somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাসায় আসলে যা যা করি (আমার জন্য অতি বিপদজনক একটা পোস্ট) :|

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস ছুটি হয়েছে কি হয়নি, নিজের ছুটি নিজে ঘোষণা করে আমি প্রায়ই বাসায় চলে আসি। আর আসার পরেই শুরু হয়ে যায় জলহস্তী জীবন। এক ছুটি পার হয়ে আরেক ছুটি চলে আসে আমার আর ফেরার নাম গন্ধ নাই। বন্ধুান্ধব কেউ একপর্যায়ে ফোন করা শুরু করে (যদি খোলা থাকে) , চ্যাট অনলাইন পেলে জিজ্ঞেস করে “Omar, kobe firba?” ;) আমি বলি, “ফিরবো ফিরবো দোস্ত, এই তো কয়টা দিন…” শেষ মেষ বিরক্ত হয়ে তারা বলে, “কি (সেন্সরড) করিস বাসার মধ্যে বসে বসে…একবার গেলে আর নামগন্ধ পাওয়া যায় না!” আমি আর কি বলবো, চুপ হয়ে যাই। তারপর বসে বসে ভাবি, কোন কাজ গুলা বাসার বাইরে থাকলে করা হয় না! অনেক ভেবেচিন্তে কয়েকটা বের করলাম।

হুম…! সকাল হয়ে গেছে নাকি? (দরজা খোল শয়তান! এগারোটা বাজে!!)

প্র-তি-দি-ন, আমি যখন বাসায় থাকি, প্রত্যেকদিন সকাল শুরু হয় এভাবে। রাত তিনটা পর্যন্ত চ্যাট করে সকাল আটটায় কি কারো পক্ষে ঘুম থেকে উঠা সম্ভব? অনেকে হয়তো বলবে যে সে পারে, কিন্তু আমি পারি না। আমার রুমে আবার কোনও দেয়াল-ঘড়ি নাই, তাই বেশীরভাগ সময় যেটা হয় – ভাবছি বেশী সকাল হয় নি, বড়জোর সাতটা বাজে, আর একটা ঘুম দিয়ে তারপর উঠবো…এই সময় দরজার ওইপাশে আম্মুর চিৎকার। “ওঠ! দুপুর হয়ে যাচ্ছে!!” আমি অবাক হয়ে ভাবছি ব্যাপার কি…তারপর ঘড়ির দিকে তাকাতেই, OMG! বারোটা বেজে যাচ্ছে!! 8O

বাসার মডেম (সরকারী মাল, দরিয়া মে ঢাল)

ক্যাম্পাসে যেহেতু ওয়াইম্যাক্স কানেকশন নাই, তাই আমি ল্যাপটপে গ্রামীনফোনের মডেম ব্যাবহার করি। আগে রবি ব্যাবহার করতাম, পরে দেখলাম গ্রামীণে স্পিড বেশী পাচ্ছি। যা হোক আমাকে মাসে দুইবার P6 নিতে হয়ে মানে প্রায় দুই জিবি লাগে। তাই ইমেজ অফ করেই বেশীরভাগ সময় ব্রাউজ করি, আর যখন দেখি এমবি শেষের পথে আছে তখন ফেসবুক মোবাইল ভার্সন 8) তাই বাসায় পৌঁছালেই প্রথম কাজ যেটা করি সেটা হলো বাংলালায়ন মডেমটা আব্বুর পিসি থেকে খুলে নিজের রুমে নিয়ে আসি। তারপর ঐটা দিয়ে কিছুক্ষণ ইচ্ছামত ব্রাউজ করি। আহ! কি শান্তি

মুভি, গান আর হাবিজাবি এটা সেটা…

বাসায় আসার এক সপ্তাহ আগে থেকে আমি ল্যাপটপে নতুন বের হওয়া মুভি, মিউজিক ভিডিও…এইসব সংগ্রহ করতে থাকি। আমার বোনও আমার ফেরার কথা শুনলে বলে দেয় কোন কোন মুভি তার জন্য আনতে হবে। আর আমি সোৎসাহে বিভিন্নজনের পেন ড্রাইভ থেকে সেগুলো কপি করা শুরু করি। বাসায় আসার পর তাই আমাকে ঘন্টাখানেক সময় আলাদা করতে হয় শুধু এই ডাটাগুলা ট্রান্সফার করার জন্যে।

