অন্ধকার প্রকোষ্ঠের একটি স্থান, রাত না দিন বোঝার উপায় নেই কোন । আমি এবং আমরা ইশ্বর মুখোমুখি দাড়িয়ে। ইশ্বর পরম মমতা ভরে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন।
বাছা, তোমার চেহারায় যন্ত্রনার অভিব্যাক্তি কেন?
আমি ম্লান হেসে বললাম এটাই আমার স্বাভাবিক চেহারা। আমি যে দেশটাই জন্মেছি সেখানে ছয়টি ছেলেকে উন্মত্ত জনতা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে । সামনে আইন রক্ষাকারী বাহীনি দাড়িয়ে তাদের উৎসাহ দিয়েছে। আমি তাদের ই একজন।
তিনি অবাক হলেন । কিন্তু আমি তো শুনেছি একজন মন্ত্রী বলেছেন তাদের সবার বিচার হবে । তিনি নিশ্চয় তাদের বিচার করবেন । দূঃখ করোনা, বাছা।
ইশ্বর এবার কিশোরী একটি মেয়ের দিকে তাকালেন, বললেন একি তোমার শরীরে এমন তারের কাটা ছেড়ার দাগ কেন ।
আমাকে হত্যা করার পর তারের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল আমার লাশ ।
ইশ্বর এ বড় অন্যায় আমি সেই নিষ্ঠুর পাষন্ডদের কঠোর শাস্তি দেব। বলো কারা তারা?
কিন্তু তারা যে আমাদের বনধু রাষ্ট্রর লোকজন ।
ইশ্বর ম্লান মুখে ও তাহলে তো কিছু করার নেই ।
একটি অন্ধকার কোনায় অনেক গুলো কচি শিশুর কোলাহল দেখে ইশ্বর কৌতুহলি হলেন । এতগুলি শিশু একসাথে দেখে তিনি জানতে চাইলেন । এরা সবাই এক সাথে? এখানে কেন?
শিশুদের সম্মিলিত জবাব, আমরা সবাই যে একসাথে রোড এক্রিডেন্ট মারা গেছি ।
ইশ্বর ও সত্যি দূখ জনক । খুবই দুখ জনক দেখে শূনে গাড়ী চালালে আর এরকমটি ঘটত না। যাই হোক এই ব্যাপারটি নিয়ে কোন ব্যবস্তা নেওয়া হয়নি?
আমাদের সম্মিলিত জবাব: হয়েছে দায়ী ব্যাক্তির দায়িত্ব বদলে দেওয়া হয়েছে। ইশ্বর ও আচ্ছা।
একটি আত্তার প্রতিধ্বনিতে ইশ্বর চমকে উঠলেন । কি হয়েছে বাছা তোমার?
না কিছু না, আচ্ছা প্রভু আপনি পরম তো ক্ষমাশীল তাইনা?
তিনি একটু অবাক হয়েই জবাব দিলেন হ্যা, আমি চাইলে যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিতে পারি, যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেত পারি ।
আমাদের দেশেও এমন একজন ব্যাক্তি আছেন যিনি চাইলেই পাপী ব্যাক্তিদের ক্ষমা করে দিতে পারেন । ইচ্ছা হলেই মওকুফ করতে পারেন একজন মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত খুনীর সাজা।
ইশ্বর বড় অদ্ভুত তোমাদের সেই দেশ।
আমাদের সম্মিলিত কন্ঠ, সত্যিই বড় অদ্ভুত আমাদের দেশ।