somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগের কবিরা এবং সাধারন ব্লগার।[ফান পোষ্ট]

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগে কবিতার ছড়া ছড়ি। কখনো কখনো প্রথম পাতা ভরে কবিতা দেখা যায়। এর মাঝে অল্প কিছু আছেন যারা কবিতা পড়েন এবং কবিতা চার্চা করেন। আমরাও মুগ্ধ হয়ে তাদের কবিতা পড়ি। কিন্তু এদের সংখ্যা খুবই কম। বেশি সংখ্যাকরাই আমাদের চরম ভুগায়।
পত্রিকার সম্পাদক এবং ব্লগারের মধ্যে কথা হচ্ছে। সম্পাদক মশায় সবার কাছেই লেখা চেয়ে বেড়ান। কাউকে একটু হুমরাচোমরা মনে হলেই তার কাছ থেকে লেখা বের করে নেন। দুজনের আলাপ আলোচনার মাঝেই সম্পাদক মশায় বলতে থাকেন। আমার পত্রিকার পরবর্তি সংখ্যার জন্য আপনাকে একটি উপন্যাস ধারাবাহিক লিখতে হবে।
ব্লগার: আমিতো কখনো উপন্যান লিখি নাই। কি ভাবে লিখতে হয় তাও জানি না।
সম্পাদক: একটু চেষ্টা করুন। আমি আপনাকে হেল্প করবো।
ব্লগার: না আমার পক্ষে উপন্যান লেখা সম্ভব নয়।
সম্পাদক: ঠিক আছে একটা প্রবন্ধ লিখে দিবেন।
ব্লগার: আরে না আমি প্রবন্ধ লিখতে পারি না। এসব বিষয়ে আমার পূর্বের কোন অভিজ্ঞতা নেই।
সম্পাদক: তাহলে একটা ছোট গল্প।
ব্লগার: আরে না। আমি এইসব লেখা লেখি পারি না। আগে কিছু আবোল তাবোল ব্লগ লিখতাম। এখন তাও লিখিনা। কলম ধরলে কালি বের হতে চায় না।
সম্পাদক দমার পাত্র নয়। ছাগল পাগলের কাছ থেকেও তিনি লেখা বের করে নিতে পারেন। মসজিদের ঈমাম, মুয়াজ্জিনের কাছ থেকেও তিনি নাকি লেখা বের করে নেন। অতএব এই ক্ষেত্রে তার সুনাম ক্ষুন্ন হতে দিতে পারেন না।
সম্পাদক: ভাই আপনাকে কিছু একটা লিখতেই হবে।
ব্লগার: আমি কোন কিছুই লিখতে পারি না। আপনি যদি বেশি কিছু করতে চান তবে আমার একটা ছবি তুলে পত্রিকার কলামের জায়গায় ছাপিয়ে দিন।

সম্পাদক নিরাশ হলে না। তিনি নিরাশ হতে জানেন না। বললেন। ঠিক আছে আপনি যদি কিছুই না পারেন। তবে নিশ্চয় কবিতা লিখতে পারেন? আপনি একটা কবিতাই দেন।

ব্লগে কবিতা পড়তে পড়তে আমার ধারনা এমনই হয়েছে। আমি কয়েক বার কমেন্ট করে দেখেছি। এই ব্লগের কবিরা অনেকেই নিজের কবিতা ছাড়া অন্য কোন কবিতা পড়েন না। পড়ার প্রয়োজনীয়তাও বোধ করেন না।
আমাদের সাথে আবৃত্তি করতো একজন। তার নাম নাজমুল। সে সব সময় তার নিজের কবিতাই পড়তো।এবং অন্যকে তার কবিতা পড়তে বলতো। আমরা তার উপর চরম বিরক্ত। কিন্তু এই বিরক্ত বোঝার মতো কান্ডজ্ঞান তার ছিলনা। এমন করে প্রায়ই স্যারকে তার কবিতা আবৃত্তি করে শোনাতে বলতো। এবং নিজেই নিজের কবিতার প্রসংসা করতো। আমাদের স্যার তার ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য একদিন নাজমুলের কাছে জানতে চাইলো। তার বাসায় কয়টা কবিতার বই আছে। উত্তর এল,একটিও নেই। কয়েকটি কবিতার বই এর নাম বলতে বলায় একটিও পারে না। এসএসসি পাশ করে কিছু দিন কলেজে গিয়েছে। তার পর আর লেখা পড়া হয়নি। হয়তো এই কবিতা প্রীতির জন্য কাজ কর্মও গোল্লায় উঠেছে। তা অবশ্য আমাদের জানা হয় নাই।
তার কবিতার দৌড় স্কুলের ক্লাসে পড়া কবিতাতেই সীমাবদ্ধ।স্যার তাকে পরামর্শ দিল। তুমি যদি অন্যের কবিতা না পড় তবে অন্য লোকে তোমার কবিতা কেন পড়বে?
তার উত্তরে সে জানাল। সবাই তো আর কবিতা লিখতে পারে না। যারা লিখতে পারে না তারা পড়বে। সে তো লিখতে পারে । সে হলো কবি।

কিছুদিন পরে আমি তাকে বুঝাতে সক্ষম হলাম। যে কবি হওয়ার জন্য আবৃত্তি জানার কোন প্রয়োজন নেই। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত কবি ভাল আবৃত্তি করতে জানতো না।
আমার কথা তার মনে ধরেছে। এবং তার পর থেকে আবৃত্তির ক্লাসে তাকে আর দেখা যায়নি।

আর একটি ছেলে আমাদের ক্লাসে এমন ভাবেই আসতো। সেও নিজেকে কবি বলে পরিচয় দিত। তার ছড়া মাঝে মাঝে ভালই লাগতো। সেও সবারে তার কবিতা পড়ানোর জন্য হন্য হয়ে থাকতো। কারনে অকারনে তার কবিতার খাতাটা বের করে পড়তে বলতো। এবং নিজে পড়ে অন্যকে শোনাত। ধীরে ধীরে এই প্রবনতা প্রকট আকারে ধারন করে। তাকে যতই বোঝানোর চেষ্টা করি। সে কোন কথাই শুনবে না। সে তার কবিতা দিয়ে সবার উপর বিরক্তি করবেই। কিছু দিন পরেই সে কবিতার পাশা পাশি গান লেখা শুরো করলো। এবং সুযোগ পেলেই গেয়ে শুনাত। এই তো আরো বিপদ। আগে তো তার ডাইরিটা উল্টা পাল্টা করলেই খুশি হতো। আজ কাল একটা গান শুনতেই হয়।

আমি খুব চিন্তা করে তাকে পরামর্শ দিলাম। তোমার কন্ঠ খুবই ভাল। তুমি গান শেখনা কেন? তুমার গলাতো দারুন। পেছনের কয়েকজন আমার কথায় তাল দিল। হ্যাঁ তোমার গান শেখা উচিত। নিজের গান নিজেই যদি গাইতে পার তবে রবীন্দ্র নাথ নজরুলের মতোই তুমি বিখ্যাত হতে আর কয়দিন লাগবে। আমাদের পরামর্শ তার পছন্দ হলো।
একমাস পরেই সে আবৃত্তি বিভাগ ছেড়ে সঙ্গিতে ভর্তি হলো। আমরা বাঁচলাম। কিন্তু সঙ্গিতের ছেলেমেয়েদের অবস্থা কি হলো সেই খবর আর নেই নি।
২৩টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×