বান্দরবানের পার্বত্য আলীকদম উপজেলায় চলতি তামাক মৌসুমে লামা বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন মাতামুহুরী রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রায় ৪০০ একর এলাকা জুড়ে তামাক চাষ হয়েছে। উৎপাদিত তামাক কিউরিং করতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে থেকে অবৈধভাবে জ্বালানি কাঠ আহরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বন বিভাগের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রতি বছর সরকারি বনভূমি উজাড় করে দীর্ঘদিন ধরে তামাক চাষ হচ্ছে।
মাতামুহুরী রেঞ্জের সংরক্ষিত বনভূমিতে চাষ করা তামাক চলতি মাসের মধ্যেই প্রক্রিয়াজাত করতে বনভূমির পাশে তৈরী করা হয়েছে দেড় শতাধিক তামাক চুল্লী। কয়েকদিন পরই তামাক চুল্লীতে শুরু হবে কাঠ পোড়ানোর মহোৎসব। মাতামুহুরী রেঞ্জ অফিস থেকে মাত্র ২/৩ কিলোমিটারের ভিতরেই এ দৃশ্য দেখা যায়। যা বন আইন-১৯২৭ এর ৩০ ধারার ক, খ, গ ও ঘ উপধারা এবং ২৬ ধারার (১) এর ক, খ ও গ উপধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানা যায়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে বনবিভাগ নিরব ভূমিকা পালন করে চলছে। প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার বর্গমাইল এলাকা নিয়ে গঠিত মাতামুহুরী রিজার্ভ। মাতামুহুরী নদী তীরবর্তী সংরক্ষিত বন এলাকা ও ঝিরিতে শত শত একর ঢালু জমি রয়েছে। এসব জমি বন বিভাগের মধ্যস্থতায় প্রতি বছর ভিলেজার ও চাষীরা তামাক চাষ করে আসছে। বর্তমানে রিজার্ভ ফরেষ্টের ভিতরে তামাক পোড়ানোর চলছে। বন আইনে রিজার্ভ এলাকায় ম্যাচ নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। বন আইন-১৯২৭ অনুযায়ী সংরক্ষিত বন এলাকায় ‘চাষাবাদ বা গৃহাদি নির্মাণের জন্য বন ভাঙ্গা বা পরিষ্কার করা’ নিষিদ্ধ। অথচ সংরক্ষিত বনাঞ্চলে তামাক চুল্লী স্থাপন করা হয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘকাল ধরে রিজার্ভ এলাকার কিছু জমি পৈত্রিকসূত্রে স্থানীয় ভিলেজাররা চাষাবাদ করতো। এক সময় রিজার্ভ ভূমিতে বিভিন্ন রবিশস্যের উৎপাদন হতো। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিজার্ভ ভূমিতে তামাক চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাতামুহুরী রেঞ্জের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারি কৌশলে সংরক্ষিত বনভূমি কৃষকদের মাঝে বর্গা দিচ্ছে এমন অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে মাতামুহুরী রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা ফিরোজ আলমের কাছে রিজার্ভ এলাকায় তামাক চাষের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রিজার্ভে তামাক চাষ হয়ে আসছে এটি নতুন কোন বিষয় নয়। তারা তামাক চাষ বন্ধে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।