বাচ্চারা এখনো ঘুম থেকে ওঠেনি। নিশ্চিত ওরা উঠে অবাক হবে এবং আশাহতও হবে। অনেক ভোরেই ওদেরকে ঘুম থেকে তোলার কথা কিন্তু তা করা হয়নি। আজ সকাল আটটার মধ্যে আমাদের কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবার কথাছিল। আমরা তিন পরিবার। একত্রে যাবো একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদিতে। বিয়ে শেষে বিকেলে ঢাকায় ফিরে আসবো। অনেকদিন ঢাকার বাইরে কোথাও যাওয়া হয় না। এই সুযোগ এসেছিল। সাতদিন যাবৎ প্রস্তুতি চলছে। মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছে। বাচ্চারা বেশ উত্তেজিত। যেহেতু ভোরে যাত্রা শুরু হবে সকালের নাস্তা মাইক্রোবাসেই হবে। তার জন্যও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। বেশ একটা পিকনিক পিকনিক ভাব।
সবার আগে আমিই যথারীতি ঘুম থেকে উঠলাম। নিজে প্রস্তুতি নিচ্ছি। অন্যদের ঘুম থেকে ডেকে তোলার কথা ভাবছি। এমন সময় মোবাইল বেজে উঠলো। ভাবলাম সহযাত্রীদের মধ্যে কেউ ফোন করেছে ঘুম থেকে উঠেছি কিনা এবং সময়মতো যাতে সবাই প্রস্তুত থাকি তা তদারক করার জন্য। কিন্তু তা নয়। ফোনের অপর প্রান্তে যার কন্ঠ শোনাগেল তার গলা পরিচিত তবে ভারী। দুঃসংবাদ। আমাদের এক প্রিয় ফুপু যিনি দীর্ঘদিন যাবৎ রোগে ভুগছিলেন তিনি গতরাতে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মনটা ভারী হয়ে গেল। স্ত্রী কে কথাটা জানালাম। কিছুক্ষণ পূর্বের উত্তেজনা আনন্দ মুহূর্তে উধাও হয়ে গেল। ঘরের পরিবেশ ভারী হয়ে এলো। কিছু সময় নিরবে বশে থাকলাম। তারপর এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি ফুপুর বাড়ীতে যাওয়ার জন্য। ফুপুর জন্য আমাদের সকলের এখন মোন খারাপ। তিনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। আমাদের অনেক স্নেহ করতেন। তিনি আজ আর নেই। আর কোনদিন তাঁর দেখা পাবো না। ভাবতেই মনটা বিষন্ন হয়ে ওঠে। আল্লাহ তাঁর রূহের শান্তি দান করুন।