সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৪০
ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
পরিযায়ি শীত এসেছে হিমালয় থেকে। কুয়াশার চাদরে ঢেকে রেখেছে চারপাশ । উত্তরের হিমেল হাওয়া সবটুকু আর্দ্রতা শুষে নিয়ে প্রকৃতিকে করেছে খটখটে। গাছে গাছে পাতায় পড়েছে হলুদ ছোপ। ক্রমাগত তা বাড়ছেই কেবল বাড়ছেই। যেন ঝরে পড়ার প্রতিক্ষায় প্রহর গুনছে। তবুও কিন্তু মন খারাপ করে বসে নেই প্রকৃতি। একটু স্নিগ্ধ আবেশ ছড়িয়ে দিতে তার কতই না প্রনোদনা। সব শুষ্কতাকে ছাপিয়ে দিতেই সমান তালে চলছে প্রস্তুতি। হলুদ গাঁদা থেকে লাল ডালিয়া, সূর্যমুখী, সালভিয়া , জারবেরা, পপি, ডেইজি, ক্যালেন্ডুলা, বাহারি গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, আগুন ঝরানো শিমুল, পলাশ, জবা আরও কত কি। কুজঝটিকার আবরণে অন্ধকার রাতের প্রহর শেষে আয়েশি বর্ণচ্ছটা নিয়ে দাড়িয়ে আছে বাগানে। কোথাও বা বেলকনির কার্ণিসে , সড়ক দ্বীপে কিংবা ক্ষেতের পর ক্ষেত। সারা রাতের টুপ-টুপ ঝরে পড়া শিশিরের হিরককুচি লেগে আছে পাপড়িতে। সকালের সোনালী রোদের ঝিলিক লাগা সেই বর্ণিল পাপড়ি ছাপ ফেলে যায় খসখসে মনেও। সুবাসিত করে চারপাশ। তারই গন্ধ নাকে মেখে পথচলার ক্লান্তি দূরে সরিয়ে চোখ জুড়িয়ে নেয় শেষ বিকেলের পথিক। আর কিশোরী গুজে নেয় খোপায়। আমাদরি কুটির কাননে/ ফোটে কত পুষ্প, কেহ দেয় দেবতাচরণে/ কেহ রাখে প্রিয়জন তরে........সৌন্দর্য ,কোমলতা আর পবিত্রতার প্রতিক হয়ে উঠে এক একটি ফুল। উৎসবে, আচারে রঙে-ঢঙে ,, প্রেমে ও ভক্তিতে ফুল হয়ে উঠে অপরিহার্য। পার্কের কোনায় , রেস্তোরায় কিংবা ঘরে প্রেয়সীল প্রতিকা। কখন তার স্বপ্ন পুরুষ ফুল হাতে দিবে দেখা। প্রিয়তমা সেই ফুল খোপায় গুজে দিবে প্রতিদান। ভক্ত সে তো কাক ভোরেই পুষ্পের ডালা সাজিয়ে নতজানু দেবতার চরনে। উদ্দেশ্য দেবতার কৃপা দৃষ্টি। ফুল এখন শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির বৃত্তে বন্দি নেই। রীতিমত হয়ে উঠেছে হাটের পণ্য। বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি টাকার সওদা হচেছ তাকে নিয়ে। ফুলে যে শুধু মানব-মানবীই আকৃষ্ট হয় তা নয়।হাজারো পাখি , পতঙ্গ চুম্বন করছে কোমল বর্ণীল পাপড়িতে। ফুলও তা পরম আবেগে গ্রহণ করছে। প্রতিদানে দিচ্ছে মধু। এত সব সৌন্দর্য আর মুগ্ধতা ছাপিয়ে এক সময় বেজে উঠে বিষন্নতার সুর। রোদের আঁর শীতের থাবায় শুকাতে থাকে ফুল। বিবর্ণতা আর মলিনতার ঢেউ জেকে বসে তাকে। শ্রী হীন হয়ে এক একটি ফুল তখন যোগ দেয় ঝরে পড়ার মিছিলে। এ যেন মানব জীবনের এক উন্মোচিত প্রয়অন গাথা। জীবনের উদ্দাম দ্যুতি শেষে প্রস্থানের ট্রেনে চেপে বসা। যে ট্রেনের গন্তব্য অন্ধকার গহিন কোন অরণ্য। কিন্তু এই চিরাচরিত প্রয়ান জেনেও বাঁচতে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে, দেখাতে হবে। স্বপ্নের ডানায় ভর করে খোঁজতে হবে স্বপ্নাতীত আগামী। ফুলের মতই যত দিন বাঁচি রূপ রস আর গন্ধে আমোদিত করতে হবে চারপাশ। তাইতো ফূলের সমান্তরালে চোখ রেখে মন অস্ফুট স্বরে বলে উঠে মরিতে চাপিনা আমি সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই.................।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কাঁচা আম পাড়ার অভিযান
গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন