অনলাইন হ্যারাসমেন্ট বন্ধের উপায় খুঁজে বের করতে বিরাজমান ‘সাইবার আইন’ বিষয়ক ডিসকোর্স থেকে যা স্পষ্ট এবং আমার ব্যক্তিগত যে অবস্থান তা হলো:
১. অনলাইনে দুই ধরণের সাইবার স্পেসকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করতে হবে এক) অনলাইন কমিউনিটি/ব্লগ ও সোশ্যাল মিডিয়া; দুই) অনলাইন কমিউনিটি/ব্লগ ও সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে বিস্তীর্ণ সাইবার স্পেস যেখানে রয়েছে কোটি কোটি ওয়েবসাইট, ব্যক্তিগত সাইট, পর্নোসাইট, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পরিস্কার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তৈরী করা ওয়েবসাইট। রয়েছে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, সফটওয়ার নির্মাণ ও সামরিক তথ্য সম্বলিত সাইট এবং শিশুদের ওয়েব সম্পৃক্ততা।
ফলে এই দুই ধরণের স্পেসের জন্য ‘অনলাইন নির্যাতন ও অপরাধ’ এর সংজ্ঞা দুই ধরণের হবে। প্রথমোক্ত স্পেসে ‘অনলাইন নির্যাতন’ চিহ্নিত করা সম্ভব,যা সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি/ব্লগ কর্তৃপক্ষই সমাধান করতে পারেন।
কিন্তু দ্বিতীয় ধরণের সাইবার স্পেসে পরিস্কার ভাবে যেসমস্ত অপরাধকে শনাক্ত করা সম্ভব তা প্রতিরোধের জন্য রাষ্ট্রকেই ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সেজন্য প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রথমোক্ত স্পেসের ব্যবহারকারীরা সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে পারে।
২. সরকার ব্লগ নিয়ন্ত্রন বিধি বা আইন জাতীয় কিছু করার চেষ্টা করলে সেটা ব্লগাররা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করবে এবং আমিও এর প্রতিবাদ করবো।
৩. কমিউনিটি ব্লগকে তার অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই সবসময় বিকল্প চেতনাকে ধারণ করতে হয়, মিডিয়ার আওতাভুক্ত কমিউনিটি ব্লগ অথবা তথাকথিত কর্পোরেট ব্লগগুলো এর ব্যতিক্রম নয়। মিডিয়া বরঞ্চ তার ব্লগকে সে 'ফ্রিডম' দিতে পারে, কারণ যখন 'ব্লগ' বলা হয় তখন সেটাকে পাঠকই পৃথক করে ফেলে মিডিয়া থেকে, প্রত্যাশাও তেমন তৈরী হয়।
৪. কমিউনিটি ব্লগ প্রতিষ্ঠান শ্রেণীভুক্ত হবে বাণিজ্যিক অথবা অবাণিজ্যিক হিসাবে, কর্পোরেটের বিপরীতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসাবে কোনো যুক্তি তৈরী হয় না। কমিউনিটি ব্লগ প্রতিষ্ঠান মাত্রই কর্পোরেট বা সম্ভাব্য কর্পোরেট গোত্রভুক্ত, আর তা কখনই ইন্ডিপেন্ডেন্ট নয়। অন্যভাবে বললে, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ব্লগ কখনই কমিউনিটি ব্লগ নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:২২