ক্রিং ক্রিং…ফোন বাজছে!! 8)

আমি জানি এই জায়গায় আসলেই আমার আশেপাশের মানুষজনের ভ্রু কুঁচকে যাবে। হ্যাঁ আমি মোবাইলের ব্যাপারে খুবই অ-সচেতন, কখন যে কোথায় সেটা পড়ে থাকে খবর-ও রাখি না। তবে বাসায় থাকলে মোবাইল অন থাকে… সব সময় হয়তো ধরতে পারি না, তবে আমার মোবাইলে কল ঢুকছে, এটাই তো একটা বিরাট খুশীর খবর, তাই না?? :P

নাস্তায় কি খাওয়া যায়?

ক্যাম্পাসে থাকলে সাধারণত পরোটা দিয়ে ভাজি খাওয়া হয় বিকালে, কারণ দেখা যায় বেশীরভাগ দিনই দুপুরে সাড়ে বারোটার ভেতরেই খাওয়া শেষ করে ফেলি। তাই বাসায় আসলেও বিকালবেলায় এক বাটি ন্যুডুলস না হলে আমার চলে না।


এই একলা ঘর আমার দেশ...

সন্ধ্যার বারান্দা

শেষ বিকালে নাস্তার পর চা বা কফির মগ হাতে বারান্দায় চলে আসা এটা আমার অনেক পুরাতন অভ্যাস। এখন এটা করা হয় না, তবে সন্ধ্যার সময় বারান্দায় দুই মিনিটের জন্যে হলেও যাবো – এটা আমার কাছে একটা নিয়মের মতো।

সিডি প্লেয়ারটায় আগের মতো শব্দ হয়না

বলতে গেলে কেনার পর থেকেই এই যন্ত্রটা আমার রুমে পড়ে আছে। আর কলেজে থাকতে সিডি কেনার বাতিক ছিলো, তাই রুমে যখনই একা থাকতাম র‍্যাক থেকে একটা সিডি বের করে ফুল ভলিউমে ছেড়ে দিতাম। এখন সেই সিডিগুলা আর নাই, কোথায় হারিয়ে গেছে কে জানে..তাই রেডিও-ই শুনা হয় বেশী। আর এখন যেহেতু ভাড়া বাসায় থাকি তাই আগের মতো খুব বেশী ভলিউম দিয়ে গান শোনা এখন আর হয়ে ওঠে না। :’(

রুমের ভেতর পায়চারী

নোয়াখালীতে থাকতে বাসায় আমার রুমের ঠিক নিচের রুমটাতে থাকতো জাকির মামা। সে একদিন বলে, “মামা আপনি রুমের ভেতর সারা রাত ঘুট ঘুট করে হেঁটে বেড়ান, তাই না ?” আমি খুব অবাক হওয়ার ভাণ করে বললাম, “কই নাতো!” সামনাসামনি স্বীকার না করলেও আসলে অভিযোগ কিন্তু সত্য। আমি সিডি প্লেয়ারে গান ছেড়ে দিয়ে প্রায়ই রুমের একপাশ থেকে আরেকপাশে পায়চারী করি। এই (বদ) অভ্যাসটা আমার এখনো আছে আর এটা সাধারণত রাতের বেলাতেই বেশী করা হয়।

আর কোনও কিছু তো আপাতত মনে পড়ছে না, আমি কোনও কিছু মিস করে থাকলে কমেন্ট সেকশন খোলা আছে, সেখানে লিখে দিতে পারেন এই জলহস্তী জীবনের ভেতর থেকেও যে এতগুলা কাজ বের করতে পেরেছি, তাতে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি! ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আমার ক্যাম্পাসে না ফেরার কারণে যারা আমার চালচলন নিয়ে যারা সন্দিহান, আশা করি এই পোস্টটা তাদের কৌতুহল কিছুটা হলেও লাঘব করবে।

আরও কিছু লেখা:
যে দশটা শব্দের বানান আমার সবসময় ভুল হয়
ফেসবুক চেইন মেসেজ সমগ্র (Post this message to 1000 people..)
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×