একটু উষ্ণতার খুঁজে আজো সে পথ চলে
তার পদযুগল যদিও আজ ক্লান্ত
হারিয়ে ফেলেছে রাঙা চপ্পল সেই কবেই,
দু চোখে তার ভর করেছে রাজ্যের ঘুম
একসময়ের পেশীবহুল দেহে আজ জোর নেই
তবুও সে একটু উষ্ণতার খুঁজে পথ চলে।
না পাওয়ার বেদনায়
আপনজন যখন পর হয়
পথিকের তখন ভয় হয়
মনের মাঝে ক্ষয় হয়।
দুঃখ ব্যথা বইতে বইতে
কষ্ট গাথা গায়তে গায়তে
একটু উষ্ণতার খুঁজে পথিক ক্লান্ত হয়।
অশান্ত মনকে শান্ত করে
শিশির মাখা পথে পা ফেলে পথিক,
কুয়াশা এসে গ্রাস করতে চায় তাকে
কখনো কখনো সেই কুয়াশায় হারিয়ে যায়
তখন অজানা আশংকায় থমকে দাড়ায়।
সূর্য তাকে আড়ি দিয়ে চলে
শীতল হাওয়া সঙ্গ দিতে বলে
গাছের সবুজ পাতা গুলোও ঝরে পড়ে
অজানা কোন এক হতাশায়,
ঝরা পাতার স্তূপ তাকে না পাওয়ার কথা শোনায়
তাকে অপূর্ণ জীবনের কথা, বেদনার কথা শোনায়
কিন্তু পথিক ঝরা পাতার কথায়
তার যাত্রার সমাপ্তি টানেনা,
কোন ব্যথা তাকে স্পর্শ করেনা
সে শুধুই চায় একটু উষ্ণতা
সে চায় তার অপূর্ণ মনের পূর্ণতা।
দুরদেশের পাখিগুলো যে আশায়
এই দেশে উড়ে আসে তেমনি,
পথিকেরও ইচ্ছা করে উড়ে যেতে
যেখানে সে একটু উষ্ণতার দেখা পাবে।
শর্ষে ফুল এখন আর তাকে টানে না
টানেনা তাকে ভাপা পুলির মিষ্টি গ্রান
আর খেজুরের রসের পায়েশ
গ্রামের রাতের ঐ যাত্রা পালা
আর জারির আসরের পুরোনো সব কেচ্ছা কাহিনী
পথিকের কাছে আজ
শুধুই সময় হত্যা করার অস্ত্র বলে মনে হয়।
পথিকের হাতে সময় অল্প
সে সময়কে হত্যা করতে চায় না
যে করেই হোক এই সময়ের মাঝেই তাকে
খুঁজে নিতে হবে উষ্ণতা,
উষ্ণতা এনে তা ছড়িয়ে দিতে হবে
ঐ নির্ঘুম চোখগুলোতে, ঐ অসহায় মুখগুলোতে
যারা পথিকের পথ চেয়ে বসে থাকে।
অবশেষে যখন গাছের শাখায় নতুন পাতা গজায়
ফুলে ফুলে ভ্রমর খেলা করে যায়
তখন বসন্ত এসে পথিককে ডাক দিয়ে যায়
কোকিল এসে তাকে গান শুনাতে চায়
কিন্তু উষ্ণতা তাকে আর ধরা দেয় না
অপূর্ণ মনের মাঝে পায়না সে পূর্ণতার স্বাদ
হারিয়ে ফেলে সে নিজেকে শুন্যতার মাঝে
সময়ের আবর্তে ঘুরপাক খায় পথ হারা পথিক।