somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্রকে হাজব্যান্ড না ভেবে বাবা ভাবুন

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত কয়েকদিনে বেশ কিছু ভাল কাজ করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের নেতা গোলাম আজমকে গ্রেফতার করেছেন। কুসিক নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেননি। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাংবাদিকের স্ত্রীকে বিএসএসএ চাকরী দিয়েছেন।হুমায়ুন আহমেদকে জাতিসংঘ মিশনের বিশেষ উপদেষ্টা নিয়োগ করেছেন।লোকমান হত্যার আসামী টেলিমন্ত্রীর ভাইকে গ্রেফতার করেছেন।এতে আমজনতা খুশী।খুশী হয়ে ব্লগ লেখা কমিয়ে দিলাম। যাক শেখ হাসিনা ইজ অন দ্য ট্র্যাক।
কিন্তু অদ্য মানিকগঞ্জ সফরে আবার খালেদা ফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ফিরে গেলেন কুতসার রাজনীতিতে। খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলাটি চলছে।এই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় নিশ্চয়ই আদালত দেবে।আদালতে বিচারাধীন মামলা নিয়ে রিপোর্ট-ফলো আপ করবে মিডিয়া।আমজনতা দেখবে সেটা। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হলে শাস্তিও হবে। কিন্তু এই নিয়ে একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখের বাণী; ‘বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুটপাট করেছেন। এতিমের নামে বিদেশ থেকে যে টাকা এসেছিল, সে টাকা দিয়ে নিজের নামে জমি কিনেছেন। এতিমের টাকা লুটপাট মেনে নেওয়া যায় না। তাদের বিচার হতেই হবে। কোনো আহ্লাদ চলবে না। বিচার না হলে এতিমরা মানবে না,’ শুনে মনে হলো এই খানেই বাংলাদেশ রাজনীতির সমস্যা, প্রত্যেক বক্তৃতায় খালেদাকে খোঁচানোর এই প্রবণতাই রাজনীতিকে সাঙ্ঘর্ষিক করে তুলে। আর আদালতে বিচারাধীন মামলা নিয়ে জনসভায় কথা বলাতো আদালত অবমাননা।

নিজের গুণগান করার মাঝে খালেদাকে নিয়ে টিকাটিপ্পনির হাসিনা সিনড্রোম সংক্রমিত হয় শেখ পরিবারের চাকরবাকরদের মধ্যে।নেত্রী যা বলবেন তা এক দার্শনিক ঢেঊ তোলে চাকরদের মনে।তখন তারা ছোট-খাট সেমিনার বা টিভি ঝাল শোতে গিয়ে খালেদার গুষ্টি উদ্ধার করে।
একি ঘটনা উল্টোদিকে। খালেদা রোডমার্চে হাসিনা ফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসিনার কুতসা গাইলে বিএনপির চাকরবাকর ও জামায়াতে ছাগুদল তখন খালেদা সিনড্রোমে বিপুল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ে।চলতে থাকে শেখ পরিবারের কাসুন্দি। এপ্রসঙ্গে রাজশাহীর একটি লোকবচন মনে আসে, এং উঁচি ব্যাং উঁচি খলসে বলে আমিও উঁচি।মানে এং ব্যাং কে উঁচুতে লাফাতে দেখে খলসে মাছেরো ঐ উঁচুতে লাফ দিতে ইচ্ছা জাগে।

শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া যদি বক্তৃতা দেবার সময় পারস্পরিক ফোবিয়া থেকে মুক্ত থাকতে পারেন তাহলে উনাদের বক্তৃতার যতসামান্য মূল্য টিকে যেতে পারে। কিন্তু ঐটিতো হবার নয়। মেক আপ বা ট্রুথ ব্রাশ করার সময় শুধু একবার নিজের দিকে তাকাতে হবে দুই নেত্রীকে।মাত্র কয়েকদিন আগে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়ের শত্রু ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে নিহত হবার পর শেখ হাসিনা কোন মুখে সন্ত্রাসবিরোধী বক্তব্য দেন, বলেন, ‘যারা দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করতে চায়, দুর্নীতি লুটপাট করে, তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।’ শেখ হাসিনার টেবিলে আওয়ামী লীগের পঞ্চাশজন দুর্নীতিগ্রস্ত ও সন্ত্রাসী সাংসদের আমলনামা পড়ে আছে গত ছয়মাস যাবত।এবার হয়তো আরো পঞ্চাশজনের অপকর্মের পেনপিকচার জমা পড়বে মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে।সেগুলো নিশ্চয়ই উনি পড়েছেন।তারপর কোন মুখে এসব কথা বলেন তিনি।

নিজেকে না শুধরে খালেদা ফোবিয়ায় বিএনপির ছিদ্র খুঁজে কোন লাভ হবে কি?

আর খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মুখপাত্রী হয়ে পড়ায়, দুই সোনার ছেলে এবং তদীয় চাকরদের লালন পালন করে আমজনতার সামনে মুখ দেখানোর সুযোগ রাখেননি।তার মুখে হাসিনার দেশ চালানোর সমালোচনা শুনলে মনে হয়ে ঝাঁঝর সূচকে বলছে তোমার প্রশাসনে ছিদ্র।

তবে শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়ার নেই নেই করেও একটাগুণ আছে। বাংলা এবং ইংরেজি ভাষাটা পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জীর চেয়ে ভালো বলে। সৃষ্টিকর্তা এই একটি জায়গায় পূবের এই বাংলা ভূখন্ডটিকে ইজ্জত ডুবার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া ঠিক অপর্ণা সেন বা হেমা মালিনীর মতো তাদের গ্ল্যামার অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। এর পেছনে আমজনতার অবদানই বেশী।কারণ ক্ষমতায় যেই থাকুন, মন্ত্রীর আরাম আয়েসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত অবিমৃষ্য আমজনতা নিশ্চিত করে রেখেছেন।

দেশ যখন অর্থনৈতিক হাহাকারে ধুঁকছে, শেখ হাসিনা তখন প্লেনে চড়ে সদলবলে ত্রিপুরা জয় করে এলেন কতো কোটি টাকা খরচ করে তা হিসাব নিরীক্ষণ বিভাগ জানে। অন্যদিকে খালেদা জিয়া সদলবলে চট্টগ্রামের পোলো গ্রাউণ্ড জয় করে এলেন কোটি কোটি টাকা খরচ করে।

আমার মনে হয়,বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া যদি হাজব্যান্ড না ভেবে বাবা ভাবতেন তাহলে হয়তো আমরা বেঁচে যেতাম এই রাষ্ট্রিক অপব্যয় ও অপচয় থেকে।
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×