somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মুনাজাত নিয়ে কিছু কথা

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টঙ্গীতে আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হল বিশ্ব ইজতেমার ১ম পর্ব।বিশ্ব ইজতেমায় অনেকেই আসেন শুধু আখেরি মুনাজাতে অংশ নিতে।টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে লক্ষ করলাম বয়ানে উর্দু আর বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু আখেরি মুনাজাতে বাংলার কোন স্থান নেই, যেখানে অধিকাংশ মুসল্লিই বাংলাভাষী!পৃথিবীতে জনসংখ্যার দিক থেকে আরবি ভাষার পরেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাংলা ভাষায় কথা বলে।আর খোদ বাংলাদেশে ইজতেমা ময়দানে আখেরি মুনাজাত হল আরবি আর উর্দু ভাষায়??!!কোন যুক্তিতে বাংলা বাদ দিয়ে উর্দুতে মুনাজাত হয়,না বুঝে শুধু ভক্তি ভরে "আমিন আমিন" বলার মধ্যে কোন কল্যাণ আছে কি?পবিত্র কুরআনের সুরা ইব্রাহিমের ৪ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেন,وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْযার অর্থ হচ্ছে,"আমি রাসুলদের তাদের স্বজাতির ভাষা ভাষী করে পাঠিয়েছি যাতে তাদের নিকট স্পষ্ট করে বোঝাতে পারেন"। স্বয়ং আল্লাহ তাঁর প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছেন স্থানীয় জনগণের বোধগম্য ভাষা দিয়ে আর আজ আমরা "বুঝবার" সে গুরুত্ব অগ্রাহ্য করে অন্য ভাষায় মুনাজাত করছি!কোন মুনাজাত উত্তম,অনুধাবনের সাথে আল্লাহর কাছে চাওয়া নাকি না বুঝে ইমামের সাথে আমিন বলা?{অনেকেই কিন্তু শুধু এই মুনাজাতটার জন্যই ইজতেমায় আসে;এরপর যদি সে সেটার অর্থই না বোঝে তবে তা কতটুকু কল্যাণ বহন করতে পারে? }আরবি মুনাজাত অবশ্যই করতে হবে,কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত মুনাজাতগুলো অর্থ না বুঝে করার মাঝেও নিশ্চয়ই কল্যাণ আছে{তবে বুঝে করাটাই ভাল।আল্লাহতো বলেছেনই কুরআন বিশ্বজগতের জন্য এক ‘উপদেশ’।এই ‘উপদেশ’ কিন্তু শুধু পড়লেই হবেনা,বুঝতেও হবে!}।কিন্তু উর্দু মুনাজাতের ক্ষেত্রে একথা খাটেনা,বাংলা আর উর্দুর সমান মর্যাদা{ইসলামে ‘বিশেষ’ ভাষা একমাত্র আরবিই-আর তা কুরআন-হাদীসের জন্য;ফার্সি বা উর্দু নয়}।উপমহাদেশের বাইরের মুসলিমরা কিন্তু উর্দু বোঝেনা,উর্দু ভাষা তাই উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্যই।গতবার ৯৩টা দেশ থেকে মুসল্লিরা এসেছেন;এসব দেশের কয়টা দেশের মানুষ উর্দু বোঝে?বলা হতে পারে এর চেয়ে উর্দুভাষী বেশি মুসলমান ইজতেমায় আসে-আর আমি বলব “তার চেয়ে বাংলাভাষী মুসলমান বেশি আসে”।ভারত থেকেও বহু বাংলাভাষী মুসলমান ইজতেমায় আসে।যদি জনসংখ্যা বিবেচনা করা হয় তাহলে পৃথিবীতে আরবিভাষীর পরেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাংলাভাষী[তথ্যসূত্রঃদৈনিক আমাদের সময়]শুধু তাইনা,এখনো আমাদের দেশে ওয়াজ মাহফিল,মিলাদসহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু মাওলানার উর্দুপ্রীতি লক্ষ করা যায়।সকলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি,বক্তব্য বিষয় যদি মানুষ বুঝতেই না পারে তাহলে সে বয়ান বা মুনাজাতের সার্থকতা অনেকাংশেই হারিয়ে যায়।উপমহাদেশের আরো বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা ইজতেমায় আসে,সেজন্য আখেরি মুনাজাতে উর্দু থাকতে পারে তবে তার আগে অবশ্যই বাংলা থাকতে হবে।ইজতেমার মূল উদ্যেশ্য হচ্ছে দ্বীনি শিক্ষা,অর্থহীন বয়ান আর মুনাজাত দিয়ে এই উদ্যেশ্য পূরণ সম্ভব না।তাই ২০ জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া ইজতেমার ২য় পর্ব থেকে আখেরি মুনাজাতে আরবি আর উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।বয়ানের সময় যেমন বাংলার ব্যবস্থা করা হয়েছে তেমনটা মুনাজাতের সময়েও চাই।যদি আরবির পরে উর্দু রাখা যায় তাহলে বাংলা রাখতে সমস্যা কোথায়?আর যা হোক,উর্দু কুরআন-হাদীসের ভাষা নয়,বাংলার মতই একটা ‘সাধারণ’ ভাষা।আল্লাহ আমাদের সকলকে জেনে বুঝে আমল করবার তৌফিক দান করুন,আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৫৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×