অসুবিধা নেই।(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/২৭০)
৩. মুজাহিদ ইবনে জাবর র. থেকে বর্ণিত:
عن مجاهد بن جبر أنه كان يكره أن يضع الرجل بطنه على فخذيه إذا سجد كما تضع المرأة .
তিনি পুরুষের জন্যে মহিলার মত উরুর সাথে পেট লাগিয়ে সেজদা করাকে অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/৩০২)
৪. যুহরী র. বলেন,
ترفع يديها حذو منكبيها .
মহিলা কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/২৭০)
৫. হাসান বসরী ও কাতাদা র. বলেন,
إذا سجدت المرأة فإنها تنضم ما استطاعت ولا تتجافي لكي لا ترفع عجيزتها
মহিলা যখন সেজদা করবে তখন সে যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফাঁকা রেখে সেজদা দিবেনা; যাতে কোমর উচু হয়ে না থাকে।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/৩০৩, মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৩/১৩৭)
৬. ইবরাহীম নাখায়ী র. বলেন,
إذا سجدت المرأة فلتضم فخذيها ولتضع بطنها عليهما
মহিলা যখন সেজদা করবে তখন যেন সে উভয় উরু মিলিয়ে রাখে এবং পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/৩০২)
৭. ইবরাহীম নাখায়ী র. আরো বলেন,
كانت تؤمر المرأة أن تضع ذراعها وبطنها على فخذيها إذا سجدت ، ولا تتجافى كما يتجافى الرجل ، لكي لا ترفع عجيزتها

মহিলাদের আদেশ করা হত তারা যেন সেজদা অবস্থায় হাত ও পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। পুরুষের মত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফাঁকা না রাখে; যাতে কোমর উঁচু হয়ে না থাকে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৩/১৩৭)
৮. খালেদ ইবনে লাজলাজ র. বলেন,
كن النساء يؤمرن أن يتربعن إذا جلسن في الصلاة ولا يجلسن جلوس الرجال على أوراكهن يتقي ذلك على المرأة مخافة أن يكون منها الشئ .
মহিলাদেরকে আদেশ করা হত তারা যেন নামাযে দুই পা ডান দিক দিয়ে বের করে নিতম্বের উপর বসে। পুরুষদের মত না বসে। আবরণযোগ্য কোন কিছু প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশংকায় মহিলাদেরকে এমনটি করতে হয়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১/৩০৩)
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×