somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লুটের দামী মাল নেয় সাঈদী-দশম সাক্ষী

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানিক পসারির বাড়ীর লুট ও অগ্নিসংযোগ করতে দেখেছি। সেখানে ইব্রাহিম কুট্টি ও মফিজকে রশি দিয়ে বাধতে দেখেছি। লুটের দামী মাল সাঈদী নিয়েছে। রাজাকার ও পাঞ্জাবীরা ইব্রাহীম কুট্টিকে ঘাটে নিয়ে গিয়ে গুলি করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়। রাজাকাররা আমার বাড়ি সহ অন্য হিন্দুদের বাড়িঘরেও আগুন লাগিয়ে দেয়। ৮ জানুয়ারি রোববার সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আসা দশম সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ কথা বলেন।

সকাল ১০ টা বেজে ৪০ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল বসলে সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আসেন সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রি। সাক্ষীর সাথে আদালতের পরিচয় করিয়ে দেন রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী মোখলেসুর রহমান বাদল। সাক্ষী তার বর্তমান বয়স ৫৫ হবে উল্লেখ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি তার পিতার সাথে কাজ করতেন। পিতা যেখানে যেতেন সেখানে তিনিও যেতেন। এভাবে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় মানিক পসারির বাড়িতে কাজ করতেন বাসুদেব ও তার বাবা।

সাক্ষীর পরিচয় আসামী পক্ষের আইনজীবীদের সময়মত জানানো হয়নি। এ কারণে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষীর সাক্ষ্যের ওপর জেরা করতে আপত্তি প্রকাশ করে। অসুস্থ শরীর নিয়ে সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে আসেন। সাক্ষী নিজের নাম পরিচয় দেন। সাক্ষীর বক্তব্য হতে জানা যায় তিনি পিরোজপুর জেলার চিথলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ১২-১৩ বছর ছিলো।

১৯৭১ সালে পশ্চিমারা (পাক বাহিনী) পাড়ের হাট এলাকায় ক্যাম্প করে। ক্যাম্প করার পর পাকবাহিনী সেখানে টহল দিতো। তারপর সেখানে শান্তি কমিটি, রাজাকার বাহিনী গঠন হয়। দেলু দেলোয়ার শিকদার , সেকান্দার শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, মোসেলম মাওলানা, হাকিম কারী,মহসিন, রুহুল আমিন এরা সকলে মিলে রাজাকার বাহিনী গঠন করে। মে মাসের ৮ তারিখে রাজাকাররা মানিক পসারির বাড়িতে যায়। রাজাকাররা মানিক পসারির বাড়িতে ইব্রাহীম কুট্টি ও মফিজকেপায়। তাদের পাওয়া মাত্র বাড়ির মধ্যেই মফিজ ও ইব্রাহীম কুট্টিকে রশি দিয়ে বেধে ফেলে।

তাদের বেধে ফেলার পর দেলু শিকদার, মোসলেম মওলানা, মহসিন, রহুলআমিন মানিক পসারির ঘরে লুট পাট চালায়। লুট পাট শেষ হলে লুটের দামী মাল দেলু শিকদার রেখে বাকী সব অন্য সহযোগী রাজাকারদের মাঝে বণ্টন করা হয়। পরে মানিক পসারির বাড়ী ঘরে আগুন জ্বালিয়ে পোড়ানো হয়। এরপর ওই রাজাকাররা ইব্রাহীম কুট্টির রশি খুলে তাকে ঘাটে নিয়ে গুলি করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়। অন্যদিকে মফিজকে ওরফে মফিজউদ্দিন পসারিকে রাজাকারেরা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এ সমস্ত ঘটনা সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রি লুকিয়ে ঝোপের আড়াল থেকে দেখেছেন বলে তার জবানবন্দীতে বলেন। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে সাক্ষী আরো বলেন, রাজাকাররা তার বাড়ি সহ অন্য হিন্দুদের ঘর বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামীর পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম জেরা শুরু করেন। জেরায় তিনি রাজাকার রুহুল আমীন সম্পর্কে তথ্য নেন। রাজাকার রুহুল আমীন বর্তমানে জীবিত আছেন। আইন পেশায় জড়িত। পিরোজপুরের গাজীপুর গ্রামে তার বাসা বলে সাক্ষী বাসুদেব বলেন। ১৯৭১ সালে রুহুল আমিন আল বদরে ছিলো বলে তিনি জানান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বে এই ব্যক্তি কি করতেন তা তিনি জানেন না বলে জানান।

পরে জেরায় মানিক পসারি ঘর আগুন দেওয়া নিয়ে সাক্ষী বাসুদেব কে জিজ্ঞাসা করা হয়। জেরার উত্তরে সাক্ষী বাসুদেব বলেন, মানিক পসারি বাড়িতে রাজাকাররা পায়ে হেটে আসে। সেদিন ছিলো ৮ মে। পাঞ্জাবী ও রাজাকারদের মানিক পসারির বাড়ির দিকে আসতে দেখে মানিক পসারির ঘরের লোকজন সবাই সেদিন সকাল ৮-টা কি ৯ টা বাজে পালিয়ে যান। বাড়িতে থাকেন শুধু মানিক পসারির কাজের লোক ইব্রাহীম কুট্টি ও মফিজ। এদের মধ্যে ইব্রাহীম কুট্টিকে রাজাকাররা গুলি করে মেরে ফেলে। দুপুরের দিকে মানিক পসারির বাড়িটি আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়। খবরের সূত্র এই লিংকে
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×