রাজধানীর মিরপুরে একটি পোশাক কারখানায় আগুন লেগে পুলিশের একজন অতিরিক্ত উপ মহা পরিদর্শক এবং কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
Published : 08 May 2013, 06:44 PM
দারুস সালাম থানার ওসি খলিলুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ভবনের ছয় তলা ও ওপরের সিঁড়ি থেকে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে আটজনকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন, পুলিশের অতিরিক্ত উপ মহা পরিদর্শক জেড এ মোর্শেদ, বিজিএমইএর পরিচালক ও তুংহাইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুর রহমান, তার তিন বন্ধু কুমিল্লা জেলা যুবলীগের নেতা সোহেল মোস্তফা স্বপন, এমাদুর রহমান বাদল ও সৈয়দ নাসিম রেজা এবং মঞ্জুর মোর্শেদের দেহরক্ষী রিপন চাকমা ও তুংহাইয়ের অফিস সহকারী সাহাবুদ্দিন।
স্কয়ার হাসপাতালে মারা যাওয়া আরেকজনের নাম জানা যায়নি। তবে তিনি রঙ মিস্ত্রির কাজ করতেন বলে ওসি জানান।
পুলিশ বলছে, সন্ধ্যায় কারখানা ছুটির পর ওই ভবনের দশম তলায় বসে বন্ধু ও কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন কারখানার এমডি। ধোঁয়ায় শ্বাসরূদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয় বলে পুলিশের ধারণা।
বন্ধ কারখানায় এই অগ্নিকাণ্ড নাশকতা বলে মনে করছেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম। কারখানা মালিক মাহবুবুর রহমান বিজিএমইএর একজন পরিচালক।
অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে রাতেই ঘটনাস্থলে যান বিজিএমই সভাপতি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সন্ধ্যার পর থেকে কারখানাটি বন্ধ থাকায় সেখানে কোনো শ্রমিক ছিলো না। এটি নাশকতা হতে পারে।”
অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের ধারণা, ১২ তলা ভবনের তৃতীয় তলার স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে এর কারণ তারা জানাতে পারেননি।
অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর আলী আহমেদ খান শেষ রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভবনের ভেতরে প্রচুর ধোঁয়া থাকায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।”
অগ্নিকাণ্ডে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শকসহ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে বিজিএমইএ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলে, ‘বিজিএমইএ মনে করে, পোশাক শিল্পের অন্যতম উদ্যোক্তা মাহবুবুর রহমানের মৃত্যুতে এই শিল্পে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হলো।’
এর আগে গত বছর শেষ দিকে আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন লেগে শতাধিক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
আর গত ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে নিহতের সংখ্যা আটশ ছাড়িয়ে গেছে। নিহতের অধিকাংশই ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানার কর্মী।