খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর যখন ঢাকা থেকে খুলনা যাই তখন প্রথমেই অবাক হয়েছিলাম হলে সিট না পাওয়ায়।তখন থাকতে হয়েছিল মেস করে।প্রথমে ভেবেছিলাম যে কষ্ট হবে কিন্তু আসলে দেখাগেল বেশ ভালই ছিলাম।প্রথম ৬ মাস নিচতলায় এবং তার পর খোলা বারান্দার লোভে ৪ তলায় শিফট হয়ে গেলাম।
এখনকার অবস্থা কেমন জানিনা ঠিক কিন্তু আমারা আমাদের ১ম এবং ২য় বর্ষে থাকার সময় রাতে বের হতাম নিরালা মোড়ে আড্ডা দিতে,কাচা বাজারের হোটেল-এ পরটা,ডিম খেতে,নিরালা মোড়ে চায়ের ধোঁয়ার সাথে সিগারেটের ধোয়ার মিশ্রণ ঘটাতে(বেশ কয়েকবার অবশ্য পুলিশও ধরেছিল আমাদের)পরীক্ষার সময়,পিএল এর সময়েও হতনা এর ব্যতিক্রম।আর তাসের কথা কি বলব,সেই নেশায় কত রাত যে নির্ঘুম কেটেছে তার ইয়ত্তা নেই(এবং সাথে সাথে ক্লাসো মিস)।
৩য় বর্ষে পা রাখার পর হলে সিট পেলাম।গিয়ে উঠলাম বিখ্যাত খাজা হলে ।পুরাই পাঙ্খা লাইফ ২ বছর।সারা রাত ল্যান-এ ফিফা খেলে কাটিয়ে দিতাম।পুরাই ড্যামকেয়ার ভাবে শীতের রাত ব্যাডমিন্টান খেলে পার করতাম(যদিও খুব একটা ভাল পারি না)।বিকাল বেলায় সালাম ভাইয়ের দোকানে বসে রাত বানিয়ে দেয়া,রাতের বেলায় পুরা ক্যম্পাস টহল দেয়া,ক্লাসের সময় তপনে আড্ডা দেয়া এই ছিল কাজ( যার জন্য cGPA এত কম )
আর এখন এইসবের কিছুই না।বন্ধু বাপ্পীর ফেসবুক স্ট্যটাসের সাথে ১০০% মিল ।ছেলেটা অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার মাঝেও ভার্সিটি যেত ব্যাডমিন্টন খেলতে, পরীক্ষার আগের রাতেও বসে আড্ডা দিত বহুক্ষণ। জীবনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানো সেই ড্যামকেয়ার ছেলেটা এখন রাত না হতেই বলেঃ "যাইরে দোস্ত, কাল অফিস আছে।" আহারে ছেলেটা, টিকে থাকার তাগিদে সেও আজ তালুবন্দী কেরানী।
আসলেই টিকে থাকার তাগিদে আমিও আজ তালুবন্দী কেরানী। অস্তিত্ব পুরাই বিলীন।
সে জন্যই বলি সবকিছু বদলাতে নেই