somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একাত্তরের ১০টি তারিখ

০২ রা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একাত্তরের প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি দিবসই রক্তের অক্ষরে লেখা। তার পরও কোনো কোনো তারিখ ত্যাগে, আত্মদানে ও গৌরবের মহিমায় হয়ে ওঠে সমুজ্জ্বল। একটি তারিখ পরিণত হয় সংগ্রামের প্রতীকে, শ্রদ্ধা ও বিজয়ের অবিনাশী স্মারকে।
একাত্তরের এ রকমই ১০টি তারিখ নিয়ে প্রথম আলোর স্বাধীনতা দিবস সংখ্যাটি সাজানো হয়েছে—৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ; ২৬ মার্চ, স্বাধীনতা ঘোষণা;
১৭ এপ্রিল, মুজিবনগর সরকার গঠন; ১১ জুলাই, সেক্টর কমান্ডারদের বৈঠক; ১ আগস্ট, দ্যকনসার্ট ফর বাংলাদেশ; ৩ ডিসেম্বর, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ;

৭ মার্চ ১৯৭১
রমনার রেসকোর্স ময়দানে সেদিন অপরাহ্নের এক অলৌকিক ভাষণে অবগাহন করে একটি জাতি নবজন্ম লাভ করেছিল। সাতই মার্চের ভাষণটি ধর্ম-বর্ণ-বয়স-লিঙ্গনির্বিশেষে সব বাঙালিকে জয় বাংলার সৈনিকে রূপান্তরিত করেছিল।
বাঙালি জাতির অনন্ত প্রেরণা
বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণটি বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের ইতিহাসে অনির্বাণ-শিখার মতো। ৪০ বছরের ব্যবধানে এটি আজও তাজা, প্রাসঙ্গিক এবং একইভাবে উদ্দীপনাময়। এটি এমন এক অমর-কথা, যার ভূমিকা ও অবদান জাতির জীবনে এখনো ফুরোয়নি। যেন এটি এক কল্পতরু—জাতির প্রয়োজনে সংগ্রামের প্রেরণা-পুষ্টি জোগাতে সদাই প্রস্তুত, সদাই সক্ষম।
এই ভাষণটি শোনা যেকোনো বাঙালির জীবনে অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।

৭ মার্চ কেন গুরুত্বপূর্ণ
৭ মার্চের যে সভা, তা নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। আমার সৌভাগ্য যে সেদিন আমি মঞ্চে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর কর্মী হিসেবেও, এবং একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবেও। বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী এজেন্টও ছিলাম আমি। আমি ঢাকা মহানগরের পুরো নির্বাচনে টঙ্গী থেকে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলাম। তিনি দুটো আসন থেকে নির্বাচিত হলেন। ঢাকার পুরোনো শহর ও তেজগাঁও-টঙ্গী।

রেসকোর্স ময়দান থেকে
সমস্ত ইন্দ্রিয় তখন একটা বাক্য শোনার জন্য আকুল
বঙ্গবন্ধু কী বলবেন ৭ মার্চে, এ নিয়ে সর্বত্র ছিল উৎকণ্ঠা, জিজ্ঞাসা। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত, সৈন্যরা মিছিলে গুলি করে মানুষ মারছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে গেছে, পেছনে ফেরার আর উপায় নেই। আমরা, আর্ট কলেজের শিক্ষক আর ছাত্ররা তো সেই ষাটের দশক থেকেই স্বাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত হয়ে পড়েছি। আমরা ছিলাম সংস্কৃতি সংসদের কর্মী। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে ছিলাম সরাসরি যুক্ত।

এমন চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা আর কিছু হতে পারে না
৭ মার্চ আর্ট কলেজে বসেই দেখেছি, সকাল থেকেই রেসকোর্স ময়দানে দলে দলে লোক জড়ো হচ্ছে। এ রকম জনস্রোত, যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ছে রেসকোর্সে। একেকটা ভিন্ন ভিন্ন ঢেউ আসছে আর মিশে যাচ্ছে অন্যান্য ঢেউয়ের সঙ্গে। কোন ঢেউ আগের, কোনটা পরের, তা বোঝার আর উপায় থাকছে না—যেন একটাই সত্তা। কারও হাতে লাঠি, ফেস্টুন, লগি। বিভিন্ন চেহারা-শ্রেণী-চরিত্রের মানুষ। কেউ হেঁটে আসছে, কেউ রিকশায়, কেউ...
স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
একটি কবিতা লেখা হবে, তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে
ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

এই শিশু-পার্ক সেদিন ছিল না,
এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,
এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না।
তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?
তা হলে কেমন ছিল শিশু-পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে,
ফুলের বাগানে ঢেকে... বিস্তারিত
সেই বিকেলের গল্প
বাইরে একটা কোকিল ডেকে উঠল। দক্ষিণের জানালা দিয়ে বাতাসও আসছে ঘরে, বসন্তের বিখ্যাত সমীরণ। আমের গাছে মুকুল এসেছে নাকি! আজকাল বাতাসে কেবল বারুদের গন্ধ, টায়ার পোড়ানোর গন্ধ। এর মধ্যে হঠাৎ করে এক ঝলক বসন্ত বাতাস শেখ মুজিবের শরীরে একটু যেন শান্তির স্পর্শ বুনে দিল। তাঁর মনে হলো, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁদের বাড়ির সামনের ছোট্ট খালটার পাশে আমগাছের নিচে এমনই গন্ধ লেগে থাকত।

২৬ মার্চ ১৯৭১
হাজার বছরের সংগ্রাম পেছনে ফেলেজাতির জীবনে নেমে এল ২৫ ও ২৬ মার্চ। দুঃস্বপ্ন, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার অভাবনীয় সংমিশ্রণ ঘটল বাঙালির জীবনে। পাকিস্তানিদের লক্ষ্য ছিল বাঙালির জাতিসত্তা নিশ্চিহ্ন করা। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দেন স্বাধীনতার। তবে দুঃখজনকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়েরাজনীতিতে বিতর্ক চলছে। ঐতিহাসিক দলিলপত্র সাক্ষ্য দেয়, মুজিবই স্বাধীনতার ঘোষক। জিয়াউর রহমান তাঁর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×